॥ শ্রী হিতম বন্দে ॥
॥ শ্রী রাধাবল্লভো জয়তি ॥
নমো-নমো জয় শ্রীহরিবংশ।
রসিক অন্য বেণু কুল মণ্ডন, লীলা মান
সরোবর হংস ॥
নমো জয়তি (শ্রী) বৃন্দাবন সহজ মাধুরী,
রাস-বিলাস প্রশংস।
আগম-নিগম অগোচার রাধে চরণ সরোজ
ব্যাস অবতংশ ॥।
॥ শ্রীহিত হরিবংশ বন্দনা ॥
রাধেবেষ্টম সম্প্রদায়ৈক কর্তাঽ ঽচার্যো রাধা মন্ত্রদঃ সদগুরুশ্চ।
মন্ত্রো রাধা যস্য সর্বাত্মনৈবম বন্দে রাধা-পাদ-পদ্ম-প্রধানম্ ॥
যস্যাঃ কদাপি বসনাঞ্চল খেলনোত্থ, ধন্যাতি ধন্য পবনেন কৃতার্থমানী।
যোগীন্দ্রদুর্গমগতির্মধুসূদনোऽপি, তস্যাঃ নমোऽস্তু বৃষভানুভুও দিশেঽপি।।১।।
ব্যাখ্যা:
যিনকে নীলাজ্চল কে কিসি সময়ে হিলনে
সে উঠ হুয়ে ধন্যাতিধন্য পবন কে স্পর্শ সে,
যোগীন্দ্রোং কে লিয়ে অতী দুর্গম গতি বালে
মধুসূদন ভী আপনে আপকো কৃতকৃত্য মানতে
কো ভী নমস্কার কারতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
যিনার নীলাজ্বল কোনো সময়ে হিললে
উঠে যাওয়া ধন্যাতিধন্য পবনের স্পর্শে,
যোগীন্দ্রদের জন্য অতি দুর্গম গতি বিশিষ্ট
মধুসূদনও নিজেকে কৃতার্থ মনে করেন,
তাঁর দিকেও আমি নমস্কার জানাই।
ব্রহ্মেশ্বরাদি সুদুরুহ পদারবিন্দং, শ্রীমৎ পরাগ পরমাদ্ভুত বৈভবায়াঃ।
সর্বার্থসার রসবর্ষি কৃপার্দ্রদৃষ্টেঃ তস্যা নমোস্তু বৃষভানুভুও মহিম্নে।।২।।
ব্যাখ্যা:
যিনকে চরণ কমলোরে শোভাশালী পরাগ
(সুগন্ধিত রজ) কা অত্যন্ত অদ্ভুত বৈভব
(ঐশ্বর্য) ব্রহ্মা, শঙ্কর আদি কে লিয়ে ভী
সুদুরূহ (প্রাপ্ত করনে মে অত্যন্ত কঠিন) হে
অৌর যিনকী করুণা সে ভীগী হুয়ী দৃষ্টি সব
পুরুষার্থোং কে সারভূত প্রেমরস কী বৃষ্টি করনে
বালী হে, উন শ্রীবৃষভানুনন্দিনী জী কী
মহিমা কো নমস্কার হো।
ব্যাখ্যা:
যাঁর চরণ কমলের শোভাশালী পরাগ
(সুগন্ধি রজ) ব্রহ্মা, শঙ্কর প্রভৃতি দেবতাদেরও
জন্য সুদুরূহ (প্রাপ্ত করতে অত্যন্ত কঠিন)
এবং যাঁর করুণাভরা দৃষ্টি সমস্ত পুরুষার্থের
সার রূপ প্রেমরস বর্ষণ করে, সেই শ্রীবৃষভানুনন্দিনী
দেবীর মহিমাকে নমস্কার জানাই।
যো ব্রহ্মরুদ্রশুকনারদভীষ্মমুক্ষৈরালক্ষিতো ন সহসা পুরুষস্য তস্য।
সদ্যো বশীকরণ চূর্ণমনন্তশক্তিং তং রাধিকা চরণরেণুমনুস্মরামি।।৩।।
ব্যাখ্যা:
যো ব্রহ্মা, রুদ্র, শুক, নারদ, ভীষ্ম দ্বারা
সহসা দেখে নহি যাইতে উন পুরুষ (শ্রীকৃষ্ণ)
কো তৎকাল বশ মে করনে বালে, বশীকরণ
চূর্ণ কে সমান, অনন্ত শক্তিয়ো বালী
শ্রীরাধিকাজু কী চরণ-ঘধুলিঁ কা মৈ স্মরণ
করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
যিনি ব্রহ্মা, রুদ্র, শুক, নারদ, ভীষ্ম দ্বারা
সহসা দেখা যায় না, সেই পরম পুরুষ
(শ্রীকৃষ্ণ) কে তৎক্ষণাৎ বশীভূত করতে সক্ষম,
"বশীকরণ চূর্ণ" সদৃশ, অসীম শক্তিসম্পন্ন
শ্রীরাধিকার চরণ-রেণুর আমি স্মরণ করি।
আধায় মূর্দ্ধনি যদা পুরুদারগোপ্যঃ কাম্যং পদং প্রিয়গুণৈরপি পিচ্ছ মৌলেঃ।
ভাবোৎসবেন ভজতাং রস কামধেনুং তং রাধিকা চরণরেণুমহং স্মরামি॥৪॥
ব্যাখ্যা:
উদার গোপীয়ো নে যি চরণ-ধুলি কো
মস্তক পে চড়াকর মোর-মুকুট ধারি শ্রী
শ্যামসুন্দর কে লিয়ে ভী কামনা করারে যোগ্য
পদ (শ্রী প্রিয়াজু কে দাস্যভাব কি পদবি )
কো প্রিয় গুণোং কে সাথ প্রাপ্ত কিয়া, ভাব
চাব সে ভজনেওঁ কো লিয়ে রস কি
কামধেনু কে সমান উন শ্রীরাধা কে চরণোং
কি ঘূলি কা মৈ স্মরণ করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
যে চরণরেণুকে উদার গোপীগণ
আপনার মস্তকে ধারণ করে, যার স্পর্শে
মোচড়-মুকুটধারী শ্যামসুন্দরও কামনার্হ হন,
যে রেণু প্রেমভজকদের রসকামধেনু হয়,
সেই শ্রীরাধিকার চরণধূলির আমি স্মরণ করি।
দিব্যপ্রমোদ রস সার নিজাঙ্গসংগ, পীয়ূষবীচি নিচয়ৈরভিষেচয়ন্তী।
কন্দর্প কোটি শর মূর্ষিত নন্দসূনু সঞ্জীভনী জয়তি কপি নিকুঞ্জদেবী।।৫।।
ব্যাখ্যা:
অলৌকিক আনন্দ স্বরূপ রস কে সারভূত
আপনে শ্রীঅঙ্গোং কে সঙ্গ-রূপী অমৃত তরঙ্গোং কে
সমূহ সে সিঞ্চকর, কোটি-কোঠি মণোজ কে
বাণোং সে ব্যাধিত নন্দকুমার কো সঞ্জীবিত
করণে বালি কোই অনির্বচনীয় নিকুঞ্জদেবী
কি জয় হো।
ব্যাখ্যা:
যিনি দেবলোকে অনিন্দ্যপ্রমোদময় রসের সাগর
থেকে তাঁর অঙ্গের সৌরভময় অমৃত তরঙ্গ দ্বারা
সিঞ্চন করেন, এবং কোটি কোটি মনোজের
বাণ দ্বারা আহত নন্দনন্দনকে পুনরুজ্জীবিত করেন,
সেই অনির্বচনীয় নিকুঞ্জদেবী জয়ী হোন।
তন্নঃ প্রত্যক্ষণ চমৎকৃত চারুলীলালাবণ্য মোহন মহামধুরাঙ্গভঙ্গি।
রাধাননং হি মধুরাঙ্গ কলানিধান- মাবির্ভবিষ্যতি কদা রসসিন্ধু সারাম্॥৬॥
ব্যাখ্যা:
যিসে মুখ কমল সে মহামোহন মাধুরী কে
(হাবভাব আদি কে) বিবিধ অঙ্গোং কি
ভঙ্গিমায়ুক্ত সুন্দর লীলাও কা লাবণ্য
প্রতিক্ষণ চমৎকারপূর্ণ বনতা রেহতা হে,
মাধুর্য কে অঙ্গোং কি কলা (চাতুর্য) কা
উত্পত্তি স্থান এভং রসসিন্ধু কা সার রূপ বাহ
শ্রীরাধা-মুখ হামারে সন্মুখ কব প্রকট
হোগা?
ব্যাখ্যা:
যে মুখকমল থেকে মহামোহন মাধুরীর
(হাবভাব প্রভৃতির) বিচিত্র অঙ্গভঙ্গিসহ
সুন্দর লীলাগুলির লাবণ্য প্রতি মুহূর্তে
চমৎকৃত করে তোলে,
যে মুখ মাধুর্যের চাতুর্যের উৎসস্থল
এবং রসসিন্ধুর সাররূপ,
সেই শ্রীরাধার মুখ আমাদের সামনে
কবে প্রকাশিত হবে?
যত্কিঙ্করীষু বহুশঃ খলু কাকুভাণী নিত্যং পরস্য পুরুষস্য শিখণ্ডমৌলেঃ।
তস্যাঃ কদা রসনিধে- বৃষভানুজায়াস্তত্কেলিকুঞ্জ ভবনাংগণ মার্জনীর্শ্যম্॥৭॥
ব্যাখ্যা:
মোরমুকুটধারী পরম পুরুষ শ্রীশ্যামসুন্দর
যিনকী দাসীওঁ সে নিত্য অনেক বার
দীনতাপূর্ণ বচন (শ্রী প্রিয়াজু কৃপা প্রাপ্তি
কে লিয়ে) কহেতে রাহতে হে, উন রসনিধি
শ্রীবৃষভানুনন্দিনী কে কেলিকুঞ্জ- ভবন কো
আঙন কি সোহনি (ঝাড়) লাগানে ওয়ালী
(মই) কবে হোঊঙ্গী?
ব্যাখ্যা:
মোচড়-মুকুটধারী পরম পুরুষ শ্যামসুন্দর
যাঁদের দাসীবর্গের কাছে নিত্য বহুবার
দীনভাষণ করেন, সেই রসনিধি
শ্রীবৃষভানুনন্দিনীর কেলিকুঞ্জের আঙ্গিনার
পরিষ্কারকারিণী আমি কবে হবো?
বৃন্দানি সর্বমহতামপহায় দূরাদ্বৃন্দাটবীমনুসর প্রণয়েন চেতঃ।
সত্তারণীকৃত সুবাভ সুধারসৌঘং রাধাভিধানমিহ দিব্যনিধানমস্তি।।৮।।
ব্যাখ্যা:
হে চিত্ত, তু সভী মহান (সাধনো অৌর
সাধ্যো) কে সমূহ দূরে সে ত্যাগ করকে
প্রেমপূর্ণ শ্রীবৃন্দাবন কা অনুসরণ কর।
(কিয়োঁকি) বহা সজ্জনো কো তারনে কো তৎপর
সুন্দর ভাবরূপী সুদারস সে পূর্ণ শ্রীরাধা
নাম বালি অলৌকিক নিধি বিরাজমান হে।
ব্যাখ্যা:
হে চিত্ত! তুমি সকল মহৎ বস্তুকে দূরে রেখে
শুধু প্রেমের টানে বৃন্দাবন অনুসরণ করো।
সেখানে সজ্জনদের উদ্ধার করতে
উৎসুক এক অপূর্ব প্রেমরসের রাশি আছে,
যার নাম 'শ্রীরাধা'।
কেনাপি নাগরবরেণ পদে নিপত্য সম্প্রার্থিতৈকপরিরম্ভরসোৎসবায়াঃ।
সভ্রূবিভঙ্গমতিরঙ্গনিধেঃ কদা তে শ্রীরাধিকে নহিনহীতিগিরঃ শ্রুণোমি ॥৯॥
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! কোই লোকোত্তর চতুর শিরোমণি
(শ্রীশ্যামসুন্দর) চরণোং মে গিরকর
আপসে একবার রসোৎসব রূপ আলিঙ্গন কী
যাচনা কর রেহে হ্যায় অর হে অতিকৌতুকনিঘি !
আপ আপনী ভৃকুটিওঁ কো বিভঙ্গিত করে
নেহি-নেহি' কহ রহী হ্যায়, মই আপকে ইন শব্দোঁ
কো কবে সুনুঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! কোনো লৌকিকাতীত চতুর শিরোমণি
(শ্রীশ্যামসুন্দর) আপনার চরণে পতিত হয়ে
আপনার কাছে একবার রসোৎসব রূপ আলিঙ্গনের
প্রার্থনা করছেন, এবং হে অতিকৌতুকনিঘি!
আপনি আপনার ভ্রুকুটি ভঙ্গ করে 'নহি-নহি' বলছেন।
আমি আপনার এই বাক্য কবে শুনব?
যত্পাদপদ্মনখচন্দ্রমণিচ্ছটায়া বিস্ফূর্জিতং কিমপি গোপবধূষ্বদর্শি।
পূর্ণানুরাগরসসাগরসারমূর্তিঃ সা রাধিকা ময়ি কদাপি কৃপাং করোতু ॥১০॥
ব্যাখ্যা:
যিনকে চরণ কমল কে নখরূপী চন্দ্রমণি
কী ছটা কা কিছু অনির্বচনীয় বিলাস
গোপীওঁ মে দেখা গয়া হ্যাঁ, বে পূর্ণ অনুরাগ রস
কে সাগর কী সার স্বরূপ মূর্তি শ্রীরাধিকা
মুঝ পর ভী কভী কৃপা করে।
ব্যাখ্যা:
যাঁর চরণকমলের নখচন্দ্রমণির
আলোকের এক অনির্বচনীয় লীলা
গোপীদের মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে,
সেই পরিপূর্ণ অনুরাগরসের সাগরের
সাররূপা শ্রীরাধিকা কখনো আমার প্রতি কৃপা করুন।
উজ্জৃম্ভমাণরসবারিনিধেস্তারঙ্গৈরঙ্গৈরিব প্ৰণয়লোলবিলোচনায়াঃ।
তস্যাঃ কদা নু ভবিতা ময়ি পুন্যদৃষ্টিৱৃন্দাটবীনবনিকুঞ্জগৃহাধিদেব্যাঃ ॥১১॥
ব্যাখ্যা
যিনকে অঙ্গ উৎকৃষ্ট রূপে উল্লসিত রস
সাগর কি তরঙ্গো কে সমান হৈঁ অর যিনকে
নেত্র প্ৰণয় কে কারণ চঞ্চল হো রহে হৈ,
শ্রীবৃন্দাবন কে নব নিকুঞ্জরূপী সদন কি
অধিষ্ঠাত্রী দেবী (শ্রীরাধিকা) কি মুঝ পর
পবিত্র দৃষ্টি কব হোগী?
ব্যাখ্যা:
যাঁর অঙ্গসমূহ মহাসমুদ্রের তরঙ্গসম অনুপম কান্তিময়,
যাঁর নয়ন প্রেমের কারণে চঞ্চল হয়ে উঠেছে,
শ্রীবৃন্দাবনের নব-নিকুঞ্জরূপী সদনের
অধিষ্ঠাত্রী দেবী (শ্রীরাধিকা) কবে আমার প্রতি
পবিত্র দৃষ্টি দেবেন?
বৃন্দাবনেশ্বরি তবৈবপদারবিন্দং প্রেমামৃতৈকমকরন্দরসৌঘপূর্ণম্।
হৃদ্যপিতং মধুপতেঃ স্মরতাপমুগ্রং নির্বাপয়ত্পরমশীতলামাশ্রয়ামি ॥১২॥
ব্যাখ্যা:
হে বৃন্দাবনেশ্বরী শ্রীরাধে, একমাত্র
প্রেমামৃতরূপী পরাগ রস কে প্রবাহ সে পূর্ণ
আপকে চরণ কমল কা মৈ আশ্রয় লেতা হুঁ,
যো পরম শীতল হৈ অর যো মধুপতি
শ্রীশ্যামসুন্দর কে হৃদয় পর রাখে জানে পর
উনকী তীব্র স্মরতাপ (প্রেমব্যথা) কো শান্ত
কর দেতে হ্যাঁ।
ব্যাখ্যা:
হে বৃন্দাবনেশ্বরী শ্রীরাধে, একমাত্র প্রেমামৃতস্বরূপ পরাগ-রসের প্রবাহে পূর্ণ
আপনার চরণকমলের আমি আশ্রয় গ্রহণ করি,
যা পরম শীতল এবং যা যখন
মধুপতি শ্রীশ্যামসুন্দরের হৃদয়ে স্থাপিত হয়,
তখন তাঁর তীব্র স্মরতাপ (প্রেমব্যথা) প্রশমিত করে।
রাধাকরাবচিতপল্লববল্লরীকে, রাধাপদাঙ্কবিলসন্মধুরস্থলীকে।
রাধাযশোমুখরমত্তখগাবলীকে, রাধা-বিহারবিপিনে রমতাং মনো মে ॥১৩॥
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধা কে করকমলো সে যিন লতাওঁ কে
কোমল পত্তে চুনে গয়ে হ্যাঁ, এসি লতাওঁ বালে,
শ্রীরাধা কে চরণ কমলো কে চিহ্নোং সে
শীভায়মান মনোহর স্থল বালে অর শ্রীরাধা
কে যশোগান সে চহচহাতে মত্ত-পক্ষিয়োং কে
সমূহ বালে, শ্রীরাধা কে এসে বিহারবন
(শ্রীবৃন্দাবন) মে মেরা মন নিরন্তর রমতা
রহে।
ব্যাখ্যা:
যে লতাগুলির কোমল পাতা শ্রীরাধার করকমল দ্বারা স্পর্শিত হয়েছে,
যে লতাবেষ্টিত বনভূমি শ্রীরাধার চরণকমলের চিহ্নে শোভিত,
যেখানে শ্রীরাধার গৌরবগান ধ্বনিত হয়,
মত্ত বিহঙ্গের কলতানে মুখরিত সে বনভূমি,
সেই শ্রীরাধার বিহারবন (শ্রীবৃন্দাবন)
আমার মন সদা নিমগ্ন থাকুক।
কৃষ্ণামৃতং চল বিগাঢুমিতীরিতাহং, তাবত্সহস্ব রজনী সখি যাবদেতি।
ইত্থং বিহস্য বৃষভানুসুতেহ লপ্স্যে, মানং কদা রসদকেলি কদম্ব জাতম্ ॥১৪॥
ব্যাখ্যা
(সখী কহ রই হে শ্রীরাধা দ্বারা) মুজসে
যব এই বচন কহে জায়েংগে যে 'কৃষ্ণামৃত'
(যমুনা জল অর শ্রীকৃষ্ণ রূপী অমৃত) কা
অবগাহন (স্নান অর উপভোগ) করনে চলো
তো মই কহুংগী 'হে সখী, যব তক রাত্রী আবে
তব তক ধৈর্য ধারন করো। হে
বৃষভানুনন্দিনী! ইস প্রকার পরিহাস করকে
মই আপকে হাত সে রসপ্রদ কেলিকদম্ব (ক্রীড়া
কে লিয়ে ধারণ কিয়ে হুয়ে কদম্ব পুষ্প) সে
(তাড়ন রূপ) মান কব প্রাপ্ত করুংগী?
ব্যাখ্যা:
(সখী বলছেন যে, শ্রীরাধা যখন) আমাকে এই বাক্য বলবেন—
"চলো, কৃষ্ণামৃত" (যমুনার জল ও শ্রীকৃষ্ণরূপী অমৃত)
স্নান ও উপভোগ করতে যাই,
তখন আমি বলব—
"হে সখী, রাত না আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরো।"
হে বৃষভানুনন্দিনী!
এইরূপ পরিহাস করে,
আপনার হাতে থাকা রসময় কেলিকদম্ব (ক্রীড়ার জন্য ধারণ করা কদম্বপুষ্প) দিয়ে
(অভিমান ভাঙানোর জন্য) আলতো আঘাত কবে পাবো?
পাদাঙ্গুলী নিহিত দৃষ্টিমপত্রপিষ্ণুং, দূরাদুদীক্ষ্যরসিকেন্দ্রমুখেন্দুবিম্বম্।
বীক্ষে চলত্পদগতিং চরিতাভিরামাং- ঝঙ্কারনূপুরবতীং বত কহি রাধাম্ ॥১৫॥
ব্যাখ্যা
(শ্রীরাধা কে) চরণোং কী অঙ্গুলিয়োং পর দৃশ্টি
লাগায়ে হুয়ে রসিক শিরোমণি শ্রীশ্যামসুন্দর
কে (তীব্র অভিলাষা কে কারণে) সালজ্জ
মুখ চন্দ্র মণ্ডল কো দূর সে দেখকে, বাজতে
হুয়ে নূপুর ওয়ালে চরণোং কী গতি সে যুক্ত এবং
আপনে সুন্দর চরিত্রোং সে রমনীয় বনী হুয়ে
শ্রীরাধা কো, আহা হা, (মৈ) কবে দেখুংগী?
ব্যাখ্যা:
(শ্রীরাধার) চরণ-অঙ্গুলির দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে থাকা,
রাসিকশ্রেষ্ঠ শ্রীশ্যামসুন্দরের
(তীব্র আকাঙ্ক্ষার ফলে) লজ্জায় উজ্জ্বল
মুখচন্দ্রকে দূর থেকে দেখে,
নূপুরের মৃদু রিনঝিন ধ্বনিসহ
চরণগতি দ্বারা মোহময়,এবং নিজের অপূর্ব লীলাচরিত্রে রমণীয় হয়ে থাকা
শ্রীরাধাকে—আহা! কবে আমি দর্শন করবো?
উজ্জাগরং রসিকনাগর সঙ্গ রঙ্গৈঃ কুঞ্জোদরে কৃতবতী নু মুদা রজন্যাম্।
সুস্নাপিতা হি মধুনৈব সুবোজিতা ত্বং, রাধে কদা স্বপিষি মকর লালিতাংঘ্রিঃ ॥১৬॥
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে, আপনে (যব) সারী রাত কুঞ্জ
ভবন মে নিশ্চয় হি রসিক শেখর
শ্রীশ্যামসুন্দর কে সাথ হর্ষপূর্বক প্রেমবিহার
মে জাগরণ কিয়া হো (তব মেরে দ্বারা) স্নান
অর সুমধুর ভোজন করাই গই আপ মেরে
হাথোং সে আপন চরণোং কা লালন পাকর কব
শয়ন করোগী?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে,
আপনি যখন সম্পূর্ণ রজনী কুঞ্জভবনে,
নিশ্চিতভাবে রাসিকশেখর শ্রীশ্যামসুন্দরের সঙ্গে,
আনন্দসহ প্রেমবিহারে জাগরণ করবেন,
তখন (আমার দ্বারা) স্নান ও সুমধুর ভোজন সম্পন্ন করে,
আমার হাতের স্পর্শে আপনার চরণযুগল লালন পেয়ে,
কবে আপনি শান্তিতে শয়ন করবেন?
বৈদগ্ধ্যসিন্ধুরনুরাগ রসৈকসিন্ধুর্বাত্সল্যসিন্ধুরতিসান্দ্রকৃপৈকসিন্ধুঃ।
লাবণ্যসিন্ধুরমৃতচ্ছভিরূপ সিন্ধুঃ, শ্রীরাধিকা স্ফুরতু মে হৃদি কেলি সিন্ধুঃ ॥১৭॥
ব্যাখ্যা
(গান, নৃত্য, বাদ্য আদি সমস্ত কলা ও মে)
চতুরতা কি সিন্ধু, অনুরাগ-রস কি
একমাত্র সিন্ধু, মাতৃত্ব কি সিন্ধু, অতন্ত
ঘনীবূত করুণা কি একমাত্র সিন্ধু, লাবণ্য
কি সিন্ধু, শাশ্বত কান্তি বালে রূপ কি
সিন্ধু অর কেলিক্রীড়াওঁ কি সিন্ধু
শ্রীরাধিকা মেরে হৃদয় মে স্ফুরিত হো।
ব্যাখ্যা:
(গান, নৃত্য, বাদ্যসহ সকল কলায়)
নৈপুণ্যের মহাসিন্ধু,
অনুরাগ-রসের একমাত্র উৎস,
বাত্সল্যের অপরিসীম সাগর,
ঘনীভূত করুণার একমাত্র আশ্রয়,
লাবণ্যের অসীম জ্যোতি,শাশ্বত সৌন্দর্যের দীপ্তিময় রূপের আধার,
এবং কেলিক্রীড়ার অপরিসীম উৎস—শ্রীরাধিকা আমার হৃদয়ে চিরকাল প্রকাশিত হোন!
দৃষ্টৈব চম্পকলতেব চমৎকৃতাঙ্গী, বেণুধ্বনিং ক্ব চ নিশম্য চ বিহ্বলাঙ্গী।
সা শ্যামসুন্দরগুণৈরনুগীয়মানৈঃ প্রীতা পরিষ্বজতু মাং বৃষভানুপুত্রী ॥১৮॥
ব্যাখ্যা:
জো আপনে প্রিয়তম শ্রীশ্যামসুন্দর কো দেখতে
হি চম্পকালতা কে সমান অঙ্গ-অঙ্গ সে
চমৎকৃত হো উঠতি হৈ অর কভী বংশী-ধ্বনি
কো শুনকর বিহ্বল হো জাতি হ্যাঁ এসি
শ্রীবৃষভানুনন্দিনী, (মেরে দ্বারা)
শ্রীশ্যামসুন্দর কে গুণোং কা গান কিয়ে জানে
পর, প্রসন্ন হোকর মুঝে (কব) আলিঙ্গন
করোগী?
ব্যাখ্যা:
যিনি তাঁর প্রিয়তম শ্রীশ্যামসুন্দরকে দেখামাত্র
চম্পকলতার মতো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে
অলৌকিক কান্তিতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠেন,
যিনি কখনো বাঁশির সুর শুনে প্রেমবিহ্বল হয়ে পড়েন,
সেই শ্রীবৃষভানুনন্দিনী—
আমি যখন শ্রীশ্যামসুন্দরের গুণগান করব,
তখন কবে তিনি প্রসন্ন হয়ে
আমাকে স্নেহভরে আলিঙ্গন করবেন?
শ্রীরাধিকে সুরতরঙ্গি নিতম্ব ভাগে কাঞ্চীকলাপ কল হংস কলানুলাপৈঃ।
মঞ্জীরসিঞ্জিত মধুব্রত গুঞ্জিতাঙ্গৃহিঃ পঙ্কেরুহৈঃ শিশিরযস্ব রসচ্ছটাভিঃ ॥১৯॥
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে, বিহার কে রঙ সে রঞ্জিত আপনার
নিতম্ব ভাগ পর ধারণ কি হুয়ে কর্ধনী সমূহ
নূপুর কি ধ্বনিরূপী শ্রমরোং কি গুজ্জার সে
যুক্ত চরণকমলোং কে দ্বারা আপনী রস কি
ছটাওঁ সে মুঝে শীতল করো।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে, বিহারের রঙে রঞ্জিত
আপনার নিতম্বদেশে পরিধান করা কর্ধনী (নূপুরসহ কোমরবন্ধ),
যার মৃদু শব্দ মধুমক্ষিকাদের গুঞ্জনের মতো প্রতিধ্বনিত হয়,
সেই নূপুররবে মুখরিত চরণকমল দিয়ে,আপনার রসময় সৌন্দর্যের ছটায়
আমাকে কবে শীতল করবেন?
শ্রীরাধিকে সুরতরঙ্গিণি দিব্যকেলি কল্লোলমালিনিলসদ্বদনারবিন্দে।
শ্যামামৃতাম্বুনিধি সংগমতীব্রবেগিন্যাবর্ত্তনাভি রুচিরে মম সন্নিধেহি ॥২০॥
ব্যাখ্যা:
হে দেবনদী কে সমান শ্রীরাধিকে, আপ দীব্য
বিহাররূপী তরঙ্গ মালাওঁ সে মন্ডিত মুখ
কমল বালী হো তথা অমৃতরসসাগর রূপ
আপনে প্রিয়তম শ্রীশ্যামসুন্দর কে সমাগম কে
লিয়ে তীব্র গতি সে (বঢ়তী হুয়ে) আপ আপনী
নাভি রূপী ভঁবর সে আকৰ্ষক বনি হুয়ে হো।
আপ মুঝে আপনী সমীপতা প্রদান কিজিয়ে।
ব্যাখ্যা:
হে দেবনদীর সদৃশ শ্রীরাধিকে,আপনি দিব্য বিহাররূপী তরঙ্গমালায় শোভিত,
যাঁর মুখকমল সেই লীলার সৌন্দর্যে অলৌকিকভাবে উজ্জ্বল।
আপনি অমৃতরসসাগর স্বরূপ প্রিয়তম শ্রীশ্যামসুন্দরের
সমাগমের জন্য তীব্র আকুলতায় এগিয়ে চলেছেন,
এবং আপনার নাভি-ভ্রমররূপ আকর্ষণ সেই মিলনের গভীর রহস্যকে প্রকাশ করছে।
হে রাধিকা! আপনি কবে আমাকে আপনার সান্নিধ্য দান করবেন?
সত্প্রেম সিন্ধু মকরন্দ রসৌঘধারা সারানজস্রমভিতঃ স্রবদাশ্রিতেষু।
শ্রীরাধিকে তব কদা চরণারবিন্দং গোবিন্দ জীবনধনং শিরসা বহামি ॥২১॥
ব্যাখ্যা:
হৈ শ্রীরাধিকে! শ্রীগোবিন্দ কে জীবন সর্বস্ব
উন চরণকমলোঁ কো (মৈঁ) কব আপনে সির
পর ধারণ করুঁগী জো আপনে আশ্রিত জনোঁ
পর চারোঁ অর সে নির্মল প্রেমসিন্ধু কে
মকরন্দ রস কে প্রবাহ কী অট্ঠ ধারা কো
নিরন্তর বরসাতে রহতে হৈঁ।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে! যে চরণকমল শ্রীগোবিন্দের প্রাণের সর্বস্ব,
যে চরণ যুগল তাদের আশ্রিত ভক্তদের উপর
শুদ্ধ প্রেমসিন্ধুর মধুর রসধারা
অষ্টদিক থেকে অবিরাম বর্ষণ করে,
সেই দিব্য চরণকমল আমি কবে
আমার শিরে ধারণ করার সৌভাগ্য লাভ করবো?
সঙ্কেত কুঞ্জমনুকুঞ্জর মন্দগামিন্যাদায় দিব্যমৃদুচন্দনগন্ধমাল্যম্।
ত্বাং কামকেলি রভসেন কদা চলন্তীং রাধেনুয়ামি পদবীমুপদর্শয়ন্তী ॥২২॥
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! প্রেমবিহার কে আৱেগ সে সংকেত
কুঞ্জ কি অর গজ জৈসী মন্দ গতি সে প্রস্থান
করতী হুয়ী আপকে পীছে-পীছে, দিব্য ঔর
কোমল চন্দন তথা সুগন্ধিত মালা লেকর
আপকো মার্গ দিখাতী হুয়ী, মইঁ কভ চলুঁগী?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! যখন প্রেমবিহারের আবেগে আপ্লুত হয়ে,
ইঙ্গিতে কুঞ্জভবনের দিকে গজগামিনীর মতো মন্দগতি সম্পন্ন হয়ে আপনি প্রস্থান করবেন,
তখন আমি আপনার পেছন পেছন দিব্য ও কোমল চন্দন এবং সুগন্ধিত মালা ধারণ করে,
আপনার পথপ্রদর্শন করতে করতে কবে চলার সৌভাগ্য লাভ করবো?
গত্বা কালিন্দতনয়া বিজনাবতারমুদ্বরর্তয়ন্ত্যমৃতমঙ্গমনঙ্গজীবম্।
শ্রীরাধিকে তব কদা নবনাগরেন্দ্রং পশ্যামি মগ্ন নয়নং স্থিতমুচ্চনীপে ॥২৩॥
ব্যাখ্যা :
হৈ শ্রীরাধিকে! শ্রীযমুনাজী কে নির্জন ঘাট
পর জাকর অনঙ্গ কো জীবিত কর দেনে বালে
আপকে অমৃতময় শ্রীঅঙ্গোঁ কো উবটন লগাতী
হুয়ী মইঁ, উচ্চে কদম্ব বৃক্ষ পর বৈঠে হুয়ে মগ্ন নেত্রোঁ
বালে আপকে নবনাগর শিরোমণি
(অশ্রীয়্যামসুন্দর) কো কব দেখুঁগী?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে! যমুনার নিঃসঙ্গ ঘাটে গিয়ে,
যে দিব্য শরীর অনঙ্গদেব (কামদেব)-কেও পুনর্জীবিত করতে সক্ষম,
সেই আপনার অমৃতময় অঙ্গ উবটন দ্বারা শোভিত করতে করতে—
আমি কবে দেখবো, উঁচু কদম্ববৃক্ষের শাখায় বসে থাকা,
প্রেমমগ্ন দৃষ্টিতে নিমগ্ন, আপনার নবনাগর শিরোমণি—
শ্রীশ্যামসুন্দরকে?
সত্প্রেম রাশিঃ সরসো বিকসৎসরোজং স্বানন্দসীধু রসসিন্ধু বিবর্ধনেন্দুম্।
তচ্ছীমুখং কুটিল কুন্তলভৃঙ্গজুষ্টং শ্রীরাধিকে তব কদা নু বিলোকয়িষ্যে ॥২৪॥
ব্যাখ্যা :
হৈ শ্রীরাধিকे! আপকে উস শোভাশালী মুখ
কা পুনঃ ('নু') কব দর্শন করুঁগী জো
বিশুদ্ধ প্রেমপুঞ্জজ কে সরোবর মে খিলে হুয়ে
কমল কে সমান হৈ, জো নিজানন্দরূপ অমৃত
সে পূর্ণ রসসিন্ধু কো বড়ানে মে পূর্ণ চন্দ্র কে
সমান হৈ এবম্ জো ঘুঞ্জপলী অলকাবলী রূপ
ভ্রমরোঁ সে ঘিরা হুয়া হৈ।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে! কবে আমি পুনরায় দর্শন করবো
আপনার সেই শোভাময় মুখকমল,
যা বিশুদ্ধ প্রেমপ্রকাশের সরোবর থেকে বিকশিত পদ্মের ন্যায়?
যা স্বীয় আনন্দরূপ অমৃত দ্বারা,
রসময় সাগরকে পূর্ণচন্দ্রের মতো বৃদ্ধি করে?
যার চারদিকে ঘনকৃষ্ণ অগ্নিহীন আলকাবলীরূপ ভ্রমর
মুগ্ধ হয়ে ঘিরে থাকে?
লাবণ্য সার রস সার সুখৈক সারে কারুণ্য সার মধুরচ্ছভিরূপ সারে।
বৈদগ্ধ্য সার রতি কেলি বিলাস সারে রাধাভিধে মম মনোখিল সার সারে ॥২৫॥
ব্যাখ্যা :
লাবণ্য কে সার, রস কে সার, সুখ কে
একমাত্র সার, করুণা কে সার, মধুর ছবি
ওয়ালে রূপ কে সার, চতুরতা কে সার, প্রেম-
ক্রীড়া-বিলাস কে সার তথা সমস্ত সারোঁ কে
সার শ্রীরাধা নাম মে মেরা মন রমণ করে।
ব্যাখ্যা:
যে নাম লাবণ্যের সার, যে নাম রসের নির্যাস,
যে নাম পরম আনন্দের একমাত্র উৎস, যে নাম করুণার নীড়,
যে নাম মধুর সৌন্দর্যের পরিপূর্ণ রূপ, যে নাম চাতুর্যের প্রতীক,
যে নাম প্রেমক্রীড়া-বিলাসের মূল, এবং যে নাম সমস্ত গুণের পরমসার,
সেই শ্রীরাধা নামেই আমার চিত্ত চিরকাল নিমগ্ন থাকুক!
চিন্তামণিঃ প্ৰণমতাং ব্রজনাগরীণাং চূডামণিঃ কুলমণির্বৃষভানুনাম্নঃ।
সা শ্যাম কাম বর শান্তি মণির্নিকুঞ্জ ভূষামণির্হৃদয়-সম্পুট সন্মণির্নঃ ॥২৬॥
ব্যাখ্যা:
যো প্রণাম মাত্র করনে বালো চিন্তামণি
(সম্পূর্ণ চিত্তিত পদার্থোঁ কো প্রাপ্ত করানে
ওয়ালি), ব্রজ সুন্দরীঁ কী শিরোমণি,
শ্রীবৃশভানু কে কুল কী মণি (প্রকাশ করনে
ওয়ালি), আপনে প্রীতম কে অত্যন্ত উগ্র অনঙ্গ
(কাম) কো শান্ত করনে ওয়ালি শীতলমণি
অর নিকুঞ্জ ভবন কো ভূষিত করনে ওয়ালি
শোভামণি হই, বো (শ্রীরাধা) হমারে হৃদয় রূপ
সম্পুট (ডিব্বা) কি শ্রেষ্ঠতম মণি হই।
ব্যাখ্যা:
যিনি শুধুমাত্র প্রণাম করলেই চিন্তামণির মতো সমস্ত অভীষ্ট ফল প্রদান করেন,
যিনি ব্রজবধূদের শিরোमণি, যিনি শ্রীবৃষভানুর কুলের উজ্জ্বল রত্ন,
যিনি প্রিয়তম শ্রীশ্যামসুন্দরের প্রবল অনঙ্গ-জ্বালা শান্ত করার শীতলমণি,
যিনি নিকুঞ্জভবনকে অলঙ্কৃত করা শোভামণি,
সেই শ্রীরাধা
আমাদের হৃদয়রূপী সম্পুটের (রত্নডিব্বার)
শ্রেষ্ঠতম মণি হয়ে বিরাজ করুন!
মঞ্জুস্বভাবমধিকল্পলতানিকুঞ্জ ব্যঞ্জন্তমদ্ভুতকৃপারসপুঞ্জমেব।
প্রেমামৃতাম্বুধিমগাধমবাদ্ধমেতং রাধাভিধং দ্রুতমুপাশ্রয় সাধু চেতঃ ॥২৭॥
ব্যাখ্যা
হৈ মন! তু উস শ্রীরাধা নামক প্রেমামৃত কে
অগাধ অর বাধা শূন্য সাগর কা শীঘ্র
ভলিভাঁতি আশ্রয় গ্রহণ কর জো কোমল
স্বভাব ওয়ালা (হৈ), জো কল্পলতা কি কুঞ্জ
মে বিরাজমান (হৈ) অর জো অদ্ভুত কৃপা রস
কে সমূহ কো প্রকাশ করতা হৈ।
ব্যাখ্যা:
হে মন! তুমি দ্রুত আশ্রয় নাও সেই শ্রীরাধা-নামরূপ প্রেমামৃতের
অগাধ ও বাধাহীন সাগরে,
যা অপরিসীম কোমলতা ও স্নেহময়,
যা কল্পলতার কুঞ্জে বিরাজমান,
এবং যা অদ্ভুত করুণা-রসের
সাগররূপে চিরকাল প্রবাহিত!
শ্রীরাধিকাং নিজ বিটেন সহালপন্তীং।
শোণাধর প্রসমরচ্ছভি-মঞ্জরীকাম্।
সিন্দূর সম্ভলিত মৌক্তিক পংক্তি শোভাং।
যো ভাবয়েদ্দশন কুন্দবতীং স ধন্যঃ ॥২৮॥
ব্যাখ্যা
যো কোই শ্রীরাধিকা কি ভাবনা
(অন্তঃকরণ মে সাক্ষাৎকার) করতা হৈ, বহ
ধন্য হৈ। যো (শ্রীরাধিকা) আপনে লম্পট
প্রীতম কে সাথ বাত চীত কর রহি হইঁ, যো
লাল বর্ণ কে আধঘরোঁ সে ছিটকতী হুয়ী
কান্তি-মঞ্জরী সে যুক্ত হইঁ অর জিনকী
কুন্দকলী কে সমান দন্ত পংক্তি সিন্ধূর সে
সনি হুয়ী মোতিয়োঁ কি লড়ী কে সমান হৈ
(পান কে রণ সে রেংগী হোনে কা কারন)।
ব্যাখ্যা:
যে ব্যক্তি শ্রীরাধিকার ভাবনা (অন্তরে সাক্ষাৎ উপলব্ধি) করেন, সে-ই প্রকৃত ধন্য।
যিনি লাম্পট্যপ্রবণ প্রিয়তম শ্রীশ্যামসুন্দরের সঙ্গে
স্নেহভরে কথা বলছেন,
যাঁর লালিমাময় অধর থেকে উজ্জ্বল কান্তি-মঞ্জরী বিকীর্ণ হচ্ছে,
এবং যাঁর কুন্দকুঁড়ির মতো শুভ্র দন্তপঙ্ক্তি
পানরসে লাল হয়ে সিন্দুরে রঞ্জিত মুক্তোর মালার মতো শোভিত—
সেই শ্রীরাধিকার চিরসৌন্দর্য আমাদের হৃদয়ে চিরদিন বিরাজ করুক!
পীতারুণচ্ছভিমানন্ততড়িল্লতাভাং প্রৌঢ়ানুরাগ মদবিহ্বল চারুমূর্ত্তিম্।
প্রেমাস্পদাং ব্রজমহীপতি তন্মহিষ্যোগোঃ গোবিন্দবন্মনসি তাং নিদধামিরাধাম্ ॥২৯॥
ব্যাখ্যা
ব্রজ মহীপতি (নন্দজি) অর উনকি পটরাণী
(যশোদাজি) কে প্রেম কি, শ্রীগোবিন্দ কে
সমান পাত্রী উন শ্রীরাধা কো মইঁ মন মে
ধারণ করতা হুঁ, যো অরুণতা লিয়ে পীতছবি
ওয়ালি হইঁ অর্থাৎ স্বর্ণ কান্তি ওয়ালি হইঁ, যো
অসংখ্য বিদ্যুত্ লতাঁও জৈসি আভা ওয়ালি হইঁ
অর যো প্রবল অনুরাগ কে মদ সে বিভোর
বনী হুয়ী সুন্দর আকার ওয়ালি হইঁ।
ব্যাখ্যা:
আমি মনোযোগ সহকারে হৃদয়ে ধারণ করি
সেই শ্রীরাধাকে, যিনি ব্রজের মহীপতি নন্দজী ও পटरানী যশোদার
অপরিসীম প্রেমের একমাত্র যোগ্য অধিকারিণী,
যেমন শ্রীগোবিন্দ সেই প্রেমের যোগ্য পাত্র।
যিনি হালকা অরুণাভা মিশ্রিত পীতাভ কান্তিযুক্ত,
অর্থাৎ সুবর্ণ জ্যোতিতে দীপ্তিমান,
যাঁর অসংখ্য বিদ্যুত্বলতার ন্যায় প্রভাময় দীপ্তি ছড়িয়ে পড়ছে,
এবং যিনি প্রগাঢ় অনুরাগের উন্মাদনায় ভাস্বর রূপসম্পন্ন হয়ে বিরাজ করছেন।
নির্মায়চারুমুকুটং নৱ চন্দ্রকেণ গুঞ্জাভিরারচিত হারমুপাহরন্তী।
বৃন্দাটবী নবনিকুঞ্জ গৃহাধিদেব্যাঃ শ্রীরাধিকে তব কদা ভবিতাস্মি দাসী ॥৩০॥
ব্যাখ্যা
শ্রীবৃন্দাবন কে নব নিকুঞ্জ কি অধিষ্ঠাত্রী
দেবী হৈ শ্রীরাধিকে | নবীন মোর পিচ্ছ কা
মনোহর মুকুট বানাকর তথা গুজ্জাওঁ সে
ভলিভাঁতি গুথী হুয়ী মালা সমর্পিত করতি
হুই, মইঁ আপকি কিঙ্করি কব বানুঙ্গী?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে! আপনি শ্রীবৃন্দাবনের নব-নিকুঞ্জের পরম অধিষ্ঠাত্রী দেবী।
আমি নবীন ময়ূরপুচ্ছ দিয়ে অত্যন্ত মনোরম মুকুট তৈরি করে,
এবং গুঞ্জামালার সূক্ষ্ম বুননে সুন্দর গন্ধরাজ্য সাজিয়ে,
আপনার চরণে সমর্পণ করতে করতে,
কবে আপনার দাসী হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করবো?
সঙ্কেত কুঞ্জমনুপল্লবমাস্তরীতুম্ তত্তত্তপ্রসাদমভিত্ খলু সংবরীতুম্।
ত্বাং শ্যামচন্দ্রমভিসারযিতুম্ ধৃতাশে শ্রীরাধিকে ময়ি বিধেহি কৃপা কটাক্ষম্ ॥৩১।।
ব্যাখ্যা
সংকেত কুঞ্জ মধ্যে পল্লবোন কি শয্যা বিছানে কে
লিয়ে, আপকো শ্যাম চন্দ্র কে প্রতি অভিসার
করানে (লে যাওনে) কে লিয়ে, তথা মুঝ পর
কিয়ে গয়ে বিভিন্ন কৃপা প্রসাদোন কো সর্ব
প্রকার সে দৃঢ়তাপূর্বক বরণ করনে কে লিয়ে
আশা লাগায়ে হুয়ে মুঝপর হে শ্রীরাধিকে!
কৃপাদৃষ্টি কিজিয়ে।
ব্যাখ্যা
সংকেত কুঞ্জে পল্লবের শয্যা বিছানোর জন্য,
আপনাকে শ্যাম চন্দ্রের প্রতি অভিসার করানোর (নিয়ে যাওয়ার) জন্য,
এবং আমার প্রতি প্রদত্ত বিভিন্ন কৃপা প্রসাদকে সর্বপ্রকারে দৃঢ়ভাবে গ্রহণ করার জন্য,
আশা নিয়ে আমি আপনার প্রতি তাকিয়ে আছি,
হে শ্রীরাধিকা! কৃপাদৃষ্টি করুন।
দূরাদপাস্য স্বজনান্সুখমার্থে কোটি সার্বেষু সাধনবরে ষু চিরং নিরাশঃ।
বর্ষন্তমেভ সহজাদ্ভুত সৌখ্য ধারাং শ্রীরাধিকা চরণরেণুমহং স্মরামি ॥৩২।।
ব্যাখ্যা
আপনে বন্ধু-বান্ধবোন কো, সমস্ত সুখোন কো
অর কৌটি-কৌটি সম্পত্তিওন কো দূর সে হি
ত্যাগ কর তথা শ্রেষ্ঠ পারমার্থিক সাধনোন সে
চিরকাল তক নিরাশ হোকার ম্যায় একমাত্র
সহজ আশ্চর্যময়ী সুখ কি ধারা বরসাতি
হুই শ্রীরাধিকা কি চরণ রজ কা স্মরণ
করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা
নিজের বন্ধু-বান্ধব, সমস্ত সুখ এবং কোটি-কোটি সম্পদকে দূর থেকে ত্যাগ করে
এবং সর্বোত্তম পারমার্থিক সাধনার মাধ্যমে দীর্ঘকাল ধরে নিরাশ হয়ে,
আমি একমাত্র সহজে বিস্ময়কর আনন্দধারা বর্ষণকারী
শ্রীরাধিকার চরণরজের স্মরণ করি।
বৃন্দাটভী প্রকাশ মন্মথ কোটি মূর্ত্তে কস্যাপি গোকুলকিশোর নিশাকরস্য।
সর্বস্ব সম্পুটভিভ স্তনশাতকুম্ভ কুম্ভদ্বয়ং স্মর মনো বৃ্ষভানুপুত্র্যাঃ ॥৩৩।।
ব্যাখ্যা
হৈ মেরে মন ! শ্রীবৃন্দাবন মে নিত্য প্রকাশ
কোটি-কোটি কামদেব সে ভি সুন্দর বিগ্রহ
বালে কিসি (অনির্বচনীয়) গোকুল কিশোর
চন্দ্রমা কে সর্বস্ব কো রখনে কি পিঠারী
(সম্পুট) জৈসে শ্রীবৃষভানুনন্দিনী কে স্বর্ণ
কলশ কে সমান শ্রী অঙ্গ যুগল কা স্মরণ
কর ।
ব্যাখ্যা
হে আমার মন! শ্রীবৃন্দাবনে চিরকাল প্রকাশিত, কোটি-কোটি কামদেবের
চেয়েও সুন্দর বিগ্রহযুক্ত, সেই (অবর্ণনীয়)
গোকুল-কিশোর চন্দ্রের সমস্ত কিছু ধারণকারী পাত্রের মতো,
শ্রীবৃষভানুনন্দিনীর সুবর্ণ কলসের মতো
শ্রী অঙ্গ যুগলের স্মরণ কর।
সান্দ্রানুরাগ রাসসার সরঃ সরোজং কিম্বা দ্বিধা মুকুলিতং মুখচন্দ্র ভাসা।
তন্নূতন স্তন যুগং বৃষভানুজায়াঃ স্বানন্দ সীধু মকরন্দ ঘনং স্মরামি ॥৩৪।।
ব্যাখ্যা
শ্রীবृষভানুনন্দিনী কে নিজানন্দরূপী অমৃত
কে ঘনীভূত মকরন্দ (পরাগ) সে পূর্ণ উন
নবীন শ্রীঅঙ্গ যুগল কা (মই) স্মরণ কর্তি
হুঁ (যিনকো দেককার ইহ ভ্রান্তি হোতি হ্যাঁ কি
ইনকে রূপ মে) ক্যা নিবিড় অনুরাগ রস সার
কে সরোবর কা পদ্ম হি মুখচন্দ্র কী কান্তি
সে দৌ ভাগো মে বিভাজিত হোক কলী রূপ মে
পরিণত হো গয়া হ্যাঁ!
নোট - (চন্দ্র কো দেককার পদ্ম মুকুলিত হো
জাতা হ্যায়-কালী রূপ মে বদল জাতা হ্যায়। শ্রী
রাধা কা মুখচন্দ্র কা প্রকাশ স্বাভাবিক
রূপ সে উরোজ কমলো পর পড়তা রেহতা হ্যায় অর
স্থায়ী রূপ সে কমল কী কলী কে আকার
সে বানী রেহতা হ্যায়। )
ব্যাখ্যা
শ্রীবৃষভানুনন্দিনী এর নিজানন্দরূপী অমৃত
এর ঘনিভূত মকরন্দ (পরাগ) থেকে পূর্ণ তাদের
নবীন শ্রীঅঙ্গ যুগল এর (আমি) স্মরণ করি
হই (যাদের দেখে এই বিভ্রান্তি হয় যে
তাদের রূপে) কি নিবিড় অনুরাগ রস সারের
সারোবরের পদ্মই মুখচন্দ্রের কান্তি
থেকে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে কল্পি রূপে
পরিণত হয়েছে!
নোট - (চন্দ্রকে দেখে পদ্ম মুকুলিত হয়
যায়-কল্পি রূপে পরিবর্তিত হয়। শ্রী
রাধার মুখচন্দ্রের প্রজ্জ্বলন স্বাভাবিক
রূপে উরোজ পদ্মগুলোর উপর পড়ে থাকে এবং
স্থায়ীভাবে পদ্মের কল্পির আকারে
থেকে যায়। )
ক্রীড়াসরঃ কনক পংকজ কুড্মলায় স্বানন্দপূর্ণ রসকল্পতারোঃ ফলায় ।
তস্মৈ নমো ভূবনমোহন মোহনায়, শ্রীরাধিকে তব নবস্তন মণ্ডলায় ।।৩৫।।
ব্যাখ্যা
হৈ শ্রীরাধিকেই! আপকে উস নবীন স্তন-
মণ্ডল কো নমস্কার হো, (যো) ক্রীড়া
সরোবর কে স্বর্ণ কমল কী কলী কে সমান
হ্যায়, (যো) নিজানন্দ সে পূর্ণ রসময় কল্পবৃক্ষ
কে ফল কে সমান (হ্যায়) (অর যো) ত্রিভুবন
মোহন শ্রীশ্যামসুন্দর কো ভি মোহিত করনে মে
সমর্থ (হ্যায়)।
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধিকেঁ! আপনার সেই নতুন স্তন-মন্ডলকে নমস্কার,
(যেটি) খেলা তীর্থের সোনালী পদ্মের কঙ্কণী মঞ্জুরির মতো,
(যেটি) নিজ আনন্দে পরিপূর্ণ রসপূর্ণ কল্পবৃক্ষের ফলের মতো
(এবং যেটি) ত্রিভুবন মোহন শ্রীশ্যামসুন্দরকেও মোহিত করতে সক্ষম।
পত্রাবলীম্ রচয়িতুম্ কুচযোঃ কপোলে বাঁধুং বিশিত্র কবরীং নব মল্লিকাভিঃ ।
অঙ্গং চ ভূষয়িতুমাভরণৈর্ধৃতাশে শ্রীরাধিকে ময়ি বিধেহি ক্রিপাবলোকম্ ।।৩৬।।
ব্যাখ্যা
হৈ শ্রীরাধিকি! আপকে স্তন এবং কপোলের উপর
পত্রাবলী কি রচনা করনে কে লিএ, নবীন
মল্লিকা কে পুষ্পো সে (আপকে) অদ্ভুত
কেশপাশ কো সাজানে কে লিএ অর আভূষণো
সে (আপকে) শ্রী অঙ্গ কো বিভূষিত করনে কে লিএ
আশা লাগায়ে হুয়ে মুঝপর কৃপা দৃষ্টি
কিজিয়ে।
ব্যাখ্যা
হে শ্রীরাধিকে! আপনার স্তন ও কপোলে
পাতার অলঙ্কার রচনার জন্য, নতুন মল্লিকা ফুল দিয়ে
(আপনার) অপূর্ব কেশপাশ সাজানোর জন্য
এবং গহনায় (আপনার) শ্রীঅঙ্গ বিভূষিত করার জন্য
আশায় অপেক্ষারত
আমার প্রতি কৃপাদৃষ্টি দিন।
শ্যামেতি সুন্দরবরেতি মনোহরেতি কন্দপ-কোটি-ললিতেতি সুনাগরেতে ।
সোত্কণ্ঠমহ্বি গৃণতি মুহুরাকুলাক্ষী সা রাধিকা ময়ি কদা নু ভবেত্প্রসন্না ।।৩৭।।
ব্যাখ্যা
হৈ শ্যাম! হৈ সুন্দরবর! হৈ মনোহর! হৈ কোটি
কামদেওঁ সে ভি কমনীয়! হৈ শ্রেষ্ঠ নটনাগর!
(ইস প্রকার) দিন মে বারবার উত्কণ্ঠা পূর্বক
উচ্চারণ করতি হুয়ী ব্যাকুল নেত্রোঁ ওয়ালী
শ্রীরাধা ক্যা কভী মুঝপর প্রসন্ন হোঙ্গী?
ব্যাখ্যা
হে শ্যাম! হে সুন্দরবর! হে মনোহর! হে কোটি
কামদেবের থেকেও অধিক মনোরম! হে শ্রেষ্ঠ নাটনাগর!
(এইভাবে) দিনে বারবার উৎকণ্ঠাপূর্বক
উচ্চারণ করতে থাকা ব্যাকুল নেত্রযুক্ত
শ্রীরাধা কি কখনো আমার প্রতি প্রসন্ন হবেন?
বেণুঃ করান্নিপতিতঃ স্কলিতং শিখণ্ডং ভ্রষ্টং চ পীতবসনং ব্রজরাজ সূনঃ ।
যস্যাঃ কাটাক্ষ শরপাত বিমূর্ছিতস্য তাং রাধিকা পরিচরামি কদা রসেন ॥৩৮।।
ব্যাখ্যা
উন শ্রীরাধিকা কি মেই কব অনুরাগ পূর্বক সেবা
করুঙ্গা যিঙ্কে কাটাক্ষ রূপ বাণ কি চোট সে
মূর্চ্ছিত হুয়ে ব্রজরাজ কুমার কে হাত সে বাঁশী গির
গই, ময়ূর পিচ্ছ খিসক গয়া অর পীতাম্বর ভূষ্ঠ
হো গয়া (খিসক গয়া)।
ব্যাখ্যা
আমি কখন সেই শ্রীরাধিকার অনুরাগভরে সেবা করব,
যাদের কটাক্ষরূপ বাণের আঘাতে
ব্রজরাজ কুমারের হাত থেকে বাঁশি পড়ে গিয়েছিল,
ময়ূরপিঞ্চি সরে গিয়েছিল এবং পীতাম্বর বিপথগামী
হয়েছিল (সরে গিয়েছিল)।
তস্যা অপার রস-সার বিলাস-মূর্তেরানন্দ-কন্দ পরমাদ্ভুত সৌম্য লক্ষ্ম্যাঃ ।
ব্রহ্মাদি দুর্গমগতেরৃষভানুজায়াঃ কৈংকেয়্রমেভ মমজন্মনি-জন্মনি স্যাত্ ।।৩৯।।
ব্যাখ্যা
জো আপার রস কে সার কে বিলাস কি মূর্তি
হয়, জো আনন্দকন্দ (শ্রীশ্যামসুন্দর) কে
পরম অদ্ভুত সুখ কি শোভা হ্যাঁ অর জিনকী
গতি ব্রহ্মা আদি কে লিয়ে ভি অজ্ঞেয় (জো
জানি না জা সকে) হ্যাঁ, উন শ্রী
বৃষভানুনন্দিনী কা কিঙ্করীভাব
(দাসীভাব) মুঝে প্রতিএক জন্ম মে প্রাপ্ত হো।
ব্যাখ্যা
যে অপরিসীম রসের সার এবং ভোগের রূপ,
যে আনন্দকন্দ (শ্রীশ্যামসুন্দর) এর
পরম অসাধারণ সুখের শোভা, এবং যাদের
গতি ব্রহ্মা প্রভৃতি সকলের জন্য অজানা (যা জানা যায় না),
তাদেরই শ্রীবৃষভানুনন্দিনীর দাসী ভাব (কিংকরি ভাব)
আমাকে প্রতিটি জন্মে লাভ হোক।
পূর্ণানুরাগ রসমূর্ত্তি তড়িল্লতাভং জ্যোতিঃ পরং ভগবতো রতিমদ্রহস্যম্ ।
যত্প্রাদুরস্তি কৃপয়া ঋষভানু গেহে স্পাস্কিংকরি ভবিতুমেভ মমাভিলাষঃ ॥৪০।।
ব্যাখ্যা
যো পূর্ণ অনুরাগ-রস কি মূর্তি হ্যাঁ, যিঙ্কি
কান্তি বিদ্যুত্তা কে সমান হ্যাঁ, যো ভাগবদ্
তত্ত্ব কি রহস্যপূর্ণ প্রেমময়ী জ্যোতি হ্যাঁ অর
যো কৃপা করকে শ্রীবৃষভানু কে ঘর মে
(নিত্য) প্রকাশ হ্যাঁ, উন (শ্রীবৃষভানুনন্দিনী)
কি দাসী বান্নে কি মেরি অভিলাষা হো।
ব্যাখ্যা
যে পূর্ণ অনুরাগ-রসের রূপ, যার কান্তি বিদ্যুতের মতো,
যে ভগবত তত্ত্বের রহস্যময় প্রেমময় জ্যোতি, এবং
যে দয়া করে শ্রীবৃষভানুর ঘরে
(নিত্য) প্রকাশিত হন, তাদের (শ্রীবৃষভানুনন্দিনী)
দাসী হওয়ার আমার আকাঙ্ক্ষা হোক।
প্রেমোল্লসদ্রস বিলাস বিকাস কন্দং গোবিন্দ লোকন বিতৃপ্ত চকর পেয়ম্ ।
সিঞ্চন্তমদ্ভুত রসামৃত চন্দ্রিকৌর্ঘৈঃ শ্রীরাধিকাবদন-চন্দ্রমহং স্মরামি ॥৪১।।
ব্যাখ্যা:
মৈ শ্রীরাধিকা কে উস মুখচন্দ্র কা স্মরণ করতা
হুঁ যা প্রেম সে উল্লসিত (শোভায়ুক্ত) হ্যায়, জো রস
বিহার কে বিকাস কা উৎপত্তি স্থান হ্যায়, জো
শ্রীগোবিন্দ কে অতৃপ্ত চকোরোঁ কে সমান নেত্রোঁ কে
দ্বারা পান করনে যোগ্য হ্যায় অউর জো অদ্ভুত রস রূপী
অমৃতময়ী চাঁদনী কে প্রবাহ সে (অপনি কৃপাপাত্র
দাসীয়োঁ অউর শ্রীশ্যামসুন্দর কো) সীঁছনে ওয়ালা
হ্যায়।
ব্যাখ্যা:
আমি শ্রীরাধিকা’র ওই মুখচন্দ্রের স্মরণ করি
যা প্রেমে উল্লসিত (শোভাযুক্ত), যা রস
বিহারের বিকাশের উৎপত্তি স্থান, যা
শ্রীগোবিন্দের অতৃপ্ত চকোরের মতো নয়নের
মাধ্যমে পানের যোগ্য এবং যা অদ্ভুত রসরূপী
অমৃতময়ী চাঁদনীর প্রবাহে (তার কৃপাপাত্র
দাসী এবং শ্রীশ্যামসুন্দরকে) সিঞ্চনকারী।
সঙ্কত কুঞ্জ নিলয়ে মৃদুপল্লবেন ক্লৃপ্তে কদাপি নব সঙ্গ ভয়ত্রপাধয়াম্ ।
অত্যাগ্রহেণ কর্বারিরুহে গৃহীত্বা নেষ্যে বিটেন্দ্র-শযনে বৃষভানুপুত্রীম্ ॥৪২।।
ব্যাখ্যা:
প্রথম মিলন কে কারণ ভয় অউর লজ্জা সে ভরি
হুই শ্রীবৃষভানুনন্দিনী কো সাঁকেতিক কুঞ্জ-সদন
(বহ কুঞ্জ-সদন জিসমেঁ শ্রী শ্যামা-শ্যাম কা
মিলনা পহেলে সে নিষ্চিত হো চুকা হ্যায়) মেঁ অত্যন্ত
আগ্রহ পূর্বক (উনকা) হস্ত কমল পকড় কর
লম্পট শিরোমণি (শ্রীশ্যামসুন্দর) কী, কোমল
পল্লবোঁ (পাত্তোঁ) সে রচিত, শৈয়া পর মৈ ক্যা কভি
লে যাওঁগী ?
ব্যাখ্যা:
প্রথম মিলনের কারণে ভয় এবং লজ্জা থেকে ভরা
হওয়া শ্রীবৃষভানুনন্দিনীকে সাংকেতিক কুঞ্জ-সদন
(সেই কুঞ্জ-সদন যেখানে শ্রী শ্যামা-শ্যামের
মিলন পূর্ব থেকেই নির্ধারিত হয়েছে) এ অত্যন্ত
আগ্রহ সহকারে (তাঁর) করকমল ধরে
লম্পট শিরোমণি (শ্রীশ্যামসুন্দর) এর, কোমল
পল্লবগুলির (পাতাগুলি) দিয়ে নির্মিত, শয্যায় আমি কি কখনো
নিয়ে যাবো?
সদ্গন্ধ মাল্য নবচন্দ্র লবঙ্গ সঙ্গ তাম্বূল সম্পুটমধীশ্বরি মাং বাহন্তীম্ ।
শ্যামং তমুন্নদ-রসাদভি-সংসরন্তী শ্রীরাধিকে কারণযানুচরীম্ বিধেহি ॥৪৩।।
ব্যাখ্যা:
হৈ স্বামিনী শ্রীরাধিকা! শ্যামসুন্দর কে প্রতি
উন্মদ রস সে (তীব্র প্রেমোত্কণ্ঠা সে) অভিসার
করতে সময় (মিলনে কে লিয়ে জাতে সময় ) আপ
মুঝকো কৃপা করে সুগন্ধিত মালায়েঁ, নবীন
কপূর অউর লওঙ মিশ্রিত পান কি ডিবিয়া লে
জানে ওয়ালি অপনি অনুসরী বনা লিজিয়ে।
ব্যাখ্যা:
হে স্বামিনী শ্রীরাধিকা! শ্যামসুন্দরের প্রতি
উন্মদ রসে (তীব্র প্রেমোত্কণ্ঠায়) অভিসার
করার সময় (মিলনের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময়) আপনি
আমার উপর করুণা করে সুগন্ধিত মালা, নবীন
কপূর এবং লবঙ্গ মিশ্রিত পান-এর ডিব্বা নিয়ে
যাওয়া আপনার অনুচরী করে নিন।
শ্রীরাধিকে তব নবোদ্গম চারুভৃত্তি ভক্ষোজমেভ মুকুলদ্বয় লোভনীয়াম্ ।
শ্রীণীং দধদ্রস গুণৈরুপচীয়মানং কৈশোরকং জয়তি মোহন-চিত্ত-চোরম্ ॥৪৪।।
ব্যাখ্যা:
হৈ শ্রীরাধিকি! কমল কি দো কলিয়োঁ কে সমান
মোহিত করনে ওয়ালে অউর নবীন উত্থান (উভার)
কে কারণ মনোহর বনেঁ হুয়ে গোলাকার স্তন যুগল
তথা নিতম্ব প্রদেশ কো ধারন করনে ওয়ালা
(বিশেষতয়া বিকসিত করনে ওয়ালা), রসময়
গুণোঁ সে সমৃদ্ধ বনা হুয়া (অউর) মদনমোহন কে
চিত্ত কো চুরানে ওয়ালা তুমহারা কৈশোর্য
(কিশোরাবস্থা) বিজয় কো প্রাপ্ত হো রহা হ্যায়।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকা! পদ্মের দুটি কুঁড়ির মতো
মোহিত করার মতো এবং নবীন উদ্গমের (উত্থানের)
কারণে মনোহর হয়ে ওঠা গোলাকার স্তনযুগল
এবং নিতম্ব অঞ্চলে ধারণ করা (বিশেষভাবে
বিকশিত করা), রসময়
গুণে সমৃদ্ধ হয়ে থাকা (এবং) মদনমোহনের
চিত্তকে চুরি করে নেওয়া তোমার কৈশোর
(কিশোরাবস্থা) বিজয় অর্জন করছে।
সংলাপমুছ্ছলদনঙ্গ তরঙ্গমালা সংক্ষোভিতেন বপুষা ব্রজনাগরেণ ।
প্রত্যক্ষরং ক্ষরদপারের রসামৃতাব্ধিং শ্রীরাধিকে তব কদা নু শ্রেণোম্যদূরাত্ ॥৪৫।।
ব্যাখ্যা:
হৈ শ্রীরাধিকে! উছলতে হুয়ে শ্রৃঙ্গারিক প্রেম কি
তরঙ্গ মালা সে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ শরীর ওয়ালে ব্রজ
নাগর শ্রীশ্যামসুন্দর কে সাথ আপকে উস
বার্তালাপ কো সমীপ সে ক্যা কভি সুনুঁগী?
জিসকা প্রত্যেক অক্ষর অপার রসময় অমৃত
সাগর কো প্রবাহিত করনে ওয়ালা হ্যায়।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে! উচ্ছলিত শৃঙ্গারিক প্রেমের
তরঙ্গমালায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ দেহধারী ব্রজনাগর
শ্রীশ্যামসুন্দরের সঙ্গে আপনার সেই
সংলাপকে কাছ থেকে কি কখনও শুনতে পাবো?
যার প্রতিটি অক্ষর অপার রসময় অমৃত
সাগর প্রবাহিত করার ক্ষমতা রাখে।
অংক স্থিতেপি দয়িতে কিমপি প্রলাপং হা মোহনেতি মধুরং বিদধত্যকসমাত্ ।
শ্যামানুরাগ মদবিহ্বল মোহনাংগী শ্যামামণিজয়তি কাপে নিকুঞ্জ সীমন্ ।।৪৬।।
ব্যাখ্যা:
প্রিয়তম কে অঙ্ক মেঁ বিরাজমান হোতে হুয়ে ভি
অচানক 'হা মোহন! হা মোহন'! ইস প্রকার
মধুর প্রলাপ করতি হুয়ি অ্যাবং শ্রীশ্যামসুন্দর কে
অনুরাগ-মদ সে বিহল অউর মনোহর অঙ্গোঁ ওয়ালি
কোই অনির্বচনীয় নিত্য কিশোরী নিকুঞ্জ কি
সীমা মেঁ সর্বোপরি বিরাজমান হ্যাঁ।
ব্যাখ্যা:
প্রিয়তমের অঙ্কে বিরাজমান থাকা সত্ত্বেও
অচানক 'হা মোহন! হা মোহন'! এভাবে
মধুর প্রলাপ করতে করতে এবং শ্রীশ্যামসুন্দরের
অনুরাগ-মদে বিভোর ও মনোহর অঙ্গযুক্ত
এক অনির্বচনীয় নিত্য কিশোরী নিকুঞ্জের
সীমায় সর্বোচ্চ স্থানে বিরাজমান।
কুজান্তরে কিমপি জাত-রসোৎসবায়াঃ শ্রুত্বা তদালপিত সিঞ্চিত মিশ্রিতানি ।
শ্রীরাধিকে তব রহঃ পরিচারিকাহং দ্বারস্থিতা রস-হৃদে পতিতা কদা স্যম্ ।।৪৭।।
ব্যাখ্যা:
কুঞ্জ কে অন্দর উৎপন্ন কিসি অনির্বচনীয় রস সে
উত্সাহিত বনি হুয়ি হে শ্রীরাধিকে! আভূষণোঁ কি
ঝংকার সে মিশ্রিত আপকে উস বার্তালাপ কো
সুনকর কুঞ্জ দ্বার পর স্থিত আপকি একান্ত
সেবিকা মৈ কব রস সরোবর মেঁ ডুব যাওঁগী?
ব্যাখ্যা:
কুঞ্জের ভিতরে উদ্ভূত কোনো অনির্বচনীয় রসে
উৎসाহিত হয়ে থাকা হে শ্রীরাধিকে! গহনাগুলির
ঝংকারে মিশ্রিত আপনার সেই সংলাপকে
শুনে কুঞ্জের দ্বারে অবস্থানকারী আপনার একান্ত
সেবিকা আমি কবে রস সরোবরেতে ডুবে যাবো?
বীণাং করে মধুমতীং মধুর-স্বরাং তামাধায় নাগর-শিরোমণি ভাব-লীলাাম্ ।
গায়ন্ত্যহো দিনমপারমিবাশ্রু-বর্ষৈদুঃখান্নয়ন্ত্যহহ সা হৃদি মে'স্তু রাধা ॥৪৮।।
ব্যাখ্যা:
অহো! মধুর স্বরোঁ ওয়ালি উস মধুমতি নাম কি
বীণা কো হাত মেঁ লেকর নাগর শিরোমণি
শ্রীশ্যামসুন্দর কি ভাব পূর্ণ লীলাঁও কা গান
করতি হুয়ি (এবং) অহহ, অপার জৈসে (কিসি
প্রকার না কাটনে ওয়ালে) দিন কো অনুবর্ষা কে সাথ
দুঃখ পূর্বক ব্যতীত করতি হুয়ি শ্রীরাধা মেরে হৃদয়
মেঁ (স্ফুরিত) হোঁ।
নোট - (ইস শ্লোক মেঁ শ্রীরাধা কি তীব্র বিরহ
স্থিতি কা বর্ণন হ্যায়। ইহ প্রসিদ্ধ হ্যায় কি
শ্রীহিতাচার্য শ্রীশ্যামাশ্যাম কে নিত্য সংযোগ কে
উপাসক হ্যাঁ, ফির ইস শ্লোক কি রচনা মেঁ উনকা
ক্যা প্রয়োজন হো সকতা হ্যায়?
শ্রীরাধাসুধানিধি কে সমগ্র অধ্যয়ন সে প্রতীত
হোতা হ্যায় কি ইসমেঁ শ্রীহিতাচার্য নে অপনে ভাব কে
অনুকূল হি শ্রীরাধা কে স্বরূপ কা চিত্রণ কিয়া
হ্যায়। কিন্তু শ্রীরাধা কে চরণোঁ মেঁ শ্রীহিতমহাপ্রভু
কি অ্যায়সি প্রগাঢ় রতি হ্যায় কি বিভিন্ন রসিক
মহানুভাবোঁ দ্বারা অনুমোদিত শ্রীরাধা কে বিভিন্ন
ভাব-স্বরূপ উনকে হৃদয় মেঁ সময়-সময় পর
সঞ্চরিত হোতে রহতে হ্যাঁ। ইসকো হাম শ্রীহিতাচার্য কে
হৃদয় মেঁ রহি হুয়ি শ্রীরাধা নাম কে প্রতি অনন্য
নিষ্ঠা কা হি পরিণাম মানতে হ্যাঁ অন্যথা
বিচ্ছেদাভাস মানাদহহ নিমিষতো' (শ্লোক
সংখ্যা ১৭৩) আদি নিত্য সংযোগ কা কথন করনে
ওয়ালে শ্লোকোঁ কি সংগতি বৈঠানা সম্ভব নহি হোগা
অউর শ্রীমদ্ রাধাসুধানিধি মেঁ ইস প্রকার কে
নিত্য সংযোগ কা বর্ণন করনে ওয়ালে শ্লোক হি
সংখ্যা মেঁ বহুত অধিক হ্যাঁ।)
ব্যাখ্যা:
অহো! মধুর স্বরযুক্ত সেই মধুমতি নামের
বীণা হাতে নিয়ে নাগর শিরোমণি
শ্রীশ্যামসুন্দরের ভাবপূর্ণ লীলাগানের
সঙ্গীতে মগ্ন হয়ে (এবং) আহা, অপার যেমন (কোনো
ভাবেই শেষ না হওয়া) দিনকে অনুবর্ষার সঙ্গে
দুঃখভরে অতিবাহিত করতে করতে
শ্রীরাধা আমার হৃদয়ে (স্ফুরিত) হোন।
নোট - (এই শ্লোকে শ্রীরাধার তীব্র বিরহ
অবস্থার বর্ণনা রয়েছে। এটি প্রসিদ্ধ যে
শ্রীহিতাচার্য শ্রীশ্যামাশ্যামের নিত্য সংযোগের
উপাসক, তবে এই শ্লোক রচনায় তার
উদ্দেশ্য কী হতে পারে?
শ্রীরাধাসুধানিধির সামগ্রিক অধ্যয়ন থেকে বোঝা
যায় যে এতে শ্রীহিতাচার্য তার ভাবের
অনুকূলতায় শ্রীরাধার স্বরূপের চিত্রণ করেছেন।
তবে শ্রীরাধার চরণে শ্রীহিতমহাপ্রভুর এমন গভীর
রতি রয়েছে যে বিভিন্ন রসিক
মহানুভবদের দ্বারা অনুমোদিত শ্রীরাধার বিভিন্ন
ভাব-স্বরূপ তার হৃদয়ে সময়ে সময়ে
সঞ্চারিত হতে থাকে। এটিকে আমরা শ্রীহিতাচার্যের
হৃদয়ে থাকা শ্রীরাধা নামের প্রতি অনন্য
নিষ্ঠার ফলাফল বলেই মনে করি, অন্যথায়
বিচ্ছেদাভাস মানাদহহ নিমিষতো' (শ্লোক
সংখ্যা ১৭৩) প্রভৃতি নিত্য সংযোগের কথা বলা
শ্লোকগুলির সঙ্গে সঙ্গতি স্থাপন করা সম্ভব হবে না,
এবং শ্রীমদ্ রাধাসুধানিধিতে এমন নিত্য সংযোগের
বর্ণনা দেওয়া শ্লোকই সংখ্যায় অনেক বেশি।)
অন্যোন্যহাস পরিহাস বিলাস কেলী বৈচিত্র্য জৃম্ভিত মহারস-বৈভবেন ।
বৃন্দাবনে বিলসতাপহৃতং বিদগ্ধদ্বন্দ্বেন কেনচিদহো হৃদয়ং মদীযাম্ ॥৪৯।।
ব্যাখ্যা:
অহো পরস্পর হাস-পরিহাস যুক্ত বিলাস
ক্রীড়াঁও কি বিচিত্রতা সে প্রবৃদ্ধ (উমড়ে হুয়ে)
মহারস কে বৈভব কে সাথ শ্রীবৃন্দাবন মেঁ বিহার
করনে ওয়ালে কিসি (অনির্বচনীয়) চতুর যুগল
দ্বারা মেরা হৃদয় হরণ কর লিয়া গয়া হ্যায়।
ব্যাখ্যা:
অহো! পরস্পরের হাসি-পরিহাসে ভরা
বিলাস ক্রীড়ার বিচিত্রতায় প্রবৃদ্ধ (উচ্ছলিত)
মহারসের বৈভবসহ শ্রীবৃন্দাবনে বিহার
করতে থাকা কোনো (অনির্বচনীয়) চতুর যুগল
আমার হৃদয় হরণ করে নিয়েছেন।
মহাপ্রেমোন্মীলন্নব রস সুধা সিন্ধু লহরি পরীবাহৈর্বিশ্বং স্নপয়দিব নেত্রান্ত নটনৈঃ ।
তডিন্মালা গৌরম্ কিমপি নব কৈশোর মধুরং পুরন্ধ্রীণাং চূড়াভরণ নবরত্নং বিজয়তে ॥৫০।।
ব্যাখ্যা
বিজলিঁয়োঁ কি মালা-সা গৌর, নবীন কিশোর
অবস্থা সে মধুর বনা হুয়া, ব্রজ নাগরিয়োঁ কে
শিরোভূষণ কা (ওহ) নবীন রত্ন (শ্রীরাধা)
সর্বাধিক উৎকর্ষ সে বিরাজমান হ্যায়, (অউর ওহ)
মহা প্রেম সে বিকসিত (প্রকট) হোতে হুয়ে নবীন
রসামৃত সিন্দু কি লহরোঁ কে প্রবাহ জৈসে অপনে
কঠাক্ষোঁ কে নর্তন সে বিশ্ব কো স্নান-সা করা রহা
হ্যায়।
ব্যাখ্যা
বিজলির মালার মতো গৌরবর্ণ, নবীন কিশোর
অবস্থার মাধুর্যে ভরা, ব্রজনাগরীদের
শিরোভূষণ সেই নবীন রত্ন (শ্রীরাধা)
সর্বাধিক উৎকর্ষে বিরাজমান, (এবং তিনি)
মহা প্রেমে বিকশিত (প্রকাশিত) হয়ে নবীন
রসামৃত সাগরের তরঙ্গ প্রবাহের মতো তার
কটাক্ষের নৃত্যে বিশ্বকে স্নান করাচ্ছেন।
অমন্দ প্রেমাংকশ্লথ সকল নির্বন্ধহৃদয়ং দয়াপারং দিৱ্যচ্ছবি মধুর লাবণ্য ললিতম্।
অলক্ষ্যং রাধাখ্যং নিখিলনিগমৈরপ্যতিতরাং রসাম্ভোধেঃ সারং কিমপি সুকুমারং বিজয়তে ।।৫১।।
ব্যাখ্যা:
সমস্ত বেদੋਂ থেকে ভি অত্যন্ত অলক্ষিত (না দেখে গয়ে)
রস সাগর কে সার রূপ কিসি অনির্বচনীয় শ্রীরাধা
নামক সুকুমার তত্ত্ব কি জয় হো, জিসকে হৃদয় কে
সমস্ত নির্বন্ধ (মান আদি আগ্রহ) তীব্র প্রেম সে
চিহ্নিত (প্রভাবিত) হোনে কে কারণ শিথিল হো গয়ে হ্যাঁই,
যো অলৌকিক কান্তি কে কারণে মধুর অউর লাবণ্য
কে কারণে ললিত (বনা হুয়া) হ্যায় অউর যো দয়ালুতা
কি অবধি হ্যায়।
ব্যাখ্যা:
সমস্ত বেদ থেকে অতি গোপন (অদৃশ্য)
রসসাগরের সাররূপ কোনো অনির্বচনীয়
শ্রীরাধা নামক সুকোমল তত্ত্বের জয় হোক,
যাঁর হৃদয়ের সমস্ত নিরবন্ধ (অহংকার ইত্যাদি
আগ্রহ) তীব্র প্রেমের দ্বারা চিহ্নিত (প্রভাবিত)
হয়ে শিথিল হয়ে গেছে, যিনি অলৌকিক কান্তির কারণে মধুর
এবং লাবণ্যর কারণে ললিত (সুন্দর) হয়েছেন,
এবং যিনি করুণার আধার।
দুকূলং বিভ্রাণামথ কুচ তটে কঞ্চুক পতং প্রসাদং স্বামিন্যাঃ স্বকরতল দত্তং প্রণয়তঃ।
স্থিতাং নিত্যং পাশ্র্ব বিবিধ পরিচর্যৈক চতুরাং কিশোরীমাত্মানং কিমিহ সুকুমারীং নু কালয়ে ।।৫২।।
ব্যাখ্যা:
(শ্রীহিতাচার্য কে মার্গ কা ভজন আপনে সখী স্বরূপ
কে চিন্তন সে আরম্ভ হোতা হ্যায়। উসকা প্রকাশ বতলাতে
হুয়ে কহতে হ্যাঁয়)-
স্বামিনী (শ্রীরাধা) কে দ্বারা প্রেম পূরবক আপনে কর-
কমল সে দি হুয়ী প্রসাদী ওঢ়নী তথা বক্ষস্থল পর
চোলি ধারন কিয়ে হুয়ে ম্যায় ক্যা ইস জীবন মে আপনে
আপকো (এসি) সুকুমারী কিশোরী কে রূপ মে নিশ্চিত
রূপ সে অনুভব করুঙ্গী (যো) অনেক প্রকার কি
সেবাওঁ মে পূর্ণ নিপুণ হ্যায় এবং (আপনি স্বামিনী কে)
নিত্য সমীপ মে স্থিত হ্যায়।
ব্যাখ্যা:
(শ্রীহিতাচার্যের পথের ভজন সখী স্বরূপের
চিন্তন দিয়ে শুরু হয়। তার প্রকৃতি বোঝাতে
বলা হয়েছে)-
স্বামিনী (শ্রীরাধা) প্রেমভরে নিজের করকমল দিয়ে
দেওয়া প্রসাদী ওড়না ও বক্ষদেশে চোলি
ধারণ করে আমি কি এই জীবনে নিজেকে
(এইরকম) সুকোমল কিশোরী রূপে নিশ্চিতভাবে
অনুভব করব, (যিনি) নানারকম সেবায়
সম্পূর্ণ দক্ষ এবং (নিজের স্বামিনীর)
নিত্য সান্নিধ্যে অবস্থান করছেন।
বিচিন্বন্তী কেশান্ ক্বচন করজৈঃ কঞ্চুক পতং ক্ব চাপ্যমুঞ্চন্তী কুচ কানক দীব্যত্কলশযোঃ।
সুগুল্ফে নিয়ন্তী ক্বচন মণি মঞ্জীর যুগলং কদা স্যাং শ্রীরাধে তব সুপরিচারণ্যহমহো।।৫৩।।
ব্যাখ্যা:
(পিছলে শ্লোক মে জো বিবিধ সেবাওঁ মে নিপুণতা
কি বাত কহি গই হ্যায় উনকো গিনাতে হুয়ে কহতে হ্যাঁয় কি)
হ্যায় শ্রীরাধে! কবি অঙ্গুলিয়োঁ দ্বারা আপকে কেশোঁ কো
সুলঝাতি হুয়ে কবি স্বর্ণ কলশ কে সমান
দেদীপ্যমান বক্ষঃস্থল (কুচোঁ) পর চোলি পেহিনাতি
হুয়ে ঔর কবি আপকে গুল্ফোঁ (টখনোঁ) পর মণি
জটিত যুগল নূপুরোঁ কো ধারন করাতি হুয়ে ম্যায় ক্যা
কবি আপকি সুন্দর সেবিকা বন সকুঁগী?
ব্যাখ্যা:
(পূর্ববর্তী শ্লোকে যে বিভিন্ন সেবায় দক্ষতার
কথা বলা হয়েছে, তা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে)
হে শ্রীরাধে! কখনো কি আমি আপনার আঙুলের
দ্বারা চুলগুলো সুশ্রীভাবে গুছিয়ে দেব,
কখনো স্বর্ণের কলশের মতো দীপ্তিময়
বক্ষদেশে চোলি পরিয়ে দেব, এবং কখনো আপনার গুল্ফে (গোড়ালি)
মণি খচিত যুগল নূপুর পরিয়ে
দিতে পারব? আমি কি কখনো আপনার এক সুন্দর সেবিকা হতে পারব?
অতিস্নেহাদুচ্চৈরপি চ হরিনামানি গৃণতস্তথা সৌগন্ধাদ্যৈর্ বহুবারুপরাচারৈশ্চ যজতঃ।
পরানন্দং বৃন্দাবনমনুচরণ্তং চ দধতো মনো মে রাধায়াঃ পদ মৃদুল পদ্মে নিবসতু ॥৫৪।।
ব্যাখ্যা:
(শ্রীরাধা চরণ-কামলোঁ কে প্রতি আপনে মন মে
সর্বোপরি আসক্তি কি কামনা করতে হুয়ে কহতে হ্যাঁয় কি)
অত্যন্ত স্নেহ সে তথা ঊঁচে স্বর সে শ্রীহরি কে নাম কা
উচ্চারণ করতে হুয়ে ভি তথা সুগন্ধিত তিলক চন্দন
আদি বহু প্রকার কি সামগ্রীয়োঁ সে উনকা পূজন করতে
হুয়ে ভি ঔর বৃন্দাবন মে বিচরণ করতে হুয়ে উন
পরমানন্দ স্বরূপ কা ধ্যান করতে হুয়ে ভি মেরা মন
শ্রীরাধা কে কোমল চরণ-কামলোঁ মে নিবাস করতা
রহে।
ব্যাখ্যা:
(শ্রীরাধার চরণকমলের প্রতি নিজের মনে
সর্বোচ্চ আসক্তির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে বলা হয়েছে যে)
অত্যন্ত স্নেহভরে এবং উচ্চ স্বরে
শ্রীহরির নামের জপ করতে করতেও,
সুগন্ধি তিলক, চন্দন প্রভৃতি নানা উপকরণ দিয়ে
তাঁর পূজা করতে করতেও, এবং বৃন্দাবনে বিহার করতে করতেও,
সেই পরমানন্দ স্বরূপের ধ্যান করতে করতেও,
আমার মন যেন সর্বদা শ্রীরাধার কোমল চরণকমলে নিবাস করে।
নिজ প্রাণেশ্বর্য্য়া যদপি দয়নীয়েয়মিতি মা মুহু্ষ্চুম্বত্যালিঙ্গতি সুরত মদ মাধ্চব্যা মদয়তি।
বিচিত্রাং স্নেহর্দ্ধি রচয়তি তথাপ্যদ্ভুত গতস্ত্বৈব শ্রীরাধে পদ রস বিলাসে মম মনঃ।।৫৫।।
ব্যাখ্যা:
ইহ (কিঙ্করী) দাসী মেরি প্রানেশ্বরী কি দয়া পাত্র হ্যায়'
ইহ সোচকর শ্রীশ্যামসুন্দর বার-বার মুঝকো চুম্বন,
আলিঙ্গন অউর সুরত রস মাধুরী সে উন্মত্ত বনা দেতে
হ্যাঁয়। যদ্যপি ভে বিচিত্র প্রকার সে স্নেহ বৃদ্ধি করতে হ্যাঁয়,
ফির ভি হ্যায় শ্রীরাধে! অদ্ভুত প্রভাভ বালে আপকে হি
চরণ-কামলোঁ কে রসময় বিলাস মে মেরা মন সংলগ্ন
হ্যায়।
নোট (শ্রীনাভাজি নে শ্রীহিতাচার্য কো 'আপনে হৃদয় মে
শ্রীরাধা চরণোঁ কি প্রধানতা রখকর অত্যন্ত সুদৃঢ়
উপাসনা করনে বালে' কহা হ্যায়- 'শ্রীরাধা চরণ প্রধান
হৃদয় অতি সুদৃঢ় উপাসী'। আপনি উস অদ্ভুত নিষ্ঠা
কা প্রকাশন ভে ইস শ্লোক মে অদ্ভুত ঢং সে কর রহে
হ্যাঁয়। জিন শ্রীশ্যামসুন্দর কে এক কৃপা কটাক্ষ কে লিয়ে
ব্রজ-গোপিকায়েঁ লালায়িত রহতি হ্যাঁয় অউর সদৈব প্রাপ্ত
নহী কর পাতীঁ, বহি শ্রীশ্যামসুন্দর আপনি প্রানেশ্বরী
শ্রীরাধা কা নাতা মানকর শ্রীহিত সখী
(শ্রীহিতাচার্য কে সখী স্বরূপ কা নাম) কো
শৃঙ্গারিক প্রেম কি মদিরা সে মত্ত বনানা চাহ রহে হ্যাঁয়
অউর ভে ইহ কহ রহি হ্যাঁয় কি 'শ্রীশ্যামসুন্দর কি ইস
প্রকার কি কৃপা অযাচিত প্রাপ্ত হোনে পর ভি মেরা মন
তো আপনি স্বামিনী কে শ্রীচরণোঁ কে রস বিলাস মে
হি রম রহা হ্যায়!'
অব রহি শ্রীশ্যামসুন্দর কি বাত, সো শ্রীহিতাচার্য
কি রস পদ্ধতি মে উনকা ভি শ্রীরাধা কে প্রতি অনন্য
প্রেম হ্যায়। তো ফির উনহোঁনে ইস প্রকার কি চেষ্ঠা
সহচরী কে প্রতি কিঁউ কি? ইসকা কারণ ইহ হ্যায় কি
রসোপাসনা কে ক্ষেত্র মে ভে কেবল 'শৃঙ্গার রস সর্বস্ব
হ্যাঁয়'- মূর্তিমান শৃঙ্গার রস হ্যাঁয়। ইস ক্ষেত্র মে ভে জব
কিসি পর প্রসন্ন হোতে হ্যাঁয় তো উসকো শুদ্ধাতিশুদ্ধ
মধুর রস কা অনুভব করাতে হ্যাঁয়। ব্রজ-সুন্দরিয়োঁ নে উনকো
ইস রূপ সে প্রীতি কি অউর শ্রীশ্যামসুন্দর নে উনকো
আপনে স্বরূপ ভুত রস কি অনুভূতি করাই থি।
(উপর্যুক্ত শ্লোক মে ভে সহচরী কে শ্রীরাধা প্রেম পর
রীঝে হ্যাঁয় অউর স্বভাবতঃ উনকে দ্বার সহচরী কো উনকি
কি অনন্যতা মে কোঈ অন্তর নহী আতা কিউঁকি ভে
সহচরী কো সহচরী হি সমঝ রহে হ্যাঁয়, আপনি প্রেয়সী
নহী মান রহে হ্যাঁয়। কিন্তু লাল রং জিস কিসি বস্তু
কে সংপরক মে আবেগা, উসকো সহজ রূপ সে লাল হি
বনাবে গা; সহচরী ইস লালী কো স্বীকার করনে কো
তইয়ার নহী হ্যাঁয় অউর আপনে রং পর কায়েম রহনা
চাহতি হ্যাঁয়— বহ ত্রিভুবন মোহন কে আত্ম দান কো ভি
স্বীকার করনে কো তইয়ার নহী হ্যাঁয়। বাস্তব মে, মহান
নিষ্ঠায়েঁ মহান ত্যাগোঁ কে উপরে হি টিকি হোতি হ্যাঁয় অউর
আপনি নিষ্ঠা কি রক্ষা কে লিয়ে সহচরী কা ইহ ত্যাগ
সচমুচ বড়া অদ্ভুত হ্যায়।)
ব্যাখ্যা:
এই (কিঙ্করী) দাসী আমার প্রাণেশ্বরী (শ্রীরাধা)-র করুণার অধিকারিণী — এই ভেবে শ্রীশ্যামসুন্দর বারবার আমাকে চুম্বন, আলিঙ্গন ও সুরত রসের মাধুর্যে উন্মত্ত করে তোলেন। যদিও তিনি বিচিত্রভাবে স্নেহ বৃদ্ধি করেন, তবুও হে শ্রীরাধে! আপনার সেই অদ্ভুত প্রভাবে পূর্ণ চরণকমলের রসময় লীলাতেই আমার মন নিমগ্ন থাকে।
নোট:
(শ্রীনাভাজি শ্রীহিতাচার্যকে বলেছেন — “শ্রীরাধা চরণ প্রধান হৃদয় অতি সুদৃঢ় উপাসী”, অর্থাৎ, যিনি হৃদয়ে শ্রীরাধার চরণকে প্রধান স্থান দিয়ে অত্যন্ত দৃঢ় ভক্তি সহকারে উপাসনা করেন। এই শ্লোকে শ্রীহিতাচার্য তাঁর সেই আশ্চর্য নिष्ठারই প্রকাশ করছেন।)
যে শ্রীশ্যামসুন্দরের একটিমাত্র কৃপাকটাক্ষ লাভের জন্যই বৃন্দাবনের গোপিকারা লালায়িত থাকেন এবং সবসময় তা লাভ করতে পারেন না, সেই শ্রীশ্যামসুন্দর কেবলমাত্র তাঁর প্রাণেশ্বরী শ্রীরাধার সখ্যের কারণে শ্রীহিত সখীকে (শ্রীহিতাচার্যের সখী স্বরূপ) শৃঙ্গারিক প্রেমের মাধুর্যে উন্মত্ত করতে চান। কিন্তু শ্রীহিত সখী বলছেন — “শ্রীশ্যামসুন্দরের এই অযাচিত কৃপা লাভ করেও আমার মন তো কেবল আমার স্বামিনীর চরণকমলের রস-বিলাসেই মগ্ন।”
এবার শ্রীশ্যামসুন্দরের প্রসঙ্গে বলা যাক — শ্রীহিতাচার্যের রসপদ্ধতিতে শ্রীশ্যামসুন্দরেরও শ্রীরাধার প্রতি একনিষ্ঠ প্রেম রয়েছে। তা হলে তিনি সখীর প্রতি এইরকম আচরণ কেন করলেন? এর কারণ হল — রসোপাসনার ক্ষেত্রে শ্রীশ্যামসুন্দর “শৃঙ্গার রস সর্বস্ব”, অর্থাৎ তিনি মূর্তিমান শৃঙ্গার রস স্বয়ং। এই রসলোকে যখন তিনি কাউকে প্রসন্ন হন, তখন তাকে সেই বিশুদ্ধ মধুর রসের আস্বাদন করান। বৃন্দাবনের সুন্দরীগণ তাঁর এই রূপের প্রেমে মগ্ন হয়েছিলেন এবং শ্রীশ্যামসুন্দর তাঁদের নিজের রসস্বরূপের অভিজ্ঞতা দিয়েছিলেন।
এই শ্লোকে তিনি সখীর শ্রীরাধাপ্রেমে মুগ্ধ হয়েছেন, কিন্তু সখীর অনন্যতায় কোনো পরিবর্তন আনেননি, কারণ তিনি সখীকে কেবল সখী হিসেবেই দেখছেন, নিজের প্রেয়সী হিসেবে নয়। যেমন — লাল রঙ কোনো বস্তুর সাথে মিললে সেই বস্তুকেও লাল করে তোলে, কিন্তু সখী সেই লালিমা গ্রহণ করতে প্রস্তুত নন। তিনি নিজের মূল রংয়ে স্থির থাকতে চান — এমনকি তিনভুবন মোহন শ্রীশ্যামসুন্দরের আত্ম-দানও তিনি গ্রহণ করতে চান না।
প্রকৃতপক্ষে, মহান নিষ্ঠা সবসময় মহান ত্যাগের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে থাকে।
শ্রীহিত সখীর এই অদম্য নীতি ও নিষ্ঠা সত্যিই অনন্য ও আশ্চর্য!
প্রীতিং কামপি নাম মাত্র জনিত প্রোদ্দাম রোমোদ্গমাং রাধা মাধবযোঃ সদৈব ভজতোঃ কৌমার এভোজ্বলাম্।
বৃন্দারণ্য নব-প্রসূন নিচযানীয় কুঞ্জান্তরে গূঢ়ং শৈশয় খেলনৈঃবৎ কদা কার্যো বিবাহোৎসবঃ ॥৫৬।।
ব্যাখ্যা:
এক দোসরে কা মাত্র নাম লেনে সে হি জিনমেঁ উদ্দাম
রোমাঞ্চ উৎপন্ন হো গয়া হ্যায় ঐসী কিসি অনির্বচনীয়
শৃঙ্গারময়ী উজ্জ্বল প্রীতি কো কুমার অবস্থা মে হি
(আপনে হৃদয় মেঁ) নিরন্তর ধারণ করনে বালে শ্রীরাধা
অউর শ্রীমাধব কা বিবাহোৎসব বৃন্দাবন কে নবীন
পুষ্প সমূহ লাকার, গুপ্ত রূপ সে, কুঞ্জ কে অন্দর শিশু
অবস্থা কি ক্রীড়া কে রূপ মেঁ মেরে দ্বারা উল্লাস পূর্বক
কব রচা জায়েগা?
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধা ও শ্রীমাধবের মধ্যে এমন এক অনির্বচনীয়
শৃঙ্গারময় উজ্জ্বল প্রীতি বিরাজমান,
যা কেবল একে অপরের নাম উচ্চারণেই
প্রবল রোমাঞ্চ জাগ্রত করে।
কুমার বয়সেই যাঁরা এই অপরিমেয় প্রেমকে (হৃদয়ে) ধারণ করেছেন,
সেই শ্রীরাধা ও শ্রীমাধবের বিবাহোৎসব কবে আমি আনন্দভরে আয়োজন করব?
কবে আমি বৃন্দাবনের নূতন পুষ্পরাজি সংগ্রহ করে, গোপনে কুঞ্জের মধ্যে
সেই বিবাহকে শৈশবক্রীড়ার মতো স্নিগ্ধ রূপে উদযাপন করব?
বিপঞ্চিত সুপঞ্চমং রুচির বেণুনা গায়তাপ্রিয়েণ সহবীণয়া মধুরগান বিদ্যানিধিঃ।
করীন্দ্রবনসম্মিলন্মদ করিণ্যুদারক্রমা কদা নু বৃষভানুজা মিলতু ভানুজা রোধসিঃ ॥৫৭।।
ব্যাখ্যা:
পঞ্চম স্বর কা বিস্তার করতি হুয়ি সুন্দর বেণু কে
দ্বারা গান গাতে হুয়ে আপনে প্রিয়তম কা বীণা দ্বারা
সাথ দেনি হুয়ি মধুর গান বিদ্যা কি নিধি রূপা শ্রী
বৃষভানুনন্দিনী গজরাজ সে বন মে মিলতি হুয়ি মত্ত
করিণী কে সমান সুন্দর গতি বালি মুঝে যমুনা কে
তট পর কব মিলেঙ্গী?
ব্যাখ্যা:
পঞ্চম স্বরের বিস্তার করতে করতে সুন্দর বেণুর
দ্বারা সঙ্গীত পরিবেশন করে, নিজের প্রিয়তমকে
বীণার মাধ্যমে সঙ্গত দিতে দিতে,
মধুর সঙ্গীত বিদ্যার ধনরূপা শ্রীবৃষভানুনন্দিনী,
বনে গজরাজের সাথে মিলিত এক মাতাল করিণীর মতো সুন্দর গতি নিয়ে,
কবে আমি তাঁকে যমুনার তীরে দেখতে পাব?
সহাস্বর মোহনাদ্ভুত বিলাস রাসোৎসবে বিচিত্রবর তাণ্ডব শ্রমজলাদ্রী গণ্ডস্থলৌ।
কদা নু বরনাগরী রাসিক শেঘরৌ তৌ মুদাভজামি পদ লালনাল্ললিত জীবনং কুর্বতী ।।৫৮।।
ব্যাখ্যা:
অসাধারণ ব্যবৃত্য দ্বারা (উৎপন্ন) শ্রমজল (ঘাম) সে
ভিগে হুয়ে কপোল বালে উন দোনো শ্রেষ্ঠ নাগরী
(শ্রীরাধা) অউর রসিকশেখর (শ্রীশ্যামসুন্দর) কে
চরণ সংবাহন (চরণ দাবানে) সে আপনে জীবন কো
সুন্দর বনাতি হুয়ি ম্যায় কব আনন্দপূর্বক উনকা সেবন
করুঙ্গি?
ব্যাখ্যা:
অসাধারণ ক্রীড়ার ফলে উৎপন্ন পরিশ্রমের ঘামে ভেজা
কপোলবিশিষ্ট সেই দুই শ্রেষ্ঠ নাগরী (শ্রীরাধা)
এবং রসিকশেখর (শ্রীশ্যামসুন্দর)-এর
চরণ সংবাহন (চরণ মর্দন) করে, নিজের জীবনকে সুন্দর করে তুলি,
আমি কবে আনন্দভরে তাঁদের সেবা করতে পারব?
বৃন্দারণ্য নিকুঞ্জ মঞ্জুল গৃহেষ্বাত্মেশ্বরীং মার্গয়ন্ হা রাধে সবিদঘ দৃষ্টপথং কিম্ যাসিনেত্যালপন্।
কালিন্দো সালিলে চ তৎকুচ তটি কস্তূরিক পংকিলে স্নায়ং স্নায়মহো কুদেহজমলং জহ্যাং কদা নির্মলঃ ॥৫৯।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীবৃন্দাবন কে সুন্দর নিকুঞ্জ মন্দির মে আপনি
স্বামিনী কো ঢুঁঢতা হুয়া অউর (উনসে) ইহ কহতা
হুয়া কি 'হা রাধে! আপনে চতুর (প্রিয়তম) কে দ্বারা
দিখায়ে গয়ে মার্গ পর কিঁউ নহী জাতি হো?' ম্যায় উনকে
(শ্রীরাধা কে) বক্ষস্থল পর লগি হুয়ি কস্তুরি সে
মিশ্রিত শ্রী যমুনাজি কে জল মে বার-বার স্নান
করতা হুয়া আপনে কুৎসিত দেহ জনিত মল (কামাদি)
কো ত্যাগ কর কব নির্মল বনুঙ্গা?
ব্যাখ্যা:
শ্রীবৃন্দাবনের সুন্দর নিকুঞ্জ মন্দিরে
নিজের স্বামিনীকে (শ্রীরাধাকে) খুঁজতে খুঁজতে
এ কথা বলতে বলতে —
“হে রাধে! কেন তোমার চতুর প্রিয়তমের
দেখানো পথে চলছো না?” —
আমি কবে তাঁর (শ্রীরাধার) বক্ষদেশে লেগে থাকা কস্তূরী মিশ্রিত
শ্রীয়মুনার জলে বারবার স্নান করে, এই ঘৃণ্য দেহজ মল (কামাদি দোষ)
ত্যাগ করে, নির্মল হয়ে উঠব?
পাদস্পর্শ রাসোৎসবং প্রণতিভির্গোবিদমিন্দীভার শ্যামং প্রার্থয়িতু সুমঞ্জুল রহঃ কুঞ্জাশ্চ সংমার্জিতুম্।
মালা চন্দন গন্ধ পূর রাস্বত্তাম্বূল শত্পানকান্যাদাতু চ রাসৈক দায়িনি তব প্রেষ্যা কদা স্যামহম্ ॥৬০।।
ব্যাখ্যা:
(শ্রীপ্রিয়া কে) চরণোঁ কা স্পর্শ হি জিনকে লিয়ে
রসোৎসব হ্যায় (উন) নীল কমল কে সমান শ্যাম
শ্রীগোবিন্দ কে প্রতি প্রণামোঁ কে সহিত প্রার্থনা করনে কে
লিয়ে অউর অত্যন্ত মনোহর একান্ত কুঞ্জোঁ কা
সম্মার্জন করনে কে লিয়ে তথা সুগন্ধি সে যুক্ত মালা,
চন্দন, রসপূর্ণ তাম্বূল (পান কা বীড়া) এবং সুন্দর
পিনে যোগ্য পদার্থ (শরবত আদি) লানে কে লিয়ে, হ্যায়
রস কি একমাত্র দাত্রী (শ্রীরাধিকা)! ম্যায় আপকি
পরিচারিকা কব বনুঙ্গি?
ব্যাখ্যা:
(শ্রীপ্রিয়ার) চরণ স্পর্শ করাই যাদের জন্য
এক রসোৎসব, সেই নীলকমলের মতো
শ্যামবর্ণ শ্রীগোবিন্দের প্রতি
প্রণামসহ প্রার্থনা করার জন্য,
এবং অত্যন্ত মনোহর একান্ত কুঞ্জগুলি
পরিষ্কার করার জন্য, সুগন্ধি যুক্ত মালা, চন্দন, রসপূর্ণ তাম্বুল (পানের বিড়া)
এবং সুন্দর পানীয় (শরবত ইত্যাদি) আনার জন্য —
হে রসের একমাত্র দাত্রী (শ্রীরাধিকা)! আমি কবে আপনার পরিচারিকা হতে পারব?
লাবণ্যামৃত বার্তয়া জগদিদং সম্প্লাবয়ন্তী শরদ্রাকা চন্দ্রমনন্তমেব বদনং জ্যোৎস্নাভিরাতন্বতী।
শ্রী বৃন্দাবনকুঞ্জ মঞ্জু গৃহিণী কাপ্যস্তি তুচ্ছামহো কুর্বাণাখিল সাধ্য সাধন কযাং দত্ত্বা স্বদাস্যোৎসবম্।।৬১।।
ব্যাখ্যা:
(আপনে) রোচক এবঁ রসপূর্ণ বার্তালাপ সে ইস জগত
কো আপ্লাবিত (সরাবোর) করতি হুয়ি (এবঁ) মুখচন্দ্র
কি চাঁদনি সে শরদ ঋতু কে অনন্ত পূর্ণ চন্দ্রোঁ কা
বিস্তার করতি হুয়ি (বিকসিত করতি হুয়ি) তথা আপনা
দাস্য রূপ উৎসাহ প্রদান করকে সমস্ত সাধ্য-সাধন
কি চর্চা কো, আহো, তুচ্ছ বনাতি হুয়ি, শ্রীবৃন্দাবন
কুঞ্জ-সদন কি কোই অনির্বচনীয় স্বামিনী
বিরাজমান হ্যায়।
ব্যাখ্যা:
নিজের আকর্ষণীয় ও রসময় কথোপকথনের মাধ্যমে
এই জগতকে স্নাত করে তুলছেন,
এবং তাঁর মুখচন্দ্রের জ্যোত্স্নায়
শরৎ ঋতুর অসংখ্য পূর্ণচন্দ্র যেন প্রসারিত হচ্ছে।
নিজের দাস্যরূপকে উৎসাহ দিয়ে সমস্ত সাধ্য ও সাধনের আলোচনাকে, আহা!
কত তুচ্ছ করে তুলছেন তিনি।
শ্রীবৃন্দাবনের কুঞ্জসদনে কোনো এক অনির্বচনীয় স্বামিনী
সৌম্যভাবে বিরাজমান আছেন।
দৃষ্ট্যা কচন বিধিতা ম্ত্রেডনে নন্দসূনোঃ প্রত্যাখ্যানচ্ছলত উদিতোদার সংকেত-দেশা।
ধূর্তেন্দ্র ত্বদ্ভযমুপগতা সা রহো নীপবাটয়াৈ নৈকা গচ্ছেত্কিতব কৃতমিত্ত্যাদিশেত্কর্হি রাধা ॥৬২।।
ব্যাখ্যা:
আনন্দনন্দন (শ্রীকৃষ্ণ) যখন বারবার
একত্রে মিলিত হওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন,
তখন তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অজুহাতে
যিনি অন্য এক সুখময় সংকেতস্থল নির্ধারণ করেছেন,
সেই শ্রীরাধা — আমার সৌভাগ্যে কবে আমায়
এই বাক্য বলার অনুমতি দেবেন? —
“হে ধূর্তরাজ! তোমাকে ভয় পেয়ে
শ্রীরাধা একাকী একান্ত কদম্ব বাটিকায়
যেতে চান না। হে কপট! থাক,
এই সব কথা তোমার কাছেই রাখো!”
(টীকা: ব্যঙ্গার্থ এই যে,
শ্রীশ্যামসুন্দর যখন অনির্দিষ্ট কোনো স্থানে
মিলনের অনুরোধ করেন,তখন পরম চতুর শ্রীরাধা
তাঁকে প্রত্যাখ্যানের ছলে একান্ত কদম্ব বাটিকাকেই
গোপনে সংকেতস্থান হিসেবে নির্ধারণ করে দেন।)
ব্যাখ্যা:
ঔনন্দনন্দন কে দ্বারা কহিঁ মিলনে কে লিয়ে বার-বার
আগ্রহ কিয়ে জানে পর উসকো অস্বীকার করনে কে
বহানে জিনহনোঁনে কোই দুশরা হি সুখময় সংকেত স্থান
বতা দিয়া হ্যায়, বে শ্রীরাধা, মেরে সদ্ভাগ্য সে মুঝে ইহ
কহনে কি কব আজ্ঞা দেঙ্গী কি 'হে ধূর্তরাজ! তুমসে
ভয় কো প্রাপ্ত হুয়ি শ্রীরাধা একান্ত কদম্ব বাটিকা মে
অকেলি নহী যায়েঙ্গী। হ্যায় কিতব (ছলিয়া)! রহনে
দো।' (অর্থাৎ, অপনা সন্দেশ অপনে পাশ রাখো)।
নোট (ব্যঙ্গ ইহ হ্যায় কি শ্রী শ্যামসুন্দরনে কিসি
অনিশ্চিত স্থান মে মিলনে কা জো শ্রীরাধা সে আগ্রহ
কিয়া থা, উসকা অস্বীকার পরম চতুর শ্রীপ্রিয়া ইহ
কহলাকার করতি হ্যায় কি শ্রীরাধা একান্ত কদম্ব
বাটিকা মে তুমসে মিলনে অকেলি নহী যায়েঙ্গী অউর
ইস প্রকার সংকেত স্থল কো জানে কো নির্দিষ্ট কর
দেতি হ্যায় — নিশ্চিত কর দেতি হ্যায়।)
সা ভ্রুণর্তন চাতুরী নিরুপমা সা চারুনেত্রাঞ্ছলে লীলা খেলন চাতুরী বরতনোস্তাদৃগ্বচশ্চাতুরী।
সংকেতাগম চাতুরী নব নব ক্রীড়াকলা চাতুরী রাধায়। জয়তাসখীজন পরীহাসোৎসবে চাতুরী ।।৬৩।।
ব্যাখ্যা:
কমনীয় কলেবর শ্রীরাধা কি বহ (অনির্বচনীয়)
ভ্রুকুটিনর্তন কি অনুপম কুশলতা, বহ মনোহর নেত্র
প্রান্ত কে লীলা পূৰ্বক संचालन কি নিপুণতা, বৈসী
হি (অনির্বচনীয়) বচন চাতুরী, সংকেত স্থানে
আনে কি চতুরতা, নবীন নবীন ক্রীড়াঁও মে কলাঁও
কি চতুরতা অউর সখীজন কে সাথ হাস-পরিহাস মে
চতুরতা কি জয় হো।
ব্যাখ্যা:
কমনীয় কান্তিময় শরীরের অধিকারিণী
শ্রীরাধার সেই (অনির্বচনীয়) ভ্রূনৃত্যের
অদ্বিতীয় নিপুণতা — সেই মনোহর নেত্রপ্রান্তের
লীলা-ভঙ্গিমায় পরিচালনার দক্ষতা, তেমনি অনির্বচনীয় বাক্চাতুরি,
সংকেত স্থানে আসার চতুরতা, নতুন নতুন ক্রীড়ার মাঝে
কলার ভান্ডারে নিপুণতা, এবং সখীদের সাথে হাস্য-পরিহাসে
অদ্বিতীয় চাতুর্যের জয় হোক!
উন্মীলন মিথুনানুরাগ গরিমোদার স্ফুরন্মাধুরী ধারা-সার ধুরিণ দিভ্য ললিতানঙ্গোৎসবঃ খেলতোঃ।
রাধা-মাধবযোঃ পরং ভবতু নঃ চিত্তে চিরার্ত্তিস্পৃশো কৌমারে নব-কেলি শিল্প লহরি শিক্ষাদি দীক্ষা রাসঃ ॥৬৪।।
ব্যাখ্যা:
উমড়তে হুয়ে পরস্পর অনুরাগ কি গম্ভীরতা সে উদার
রূপেণ স্ফুরিত হুয়ি মধুরতা কি ধারাঁও কি বৌছার সে
অগ্রগণ্য (মহান) বনে হুয়ে দিব্য অউর সুন্দর
প্রেমোৎসবোঁ কে দ্বারা ক্রীড়া করতে হুয়ে, কুমারাবস্থা
(পাঁচ বৎসর পর্যন্ত কি অৱস্থা) মে হি চির (উত্কণ্ঠা
কি) পীড়া ধারণ কিয়ে হুয়ে রাধামাধব কি নবীন-
নবীন ক্রীড়াঁও কে শিল্পোঁ (ক্রীড়া চাতুরি) কি তরঙ্গোঁ
কে পরস্পর শিক্ষণ আদি রূপী আত্ম-সমর্পণপূর্ণ
কৃত্যোঁ কা রস হি হামারে চিত্ত মে স্থিত রহে।
ব্যাখ্যা:
উভয়ের পরস্পর অনুরাগের গভীরতা থেকে
উদারভাবে প্রকাশিত মাধুর্যের ধারাবাহিক প্রবাহে
যা স্নাত হয়ে উঠেছে— সেই দিব্য ও সুন্দর প্রেমোৎসবগুলির মাধ্যমে
যারা ক্রীড়া করছেন, শৈশব (প্রায় পাঁচ বছর বয়স) কালেই
চিরকালীন (উদ্বেগময়) বেদনা ধারণ করে
শ্রীরাধামাধবের নতুন-নতুন ক্রীড়ার কৌশলভঙ্গিমা
এবং সেই ক্রীড়ার রীতিনীতির পরস্পর শিক্ষা ও আত্মসমর্পণমূলক আচরণের
যে রস রয়েছে— সে রসই যেন চিরকাল
আমাদের চিত্তে স্থিত থাকে।
কদা ও খেলন্তৌ বজানগর বৈথীষু হৃদয়ং হারন্তৌ শ্রীরাধা ব্রজপতি কুমারৌ সুখৃতিনঃ।
অকস্মাত্ কৌমারে প্রকাশ নব কিশোর-বিভবৌ প্রপশ্যন্ পূর্ণঃ স্যাং রহসি পরীহাসাদি নিরতৌ ॥৬৫।।
ব্যাখ্যা:
ব্রজ নগর কি গলিওঁ মে ক্রীড়া করতে হুয়ে অউর
পুণ্যাত্মা কে হৃদয় কো হরণ করতে হুয়ে তথা
কুমারাবস্থা মে হি অকসমাৎ কিশোরাবস্থা কে বৈভব
(প্রেম-ক্রীড়া) কে প্রকাশ হোনে পর একান্ত মে হাস-
পরিহাস মে লগে হুয়ে শ্রীরাধা তথা নন্দনন্দন কা দর্শন
করতা হুয়া মৈ কব কৃতার্থ হৌঁগা?
ব্যাখ্যা:
ব্রজ নগরের গলিতে ক্রীড়া করতে করতে,
পুণ্যবান হৃদয়গুলোকে মোহিত করে তুলতে তুলতে,
শৈশবকালেই হঠাৎ করে
কৈশোরের প্রেমময় ক্রীড়ার ঐশ্বর্য প্রকাশিত হলে,
সেই একান্ত নির্জনে হাস্য-পরিহাসে নিমগ্ন
শ্রীরাধা ও নন্দনন্দনকে দর্শন করে আমি কবে কৃতার্থ হবো?
ধন্মিল্লং তে নব পরিমলৈরুল্লসত্ফুল্ল মল্লীমালং ভালস্থলমপি লসৎসান্দ্র সিন্দূর-বিন্দুম্।
দীর্ঘাপাঙ্চ্ছবিমানুপমাং চন্দ্রাংশু হাসং প্রেমোল্লাসং তব তু কুচযোর্দ্বন্দ্বমন্তঃ স্মরামি ॥৬৬।।
ব্যাখ্যা:
(হে শ্রীরাধে! মৈ) নবীন সুগন্ধি সে পূর্ণ খিলি হুয়ি
মল্লী মালাঁও সে যুক্ত আপকে কেশপাশ কো তথা
গহেরে রং কে সিন্দূর বিন্দু সে শোভিত ললাট প্রদেশ
কো, অনুপম কর্ণায়ত নেত্র প্রান্ত কি ছটা কো তথা
চন্দ্র কিরণ কে সমান মনোহর হাস্য কো অউর প্রেম কে
উল্লাস সে ভরে আপনার শ্রীঅঙ্গ যুগল কো অপনে হৃদয়
মে স্মরণ করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
(হে শ্রীরাধে! আমি)
নতুন সুবাসে ভরা প্রস্ফুটিত
মল্লিকা মালায় অলঙ্কৃত আপনার কেশপাশকে,
গাঢ় সিঁদুরের বিন্দুতে শোভিত আপনার ললাটদেশকে,
অদ্বিতীয় কর্ণায়ত নেত্রপ্রান্তের ছটাকে, চন্দ্রকিরণের মতো মনোহর
আপনার হাসিকে, এবং প্রেমের উল্লাসে ভরা
আপনার পবিত্র অঙ্গযুগলকে আমার হৃদয়ে স্মরণ করি।
লক্ষ্মী কোটি বিলক্ষ্য লক্ষণ লসল্লীলা কিশোরীশতৈরারাধ্যং ব্রজমণ্ডলেতি মধুরং রাধাভিধানং পরম্।
জ্যোতি: কিঞ্চন সিঞ্চদুউজ্জ্বলরাস প্রাগ্ভাবমাবির্ভবদ্রাধে চিত্তে ভূরি ভাগ্য বিভভৈঃ কস্যাপ্যহো জৃম্ভতে ॥৬৭।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! আশ্চর্য হ্যায় কি কোটী-কোটী লক্ষ্মীয়োঁ কে
লিয়ে বিস্ময় জনক লক্ষণোঁ সে সুশোভিত লীলাময়ী
শত-শত কিশোরীগণোঁ সে (ললিতাদিকোঁ সে) ব্রজ-
মণ্ডল মে আরাধনা করনে যোগ্য (অউর) উজ্জ্বল রস
কে (শৃঙ্গার রস কে) অঙ্কুরিত হোতে হুয়ে পূর্ব ভাব (রতি
কিংবা প্রেম) কা সিঞ্চন করতি হুয়ি কোই অনির্বচনীয়
মহা-মধুর 'রাধা' নামওয়ালী দিব্য জ্যোতি কিসি কে
চিত্ত মে অতিশয় সৌভাগ্য কে বৈভব সে উল্লসিত
হোতি হ্যায়।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! কী অপূর্ব আশ্চর্য!
কোটি কোটি লক্ষ্মীদেরও বিস্ময়কর করে তোলা
অলৌকিক গুণাবলীতে বিভূষিতা,
লীলাময় শত-শত কিশোরীদের (ললিতা প্রভৃতি) দ্বারা
ব্রজমণ্ডলে পূজিত হওয়ার যোগ্য,
এবং উজ্জ্বল শ্রঙ্গার রসের অঙ্কুরিত
পূর্ব-ভাব (রতি বা প্রেম)-এর সিঞ্চনকারী,
এক অপূর্ব, অতিমধুর, ‘রাধা’ নামধারী এক দিব্য জ্যোতি,
বিশেষ সৌভাগ্যের ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ হয়ে কারো চিত্তে বিকশিত হয়।
তজ্জীয়ান্নব যৌবনোদয় মহালাবণ্য লীলাময়ং সান্দ্রানন্দ ঘনানুরাগ ঘটিত শ্রীমূর্তি সম্মোহনম্।
বৃন্দারণ্য নিকুঞ্জ-কেলি ললিতং কাশ্মীর গৌরচ্চবী শ্রীগোবিন্দ ইব ব্রজেন্দ্র গৃহিণী প্রেমৈক পাত্রং মহঃ ॥৬৮।।
ব্যাখ্যা:
(যো) নব যৌবন কে উদয় সে মহালাবণ্যযুক্ত অউর
লীলাময় হ্যায়, (যো) ঘন আনন্দ অউর ঘন অনুরাগ সে
নির্মিত শোভাময় তথা সম্মোহক বিগ্রহ ওয়ালা হ্যায়,
(যো) শ্রীবৃন্দাবন কি নিকুঞ্জোঁ মে কি গই ক্রীড়াঁও কে
কারণ মনোহর বন হুয়া হ্যায়, (যো) কেশর কে সমান
গৌর কান্তি ওয়ালা হ্যায় (অউর যো) ব্রজেন্দ্রগুহিণী
যশোদা জী কা শ্রীগোবিন্দ কে সমান হি একমাত্র প্রীতি
ভাজন হ্যায়, ওহ (শ্রীরাধা নামক) তেজ সর্বোত্তকর্ষ রূপ
সে বিরাজমান হো।
ব্যাখ্যা:
(যিনি) নবযৌবনের উদয়ে মহান লাবণ্যে পূর্ণ ও লীলাময়,
(যিনি) ঘন আনন্দ ও ঘন অনুরাগে গঠিত শোভাময় ও মোহনীয় বিগ্রহধারী,
(যিনি) শ্রীবৃন্দাবনের নিকুঞ্জে লীলার মাধ্যমে মনোহর রূপ ধারণ করেছেন,
(যিনি) কেশরের মতো উজ্জ্বল গৌরকান্তিযুক্ত,
এবং (যিনি) ব্রজেন্দ্রগৃহিণী মা যশোদার শ্রীগোবিন্দের মতোই একমাত্র প্রিয়পাত্র,
সেই (শ্রীরাধা নামক) দিব্য জ্যোতি
সর্বোচ্চ মাহাত্ম্যে বিরাজ করুন।
প্রেমানন্দ-রাসৈক-বারিধি মহা কল্লোলমালাকুলা ব্যালোলারুণ লোচনাঞ্চল চমৎকারেণ সঞ্চিন্বতী।
কিঞ্চিত্ কেলিকলা মহোৎসবমহো বৃন্দাটভী মন্দিরে নন্দত্যদ্ভুত কাম বৈভবময়ী রাধা জগন্মোহিনী ॥৬৯।।
ব্যাখ্যা:
একমাত্র প্রেমানন্দ রস কে সাগর কি মহা তরঙ্গোঁ সে
আকুল (বনি হুয়ি), অতিশয় চপল অউর অরুণ
নেত্রাঞ্চল কে চমৎকার সে কিসি অনির্বচনীয় কেলি-
কলাঁও কে মহোৎসব কি বৃদ্ধি করতি হুয়ি, অদ্ভুত প্রেম
বৈভব সে পরিপূর্ণ, জগৎ-মোহিনী শ্রীরাধা শ্রীবৃন্দাবন
নিকুঞ্জ মন্দির মে আনন্দিত হো রহি হ্যায়।
ব্যাখ্যা:
একমাত্র প্রেমানন্দ রসের সাগরের মহা তরঙ্গগুলো দ্বারা আকুল,
অতিশয় চপল ও অরুণ নয়নপ্রান্তের চমক দিয়ে
অদ্বিতীয় কেলি-কলার মহোৎসবকে বর্ধিত করছে,
অদ্ভুত প্রেম বৈভবে পরিপূর্ণ, সকল জগতকে মোহিত করা শ্রীরাধা
শ্রীবৃন্দাবনের নিকুঞ্জ মন্দিরে
আনন্দে বিভোর হয়ে বিরাজ করছেন।
বৃন্দারণ্য নিকুঞ্জ সীমনি নব প্রেমানুভাব ভ্রমদ্ভ্রূভঙ্গী লব মোহিত ব্রজ মণির্ভক্তৈক চিন্তামণিঃ।
সান্দ্রানন্দ রাসামৃত স্রবণিঃ প্রকোদ্দাম বিদ্যুল্লতা কোটি-জ্যোতিরুদেতি কাপি রমণী চূড়ামণির্মোহিনী ॥৭০।।
ব্যাখ্যা:
বৃন্দাবন কি নিকুঞ্জোঁ কে মধ্য মে রমণী বৃন্দ কি
শিরোমণি কোঈ অনির্বচনীয় মোহিনী (মোহিত করনে
ওয়ালী) উদিত (প্রকাশিত) হো রহি হ্যায়। জো নুতন প্রেম
কি চেষ্ঠা বিশেষ সে চঞ্চল বনে হুয়ে ভ্রূবিলাস কে
লেশমাত্র সে ব্রজমণি শ্রীশ্যামসুন্দর কো মোহিত করনে
ওয়ালী হ্যায়, জো ভক্তোঁ কে লিয়ে একমাত্র চিন্তামণি
(চিন্তা হরণ করনে ওয়ালী) হ্যায়, জো ঘনে আনন্দ রস
রূপী অমৃত কো স্রবিত করনে ওয়ালী মণি হ্যায় অউর জো
উত্কট কোটি-কোটি বিজলীয়োঁ জৈসী জ্যোতি ওয়ালী হ্যায়।
ব্যাখ্যা:
বৃন্দাবনের নিকুঞ্জগুলির মধ্যে রমণী বৃন্দের শিরোমণি কোনো অনির্বচনীয় মোহিনী প্রকাশিত হচ্ছেন।
যিনি নুতন প্রেমের বিশেষ চেষ্টার কারণে চঞ্চল হয়ে ওঠা ভ্রূবিলাসের সামান্য ইঙ্গিতেই বৃজমণি শ্রীশ্যামসুন্দরকে মোহিত করেন,
যিনি ভক্তদের জন্য একমাত্র চিন্তামণি (চিন্তা হরণকারী) রূপে বিরাজমান,
যিনি ঘন আনন্দ রসরূপী অমৃত স্রাবণকারী মণি এবং
যিনি অগণিত বজ্রপাতের মতো দীপ্তিময় জ্যোতি নিয়ে উদিত হয়েছেন।
লীলাপাঙ্গ তরঙ্গতৈরুদ্ভবন্নেকৈকশঃ কোটিশঃ কন্দর্পাঃ পুরদৰ্পটঙ্কৃত মহাকোদণ্ড বিস্ফারিণঃ।
তারণ্য প্রথম প্রবেশ সময়ে যস্যা মহা মাধুরীধারণন্ত চমৎকৃতা ভবতু নঃ শ্রীরাধিকা স্বামীনী॥৭১॥
ব্যাখ্যা:
যিনকে তরুণ অবস্থা মে প্রথম প্রবেশ করতে সম্য
বিলাসময কটাক্ষোঁ কি তরঙ্গোঁ সে বড়ে অভিমান
সে টঙ্কারে গয়ে মহা ধনুষোঁ কো খীঁচনে বালে
অনেকানেক অসংখ্য কামদেব উৎপন্ন হোতে রহতে হ্যাঁয়,
ওয়ে মহা মাধুরী কি অনন্ত ধারায়োঁ সে চমত্কার
যুক্ত বনী হুঈ শ্রীরাধিকা হামারী স্বামিনী হ্যাঁয়।
ব্যাখ্যা:
যাঁর তারুণ্য বয়সে প্রথম প্রবেশের সময়
বিলাসময় চাহনির তরঙ্গে বড় অহংকারে
টঙ্কারিত মহান ধনুকসমূহকে টেনে ধরে
অসংখ্য কামদেবের জন্ম হয় বারংবার,
তাঁই মহা মাধুর্যের অনন্ত ধারায়
আশ্চর্য্য-সঞ্জাত শ্রীরাধিকা আমাদের স্বামিনী।
যত্পাদাম্বুরুহেক রেণু-কণিকামূধর্ণা নিধাতুম্ ন হি প্রাপুর্ব্রহ্ম শিৱাদয়োধ্যিকৃতিঃ গোপ্যৈক ভাবাশ্রয়াঃ।
সাপি প্রেমসুধা রাসাম্বুধিনিধী রাধাপি সাধারনীভূতা কালগতিক্রমেণ বলিনাঃ হে দৈব তুঃভ্যং নমঃ॥৭২॥
ব্যাখ্যা:
গোপী-ভাব কা অনন্য আশ্রয় লিয়ে হুয়ে ভী
ব্রহ্মা, শিবাদিক জিনকে চরণ-কমলোঁ কি এক
ধূলি করণণিকা কো মস্তক পর ধারন করনে কা
অধিকার প্রাপ্ত নহीं কর সকে, ওয়ে প্রেমামৃত রস-
সাগর কি নিধি (খান) শ্রীরাধা ভী বলবান
কাল কে গতি-চক্র সে সাধারণ-সী হো গই হ্যাঁয়, হ্যাঁয়
দৈব! তুঝে নমস্কার হ্যাঁয়।
নোট -
(ব্রহ্মা, শিবাদিক দেবগণ গোপী ভাব কা
আশ্রয় লেনে পর ভী শ্রীরাধাচরণ রেণু কো প্রাপ্ত
নহीं কর সকে, ইসসে এহ ধ্বনিত হোতা হ্যাঁয় কি
গোপীভাব শ্রীকৃষ্ণ কি প্রাপ্তি মে পূর্ণ সমর্থ হোতে
হুয়ে ভী, শ্রীরাধা-চরণোঁ কি প্রাপ্তি নহीं কর
সকতা। শ্রীরাধাচরণোঁ কি প্রাপ্তি তো একমাত্র
সখীভাব সে সম্ভব হ্যাঁয়।
ইস শ্লোক কে অন্তিম চরণ সে এহ সূচিত হোতা
হ্যাঁয় কি শ্রীহিতাচার্য কে কাল মে শ্রীরাধা কা
অত্যন্ত সাধারণ রূপ লোক মে প্রচলিত থা ঔর
উসসে দুখী হোকর হী উনহোঁনে ইয়াঁ দৈব কো
নমস্কার কিয়া হ্যঁ)।
ব্যাখ্যা:
গোপী-ভাবের অনন্য আশ্রয় গ্রহণ করার পরেও,
ব্রহ্মা, শিব প্রভৃতি দেবতাগণ যাঁর চরণকমলের
এক কণিকা ধূলিকণাও শিরে ধারন করার
অধিকার পাননি, সেই প্রেম-অমৃত-রস-সাগরের
খনি শ্রীরাধাও, প্রবল কালের গতি-চক্রে পড়ে
সাধারণ মনে হচ্ছেন—হে দৈব! তোমায় প্রণাম।
নোট:
(ব্রহ্মা, শিব ইত্যাদি দেবতাগণ গোপীভাব গ্রহণ করেও
শ্রীরাধার চরণধূলি লাভ করতে পারেননি, এ থেকে
এটা স্পষ্ট যে, গোপীভাব শ্রীকৃষ্ণলাভে পরিপূর্ণ
ক্ষমতাসম্পন্ন হলেও, শ্রীরাধাচরণ লাভ করাতে
অসক্ষম। শ্রীরাধাচরণ লাভ শুধুমাত্র সখীভাব দ্বারাই
সম্ভব। এই শ্লোকের শেষ পঙক্তি থেকে বোঝা যায়
যে শ্রীহিতাচার্যের সময়ে শ্রীরাধার খুবই সাধারণ
রূপ সমাজে প্রচলিত ছিল এবং এই ব্যাপারে
দুঃখিত হয়ে তিনি এখানে দैবকে নমস্কার করেছেন)।
দূরে স্নিগ্ধ পরম্পরা বিজয়তাঁ দূরে সুহৃন্মণ্ডলী ভৃত্যাঃ সন্তু বিদূরতো ব্রজপতেরন্য প্রসঙ্গঃ কুথ।
যত্র শ্রীবৃষভানুজা কৃত রতিঃ কুঞ্জোদরে কামিনাঃ, দ্বারস্থ প্রিয় কিডুরি পরমহং শ্রোশ্যামি কাঁচী ধ্বনিম্॥৭৩॥
ব্যাখ্যা:
ব্রজপতি শ্রীশ্যামসুন্দর কে স্নেহীগণ দূর হী
সর্বোত্কর্ষ সে বিরাজমান রহেঁ, (উনকী) মিত্র-
মণ্ডলী ভী দূর রহে, (উনকে) দাসগণ তো ঔর
ভী দূর হো যান্য (যব বাত্সল্য, সখ্য ঔর
দাস্যভাব সে ভজন করনে বালে উনসে দূর হো গয়ে
তব) অন্যান্য কিসী কি তো চর্চা হী ব্যর্থ হ্য। (ইস
স্থিতি মে মেরী য়হ অভিলাষা হ্য কি) জহাঁ কুঞ্জোঁ
কে মধ্য মে শ্রীবৃষভানু নন্দিনী নে আপনে প্রীতম
শ্যামসুন্দর কে সাথ রমন কিয়া হ্য, ৱহাঁ কুঞ্জ কে
দ্বার পর স্থিত ম্যাঁ (শ্রীবৃষভানুনন্দিনী কী) প্রিয়
দাসী উনকী কাঞ্চী ধ্বনি কো কব শুনূঁগী ?
ব্যাখ্যা:
ব্রজপতি শ্রীশ্যামসুন্দরের স্নেহাস্পদজনেরা যেন
সর্বোচ্চ গৌরব থেকে দূরে অবস্থান করেন,
তাঁদের বন্ধুসমাজও যেন দূরে থাকে,
তাঁদের দাসগণ তো আরও দূরেই থাকুন।
(অর্থাৎ—যখন ভক্তেরা, যারা বৎসল্য, সখ্য ও দাস্য
ভাবের দ্বারা ভজন করেন, তাঁর থেকে দূরে
থাকেন, তখন) অন্য কারও কথাই অনর্থক।
এই অবস্থায় আমার একমাত্র আকাঙ্ক্ষা এই
যে, যেখানে কুঞ্জগুলির মাঝে শ্রীবৃষভানুনন্দিনী
তাঁর প্রিয়তম শ্যামসুন্দরের সঙ্গে কেলি করেছেন, সেই কুঞ্জদ্বারে দাঁড়িয়ে আমি, তাঁর প্রিয়
দাসী, কবে তাঁদের কুঞ্জবিহারের কাঁসি ধ্বনি (নূপুর–ধ্বনি) শুনব?
গৌরাঙ্গে ম্রদিমা স্মিতেঃ মধুরিমা নেক্ত্রাঁচলে দ্রাঘিমা বাক্সোজে গরিমা তথৈব তনিমা মধ্যে গতৌ মন্দিমা।
শ্রোণ্যম্ চ প্রথিমা ভ্রূওঃ কুটিলিমা বিম্বাধরে শোণিমা শ্রীরাধে হৃদয়ে তে রসেন যডিমা ধ্যানেষ্টু মেঘোচরঃ॥৭৪॥
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে ! তুমহারে গৌর অঙ্গোঁ মে মৃদুলতা,
মুসকান মে মধুরতা, নেত্র প্রান্ত মে বিশালতা,
বক্ষস্থল মে গুরুতা, কাটি প্ৰদেশ মে কৃশতা
(পাতলাপন ) , চাল মে মন্দতা, নিতম্বোঁ মে
বিম্বফল কে সমান অরুণতা ঔর হৃদয় মে
রসানুভব কে কারণ স্তব্ধতা মেরে ধ্যান কা
বিষয় হো ।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! তোমার গৌর অঙ্গগুলিতে মৃদুতা,
মুসকানে মাধুর্য্য, নেত্রপ্রান্তে বিশালতা,
বক্ষস্থলে গুরুতা, কটিপ্রদেশে কৃশতা (পতলাতা),
চলনে মন্থরতা, নিতম্বে বিম্বফলের ন্যায় অরুণতা
এবং হৃদয়ে রসানুভবের কারণে স্তব্ধতা—
এই সবই হোক আমার ধ্যানের বিষয়।
প্রাতঃ পীতপটং কদা যথরাপনায়ম্যন্যাংশু কস্যার্পণাত্ কুঞ্জে বিস্মৃত কঞ্চুকীমপির সমানেতুম্ প্রধাবামি বা।
বধ্নীযাং কাভরোঁ ইউনজ্মি গলিতাং মুক্তাভলীমঞ্জয়ে নত্রে নাগরি রঙ্গকৈশ্চপি দধাম্যংগং ব্ৰ্রং বা কদা॥৭৫॥
ব্যাখ্যা:
হ্য নাগরী (শ্রীরাধা) ! প্রাতঃ কাল অন্য বস্ত্র
দেকর (আপনে ভুল সে ধারণ কিয়া হুয়া আপনে
প্রিয়তম কা) পীতাম্বর কব উৎারুঁগী, কুঞ্জ মে
ভূলী হুয়ী কঞ্চুকী কো লানে কে লিয়ে কব দৌড়ী
জাঁওগী, (খুলে হুয়ে) কেশপাশ কো (কব)
বাঁচুঁগী, টুটী হুয়ী মুক্তাবলী কো কব জোড়ুঁগী, নেত্রোঁ
মে অঞ্জন কব লাগাঁওগী ঔর তুমহারে শ্রী অঙ্গোঁ পর
লগে হুয়ে নখক্ষতাদি কে বৃণোঁ কো রঙোঁ দ্বারা় কব
ঢকুঁগী ?
ব্যাখ্যা:
হে নাগরী (শ্রীরাধা)! প্রাতঃকালে অন্য বস্র প্রদান করে (আপনি ভুল করে ধারণ করা আপনার প্রিয়তমের) পীতাম্বর কবে খুলে দেব?
কুঞ্জে ভুলে যাওয়া কঞ্চুকী আনতে কবে দৌড়ে যাব?
(খোলা) কেশপাশ কবে আচড়াব, ছিন্ন মুক্তাবলিকে কবে গেঁথে দোব,
নেত্রে অঞ্জন কবে পরাব?
এবং তোমার শ্রীঅঙ্গে লেগে থাকা নখক্ষতাদি ব্ৰণকে রঙের দ্বারা কবে আচ্ছাদন করব?
যদ্বৃন্দাবন – মাত্র গোচরমহো ইয়ন্নশ্রুতীকং শিরোপ্যাড়ুঃং ক্ষমতে ন যচ্চিব শুকাদীনাং তু যদ্ধ্যানগম্।
যত্প্রেমামৃত – মাধুরী রাসময়ং ইয়ন্নিত্য কৈশোরকং তদ্রূপং পরিবেষ্টুমেভ নয়নং লোলায়মানং মম॥৭৬॥
ব্যাখ্যা:
অহো ! জো কেৱল শ্রীবৃন্দাবন মে হী ইন্দ্রিয় গোচর
(নেত্র আদিকো প্রত্যক্ষ) হ্য, জিস তক বেদোঁ কা
শিরোভাগ (উপনিষদ্) পৌঁছনে মে সমর্থ নহीं হ্য,
জো শিব, শুক আদিওঁ কে ভী ধ্যান মে নহीं
আতা, জো প্রেমামৃত কি মধুরতা কে রস সে পূর্ণ হ্য
ঔর জো নিত্য কিশোর অবস্থা সে সম্পন্ন হ্য, উস
রূপ কো হী ভলী ভাবঁতি দেখনে কো মেরে নেত্র চঞ্চল
(ব্যাকুল) হো রহে হ্যঁ।
ব্যাখ্যা:
আহা! যে রূপ কেবল শ্রীবৃন্দাবনেই ইন্দ্রিয়গোচর (চোখ ইত্যাদির দ্বারা প্রত্যক্ষ করা যায়),
যার নাগাল পর্যন্ত বেদের শিরোভাগ (উপনিষদ) পর্যন্ত পৌঁছাতে অক্ষম,
যে রূপ শিব, শুকাদিদের ধ্যানেও ধরা দেয় না,
যে প্রেম-অমৃতের মাধুর্য রসে পূর্ণ,
এবং যে রূপ চিরন্তন কৈশোর অবস্থা-সম্পন্ন—
সে রূপটি ভালোভাবে দর্শন করার জন্যই আমার নয়ন ব্যাকুল হয়ে উঠেছে।
ধর্মাদ্যর্থ চতুষ্টয়ং বিজয়তাং কি তদ্বৃথা বার্তয়া সৈকান্তেশ্বর – ভক্তিযোগ পদবী ত্বারোপিতা মূর্ধানিঃ।
যো বৃন্দাবন সোম্নি কঞ্চন ঘনাশ্চর্য্যঃ কিশোরীমণিস্তত্কৈংকযৈ রাসামৃতাদিহ পরং চিত্তে ন মে রুচতে॥৭৭॥
ব্যাখ্যা:
ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ–য়ে চারোঁ পুরুষার্থ সবসে
উত্কৃষ্ট রূপ মে বিরাজমান রহেঁ, ইহাঁ উনকী ব্যর্থ
কী চর্চা সে ক্যা লাভ ? ঈশ্বর কী বহ অনন্য
ভক্তিযোগ কী পদ্ধতি কো ভী (হম) শীরমাথে
চড়াতে হ্যঁ (অর্থাৎ উসে ভী দূর সে নমস্কার করতে
হ্যঁ)। মেরে চিত্ত কো তো শ্রীবৃন্দাবন কী সীমা মে
জো কোঈ এক অতিশয় আশ্চর্যময়ী কিশোরী গণ
কী শীরোমণি (বিরাজমান হ্যঁ) উনকে কৈঙ্কর্য
(দাসী ভাব) রস রূপী অমৃত কে অতিরিক্ত কুছ
ভী অচ্ছা নহीं লগতা ।
ব্যাখ্যা:
ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ—এই চারটি পুরুষার্থ
সর্বোচ্চ রূপে বিরাজ করুক,
তবুও তাদের নিরর্থক আলোচনায় লাভ কী?
ঈশ্বরের যে অনন্য ভক্তিযোগের পদ্ধতি আছে,
আমরা তাকেও শ্রদ্ধায় শিরে ধারণ করি
(অর্থাৎ তাকেও দূর থেকেই প্রণাম করি)।
আমার চিত্তের কাছে তো
শ্রীবৃন্দাবনের সীমানার মধ্যে
যে আশ্চর্যময় কিশোরী-গণের শিরোমণি বিরাজ করছেন,
তাঁর কঙ্কার্য (দাসীভাব) রসরূপী অমৃত ছাড়া আর কিছুই ভাল লাগে না।
প্রেম্ণঃ সন্নধুরোজ্জ্বলস্য হৃদয়ং শৃঙ্গারলীলা-কলা বৈচিত্রী পরমাবধির্ভগবৎ পূজ্যৈব কাপীশতা।
ঈশানী চ শচী মহাসুখ তনুঃ শক্তিঃ স্বতন্ত্রা পরা শ্রীবৃন্দাবন নাথ পট্টমহিষী রাধৈব সেব্য মম॥৭৮॥
ব্যাখ্যা:
শুদ্ধ, মধুর ঔর উজ্জ্বল প্রেম কী হৃদয় রূপা,
শৃঙ্গার রস কী লীলা-কলাঔঁ কী বিচিত্রতা কী
চরম সীমা, ভগবান কী কোঈ অনির্বচনীয় পূজ্য
ঐশ্বর্য শক্তি, পার্বতী, ইন্দ্রাণী ঔর মহাসুখ
স্বরূপা স্বাধীন পরাশক্তি ঔর শ্রীবৃন্দাবননাথ
কী পটরানী শ্রীরাধা হী মেরী সেব্য হ্যঁ।
নোট - (হম পিছ্ছে শ্লোক সং. ৪৮ মে দেখ চুকে হ্যঁ
কি শ্রীহিতাচার্য শ্রীরাধা-নাম কা নাতা মানকর
উনকে লোক মে প্রচলিত সবহী রূপোঁ কো বন্দনীয়
মানতে হ্যঁ। উক্ত শ্লোক মে শ্রীরাধা কে কেৱল
বিজৃহিণী রূপ কী হী বন্দনা উনহোঁনে কী হ্য।
ব্যাখ্যা:
শুদ্ধ, মধুর এবং উজ্জ্বল প্রেমের হৃদয়রূপা,
শৃঙ্গার রসের লীলা-কৌশলের বৈচিত্র্যের
চরম সীমা, ভগবানের এক অবর্ণনীয় পূজ্য
ঐশ্বর্যশক্তি, পার্বতী, ইন্দ্রাণী ও মহাসুখ স্বরূপা
স্বতন্ত্র পরাশক্তি, এবং শ্রীবৃন্দাবননাথের পত্নী
শ্রীরাধাই আমার একমাত্র সেব্য।
নোট:
(আমরা আগের শ্লোক সংখ্যা ৪৮-এ দেখেছি
যে শ্রীহিতাচার্য শ্রীরাধা-নামকে কেন্দ্র করে
তাঁর লোকমধ্যে প্রচলিত সব রূপকেই বন্দনীয় বলে মানেন। এই শ্লোকে তিনি কেবল
শ্রীরাধার বিজর্হিণী রূপের বন্দনা করেছেন।)
রাধা দাস্যমপাস্য যঃ প্রচেষ্টতে গোবিন্দ সঙ্গাশয়া সোয়ং পূর্ণ সুধারুচে পরিচয়ং রাকাং বিনা কাংক্ষতি।
কিঞ্চ শ্যাম রতি-প্রবাহ লহরী বিজং নে তাাং বিদুস্তে প্রাপ্তি মহামৃতাম্বুধিমহো বিন্দু পরং প্রাপ্নুয়ুঃ॥৭৯॥
ব্যাখ্যা:
জো উপাসক শ্রীরাধা-দাস্য কো ছোড়কর
শ্রীগোবিন্দ কা সঙ্গ পানে কী আশা করতা হ্য, বহ
পূর্ণিমা কী রাত্রি কে বিনা পূর্ণ চন্দ্রমা কা দর্শন
করনা চাহতা হ্য। অ্যাসে হী, জো উপাসক
শ্রীশ্যামসুন্দর কে প্রীতি-প্রবাহ কী তরঙ্গোঁ কে মূল
বীজ উন (শ্রীরাধা) কো নহीं জানতে, বে বিশাল
অমৃত সাগর কো পাকার ভী, খেদ হ্য কি,
(উসকী) এক বুঁদ কো হী প্রাপ্ত কর পায়ে হ্যঁ।
ব্যাখ্যা:
যে উপাসক শ্রীরাধার দাস্যভাবকে ত্যাগ করে
শ্রীগোবিন্দের সান্নিধ্য লাভের আশা করে,
সে যেন পূর্ণিমার রাত্রি ছাড়াই পূর্ণচন্দ্র দর্শন করতে চায়।
এভাবেই, যে উপাসকেরা শ্রীশ্যামসুন্দরের প্রেমপ্রবাহের তরঙ্গগুলোর
মূল বীজ—অর্থাৎ শ্রীরাধাকে—জানেন না,
তাঁরা বিশাল অমৃত-সমুদ্র লাভ করেও,
দুঃখের বিষয়, তাহার একমাত্র একটি বিন্দুই মাত্র লাভ করেছেন।
কৈশোরাদ্ভুত মাধুরী-ভর ধুরীনাংগচ্ছভি রাধিকা প্রেমোল্লাসভরাধিকা নিরবধি ধ্যায়ন্তি যেযত্।
ত্যক্তা কর্মভিরাত্মনৈব ভগবদ্ধর্মেপ্যহো নির্মমাঃ সর্বাশ্চর্য্য গতিং গতা রসময়ীং তেব্যো মহদ্ভ্যো নমঃ॥৮০॥
ব্যাখ্যা:
কিশোরাবস্থা কী অধ্ভুত (লোক ঔর বেদ মে দেখী
ঔর শুনী গই মাধুরী সে বিলক্ষণ) মাধুরী কী
অধিকতা সে ভরপূর অঙ্গ-কান্তি বালী ঔর প্রেম
কে অত্যন্ত উল্লাস মে সর্বাগ্রগণ্য শ্রীরাধিকা
কা তদাকার বুদ্ধি সে জো ধ্যান করতে হ্যঁ, উনকো
কর্মোঁ নে আপনে আপ হী ছোড় দিয়া হ্য (অর্থাৎ
উনকে কর্ম-বন্ধন স্বতঃ কাট গয়ে হ্যঁ) ঔর বে
ভাগবত ধর্মোঁ মে ভী মমতা নহीं রাখতে। সর্বাশ্চর্য
পূর্ণ রসময়ী গতি কো প্রাপ্ত উন মহাপুরুষোঁ কো
নমস্কার হ্য।
ব্যাখ্যা:
যাঁরা কিশোরাবস্থার এক আশ্চর্য (লোক ও বেদে যেরকম মাধুর্য দেখা ও শোনা যায়, তার থেকেও অনন্য) অতিমাত্রায় মাধুর্যে পূর্ণ অঙ্গ-আভা বিশিষ্ট
এবং প্রেমের চরম উল্লাসে শ্রেষ্ঠ,
সেই শ্রীরাধিকার তদাকার বুদ্ধি (অর্থাৎ, নিজেকে তাঁর রূপে ভাবা) দিয়ে ধ্যান করেন,
তাঁদের সমস্ত কর্ম আপনিই তাঁদের ত্যাগ করে দিয়েছে (অর্থাৎ, তাঁদের কর্মবন্ধন নিজে থেকেই ছিন্ন হয়ে গেছে),
এবং তাঁরা ভাগবত ধর্মেও কোনো আসক্তি রাখেন না।
সকল আশ্চর্যে পরিপূর্ণ, রসময় গতি (অবস্থা) লাভকারী সেই মহাপুরুষদের আমি প্রণাম জানাই।
লিখন্তি ভুজমূলতো ন খলু শঙ্খ-চক্রাদিকং বিচিত্র হরিমন্দিরং ন রচয়ন্তি ভালস্থলে।
লসত্তুলসি মালিকাং দধতি কণ্ঠপীঠে ন বা গুরুর্ভজন বিক্রমাত্ক ইহ তে মহাবুদ্ধয়ঃ ॥৮১।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীগুরু কে ভজন (শ্রীগুরু দ্বারা় দিয়ে গয়ে ভজন)
কে পরাক্রম (বল) সে (জো) ভুজাঔঁ মে শঙ্খ,
চক্র আদিক চিহ্ন নহीं লিখতে, মস্তক পর বিচিত্র
হরিমন্দির (তিলক) কা রচনা নহीं করতে ঔর
কণ্ঠ মে তুলসী কী মালা ধারন নহीं করতে, ইহাঁ
বে মহামতি কৌন হ্যঁ? (অর্থাৎ বিললে হ্যঁ) ।
ব্যাখ্যা:
যাঁরা শ্রীগুরুর ভজন (অর্থাৎ, শ্রীগুরু দ্বারা প্রদত্ত ভজন-পথ) এর শক্তিতে—
বাহুতে শঙ্খ, চক্র প্রভৃতি চিহ্ন ধারণ করেন না,
মস্তকে বৈচিত্র্যময় হরিমন্দির (তিলক) অঙ্কন করেন না,
গলায় তুলসীর মালা পরেন না— এখানে (এই বিশ্বে) সেই মহানবুদ্ধিমান ব্যক্তিরা কে আছেন? (অর্থাৎ, এমন কেউ আছে কি?)
উল্লেখ: এই শ্লোকটি রসিক ভক্তদের সেই অভ্যন্তরীণ ভাবানুশীলনের ইঙ্গিত দেয়, যেখানে বাহ্যিক চিহ্ন অপেক্ষা ভজনের অভ্যন্তরীণ প্রগাঢ়তা বেশি মূল্যবান
কর্মাণি শ্রুতি বোধিতানী নিতরাং কুর্বন্তু কুর্বন্তু মা গূঢ়াশ্চর্য্য রসাঃ স্ত্রগাদি বিষয়াংগৃহ্লন্তু মুঞ্চন্তু বা।
কর্ত্বা ভাব-রহস্য পারগ-মতিঃ শ্রীরাধিকা প্রেয়সঃ কিঞ্চিজ্ঞৈরানুযুজ্যতাং বাহিরহো ভ্রাম্যদ্ভিরান্যৈরপি ॥৮২।।
ব্যাখ্যা:
রহস্য পূর্ণ ঔর আশ্চর্যময় রস মে নিমগ্ন (রসিক
জন) বেদোঁ দ্বারা় সমঝায়ে গয়ে কর্মোঁ কো করেঁ ঔর না
করেঁ, মালা আদিক বিষয়োঁ কো (ভোগ-বিলাস কী
সামগ্রী কো) গ্রহণ করেঁ ঔর ত্যাগ দেঁ। অহো !
আশ্চর্য হ্য কি শ্রীরাধিকাবল্লভ কে রহস্যময়
ভক্তি ভাব মে পারঙ্গত বুদ্ধি বালে মহাপুরুষ
বহির্মুখ ঔর অল্পজ্ঞ জনোঁ কা সঙ্গ ভী করতে রহেঁ।
(তব ভী উনকী স্থিতি মে কোঈ অন্তর নহीं
আতা) ।
ব্যাখ্যা:
রহস্যময় এবং আশ্চর্যজনক রসে নিমগ্ন সেই রসিকজনেরা —
বেদের দ্বারা নির্দেশিত কর্ম করবেন কি করবেন না,
মালা ইত্যাদি (সাধন সামগ্রী) গ্রহণ করবেন কি ত্যাগ করবেন —
তা কোনও বন্ধন নয়। অহো! আশ্চর্য কথা এই যে,
যাঁরা শ্রীরাধিকাভল্লব (শ্রীকৃষ্ণ)-এর গূঢ় ভক্তিভাবের তত্ত্বে নিপুণ বুদ্ধিসম্পন্ন,
তাঁরা বাহ্যাভিমুখী ও অল্পজ্ঞানসম্পন্ন লোকদের সঙ্গও করেন —
তবুও তাঁদের অবস্থানে (ভক্তি ও রসাস্বাদনে) কোনও বিচ্যুতি ঘটে না।
উল্লেখ:
এই শ্লোকটি রসিক ভক্তের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধতার স্তরকে প্রকাশ করে, যেখানে বাহ্যিক আচরণ বা সাধন-প্রকরণের চেয়ে হৃদয়ের গভীর অনুভব এবং শুদ্ধ ভক্তিভাব মুখ্য হয়ে ওঠে।
আলং বিষয় বার্তয়া নরক কোটি বিশ্বৎসয়া, বৃথা শ্রুতি কথাশ্রমো বৎ বিভেমি ক্যাবল্যতঃ।
পরেশ-ভজনোন্মদা যদি শুকাদয়ঃ কিন তৎ, পরং তু মম রাধিকা পদরসে মনো মজ্জতু ॥৮৩।।
ব্যাখ্যা:
কোটि-কোটি নরকোঁ সে ভী ঘৃণাস্পদ বিষয়-ভোগোঁ
কী চর্চা রহনে দো, বেদোঁ কী চর্চা কা পরিশ্রম ভী
ব্যর্থ হ্য, অহো, কৈবল্য পদ (মোক্ষ) সে তো মুঝে
ভয় লগতা হ্য। যদি শুকদেব আদি পরমেশ্বর কে
ভজন মে উন্মত্ত হ্যঁ তো উনসে মুঝে ক্যা? মেরা মন
তো শ্রীরাধা কে চরণ-কমল কে রস মে নিমগ্ন হো
জায়।
ব্যাখ্যা:
কোটি কোটি নরক থেকেও অধিক ঘৃণিত যে বিষয়ভোগ — তার আলোচনা থাক না,
বেদচর্চার পরিশ্রমও আমার কাছে অর্থহীন। অহো! সেই কৈবল্য পদ (মোক্ষ) — তার প্রতি তো আমার ভয়ই হয়। যদি শুকদেব প্রভৃতি মহাত্মাগণ
পরমেশ্বরের ভজনে উন্মত্ত থাকেন — তাহলে তাঁদের নিয়ে আমার কী?
আমার মন তো সম্পূর্ণভাবে নিমগ্ন হয়ে যেতে চায় শ্রীরাধার চরণকমলের রস-এ।
টীকা:
এই শ্লোকটি একনিষ্ঠ রাধাভক্তির এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এখানে ভক্ত বলছেন যে —
স্বর্গ, মোক্ষ, বৈদিক জ্ঞান, এমনকি মহান ঋষিদের সাধনার দৃষ্টান্তও তাঁর কাছে মূল্যহীন, যদি তাতে শ্রীরাধার চরণ সেবা না থাকে। এটি প্রেমভক্তির পরাকাষ্ঠা।
তৎসৌন্দৰ্য্য সাচ নবযো যুবনশ্রী প্রবেশঃ সা দ্রুগভঙ্গী স চ রসঘনাশ্চর্য্য বক্ষোজ কুম্ভঃ।
সোয়ং বিম্বাধর মধুরিমা তৎস্মিতং সা চ বানী সেয়ং লোলা গতিরাপি ন বিস্মর্যতে রাধিকায়াঃ ॥৮৪।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধিকা কী বহ সুন্দরত,বহ নবীন নবীন
যৌবন-শ্রী (শোভা) মে প্রবেশ, বে কঠাক্ষ, বে
আশ্চর্যময় রস সে পূর্ণ বক্ষস্থল, বহি বহ
বিম্বাধর কী মাধুরী, বহ মন্দ মুস্কান, বহ
বাণী ঔর বহী বহ লীলা পূর্ণ গতি ভুলায়ী নহीं
জাতি।
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধিকার সেই অপরূপ সৌন্দর্য,
সেই সদা নবীন যৌবনের অনুপ্রবেশ,
সেই তীক্ষ্ণ কটাক্ষ, সেই আশ্চর্য রসে পরিপূর্ণ বক্ষযুগল,
এই বিম্বফলের মতো অধরের মাধুর্য,
সেই মৃদু হাসি, সেই মধুর বাণী,
আর সেই লীলাময় গমন— সবই ভুলে থাকা যায় না।
টীকা:
এই শ্লোক শ্রীরাধার রূপ ও স্বভাবের স্মরণমাধুর্যকে প্রকাশ করে। ভক্ত তাঁর সৌন্দর্যের প্রতিটি দিক, যেমন কটাক্ষ, বক্ষ, অধর, হাসি, বাণী ও গমনভঙ্গির মধ্যে অনন্ত রসের আস্বাদ পান করেন— যেগুলো তাঁকে বারবার স্মরণ করতেই বাধ্য করে।
যল্লক্ষ্মী শুক নারদাদিপরমাশ্চয়্র্যানুরাগোৎসবৈঃ প্রাপ্তং ত্বত্কৃপায়েভি হি ব্রজভৃতাং তত্তৎকিশোরী-গণইঃ।
তৎকৈংকর্য্যমানুক্ষণাদ্ভুত রসাং প্রাপ্তুং ধৃতাশে ময়ি শ্রীরাধে নবকুঞ্জ নাগরী কৃপা-দৃষ্টিং কদা দাস্যসি ॥৮৫।।
ব্যাখ্যা:
জো লক্ষ্মী, শুক, নারদ আদিকোঁ কে লিয়ে পরম
আশ্চর্য পূর্ণ হ্য, জিসকো বিভিন্ন ব্রজবাসীয়োঁ কী
কিশোরীগণোঁ নে, তুমহারী কৃপা সে হী প্রেমোল্লাস
কে সাথ প্রাপ্ত কিয়া, উসী প্রতিক্ষণ অধ্ভুত রস
(দেনে) বালে কৈঙ্কর্য (দাস্য) কো প্রাপ্ত করনে কে
লিয়ে আশা লগায়ে হুয়ে মুঝ্ পর, হ্য নব কুঞ্জোঁ মে
নিবাস করনে বালী শ্রীরাধে ! কব কৃপা দৃষ্টি
করোগী?
ব্যাখ্যা:
যিনি লক্ষ্মী, শুকদেব, নারদ প্রমুখদের কাছেও চরম আশ্চর্যের বিষয়,
যে সেবা (কিঙ্কর্য) ব্রজবাসিনী কিশোরীগণ কেবলমাত্র তোমার কৃপায়
ভালোবাসার উচ্ছ্বাসে লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন, সেই প্রতি মুহূর্তে বিস্ময়কর রস প্রদানকারী
দাস্যসেবাটি লাভের আশায় চেয়ে আছি আমি— হে নব্য কুঞ্জে নিবাসিনী শ্রীরাধে! আমার প্রতি তুমি কবে কৃপাদৃষ্টি করবে?
টীকা:
এই শ্লোকে ভক্ত শ্রীরাধার কাছে দাস্যসেবার আকাঙ্ক্ষা জানাচ্ছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে এই সেবা এমনকি দেবতাদের জন্যও দুর্লভ। কেবল রাধার কৃপা ছাড়া এটি লাভ সম্ভব নয়।
লভ্ধ্বাদাস্যং তদতি কৃপয়া মোহন স্বাদিতেন, সৌন্দর্যশ্রী পদকমলয়োর্লালনৈঃ স্বাপিতায়াঃ ।
শ্রীরাধায়া মধুর-মধুরোচ্ছিষ্ট পীযূষ সারণ, ভোজং-ভোজং নব-নব রসানন্দ মগ্নঃ কদা স্যম্ ॥৮৬।।
ব্যাখ্যা:
যো লক্ষ্মী, শুক, নারদ আদিকোঁ কে লিয়ে পরম
আশ্চর্য পূর্ণ হ্য, জিসকো বিভিন্ন ব্রজবাসীয়োঁ কী
কিশোরীগণোঁ নে, তুমহারী কৃপা সে হী প্রেমোল্লাস
কে সাথ প্রাপ্ত কিয়া, উসী প্রতিক্ষণ অধ্ভুত রস
(দেনে) বালে কৈঙ্কর্য (দাস্য) কো প্রাপ্ত করনে কে
লিয়ে আশা লগায়ে হুয়ে মুঝ্ পর, হ্য নব কুঞ্জোঁ মে
নিবাস করনে বালী শ্রীরাধে ! কব কৃপা দৃষ্টি
করোগী?
ব্যাখ্যা:
যে কিঙ্কর্য (দাস্যসেবা) লক্ষ্মী, শুক, নারদ প্রমুখের কাছেও চরম আশ্চর্যের বিষয়,
যা নানাবিধ ব্রজবালিকারা কেবলমাত্র তোমার (হে শ্রীরাধে!) কৃপায়
ভালোবাসার উচ্ছ্বাসে লাভ করতে পেরেছে, সেই প্রতি মুহূর্তে বিস্ময়কর রস দানকারী দাস্যসেবার
লাভের আশায় আমি আকুল হয়ে অপেক্ষা করছি—
হে নব্য কুঞ্জে বাসকারিণী শ্রীরাধে! তুমি কবে আমার প্রতি কৃপাদৃষ্টি করবে?
(এই শ্লোকে ভক্ত নিজেকে শ্রীরাধার দাসীবন্ধনে আবদ্ধ করার একান্ত আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করছেন।)
যদি স্নেহাদ্রাধে দিশসि রতি-লাম্পটয় পদবীং গতং তে স্বপ্রেষ্ঠং তদপি মম নিষ্ঠং শৃণু যথা।
কটাক্ষৈরালোকে স্মিত সহচরৈর্জাত পুলকং সমাশ্লিষ্যাম্যুরচৈথ চ রসয়ে ত্বত্পদ রসম্ ॥৮৭।।
ব্যাখ্যা:
হ্য শ্রীরাধে! খেহবশ যদি আপনি কবি রতি-
লম্পটতা কী স্থিতি পর পৌঁছে হুয়ে আপনে প্রিয়তম
কা দান মুঝে কর দেঁ তো ভী মেরি ইস প্রকার কী
নিষ্ঠা কো শুনিয়ে। (ম্যঁ) মন্দ মুস্কান সে যুক্ত
কঠাক্ষোঁ সে উনকো দেখুঁগী ঔর (উনকে) পুলকিত
হোনে পর অতি গাঢ় আলিঙ্গন ভী করূঙ্গী, কিন্তু
(ইতনা সব করনে পর ভী) আস্বাদন তো আপকে
চরণারবিন্দ কে দাস্য রস কা (হী) করূঙ্গী।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! যদি কেবল খেয়ালের বশে আপনি কোনওদিন আপনার প্রেমমত্ত প্রিয়তম শ্যামসুন্দরকে আমার কাছে দানও করে দেন, তবু আপনি আমার যে নিষ্ঠা, সেই কথা শুনুন।
আমি মৃদু হাসি-সহ চোখের কোণের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাঁকে দেখব, তাঁর শরীর যখন রোমাঞ্চিত হবে তখন গভীরভাবে তাঁকে আলিঙ্গনও করব;
কিন্তু তবুও —আমি স্বাদ নেব একমাত্র আপনার চরণারবিন্দের দাস্য-রসেরই।
(এই শ্লোকে ভক্ত বলছেন, শ্রীরাধার সেবাই তাঁর একমাত্র প্রেমের ধ্যান— এমনকি শ্যামসুন্দরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা পেলেও তিনি কেবল শ্রীরাধার দাসত্বেই পরিতৃপ্ত থাকেন।)
কৃষ্ণঃ পক্ষো নবকুবলয়ং কৃষ্ণ সারস্তমালো, নীলাম্ভোদস্তব রুচিপদং নাম রূপৈশ্চ কৃষ্ণা ।
কৃষ্ণে কস্মাৎতব বিমুখতা মোহন-শ্যাম মূর্তা, বিকৃত্বা ত্বাং প্রহসিত মুখীং কিন্নু পশ্যামি রাধে ॥৮৮।।
ব্যাখ্যা:
হ্য শ্রীরাধে ! জব কৃষ্ণ পক্ষ, নীলকমল, কৃষ্ণ
সার মৃগ, তামাল বৃক্ষ, নীল মেঘ তথা কৃষ্ণা
নাম বালী কৃষ্ণ বর্ণ যমুনা (আপনে প্রিয়তম কে
নাম-রূপ সাহস্যের কারণে) আপকো পরম প্রিয়
হ্যঁ, (তব) মোহন শ্যাম শরীর বালে শ্রীকৃষ্ণ কে
প্রতি আপকী প্রতিকূলতা ক্যোঁ হ্য? অ্যায়সা কহনে সে
হঁসতী হুঈ মুখবালী আপকো ম্যাঁ ক্যা কভি দেখূঙ্গী?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে!
যখন কৃষ্ণপক্ষ, নীলকমল, কৃষ্ণসার হরিণ, তমাল গাছ, নীল মেঘ, এবং ‘কৃষ্ণা’ নামধারিণী কৃষ্ণবর্ণা যমুনা — এইসবই (তাঁর নাম ও রূপের সাদৃশ্যের কারণে) আপনার পরম প্রিয়,
তখন মোহন শ্যামবর্ণ শরীরবিশিষ্ট শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আপনার বৈরিতা কেন?
এইরকম প্রশ্ন করলে —
হাস্যোজ্জ্বল মুখভঙ্গি-সহ আপনি আমাকে দেখবেন কি?
(এই শ্লোকে কবি বা ভক্ত রাধার শ্রীকৃষ্ণপ্রেমের গভীরতা ও অন্তর্নিহিত বিরহভাবের কৌতুক ও মাধুর্য মিশ্র এক অভিব্যক্তি তুলে ধরেছেন।)
লীলা-পাঙ্গতরঙ্গিতৈরিভ দিশো নীলোত্পল শ্যামলা, দোলায়তকনকাদ্রি মণ্ডলমিভ্যোমস্তনৈস্তন্বতীম্।
উৎফুল্লস্থল পঙ্কজামিভ ভূবং রাসে পদন্যাসতঃ শ্রীরাধামানুধাবতীং ব্রজ-কিশোরিণাং ঘটা ভাবয়ে ॥৮৯।।
ব্যাখ্যা:
বিলাস পূর্ণ কঠাক্ষোঁ কী তরঙ্গোঁ সে দিশায়োঁ কো
মানোঁ নীলকমল কে সমান শ্যামল বনাতী হুयी,
বক্ষস্থল দ্বারা মানোঁ আকাশ কো দৌলায়মান
(হিলতে হুয়ে) স্বর্ণ পর্বতোঁ কে মণ্ডল সে যুক্ত
করতী হুয়ী ঔর রাস মে চরণ-বিন্যাস সে পৃথ্বী
কো মানোঁ খিলে হুয়ে স্থল কমলোঁ (গুলাবোঁ)
বালী বনাতী হুয়ী শ্রীরাধা কা অনুগমন করনে
বালী ব্রজকিশোরীয়োঁ কী মণ্ডলী কী ম্যাঁ ভাবনা
করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
বিলাসপূর্ণ কঠাক্ষের তরঙ্গের দ্বারা যিনি দশদিককে যেন নীলকমলের মতো শ্যামবর্ণ করে তোলেন,
বক্ষে-স্থিত সৌন্দর্য দ্বারা যেন আকাশকে দুলন্ত স্বর্ণপর্বতের মণ্ডল দিয়ে সাজান,
এবং রাসলীলা চলাকালীন পদচারণার মাধ্যমে পৃথিবীকে যেন ফুটন্ত স্থলপদ্মে (গোলাপফুলে) পূর্ণ করে দেন—
সেই শ্রীরাধার অনুসরণে যাঁরা থাকেন,
ব্রজের কিশোরীসকলের সেই মণ্ডলীর আমি ভাবনা (ধ্যান/চিন্তন) করি।
(এই শ্লোকে ভক্তের রাধাসঙ্গিনী ব্রজবালিকাদের প্রতি গভীর ভক্তি ও তাদের মহিমার কল্পনা প্রকাশ পেয়েছে।)
দৃশৌ ত্বয়ি রসাম্বুধৌ মধুর মীনবদ্ভ্রাম্যতঃ, স্তনৌ ত্বয়ি সুধা-সরাস্যাহ চক্রবাকাভিভ ।
মুখং সুরতরঙ্গিণি ত্বয়ি বিকাশি হেমাম্বুজং, মিলন্তু ময়ি রাধিকে তব কৃপা তরঙ্গচ্ছটাম্ ॥৯০।।
ব্যাখ্যা:
হ্য শ্রীরাধিকে ! রস সমুদ্র কে সমান আপমেঁ
(আপকে শ্রীবিগ্রহ মে) দোনো নেত্র মধুর মীন কী
তরহ কলোল করতে হ্যঁ, আহহ, অমৃত সরোবর রূপ
আপমেঁ শ্রীঅঙ্গ যুগল চকবা-চকবী কী তরহ
(সুশোভিত হ্যঁ) ঔর সরিতা রূপ আপমেঁ মুখ
প্রফুল্লিত স্বর্ণ কমল (কে সমান শোভিত হ্য)
আপকী কৃপা তরঙ্গোঁ কী ছঠা (কিরণেঁ) মুঝে প্রাপ্ত
হোঁ।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে! আপনি যেন এক রসমুদ্র – এই মহারসপূর্ণ রূপে,
আপনার উভয় নয়ন যেন মধুর মাছের মতো কলোল করছে,
অহহ! আপনি যেন অমৃত-সরোবর, যার মধ্যে
আপনার উরঃস্থল (দুই স্তন) চক্রবাক ও চক্রবাকীর ন্যায় শোভিত,
আপনি যেন সরোবরসদৃশ, যার মধ্যে
আপনার মুখ প্রস্ফুটিত স্বর্ণকমলের মতো দীপ্তিমান।
আপনার করুণা-তরঙ্গের সেই ছটা (কিরণ) যেন আমাকে স্পর্শ করে!
(এই শ্লোকে শ্রীরাধার রূপ ও গুণের অপূর্ব উপমা দিয়ে ভক্ত তাঁর করুণার কৃপাদৃষ্টি লাভের আকাঙ্ক্ষা করছেন।)
কান্তাঢ্যাস্চয্র্য কান্তা কুলমণি কমলা কোটি কাম্যৈক পাদাম্ভোজভ্রাজন্নখেন্দুচ্ছবি লব বিভবা কাপ্যগম্যাকিশোরী।
উন্মর্যাদ প্রবৃদ্ধ প্রণয়-রস মহাম্ভোধি গভীর-লীলা, মাধুর্য্যোজ্জৃম্ভিতাঙ্গী ময়ি কিমপি কৃপা-রঙ্গমঙ্গী করোতু ॥৯১॥
ব্যাখ্যা:
(আপনে) প্রিয়তমোঁ সে যুক্ত আশ্বর্যময়ী
কামিনিয়োঁ কে সমূহ কী শিরোমণি রূপা কোটि-
কোটি লক্ষ্মীয়োঁ দ্বারা বাঞ্ছঘনীয় হ্য অনুপম
দেদীপ্যমান নখ চন্দ্র-ছঠা কা লেশমাত্র বৈভব
জিনকা, আমর্যাদিত বড়়ে হুয়ে অনুরাগ রস কে
মহাসাগর কী গম্ভীর লীলাঁও কে মাধুর্য সে
উল্লসিত অঙ্গোঁ বালী কোই অনির্বচনীয় কিশোরী
মুঝে কৃপা রস কে দ্বারা অঙ্গীকার করেঁ।
ব্যাখ্যা:
(নিজের) প্রিয়তমদের সঙ্গে সংযুক্ত, ঐশ্বর্যময় কামিনীদের সমষ্টির শিরোমণি স্বরূপা,
কোটি কোটি লক্ষ্মীর দ্বারাও যাঁকে কাম্য (আকাঙ্ক্ষিত) মনে করা হয়,
এমন এক অনুপম দীপ্তিমান রত্ন, যাঁর নখচন্দ্রের কিরণের সামান্য আভাও
অসাধারণ ঐশ্বর্যের বহিঃপ্রকাশ, যাঁর দেহভঙ্গিমা
অসীমভাবে বৃদ্ধি পাওয়া অনুরাগ-রসের মহাসাগরীয়
গম্ভীর লীলামাধুর্যে উদ্ভাসিত, সেই অবর্ণনীয় এক কিশোরী
যদি করুণা-রসের মাধ্যমে আমাকে স্বীকার করে নেন, তবে আমার জীবন সফল হবে।
(এই শ্লোকে ভক্ত শ্রীরাধার অনির্বচনীয় রূপ ও গুণের বর্ণনা করে তাঁর করুণার এক বিন্দু লাভের জন্য আকুল আবেদন করছেন।)
কালিন্দ-গিরি-নন্দিনী-পুলিন মালতী-মন্দিরে, প্রবিষ্ট বনমালিনাললিত-কেলি লোলী-কৃতে।
প্রতিক্ষণ চমৎকৃতাদ্ভুতরসৈক-লীলানিধে, বিধেহি ময়ি রাধিকे তব কৃপা-তরঙ্গচ্ছটাম্ ॥৯২॥
ব্যাখ্যা:
যমুনা তট পর মালতী লতা কে নিকুঞ্জ মন্দির মে
প্রবিষ্ট হুয়ে বনমালী দ্বারা সুন্দর ক্রীড়াঁও সে
চঞ্চল বনাই হুয়ী, প্রতিক্ষণ-চমৎকার যুক্ত অদ্ভুত
রস কী একান্ত লীলা কী নিধি (উৎপত্তি স্থান)
হ্য শ্রীরাধিকে ! মুঝ পর আপনী কৃপা-তরঙ্গ কী
ছঠঠা কা বিস্তার করেঁ।
ব্যাখ্যা:
যমুনার তীরে মালতীলতার কুঞ্জ-মন্দিরে প্রবেশ করা বনমালীর (শ্রীকৃষ্ণের)
সুন্দর ক্রীড়া দ্বারা চঞ্চল হয়ে ওঠা, প্রতি মুহূর্তে চমকপ্রদ
অদ্ভুত রসের একান্ত লীলার উৎসস্থল হলেন আপনি, হে শ্রীরাধিকা!
আমার প্রতি আপনার করুণা-তরঙ্গের দীপ্তি বিস্তৃত করুন।
(এই শ্লোকে রচয়িতা শ্রীরাধার কুঞ্জলীলার মাহাত্ম্য বর্ণনা করে তাঁর কৃপালাভের আকুতি জানিয়েছেন।)
যস্যাস্তে বত কিংকরীষু বহুশশ্চাটূনি বৃন্দাটবী, কন্দর্পঃ কুরুতে তবৈব কিমপি প্রেপ্সুঃ প্রসাদোৎসবম্।
সান্দ্রানন্দ ঘনানুরাগ-লহরী নিষ্যন্দি পাদাম্বুজ, দ্বন্দ্বে শ্রীবৃষভানুনন্দিনি সদা বন্দে তব শ্রীপদম্ ॥৯৩॥
ব্যাখ্যা:
একমাত্র আপকে কিসি অনির্বচনীয় কৃপা উৎসব
কো প্রাপ্ত করনে কে ইচ্ছুক শ্রীবৃন্দাবন কে দিব্য
মন্মথ (শ্রীশ্যামসুন্দর) আপনার জিন দাসিয়োঁ
কি অনেক প্রকার সে অনুনয় বিনয় করতে হ্যঁ
(ঐসি) হে ঘনীভূত আনন্দ (ঔর) সঘন
অনুরাগ কি লহরোঁ কো প্রবাহিত করনে বালে
চরণ-কমল বালী শ্রীবৃষভানু নন্দিনী ! ম্যাঁ সদা
আপকে শোভাবান চরণোঁ কী বন্দনা করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
শুধুমাত্র আপনার কোনো অনির্বচনীয় কৃপা-উৎসব লাভের ইচ্ছায়,
শ্রীবৃন্দাবনের সেই দিব্য মধুসূদন (শ্রীশ্যামসুন্দর)
আপনার যেসব দাসীদের কাছে বিভিন্নভাবে অনুনয়-বিনয় করেন,
হে ঘনীভূত আনন্দ ও ঘন অনুরাগের প্রবাহ-বাহী
শ্রীচরণ-কমলবতী শ্রীবৃষভানুনন্দিনী! আমি চিরকাল
আপনার শোভাময় চরণসমূহে বন্দনা জ্ঞাপন করি।
(এই শ্লোকে কবি শ্রীরাধার দাসীবৃন্দের গৌরব এবং তাঁর চরণে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।)
যজ্জাপঃ সকৃদেব গোকুলপতেরাকর্ষকস্তত্ক্ষণা দ্যত্র প্রেমবতাঁ সমস্ত পুরুষার্থেষু স্ফুরেত্তুচ্ছতা।
যন্নামাঙ্কিত মন্ত্র জাপনপরঃ প্রীত্যা স্বয়ং মাধবঃ শ্রীকৃষ্ণোऽপি তদদ্ভুতং স্ফুরতু মে রাধেতি বর্ণদ্বয়ম্ ॥৯৪॥
ব্যাখ্যা:
এক বার ভি জিসকা জাপ গোকুলপতি শ্রীকৃষ্ণ
কো তৎকাল আকৰ্ষিত কর লেতা হ্য, জিসকে প্রতি
প্রেম রাখনে বালোঁ কো সমস্ত পুরুষার্থ তুচ্ছ প্রতীত
হোতে হ্যঁ, জিস নাম সে অঙ্কিত মন্ত্র কা জাপ স্বয়ং
মাধব শ্রীকৃষ্ণ ভি তৎপরতা সে করতে হ্যঁ, বেঁ "রা–
ধা" ইহ দো অক্ষর মেরে হৃদয় মে স্ফুরিত হো।
ব্যাখ্যা:
যে নামের একবার উচ্চারণেই গোকুলপতি শ্রীকৃষ্ণ তৎক্ষণাৎ আকর্ষিত হন,
যাঁর প্রতি প্রেম রাখেন এমন ভক্তদের কাছে সমস্ত পুরুষার্থ (ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ) তুচ্ছ বলে মনে হয়,যে নামে অঙ্কিত মন্ত্রের জপ স্বয়ং মাধব শ্রীকৃষ্ণ-ও আন্তরিকতার সঙ্গে করে থাকেন—
সে "রা-ধা" এই দুটি অক্ষর যেন আমার হৃদয়ে সদা বিকশিত হয়।
(এই শ্লোকে "राधा" নামের মাহাত্ম্য ও শ্রীকৃষ্ণের প্রতি এর প্রগাঢ় প্রভাব প্রকাশিত হয়েছে।)
কালিন্দী-তট কুঞ্জ-মন্দিরগতো যোগীন্দ্র বদ্যৎপদজ্যোতির্ধ্যান পরঃ সদা জপতি যাং প্রেমাশ্রুপূর্ণো হরিঃ।
কেনাপ্যদ্ভুতমুল্লসদ্গতিরসানন্দেন সম্মোহিতা, সা রাধেতি সদা হৃদি স্ফুরতু মে বিদ্যাপরা দ্বাক্ষরা ॥৯৫॥
ব্যাখ্যা :
(ইস শ্লোক কে তৃতীয় চরণ মে 'सम्मोहिता' কে
স্থান পর 'सम्मोहितঃ' পাঠ রস কুল্যা টীকা মে
স্বীকার কিয়া গয়া হ্য ঔর বহি ইহাঁ স্বীকৃত
হ্য)।
কিসি অদ্ভুত রূপ মে উল্লসিত হোতে হুয়ে রতি-রস
(প্রেমরস) কে আনন্দ সে অত্যন্ত মোহিত (অতঃ)
প্রেমাশ্রুঔঁ সে পূর্ণ নেএত্র বালে শ্রীহরि যমুনা তটবর্তী
নিকুঞ্জ ভবন মে বিরাজমান হোকর যোগিরাজ কি
ভাঁতি জিনকে চরণোঁ কি জ্যোতি কে ধ্যান মে তৎপর
রহকর निरন্তর জিসকো জপতে রহতে হ্যঁ বহ "রা–
ঘা" ইহ দো অক্ষর বালী পরা (বেদাতীত) বিদ্যা
মেরে হৃদয় মে স্ফুরিত হো।
ব্যাখ্যা:
(এই শ্লোকের তৃতীয় চরণে ‘सम्मोहिता’ এর পরিবর্তে ‘सम्मोहितः’ পাঠ রস কুল্যা টীকাতে গৃহীত হয়েছে এবং এখানেও সেই পাঠই গ্রহণ করা হয়েছে।)
এক অদ্ভুত সৌন্দর্যে উল্লसित হয়ে,
রতি-রস (প্রেমরস) এর আনন্দে অত্যন্ত মোহিত হয়ে
প্রেমাশ্রুতে পূর্ণ নয়নবিশিষ্ট শ্রীহরি যখন যমুনাতটবর্তী নিকুঞ্জভবনে
যোগীরাজের মতো তাঁদের পদযুগলের দীপ্তি ধ্যানে রত হয়ে
যে পরম শব্দময় বিদ্যাকে (যে 'रा-धा' এই দুই অক্ষরবিশিষ্ট পরাবিদ্যাকে)
নিরন্তর জপ করে থাকেন, সেই "रा-धा"—এই দুই অক্ষরের
বেদাতীত, গূঢ়, দীব্য বিদ্যা আমার হৃদয়ে বিকশিত হোক।
(এই শ্লোকে রাধা-নামের তাত্ত্বিক মহিমা, তার শ্রুতিমূলাতীততা এবং সাধকদের ও শ্রীহরির অভিন্ন ধ্যান-উপাসনা বিষয়ক গভীর রসোপলব্ধি ফুটে উঠেছে।)
দেবানামথ ভক্ত মুক্ত সুহৃদামত্যন্ত দূরং চ যৎ, প্রেমানন্দ রসং মহা সুখকরং চোচ্চারিতং প্রেমতঃ।
প্রেম্ণাকর্ণযতে জপত্যথ মুদা গায়ত্যথালিষ্বয়ং, জল্পত্যশ্রমুখো হরিস্তদমৃতং রাধেতি মে জীবনম্ ॥৯৬॥
ব্যাখ্যা:
দেবতাঔঁ, ভক্তোঁ, মুক্ত পুরুষোঁ ঔর মিত্রোঁ সে জো
অলক্ষ্যত দূর হ্য অর্থাৎ অপ্রাপ্য হ্য, জো প্রেমানন্দ রস
রূপ হ্য তথা প্রেম সে উচ্চারণ করনে পর (জো)
মহাসুখ কো দেনে বালা হ্য ঔর আঁসুওঁ সে ভিগে
হুয়ে মুখ বালে শ্রীহরি় জিসকো প্রেম সে শুনতে হ্যঁ,
জপতে হ্যঁ তথা সখীজনোঁ কে মধ্য আনন্দ সে গাতে
হ্যঁ— বহ অমৃত স্বরূপ 'রাধা' নাম মেরা জীবন হ্য।
ব্যাখ্যা:
দেবতা ভক্ত, মুক্ত পুরুষদের এবং বন্ধুদের থেকে যে
অলক্ষ্যত দূরে অর্থাৎ অপ্রাপ্য, যে প্রেমানন্দ রসরূপ
এবং প্রেমভরে উচ্চারণ করলে যা
মহাসুখ প্রদান করে, এবং যাঁর নাম
অশ্রু ভেজা মুখে শ্রীহরি প্রেমভরে শুনেন,
জপ করেন এবং সখীদের মাঝে আনন্দভরে গেয়ে ওঠেন—
সেই অমৃতস্বরূপ ‘রাধা’ নামই আমার জীবন।
য়া বারাধযতি প্রিয়ং ব্রজমণিং প্রৌঢ়ানুরাগোৎসবৈঃ, সংসিদ্ধয়ন্তি যদাশ্রয়েণ হি পরং গোবিন্দ সখ্যুৎসুকাঃ।
যৎসিদ্ধিঃ পরমাপদৈক রসব্যারাধনাতে নু সা শ্রীরাধা শ্রুতিমৌলি-শেখর-লতা নাম্নী মম প্রীয়তাম্ ॥৯৭॥
ব্যাখ্যা:
(জিস প্রকার শ্রীশ্যামসুন্দর উনকা আরাধন
করতে হ্যঁ উসী প্রকার) জো প্রগাঢ় অনুরাগ কে
উল্লাস কে দ্বারা আপনে প্রিয়তম ব্রজমণি কী
আরাধনা করতী হ্যঁ, জিনকে আশ্রয় সে হী
শ্রীগোবিন্দ কে সাথ সখী (গোপী) ভাব রাখনে কে
লিয়ে উত্সুক জন সিদ্ধি (সফলতা) প্রাপ্ত করতে
হ্যঁ ঔর জিনকে আরাধন সে পরমপদ রূপা কোঈ
রসপূর্ণ সিদ্ধি প্রাপ্ত হোতী হ্যঁ বহ শ্রীরাধা নাম
বালী শ্রুতিমীলিশেখর (শ্রীশ্যামসুন্দর) কী
লতা রূপিণী মুঝ পর প্রসন্ন হোঁ।
ব্যাখ্যা:
(যেমন শ্রীশ্যামসুন্দর তাঁর আরাধনা করেন, ঠিক তেমনই)
যিনি গভীর অনুরাগের উল্লাসের দ্বারা
তাঁর প্রিয়তম বৃজরত্ন শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করেন,
যাঁর আশ্রয়ে থেকেই শ্রীগোবিন্দের সঙ্গে
সখীভাব ধারণে আগ্রহী সাধকগণ সিদ্ধি লাভ করেন,
এবং যাঁর আরাধনায় পরমপদরূপ কোনো
রসরসপূর্ণ সিদ্ধি লাভ হয়— সেই 'শ্রীরাধা' নামক,
শ্রুতি (বেদের) মুকুটমণি শ্রীশ্যামসুন্দরের
লতা-রূপিণী, আমার প্রতি প্রসন্ন হোন।
গাত্রে কোটি তডিচ্ছবি প্রবিততানন্দচ্ছবি শ্রীমুখে, বিম্বোষ্ঠে নব বিদ্রুমচ্ছবি করে সত্পল্লবৈকচ্ছবি।
হেমাম্ভোরুহ কুড়্মলচ্ছবি কুচ-দ্বন্দ্বেऽরবিন্দেক্ষণং, বন্দে তন্নব কুঞ্জ-কেলি-মধুরং রাধাভিধানং মহঃ ॥৯৮॥
ব্যাখ্যা:
শ্রীঅঙ্গ মে কোটि বিদ্যুত কী-সী ছবি, শ্রীমুখ মে
বিস্তৃত আনন্দ কী ছবি, বিম্বফল যেমন
অধরোষ্ঠ মে নবীন মুঁগে কী-সী ছবি, হাতোঁ মে
নবীন পল্লব কী-সী ছবি, শ্রীঅঙ্গ যুগল মে
স্বর্ণ কমল কী কলিয়োঁ কী-সী ছবি বালে,
নূতন কুঞ্জ বিহার সে মধুর বনে হুয়ে কমল জৈসে
নেত্রোঁ বালে উস রাধা নামক তেজ কী ম্যাঁ বন্দনা
করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
যাঁর শরীরে কোটি কোটি বিজলির ন্যায় দীপ্তি,
যাঁর মুখমণ্ডলে প্রশস্ত আনন্দের দীপ্তি,
যাঁর বিম্বফলের মতো অধরে নবীন প্রবালরঙের আভা,
যাঁর হাতে নব পল্লবের মতো কোমলতা,
যাঁর উরোজ যুগলে স্বর্ণকমলের কুঁড়ির মতো শোভা,
এবং নব কুঞ্জবিহারের প্রভাবে
মধুময় হয়ে ওঠা কমলসদৃশ চক্ষুযুগল –
তাঁর নাম 'রাধা', এইরূপ এক দীপ্তিমান রূপের আমি বন্দনা করি।
মুক্তা-পংক্তি প্রতিমদশনাচারুবিম্বাধরোষ্ঠী, মধ্যেক্ষামা নব-নব রসাবর্ত গভীর নাভিঃ।
পীন-শ্রোণিস্তরুণি মসমুন্মেষ লাবণ্যসিন্ধুর্বৈদগ্ধীনাং কিমপি হৃদয়ম নাগরী পাতু রাধা ॥৯৯॥
ব্যাখ্যা:
মোতীয়োঁ কী পংক্তি কে সমান দন্তাবলী বালী,
সুন্দর বিম্বফল কে সমান অধরোষ্ঠ বালী,
পতলী কটি বালী, নবীন-নবীন রস কে ভঁবর কে
সমান গম্ভীর নাভি বালী, স্থূল নিতম্বোঁ বালী
ঔর যৌবন কে বিকাশ সে লাবণ্য কী সিদ্ধি
বনী হুয়ী, চতুরতা ঔর গুণোঁ কী কোঈ অনির্বচনীয়
সারসর্বস্বরূপা নাগরী রাধা (সবকী) রক্ষা
করেঁ।
ব্যাখ্যা:
যাঁর দন্তপঙ্ক্তি মুক্তোর মালার মতো,
যাঁর অধর বিম্বফলের মতো সুন্দর,
যাঁর কটিদেশ সরু ও মনোহর,
যাঁর নাভি নবীন রসের ঘূর্ণির মতো গভীর,
যাঁর নিতম্ব বৃহৎ ও আকর্ষণীয়,
যাঁর যৌবনের বিকাশ থেকে লাবণ্যের এক সম্পূর্ণ সাগর গড়ে উঠেছে,
এবং যিনি চতুরতার এমন এক অনির্বচনীয় নির্যাসস্বরূপ নাগরী রূপে বিরাজমান –
সেই শ্রীরাধা আমাদের সকলের রক্ষা করুন।
স্নিগ্ধা কুঞ্চিত নীল কেশি বিদলদ্বিম্বোষ্ঠি চন্দ্রাননে, খেলত্খঞ্জন গঞ্জনাক্ষি রুচিমান্নাসাগ্র মুক্তাফলে।
পীন-শ্রোণি তনূদরি স্তন তটি বৃত্তচ্ছটাত্যদ্ভুতে, রাধে শ্রীভুজবল্লি চার ভলয়ে স্বং রূপমাবিষ্কুরু ॥১০০॥
ব্যাখ্যা:
চিকনে, ঘুঙরালে ঔর নীলে কেশোঁ বালী, পকে হুয়ে
বিম্বফল কে সমান অধরোষ্ঠ বালী, চন্দ্র জৈসে
মুখ বালী, চঞ্চল খঞ্জন কো লজ্জিত করনে বালে
নেত্রোঁ বালী, নাসিকা কে অগ্রভাগ মে কাঁতি যুক্ত
মোতি ধারন করনে বালী, স্থূল নিতম্বোঁ বালী,
কৃশোদরী, বক্ষস্থল কে তট কী গোলাকার ছঠা সে
অদ্ভুত প্রতীত হোনে বালী, শোভাবানী ভুজলতা
মে সুন্দর কঙ্কণ (চূড়িয়াঁ) ধারন করনে বালী হে
শ্রীরাধে ! আপনে (ঐসে) রূপ কো প্রকাশ করো।
ব্যাখ্যা:
যাঁর কেশ ঘন, নীল ও কোঁকড়ানো,
যাঁর অধর পাকা বিম্বফলের মতো লালিমা বিশিষ্ট,
যাঁর মুখ চন্দ্রের মতো উজ্জ্বল,
যাঁর নয়ন খঞ্জন পাখিকেও লজ্জিত করে,
যাঁর নাসিকার অগ্রভাগে মুক্তার অলংকার শোভা পায়,
যাঁর নিতম্ব সুগঠন ও বৃহৎ,
যাঁর উদর সরু (স্লিম),
যাঁর বক্ষদেশের গঠন গোলাকার সৌন্দর্যে বিস্ময়কর,
যাঁর সুন্দর বাহুদ্বয়ে মাধুর্যময় কঙ্কণ শোভা পায় —
হে শ্রীরাধে! আপনার এই অনুপম রূপটি প্রকাশ করুন।
লজ্জান্তঃ পতমারচয্য রচিতস্মায়ং প্রসূনাঞ্জলৌ, রাধাঙ্গে নবরঙ্গ ধাম্নি ললিত প্রস্তাবনে যৌবনে।
শ্রোণী-হেম-বরাসনে স্মরনৃপেণাধ্যাসিতে মোহনে, লীলাপাঙ্গ বিচিত্র তান্ডব-কলা পাণ্ডিত্যমুন্মীলতি ॥১০১॥
ব্যাখ্যা:
(ইস শ্লোক মে নাট্য কে রূপক সে শ্রীরাধা কে রূপ কা
বর্ণন কিয়া গয়া হ্য।) নবীন রঙ্গ ভূমি (নাট্য মঞ্চ) কে
সমান শ্রীরাধা কে অঙ্গ মে লজ্জা রূপ যবনিকা (পরদা)
কো দালকর, মুস্কান রূপ পুষ্পাঞ্জলি কী রচনা
করকে, যৌবন কী সুন্দর ভূমিকা মে কামদেব (অনঙ্গ)
রূপী রাজা কে নিতম্ব রূপ শ্রেষ্ঠ স্বর্ণ সিংহাসন কে ঊপর
স্থিত হোনে পর (মোহন কো ভী) মোহিত কর দেনে বালা
লীলাপূর্ণ কঠাক্ষোঁ কে বিচিত্র নৃত্য কলা কা পরম
চাতুর্য বিকসিত হো রহা হ্য।
ব্যাখ্যা:
(এই শ্লোকটিতে নাট্যরূপক ব্যবহার করে শ্রীরাধার রূপের বর্ণনা করা হয়েছে।)
নবীন রঙ্গমঞ্চের মতো শ্রীরাধার দেহকে লজ্জারূপ পর্দায় আচ্ছাদিত করে,
হাসির মাধ্যমে যেন পুষ্পাঞ্জলি অ捐র্পণ করা হয়েছে,
যৌবনের অপূর্ব মঞ্চে কামদেব (অনঙ্গ) নামক রাজা,
নিতম্বরূপী শ্রেষ্ঠ স্বর্ণসিংহাসনে আসীন হয়ে,
(মোহনকেও) মোহিত করে দেওয়ার মতো,
লীলাময় কঠাক্ষের বিচিত্র নৃত্যকলার চরম দক্ষতা প্রকাশ পাচ্ছে।
সা লাবণ্য চমৎকৃতির্নব বয়ো রূপং চ তন্মোহনং, তত্তত্কেলি কলা-বিলাস-লহরী-চাতুর্যমাশ্চর্য ভূঃ।
নো কিঞ্চিত্ কৃতমেব যত্র ন নুতির্নাগো ন বা সম্ভ্রমো, রাধা-মাধবযোঃ স কোপি সহজঃ প্রেমোৎসবঃ পাতু বঃ ॥১০২॥
ব্যাখ্যা:
যাঁহ হ (অনুপম) লাবণ্য কা চমৎকার হ্য,
বহ নূতন অৱস্থা হ্য,
বহ মোহিত করনে বালা রূপ হ্য,
বহ আশ্চর্যজনক বিহার-কলাবিলাসোঁ কে তরঙ্গোঁ কা কুশলতা হ্য,
যাঁহ না লেশ ভর ভী বনাবট হ্য,
না স্তুতি হ্য,
না অপরাধ হ্য ঔর না আদর হী হ্য
(ঐসা) রাধামাধব কা কোঈ অনির্বচনীয় স্বাভাবিক প্রেমোৎসব তুমহারী রক্ষা করে।
ব্যাখ্যা:
যেখানে সেই (অদ্বিতীয়) লাবণ্যের চমৎকার প্রকাশ,
সেই নবীন অবস্থা, সেই মোহিতকর রূপ,
সেই আশ্চর্যজনক বিহার-কলার তরঙ্গের দক্ষতা,
যেখানে বিন্দুমাত্র ভণিতা নেই,
নেই কোনো প্রশংসা, নেই কোনো অপরাধ,
এবং নেই কোনো আনুষ্ঠানিক ভক্তি —
(সেইরূপ) রাধামাধবের কোনো এক অবর্ণনীয়, স্বতঃস্ফূর্ত প্রেমোৎসব তোমার রক্ষা করুক।
যেষাং প্রেক্ষাং বিতরতি নবোদার গাঢানুরাগান্, মেঘশ্যামো মধুর-মধুরানন্দ মূর্তির্মুকুন্দঃ।
বৃন্দাটব্যাং সুমহিম চমৎকার কারীণ্যহো কিঙ্, তানি প্রেক্ষেদ্ভুত রস নিধানানি রাধা পদানি ॥১০৩॥
ব্যাখ্যা:
মধুরাতিমধুর আনন্দ মূর্তি ঔর মেঘ কে সমান
শ্যাম বর্ণ বালে মুকুন্দ
নূতন অসীম প্রগাঢ় অনুরাগ সে
জিনকে দর্শনোঁ কী ইচ্ছা কা বিতরণ (দান) করতে হ্যঁ,
বৃন্দাবন মে অত্যন্ত মহিমাশালী চমৎকার সে যুক্ত
ঔর অদ্বিতীয় রস কে নিধান
উন শ্রীরাধা কে চরণোঁ কো ক্যা কভি ম্যাঁ দেখুঁগা?
ব্যাখ্যা:
মধুরাতিমধুর আনন্দময় মূর্তি এবং মেঘের মতো শ্যামবর্ণযুক্ত
শ্রীমুকুন্দ, নূতন, অসীম ও গভীর অনুরাগের সঙ্গে
যাঁরা দর্শনের আকাঙ্ক্ষা দান করেন,
শ্রীবৃন্দাবনে অত্যন্ত গৌরবময় চমৎকারে পরিপূর্ণ
এবং অতুলনীয় রসের আধার
সেই শ্রীরাধার পদপদ্ম —
আমি কি কখনও তা দর্শন করতে পারব?
বলান্নীত্বা তল্পং কিমপিপরিরভ্যাধর-সুধাং, নিপীয় প্রোল্লিখ্য প্রখর-নখরেণ স্তনভরম্।
ততো নীবীং ন্যস্তে রসিক-মণিনা ত্বত্কর-ধৃতে, কদা কুঞ্জচ্ছিদ্রে ভবতু মম রাধেনুনয়নম্ ॥১০৪॥
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! বলপূর্বক (আপকো) শয্যা পর লে জাকর,
কিসি অনির্বচনীয় রূপ সে (আপকা) আলিঙ্গন করে
ঔর অধরামৃত পান করে (এবং) প্রখর নখাগ্র সে
(আপকে) বক্ষোজ পর ক্ষত করে তৎপরশ্চাৎ রসিক শেখর
(শ্রীশ্যামসুন্দর) দ্বারা (আপকে) করকমলোঁ সে পকড়ে হুয়ে
নীভি-বন্ধন কে বিমোচন করনে পর,
(উসকো দেখনে কে লিয়ে) মেরে নেত্র কুঞ্জ কে ছিদ্রোঁ মে কব লগেংগে?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! বলপূর্বক আপনাকে শয্যায় নিয়ে গিয়ে,
এক অপূর্ব ভঙ্গিতে আপনাকে আলিঙ্গন করে
এবং আপনার অধর-অমৃত পান করে,
তীব্র নখাগ্র দ্বারা আপনার বক্ষযুগলে ক্ষত করে,
তৎপরবর্তীতে রসিকশ্রেষ্ঠ শ্রীশ্যামসুন্দর
আপনার করকমল দ্বারা ধৃত নিভী (পেটিকা)-বন্ধন খুললে,
সেই দৃশ্য দেখার জন্য আমার নয়ন কখন সেই কুঞ্জের ছিদ্রে নিবদ্ধ হবে?
করং তে পত্রালি কিমপি কুচযোঃ কর্তুমুচিতং, পদং তে কুঞ্জেষু প্রিয়মভিসরন্ত্যা অভিসৃতৌ।
দৃষৌ কুঞ্জচ্ছিদ্রৈস্তব নির্বৃত-কেলিং কলয়িতুং, যদা বীক্ষে রাধে তদপি ভবিতা কিম শুভ দিনম্ ॥১০৫॥
ব্যাখ্যা:
জব ম্যাঁ ইহ দেখ পাউঁগী কি
মেরে হাত তুমহারে বক্ষস্থল পর অনুপম পত্রাবলী কী রচনা করনে যোগ্য হ্যঁ, মেরে পায়ঁ কুঞ্জোঁ মে প্রিয়তম কে প্রতি অভিসার করতী হুঈ
তুমহারা অনুসরণ করনে কে যোগ্য হ্যঁ
ঔর (মেরে) নেত্র কুঞ্জ কে ছিদ্রোঁ সে
তুমহারী একান্ত ক্রীড়া দেখনে কে যোগ্য হ্যঁ,
হে শ্রীরাধে! ক্যা ঐসা ভী শুভ দিন হোগা?
ব্যাখ্যা:
যখন আমি এই দৃশ্য দেখতে পাব,
যে আমার হাত তোমার বক্ষস্থলে অপূর্ব পত্রাবলী রচনার উপযুক্ত হয়েছে,
আমার পা কুঞ্জে প্রিয়তমের প্রতি অভিসার করতে থাকা
তোমার অনুসরণ করার যোগ্য হয়েছে,
এবং আমার নয়ন কুঞ্জের ছিদ্র থেকে
তোমার একান্ত ক্রীড়া দেখার উপযুক্ত হয়েছে—
হে শ্রীরাধে! এমন কোন শুভদিন কি কখনো আসবে?
রহো গোষ্ঠী শ্রোতুং তব নিজ বিতেন্দ্রেণ ললিতাং, করে ধৃত্বা ত্বাং বা নব-রমণ-তল্পে ঘটয়িতুম্।
রতামর্দস্ত্রস্তং কচভরমথো সংযময়িতুং, বিদধ্যাঃ শ্রীরাধে মম কিমধিকারোৎসব-রসম্ ॥১০৬॥
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! আপনে লম্পট প্রিয়তম কে সাথ
আপকা একান্ত মে মধুর রহস্যময় বার্তালাপ শুননে কা,
আপকা হাত পকড়কর প্রিয়তম কা নবীন শয্যা পর লে জানে কা
ঔর সুরত যুদ্ধ মে বিখরে হুয়ে (আপকে) কেশপাশ কো
সঁवार কর বাঁধনে কা আনন্দ-রসসময় অধিকার
মেরে লিয়ে ক্যা বিধান করোগী?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! আপনার লম্পট প্রিয়তমের সঙ্গে
আপনার একান্তে মধুর ও রহস্যময় সংলাপ শুনবার,
আপনার হাত ধরে প্রিয়তমকে নবীন শয্যার দিকে নিয়ে যাবার,
এবং সুরত-যুদ্ধে বিখণ্ডিত আপনার কেশপাশকে
গুছিয়ে বাঁধবার যে আনন্দ-রসময় অধিকার আছে—
আপনি কি তা আমার জন্য বিধান করবেন?
বৃন্দাটব্যাং নব-নব রসানন্দ পুঞ্জে নিকুঞ্জে, গুঞ্জভৃঙ্গী-কুল মুখরিতে মঞ্জু-মঞ্জু প্রহাসৈঃ।
অন্যোন্য ক্ষেপণ নিশ্চয়ন প্রাপ্ত সংগোপনাদ্যৈঃ ক্রীড়জ্জীয়াসিক মিথুনং কল্প্ত কেলি-কদম্বম্ ॥১০৭॥
ব্যাখ্যা:
শ্রীবৃন্দাবন মে গুঞ্জার করতী হুয়ী ভ্রমরী সমূহ সে
শব্দায়মান নূতনাতিনূতন রসময় আনন্দ কে পুঞ্জ
(মূর্তিমান রসানন্দ রূপ) নিকুঞ্জ মে মধুরাতিমধুর
উন্মুক্ত হাস কে সাথ পরস্পর ক্ষেপণ (গেন্দ ফেলনা)
নিয়য়ন (গ্রহণ করনা) ঔর ছিপা লেনা আদি ক্রিয়াঁও
সে কেলি সমূহ কী রচনা করে খেলতে হুয়ে রসিক যুগল
(শ্রীশ্যামা শ্যাম) কী জয় হো।
ব্যাখ্যা:
শ্রীবৃন্দাবনে গুঞ্জনরত ভ্রমরীদের দল দ্বারা
ধ্বনিত, নবীনাতিনবীন রসময় আনন্দের পুঞ্জ—
অর্থাৎ মূর্তিমান রস-আনন্দ স্বরূপ— নিকুঞ্জে মধুরাতিমধুর মুক্ত হাস্য সহকারে,
পরস্পর বল (গোলক) নিক্ষেপ, ধারণ ও লুকানো ইত্যাদি
ক্রীড়া দ্বারা কেলি-সমূহ সৃষ্টি করে
যে রসিক যুগল (শ্রীরাধা-শ্যাম) খেলায় লিপ্ত হন—
তাঁদের জয় হোক।
রূপং শারদ-চন্দ্র-কোটি-বদনে ধাম্মিল্লমল্লীস্রজামামোদৈর্বিকলী কৃতালি-পটলে রাধে কদা তেঅদ্ভুতম্।
গ্রৈবেওজ্বল কম্বু-কণ্ঠি মৃদুদোর্বল্লী চলত্কঙ্কণে, বীক্ষে পট্ট-দুকূল-বাসিনি রণন্মঞ্জীর পাদাম্বুজে ॥১০৮॥
ব্যাখ্যা:
শরদ ঋতু কে কোটि চন্দ্রোঁ কে সমান মুখ বালী,
কেশপাশ মে ধারন কী হুয়ী মল্লিমালা কী সুগন্ধি সে
ভ্রমর সমূহ কো বিকল কর দেনে বালী,
ত্রৈবৈক্য (কণ্ঠ কে আভূষণ) সে উজ্জ্বল বনে হুয়ে
শঙ্খ কে সমান কণ্ঠ বালী,
কোমল ভুজলতাওঁ মে শোভিত
চঞ্চল কঙ্কণোঁ বালী,
রেশমী বস্র ধারন করনে বালী
ঔর বজতে হুয়ে নূপুরোঁ সে যুক্ত
চরণ কমলোঁ বালী,
হে শ্রীরাধে!
আপকে অদ্বিতীয় রূপ কো ম্যাঁ কব দেখুঁগা?
ব্যাখ্যা:
শরৎ ঋতুর কোটি কোটি চাঁদের মতো মুখশোভা যাঁর,
চুলের জটায় গাঁথা মল্লিকা মালার সুবাসে
ভ্রমর দলকেও ব্যাকুল করে তোলেন যিনি,
ত্রৈব্যৈক্য গলার অলঙ্কারে শঙ্খসম কণ্ঠবিশিষ্টা,
স্নিগ্ধ ভুজলতায় শোভিত চঞ্চল কঙ্কণধারিণী,
রেশমি বস্ত্র পরিহিতা,
এবং ঘুঙুরধ্বনিময় পদপদ্মবিশিষ্ট—
হে শ্রীরাধে!
আমি কবে আপনার এই অতুলনীয় রূপ দর্শন করব?
ইতোভযমিতস্ত্রপা কুলমিতো যশঃ শ্রীরিতোহিনস্ত্যখিল শৃঙ্খলামপি সখীনিবাসস্ত্বয়া।
সগদ্গদ্মুদীরিতং সুবহু মোহনা কাঙ্ক্ষয়া, কথং কথময়ীশ্বরি প্রহসিতৈঃ কদা ম্ত্রেডযসে ॥১০৯॥
ব্যাখ্যা:
ইধর ভয় হ্য, ইধর লজ্জা হ্য, ইধর কুল হ্য, ইধর যশ
ঔর শ্রী হ্য কিন্তু সখীয়োঁ সে বেষ্টিত প্রিয়তম ইন সবহী
শৃঙ্খলাঁও কো তোড় দেতে হ্যঁ।' ইস প্রকার মোহন কী
অতিশয় আকাশাঁও সে যুক্ত আপকে গদ্গদ্ (বচন
সুনকর) হে স্বামিনী! 'ইহ কৈসে হ্য–ইহ কৈসে হ্য?' ইস
প্রকার পরিহাসপূর্বক ম্যাঁ আপসে কব বার-বার পুছুঁগী?
ব্যাখ্যা:
এদিকে ভয়, এদিকে লজ্জা, এদিকে কুল-গৌরব, এদিকে যশ ও শ্রী—
তবুও সখীদের দ্বারা পরিবেষ্টিত প্রিয়তম এই সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে ফেলেন।
এইভাবে মোহনের অতিশয় আকাঙ্ক্ষায় আপ্লুত
আপনার গদ্গদ্ (অশ্রুসিক্ত) বাক্য শুনে,
হে স্বামিনী! "এটা কীভাবে?" — "এটা কীভাবে?"
এইরূপ পরিহাস করে আমি কবে বারবার আপনাকে প্রশ্ন করব?
শ্যামে চাটুরুতানি কুর্বতি সহালাপান্প্রণেত্রী ময়া, গৃহ্লানে চ দুকূল পল্লবমহো হুঙ্কৃত্য মাং দ্রক্ষ্যসি।
বিভ্রাণে ভুজবল্লিমুল্লসিতয়া রোমস্রজালঙ্কৃতাং, দৃষ্ট্বা ত্বাং রসলীন মূর্তিমথ কিম পশ্যামি হাস্যং ততঃ ॥১১০॥
ব্যাখ্যা:
শ্রীশ্যামসুন্দর কে অনুনয়-বিনয় করনে পর (আপ) মেরে
সাথ বাচিত করনে লগোগী ঔর (উনকে দ্বারাআ আপকে)
বস্ত্র কে ছোর কে পকড়ে জানে পর (উনকী ঔর) হুঁকার
করকে মেরি ঔর দেখোগী ঔর (প্রিয়তম কে দ্বারা)
(আপকী) ভুজলতা কে গ্রহন করনে পর উল্লসিত
রোমাবলী সে বিভূষিত আপকো রস নিমগ্ন বিগ্রহ বালী
দেখকর তদনন্তর ক্যা (ম্যাঁ আপকে) হাস্য কো দেখুঁগী?
ব্যাখ্যা:
শ্রীশ্যামসুন্দর-এর অনুনয়-বিনয়ের ফলে আপনি আমার সাথে কথা বলতে শুরু করবেন
এবং যখন তিনি আপনার পোশাকের প্রান্ত ধরে টানবেন, তখন আপনি গর্জন করে তাঁর দিকে না তাকিয়ে আমার দিকেই তাকাবেন,
এবং যখন তিনি আপনার বাহুলতা (হাতের লতা সদৃশ রূপ) ধরবেন,
তখন আপনার শরীর রসাস্বাদনে নিমগ্ন হয়ে উঠবে এবং অত্যন্ত আনন্দিত রোমাঞ্জন দিয়ে শোভিত হবেন —
এই সব দেখার পরে, আমি কি তখন আপনার হাসি দেখতে পাবো?
অহো রসিক শেখরঃ স্ফুরতি কোপি বৃন্দাবনে, নিকুঞ্জ-নব-নাগরী কুচ-কিশোর-কেলি-প্রিয়ঃ।
করোতু স কৃপাং সখী প্রকট পূর্ণ নত্যুৎসবো, নিজ প্রিয়তমা-পদে রসময়ে দদাতু স্থিতিম্ ॥১১১॥
ব্যাখ্যা:
অহো ! (জিনকো) নিকুঞ্জ মে বিরাজমান নব নাগরী কে
নবোদিত শ্রী অঙ্গ যুগল কে সাথ কেলি করনা প্রিয় হ্য
ঔর সখীয়োঁ কো প্রকাশ রূপ সে পূর্ণ প্রণতি (নমস্কার)
করনা জিনকে লিয়ে উত্সব হ্য, ঐসে কোঈ অনির্বচনীয়
রসিক শিরোমণি বৃন্দাবন মে শোভাবান হ্যঁ। কৃপা
করকে আপনী প্রিয়তमा (শ্রীরাধা) কে রসময় চরণোঁ মে
মুঝে স্থিতি প্রদান করেঁ।
ব্যাখ্যা:
অহো! যাঁর প্রিয় হলেন—নিকুঞ্জে অধিষ্ঠিত এক নব-নাগরীর সদ্য-উদিত শ্রীঅঙ্গ-যুগলের সঙ্গে লীলা ক্রীড়া করা,
এবং যিনি সখীদের প্রকাশ্যেই পরিপূর্ণ প্রণতি (নমস্কার) প্রদানকে এক উত্সবরূপে গ্রহণ করেন,
সেই এক অনির্বচনীয় রসিকশিরোমণি বৃন্দাবনে শোভিত হচ্ছেন।
তাঁরা যেন করুণা করে তাঁদের প্রিয়তমা (শ্রীরাধার) রসময় চরণে আমাকে আশ্রয় দান করেন।
বিচিত্র বর ভূষণোজ্জ্বল-দুকূল-সৎকঞ্চুকৈঃ, সখীভিরতিভূষিতা তিলক-গন্ধ-মাল্যৈরপি।
স্বয়ং চ সকলা-কলাষু কুশলী কৃতা নঃ কদা, সুরাস-মধুরোৎসবে কিমপি বেশনেত্স্বামিনী ॥১১২॥
ব্যাখ্যা:
সখী জনোঁ দ্বারা অধ্ভুত ঔর শ্রেষ্ঠ ভূষণোঁ, উজ্জ্বল বস্ত্র
এবং সুন্দর কঞ্চুকী কে দ্বারা তথা তিলক, সুগন্ধিত দ্রব্য
ঔর মালাঁও সে ভলি ভাঁতি বিভূষিত কী গঈ তথা
সম্পূর্ণ কলাঁও মে কুশল বনাঈ গঈ হমকো স্বয়ং
শ্রীস্বামিনী মধুর রাসোৎসব মে কব প্রবিষ্ট করেংগী?
ব্যাখ্যা:
সখীগণ দ্বারা—অদ্ভুত এবং উৎকৃষ্ট ভূষণ,
উজ্জ্বল বসন, সুন্দর কঞ্চুকী (স্তনাবরণ),
টিপ, সুবাসিত দ্রব্য এবং মালা দিয়ে যথার্থভাবে অলঙ্কৃত,
এবং সমস্ত কলায় দক্ষ করে গঠিত— আমাদেরকে স্বয়ং শ্রীস্বামিনী (শ্রীরাধিকা)
কবে সেই মধুর রাসোৎসবে প্রবেশ করাবেন?
কদা সুমণি কিংকিণী বলয় নূপুর প্রোল্লসান্, মহামধুর মণ্ডলাদ্ভুত-বিলাস-রাসোৎসবে।
অপি প্রণয়িনো বৃহদ্ভুজ গৃহীত কণ্ঠয়ো ৱয়ং, পরং নিজ রসেশ্বরী-চরণ-লক্ষ্ম বীক্ষামহে ॥১১৩॥
ব্যাখ্যা:
সুন্দর মণি জটিত কিন্কিণী, কঙ্কণ ঔর নৃপুরোঁ সে
সুশোভিত মহামধুর মণ্ডল মে হো রহে অধ্ভুত বিলাস
বালে রাসোৎসব মে প্রিয়তম (শ্রীশ্যামসুন্দর) কী
বিশাল ভুজাওঁ দ্বারা আলিঙ্গিত কণ্ঠোঁ বালী (হোনে
পর) ভী হম কেবল আপনী রসময়ী স্বামিনী কে চরণ
চিঠ্ঠোঁ কো কব দেখেংগী?
ব্যাখ্যা:
সুন্দর মণি-খচিত কিঙ্কিণী, কঙ্কণ ও নূপুর দ্বারা
সুশোভিত, অতিমধুর মণ্ডলীতে অনুষ্ঠিত
আদ্ভুত লীলাভার রাসোৎসবে— প্রিয়তম (শ্রীশ্যামসুন্দর)–এর
বিশাল ভুজদ্বারা আলিঙ্গিত কণ্ঠধারিণী (হওয়া সত্ত্বেও),
আমরা কবে শুধুমাত্র আমাদের রসময়ী স্বামিনীর
চরণ চিহ্নসমূহ দর্শন করব?
যদ্গোবিন্দ-কথা-সুধা-রস-হৃভে চেতো ময়া জৃম্ভিতম্, যদ্বা তদ্গুণ কীর্তনার্চন বিভূষাদ্যৈর্দিনং প্রাপিতম্।
যদ্যত্প্রীতিরকারি তত্প্রিয়-জনেষ্বাত্যন্তিকী তেন মে, গোপেন্দ্রাত্মজ-জীবন-প্রণয়িনী শ্রীরাধিকা তুষ্ট্যতু ॥১১৪॥
ব্যাখ্যা:
শ্রীগোবিন্দ কে কথামৃত রূপী রস সরোবর মে ম্যাঁনে জী
আপনা চিত্ত লগায়া হ্য অথবা ম্যাঁনে উনকে গুণগান,
পূজন, শৃঙ্গার-সেবা আদি মে জো কাল ব্যতীত কিয়া হ্য
(অথবা) উনকে প্রিয়জনোঁ মে (ভক্তোঁ মে) জো-জো
(বিভিন্ন প্রকার সে) অতিশয় প্রীতি কী হ্য, উস সবকে
(ফলস্বরূপ) শ্রীগোপরাজকুমার কী প্রাণেশ্বরী
শ্রীরাধিকা মুঝ পর প্রসন্ন হোঁ।
ব্যাখ্যা:
শ্রীগোবিন্দের কথামৃত-রূপী রসসरोবরে আমি নিজের চিত্তকে স্থাপন করেছি—
অথবা, আমি তাঁর গুণগান, পূজা, শৃঙ্গারসেবা প্রভৃতিতে যে সময় অতিবাহিত করেছি,
এবং তাঁর প্রিয়জনদের (ভক্তদের) প্রতি
যে-যে রকমে আমি অতিশয় প্রীতি প্রকাশ করেছি,
এই সমস্ত কিছুর (ফলস্বরূপ) গোপরাজকুমার (শ্রীকৃষ্ণ)-এর প্রাণেশ্বরী
শ্রীরাধিকা যেন আমার প্রতি প্রসন্ন হন।
রহো দাস্য তস্যা কিমপি বৃষভানোর্ব্রজবরীয়সঃ পুত্র্যাঃ পূর্ণ প্রণয়-রস মূর্তের্যদি লভে।
তদা নঃ কিম্ ধর্মৈঃ কিমু সুরগণৈঃ কিন্চ বিধিনা, কিমীশেন শ্যাম প্রিয়মিলন-যত্নৈরপি চ কিম্ ॥১১৫॥
ব্যাখ্যা:
পূর্ণতম প্রেম রস কী মূর্তি (ঔর) ব্রজ বরিষ্ঠ শ্রীবৃষভানু
কী পুত্রী শ্রীরাধা কা কোঈ অনির্বচনীয় একান্ত দাস্য
যদি প্রাপ্ত হো যায় তো হমকো ধর্মোঁ সে, দেব সমূহ সে,
ব্রহ্মা সে, শিবজী ঔর শ্রীশ্যামসুন্দর কে মিলনে কে
প্রয়াসোঁ সে ভী ক্যা প্রয়োজন হ্য? (ক্যোকি শ্রীশ্যামসুন্দর
তো অনায়াস প্রাপ্ত হো হী যায়েংগে) ।
ব্যাখ্যা:
পূর্ণতম প্রেম-রসের মূর্তি এবং ব্রজের শ্রেষ্ঠ পুরুষ
শ্রীবৃষভানুর কন্যা শ্রীরাধিকা— তাঁর যদি কোনো অনির্বচনীয় একান্ত দাস্য (কিঙ্করীভাব) লাভ হয়, তবে আমাদের আর ধর্ম, দেবতা-সমূহ, ব্রহ্মা,
শিবজি কিংবা শ্রীশ্যামসুন্দরকে পাওয়ার প্রচেষ্টার
প্রতি কোনো প্রয়োজনই থাকবে না। (কারণ, যদি শ্রীরাধার কিঙ্করীভাব পাওয়া যায়,
তবে শ্রীশ্যামসুন্দর তো আপনাতেই লাভ হয়েই যাবেন)।
নন্দ্রাস্যে হরিণাক্ষি দেবি শুনসে শোণাধরে সুস্মিতে, চিল্লক্ষ্মী ভুজবল্লি কম্বু রুচির গ্রীবে গিরীন্দ্র-স্তনি।
ভঞ্জন্মধ্য বৃহন্নিতম্ব কদলী খণ্ডোরু পাদাম্বুজে, প্রোন্মীলন্নখ-চন্দ্র-মণ্ডলি কদা রাধে ময়ারাধ্যসে ॥১১৬॥
ব্যাখ্যা:
অরুণ অধর ঔর সুন্দর মুসকান বালী! শোভাব সম্পত্তি
যুক্ত লতা জৈসী ভুজাওঁ বালী! শঙ্খ কে সমান সুন্দর
গ্রীবা বালী! গিরিরাজ কে সমান বক্ষস্থল বালী!
কৃশোদরী! স্থূল নিতম্বে! কদলী খণ্ড কে সমান জঙ্ঘা
ঔর কমল কে সমান চরণোঁ মে চমকতে হুয়ে নখ চন্দ্রোঁ
বালী হে শ্রীরাধে! তুম কব মেরী আরাধনা স্বীকার
করোগী?
ব্যাখ্যা:
অরুণিম অধর ও সুন্দর মৃদু হাস্যধারিণী!
শোভা ও ঐশ্বর্যে ভরপুর লতা সদৃশ ভুজা যাঁর!
শঙ্খের মতো শুভ্র ও সৌন্দর্যময় গ্রীবা যাঁর! গিরিরাজের মতো উদার ও উজ্জ্বল বক্ষযুগল!
সুক্ষ্ম কোমর, সুদৃঢ় নিতম্ব, কদলীখণ্ড সদৃশ জঙ্ঘা
এবং পদপঙ্কজে জ্যোতির্ময় নখচন্দ্ররাশি— হে শ্রীরাধে! তুমি কবে আমার আরাধনাকে
অনুগ্রহপূর্বক গ্রহণ করবে?
রাধা-পাদ-সরোজভক্তিমচলামুদ্বীক্ষ্য নিষ্কৈতবাং, প্রীতঃ স্বং ভজতোপি নির্বর মহা প্রেম্ণাধিকং সর্বশঃ।
আলিঙ্গত্যথ চুম্বতি স্ববদনাত্তাম্বুলমাস্যর্পযেত্, কণ্ঠে স্বাং বনমালিকামপি মম ন্যাস্যেত্কদা মোহনঃ ॥১১৭॥
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধা কে চরণ কমলোঁ মে অচল ঔর নিষ্কপট ভক্তি
দেখকর মোহন শ্রীশ্যামসুন্দর, অতিশয় মহাপ্রেম সে
সর্বাত্মনা আপনা ভজন করনে বালোঁ সে ভী অধিক
প্রসন্ন হোকর, উস শ্রীরাধা উপাসক কো আলিঙ্গন করতে
হ্যঁ, চুম্বন করতে হ্যঁ, আপনে মুখ সে উসকে মুখ মে তাম্বূল
(পান কা বীড়া) দেতে হ্যঁ তথা উসকে কণ্ঠ মে আপনী
বনমালা পহিনা দেতে হ্যঁ। ঐসা (শ্রীমোহন) মেরে প্রতি
ভী কব করেংগে।
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধার পদপঙ্কজে অচল এবং নিঃকপট ভক্তি দেখে
মোহন শ্রীশ্যামসুন্দর— অতিশয় মহাপ্রেমে, এমনকি নিজ ভজনে
সম্পূর্ণভাবে রত ভক্তদের থেকেও অধিক সন্তুষ্ট হয়ে,
সেই শ্রীরাধা-উপাসককে আলিঙ্গন করেন,
চুম্বন করেন, নিজ মুখ থেকে তার মুখে দেন তাম্বূল (পান),
এবং তার কণ্ঠে নিজ বনমালা পরিয়ে দেন।
— ঐরূপ আচরণ শ্রীমোহন কি আমার প্রতিও কখনো করবেন?
লাবণ্যং পরমাদ্ভুতং রতি-কলা-চাতুর্যমত্যদ্ভুতং, কান্তিঃ কাপি মহাদ্ভুতা বরতনোর্লীলাগতিশ্চাদ্ভুতা।
দৃগ্ভঙ্গী পুনরদ্ভুতাদ্ভুততমা যস্যাঃ স্মিতং চাদ্ভুতং, সা রাধাদ্ভুত মূর্ত্তিরদ্ভুত রসং দাস্যং কদা দাস্যতি ॥১১৮॥
ব্যাখ্যা:
জিনকা লাবণ্য পরম অধ্ভুত হ্য, রতি কলাওঁ মে চাতুরি
অত্যন্ত অধ্ভুত হ্য, কোঈ অনির্বচনীয় কান্তি মহা অধ্ভুত
হ্য, কমনীয় শ্রীঅঙ্গ বালী (শ্রীরাধা) কী লীলাপূর্ণ
গতিও অধ্ভুত হ্য, উনকী হৃগ-ভঙ্গী (নেত্র সঞ্চালন)
অধ্ভুতে সে ভী পরম অধ্ভুত হ্য তথা মন্দ মুসকান অধ্ভুত
হ্য। বে অধ্ভুতা কী মূর্তি শ্রীরাধা মুঝে অধ্ভুত রস বালী
আপনী দাসতা কব প্রদান করেংগী?
ব্যাখ্যা:
যাঁর লাবণ্য পরম আশ্চর্য, যাঁর রতিকলায় অসামান্য চাতুর্য,
যাঁর এক অনির্বচনীয় কান্তি অপরূপ,
যাঁর কোমল শ্রীঅঙ্গসমূহ লীলাময় গতিতে অনুপম,
যাঁর ভ্রূভঙ্গী—অর্থাৎ নেত্রসঞ্চালন— আশ্চর্যের মধ্যেও পরম আশ্চর্য,
এবং যাঁর মৃদু হাসি অসাধারণভাবে মাধুর্যময়— সেই আশ্চর্যের প্রতিমূর্তি শ্রীরাধা
আমাকে কবে সেই অদ্ভুত রসময় দাসত্ব দান করবেন?
ভ্রমদ্ভ্রুকুটি সুন্দরং স্ফুরিত চারু বিম্বাধরং, গৃহে মধুর হুঙ্কৃতং প্রণয়-কেলি-কোপাকুলম্।
মহারসিক মৌলিনা সভয় কৌতুকং বীক্ষিতং স্মরামি তব রাধিকে রতিকলা সুখং শ্রীমুখম্ ॥১১৯॥
ব্যাখ্যা:
নর্তন শীল (নাচতী হুয়ী) ভূকুটিয়োঁ সে সুন্দর বনে হুয়ে,
(প্রণয় কোপ কে কারণে) কাঁপতে হুয়ে সুন্দর বিম্বাধর
বালে, (প্রিয়তম দ্বারা কর কমল আদি) পকড়ে জানে পর
মধুর হুঁকার বালে, প্রেমকেলি মে কোপ সে আকুল বনে হুয়ে
ঔর মহা রসিক শেখর (শ্রীশ্যামসুন্দর) দ্বারা ভয় ঔর
কুতোহলপূর্বক দেখে গয়ে আপকে রতি কলা কে সুখ সে
পূর্ণ শোভাবান মুখ কা হে শ্রীরাধিকে! ম্যাঁ স্মরণ করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
নৃত্যরত ভ্রূভঙ্গিমায় সুন্দররূপে অলঙ্কৃত,
প্রণয়-রোষজনিত কম্পে কাঁপতে থাকা বিম্বাধর (ঠোঁট) যাঁর,
প্রিয়তমের করকমল দ্বারা স্পর্শিত হলে
যিনি মধুর হুঙ্কারে সাড়া দেন, প্রেমক্রীড়ায় রোষে অধীর হয়ে ওঠেন,
এবং যাঁকে মহারসিক শ্রীশ্যামসুন্দর ভয় ও কৌতূহলভরে অবলোকন করেন—
সেই রতিকলার আনন্দে পূর্ণ, মনোহর মুখচ্ছবি-র
হে শ্রীরাধিকা! আমি স্মরণ করি।
উন্মীলন্মুকুটচ্ছটা পরিলসদ্দিক্চক্রবালং স্ফুরত্কেয়ূরাঙ্গদহার-কঙ্কণঘটা নির্ধূত রত্নচ্ছবি।
শ্রোণী-মণ্ডল কিংকিণী কলরবং মঞ্জীর-মঞ্জুধ্বনিং, শ্রীমৎপাদসরোরুহং ভজ মনো রাধাভিধানং মহঃ ॥১২০॥
ব্যাখ্যা:
হে মন ! প্রকাশমান মুকুট কী ছটা সে বিশেষ শোভাবিত হো
রহা হ্য দিশাওঁ কা সমূহ যিসসে, চমকতে হুয়ে কেয়ূর,
অঙ্গদ, হার তথা কঙ্কণ সমূহ সে রত্নোঁ কী ছবি কা
তিরস্কার করনে বালে, নিতম্ব প্রদেশ মে কিন্কিণী কী
মধুর ঝংকার সে যুক্ত, নূপুরোঁ কে মনোহর নাদ সে যুক্ত,
শোভাব সম্পন্ন চরণ কমল বালে শ্রীরাধা নামক তেজ কা
ভজন কর।
ব্যাখ্যা:
হে মন!
যাঁর দীপ্তিমান মুকুটের ছটায়
সমস্ত দিক আলোকিত হয়ে ওঠে,
চমকপ্রদ কেয়ূর, অঙ্গদ, হার ও কঙ্কণে
রত্নরাজির জ্যোতিকে পর্যন্ত তুচ্ছ করে দেন,
যাঁর নিতম্বদেশে কিঙ্কিণীর মধুর ঝঙ্কার বেজে ওঠে,
নূপুরের মনোহর ধ্বনিতে যাঁর পাদপদ্ম শোভায় উদ্ভাসিত—
সেই “শ্রীরাধা” নামক তেজস্বিনী মহাশক্তিরভজন কর, হে আমার মন।
শ্যামা-মণ্ডল-মৌলি-মণ্ডন-মণিঃ শ্যামানুরাগস্ফুরদ্রোমোদ্ভেদ বিভাবিতা কৃতিরহো কাশ্মীর গৌরচ্ছবি।
সাতীভোন্মদ কামকেলি তরলা মাং পাতু মন্দস্মিতা, মন্দার-দ্রুম-কুঞ্জ-মন্দির-গতা গোবিন্দ-পট্টেশ্বরী ॥১২১॥
ব্যাখ্যা:
অহো ! শ্যামাওঁ (সোলহ বর্ষ বালী যুবতীয়োঁ) কে
মণ্ডল কী শিরোভূষণ মণি, শ্যামসুন্দর কে অনুরাগ সে
স্ফুরিত হো রহে রোমাঞ্জ্যোঁ দ্বারা বিভাবিত (পহিচানী জানে
বালী) আকৃতি বালী, কেসর কে সমান গৌর কান্তি
বালী, অত্যন্ত উন্মত্ত প্রেমকেলি সে চঞ্চল বনী হুयी মন্দ
মুসকান বালী, তথা कल्पतरু কে নিখুঞ্জ মন্দির মে
বিরাজমান হে শ্রীগোবিন্দ কী পট্টেশ্বরী (সিংহাসনাসীন
স্বামিনী শ্রীরাধা) ! মেরি রক্ষা করেঁ।
ব্যাখ্যা:
অহো! যিনি শ্যামা (ষোড়শী যুবতীদের) মণ্ডলীর শিরোমণি রত্ন,
শ্যামসুন্দরের প্রেমে উদ্দীপ্ত হয়ে যাঁর শরীর রোমাঞ্ছজ উল্লাসে ভরে ওঠে
(যার দ্বারা তাঁর স্বরূপ চিহ্নিত হয়), যাঁর গৌর কান্তি কেশরের মত দীপ্তিমান,
অত্যন্ত উন্মাদ প্রেমক্রীড়ায় চঞ্চল হয়ে যাঁর মুখে ফুটে থাকে এক মৃদু মুগ্ধ হাসি—
এবং যিনি কল্পতরুর নিকুঞ্জ মন্দিরে সিংহাসনাসী হয়ে অধিষ্ঠান করছেন,
সেই শ্রীগোবিন্দের প্রিয় পট্টেশ্বরী শ্রীরাধা আমার রক্ষা করুন।
উপাস্য চরণাম্বুজে ব্রজ-ভ্রতা কিশোরীগণৈর্মহদ্ভিরপি পূরুষৈরপরিভাব্য ভাবোৎসবে।
অগাধ রস ধামনি স্বপদ-পদ্য সেবা বিধৌ, বিধেহি মধুরোজ্জ্বলামিভ-কৃতিং মমাধীশ্বরি ॥১২২॥
ব্যাখ্যা:
হে ব্রজপালকোঁ কী কিশোরী গণোঁ দ্বারা উপাসনীয়
চরণ-কমলোঁ বালী, মহান্ পুরুষোঁ সে ভী অজ্ঞেয় (ন
জানে যা সকনে বালে) ভাবোৎসব বালী, হে স্বামিনী!
অগাধ রস কে সদন আপকে চরণ-কমলোঁ কী সেবা
বিধি মে মুঝকো মধুর উজ্জ্বল রস পূর্ণ অধিকার প্রদান
করো।
ব্যাখ্যা:
হে স্বামিনী! ব্রজের রাখাল কন্যাদের দ্বারা উপাসিত
আপনার পবিত্র পদপদ্মযুগল,
যার অনুভবোৎসব মহান ঋষি-মহাত্মাদের পক্ষেও অজ্ঞেয়—
সেই অতল প্রেমরসের আধার আপনার চরণকমলের সেবার পদ্ধতিতে
আমাকে দয়া করে দিন মধুর ও উজ্জ্বল প্রেমরসে পূর্ণ এক পূর্ণাঙ্গ অধিকার।
আনম্রাননচন্দ্রমীরিত দৃগাপাঙ্গচ্ছটা মন্থরং, কিন্চিদ্দর্শিশিরোভগুণ্ঠনপটং লীলা-বিলাসাবধিম্।
উন্নীয়ালক-মঞ্জরী কররুহৈরালক্ষ্য সন্নাগরস্যাঙ্গেঙ্গং তব রাধিকে সচকিতালোকং কদা লোকয়ে ॥১২৩॥
ব্যাখ্যা:
(ইস শ্লোক মে শ্রীরাধা কী উস সময কী চকিত
চিতবন কা বর্ণন হ্য যখন প্রিয়তম নে উনকো আচানক
আলিঙ্গন মে আবদ্ধ কর লিয়া হ্য)।
হে শ্রীরাধিকে ! আপনে নাগর শিরোমণি কে অঙ্গ মে
(আপনা) অঙ্গ সমায়া হুয়া দেখকর অঙ্গুলীয়োঁ সে আপনে
বালোঁ কী লটোঁ কো উঠাতে হুয়ে আপকী বিস্ময় পূর্ণ
চিতবন কো ম্যাঁ কব দেখুঁগী ? জিস চিতবন মে মুখচন্দ্র
কুছ ঝুকা হুয়া হ্য, যা সঞ্চালিত কঠাক্ষ কী ছটা সে
কুছ শিথিল বনী হুयी হ্য, জিস পর সির কা ঘুঙঘট
থোড়া-সা হী হ্য ঔর যা লীলা পূর্ণ বিলাস কী অবধি হ্য।
ব্যাখ্যা:
(এই শ্লোকে বর্ণিত হয়েছে সেই মুহূর্তের বিস্ময়ভরা চাহনি, যখন শ্রীশ্যামসুন্দর হঠাৎ করে শ্রীরাধাকে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করেন।)
হে শ্রীরাধিকে! আপনার নাগরশিরোমণি প্রিয়তমের অঙ্গে
নিজ অঙ্গ জড়িত হয়েছে এই দৃশ্য দেখে, আঙুল দিয়ে কেশের লট জড়াতে জড়াতে
আপনার যে বিস্ময়ভরা চাহনি প্রকাশ পেয়েছে— সেই চাহনিকে আমি কবে দেখতে পাব?
যে চাহনিতে আপনার মুখচন্দ্র কিছুটা ঝুঁকে আছে,
যা চলমান কঠাক্ষের আভায় খানিকটা শিথিল,
যার উপর মাথার ঘোমটা সামান্যমাত্র নামানো,
আর যা লীলাপূর্ণ রতিক্রিয়ার এক অনির্বচনীয় মুহূর্ত।
রাকাচন্দ্রো বরাকো যদানুপম রসানন্দ কন্দাননেন্দোস্তত্তাদ্যক চন্দ্রিকায়া অপি কিমপি কলামাত্র কস্যাণুতোপি।
যস্যাঃ শোণাধর শ্রীবিধৃত নব-সুধা-মাধুরী-সার-সিন্ধুঃ, সা রাধা কাম-বাধা বিধুর মধুপতি-প্রাণদা প্রীয়তাং নঃ ॥১২৪॥
ব্যাখ্যা:
মহাপ্রৈমরূপী অনঙ্গ (কাম) বাধা সে ব্যাকুল মধুসূদন
কো প্রাণদান দেনে বালী প্যারি শ্রীরাধা হম পর প্রসন্ন
হোঁ। জিনকে অনুপম রসানন্দ কে মূল রূপ মুখচন্দ্র কী
উস (অনির্বচনীয় প্রকার কী) চন্দ্রিকা (চাঁদনী) কে
কিসি ছোটে সে কণ মাত্র সে ভী পূর্ণিমা কা চন্দ্র তুচ্ছ হ্য
তথা জিনকে লাল অধরোঁ কী শোভা নবীন সুধা माधুরী
সার কে সিন্ধু কো ধারণ কিয়ে হুয়ে হ্যঁ।
ব্যাখ্যা:
মহাপ্রেমরূপী অনঙ্গ (কামদেব) এর ব্যাকুলতায় কাতর মধুসূদনকে
প্রাণদানকারী প্রিয়া শ্রীরাধা আমাদের প্রতি প্রসন্ন হোন।
যাঁর অনুপম রসানন্দের মূল— মুখচন্দ্র থেকে উদ্ভূত
সে (অবর্ণনীয়) চাঁদের আলোর (চাঁদনি) এক ক্ষুদ্রতম কণার দ্বারাও
পূর্ণিমার চন্দ্রকেও তুচ্ছ মনে হয়। আর যাঁর লাল অধরের শোভা
নবীন অমৃত-মাধুর্য-সারস্বরূপ এক মহাসমুদ্র ধারণ করে আছে।
রাকানেক বিচিত্র চন্দ্র উদিতঃ প্রেমামৃত-জ্যোতিষাং, উইচিভিঃ পরিপূরযেদগণিত ব্রহ্মাণ্ড কোটিং যদি।
বৃন্দারণ্য-নিকুঞ্জ-সীমনি তদাভাসঃ পরং লক্ষ্যসে, ভাবেনৈব যদা তদৈব তুলয়ে রাধে তব শ্রীমুখম্ ॥১২৫॥
ব্যাখ্যা:
পূর্ণিমা কে অনেক বিচিত্র চন্দ্র উদিত হোকার প্রেমামৃত
রূপী জ্যোতিয়োঁ কী কিরণোঁ সে অসংখ্য ব্রহ্মাণ্ড সমূহোঁ
কো যদি পূর্ণ কর দেঁ ঔর ম্যাঁ ভাবনা মে উন (বিচিত্র
চন্দ্রোঁ) কা চরম আভাস শ্রীবৃন্দাবন কী নিখুঞ্জ সীমা
মে যখন কল্পিত করুঁ (অর্থাৎ উন চন্দ্রোঁ কে পরম উন্নত
আভাস কো কল্পনা দ্বারা যখন শ্রীবৃন্দাবন কী নিখুঞ্জ
সীমা মে দেখনে কী চেষ্ট করুঁ) হে শ্রীরাধে ! তখন হী আপকে
শ্রীমুখ কী উসকে সাথ তুলনা সম্ভব হ্য।
নোট - (ইহাঁ জিস চন্দ্র কে সাথ শ্রীরাধা কে মুখ কী
তুলনা কী কল্পনা কী গই হ্য উসকো 'বিচিত্র' বাতায়া হ্য
ঔর বহ ইস্লিয়ে কি সামান্য চন্দ্র অমৃত জ্যোতি কা
প্রকাশ করতা হ্য ঔর ইহ চন্দ্র 'প্রেমামৃত' পূর্ণ জ্যোতিয়োঁ কা প্রকাশ করতা হ্য)।
ব্যাখ্যা:
পূর্ণিমার বহু বিচিত্র চন্দ্র উদিত হয়ে যদি প্রেমামৃত-রূপ জ্যোতির কিরণে
অসংখ্য ব্রহ্মাণ্ডসমূহকে পরিপূর্ণ করে দেয়, এবং আমি ধ্যানস্থ হয়ে
সেই (বিচিত্র চন্দ্রদের) চরম আভাস
শ্রীবৃন্দাবনের নিকুঞ্জ সীমায় যখন কল্পনা করি,
হে শ্রীরাধে! তখনই কেবল আপনার শ্রীমুখের সঙ্গে সেই চন্দ্রদের তুলনা সম্ভব হয়।
নোট: এখানে যেই চন্দ্রের সঙ্গে শ্রীরাধার মুখমণ্ডলের তুলনা কল্পনা করা হয়েছে,
তাকে “বিচিত্র” বলা হয়েছে—
কারণ, সাধারণ চন্দ্র আমৃত-জ্যোতি বিকিরণ করে,
কিন্তু এই চন্দ্র প্রেমামৃত-পরিপূর্ণ জ্যোতিরই বিকিরণ করে।
কালিন্দী-কূল-কল্প-দ্রুম-তল নিলয় প্রোল্লসত্কেলিকন্দা, বৃন্দাটব্যাং সদৈব প্রকাশতররহো বল্লভী ভাব ভব্যা।
ভক্তানাং হৃত্সরোজে মধুর রস-সুধা-সন্দি-পাদারবিন্দা, সান্দ্রানন্দাকৃতির্নঃ স্ফুরতু নব-নব-প্রেমলক্ষ্মীরমন্দা ॥১২৬॥
ব্যাখ্যা:
শ্রীযমুনা জী কে তট পর कल्पবৃক্ষ কে নিচে स्थित নিবাস
স্থল মে শ্রেষ্ঠ রূপ সে উল্লসিত হো রহী ক্রীড়াওঁ কি মূল
রূপা, শ্রীবৃন্দাবন মে সদা হী প্রকাশ রহনে বালে একান্ত
গোপীয়োঁ (ললিতা বিশাখা আদি) কে ভাব সে (প্রেম সে)
গৌরবান্বিত বনী হুয়ী, ভক্তোঁ কে হৃদয় কমল মে মধুর
রসামৃত কো স্রবিত করনে বালে চরণ-কমলোঁ বালী,
সঘন আনন্দ কি মূর্তি (ঐসী) কভি মন্দ ন পড়নে
বালী নিত্য নবীন প্রেমলক্ষ্মী (প্রেম কি শোভা শ্রীরাধা)
হমারে (মন মে) প্রকাশিত হোঁ।
ব্যাখ্যা:
শ্রীয়মুনার তীরে, কল্পবৃক্ষের নিচে অবস্থিত বাসস্থানটিতে
যিনি শ্রেষ্ঠরূপে উল্লাসিত লীলার মূলরূপা,
শ্রীবৃন্দাবনে সদা প্রকাশমান একান্ত গোপীগণ
(ললিতা, বিশাখা প্রভৃতি)–এর ভাব (প্রেম) দ্বারা
যিনি গৌরবান্বিত (মহিমান্বিত) হয়েছেন,
ভক্তদের হৃদয়কমলে মধুর রসামৃত ধারা প্রবাহিত করেন যাঁর চরণকমল থেকে,
সঘন আনন্দরূপী যিনি মূর্ত, এবং যাঁর প্রেমলক্ষ্মীর (প্রেমের শোভা)
কখনও ম্লান হয় না, সে নিত্যনতুন শ্রীরাধা আমাদের হৃদয়ে প্রকাশিত হোন।
শুদ্ধ প্রেমৈকলীলানিধিরহহ মহাতমঙ্কস্থিতে চ, প্রেষ্ঠে বিভ্রত্পবভ্রস্ফুরদতুল কৃপা স্নেহ মাধুর্য মূর্ত্তিঃ।
প্রাণালী কোটি নিরাজিত পদ সুষমা মাধুরী মাধবেন, শ্রীরাধা মামগাধামৃতরস ভরিতে কহি দাস্যেভিষিঞ্চেত্ ॥১২৭॥
ব্যাখ্যা:
শুদ্ধ প্রেম-লীলাঁওঁ কী একমাত্র উৎপত্তি স্থলী, অত্যন্ত
অধিক রূপ সে স্ফুরিত হোতী হুয়ী অতুলনীয় কৃপা, খেল
ঔর মাধুর্য কী মূর্তি তথা শ্রীশ্যামসুন্দর দ্বারা জিনকে
চরণ কী শোভা-মাধুরী কী আরতী (আপনে) কোটিঃ
কোটি প্রাণোঁ সে উতারী গই হ্য, (ঐসী) প্রিয়তম কে অঙ্ক
মে স্থিত রহনে পর ভী মহা বিয়োগ ভয় কো ধারণ করনে
বালী শ্রীরাধা, আহহ, আগাধ অমৃত রস সে ভরে হুয়ে
আপনে দাসী পদ পর মুঝে কভ অভিষিক্ত করেঙ্গী?
(অর্থাৎ মুঝে দাসী পদ কা অধিকার কভ প্রদান করেঙ্গী?)
ব্যাখ্যা:
শুদ্ধ প্রেমলীলার একমাত্র উৎপত্তিস্থল,
যিনি অতিশয় তীব্রভাবে বিকশিত অনুপম কৃপাময়ী, যিনি খেলা ও মাধুর্যের মূর্তি,
এবং যাঁর চরণ-শোভা ও মাধুর্য শ্রীয়ামসুন্দর স্বয়ং
নিজ কোটি কোটি প্রাণ দিয়ে আরতি করেছেন—
সেই শ্রীরাধা, যিনি প্রিয়তমের কোলে অবস্থান করেও
মহাবিরহভয়ের ভার বহন করেন, অহো!
আমৃতসম রসসিন্ধুতে নিমগ্ন তাঁর দাসীপদের সৌভাগ্যে
আমাকে কবে স্নাত করবেন? (অর্থাৎ, দাসীপদের অধিকার কবে দেবেন?)
বৃন্দারণ্য নিকুঞ্জসীমসু সদা স্বানঙ্গ রঙ্গোৎসবৈর্মাদ্যত্যদ্ভুত মাধবাদর-সুধা মাধ্বীক সংস্বাদনৈঃ।
গোবিন্দ-প্রিয়-বর্গ-দুর্গম সখী-বৃন্দৈরনালক্ষিতা, দাস্যং দাস্যতি মে কদা নু কৃপয়া বৃন্দাবনাধীশ্বরী ॥১২৮॥
ব্যাখ্যা:
শ্রীবৃন্দাবন কেনিকুঞ্জ প্রদেশ মে আপনে প্রেম -
বিলাসোৎসবোঁ সে পূর্ণ माधব কী অদ্ভুত অধর-সুধা কী
মাধুরী কে আস্বাদন সে মত্ত বনী হুয়ী ঔর শ্রীগোবিন্দ কে
প্রিয় ভক্ত বর্গ কে লিয়ে ভী দুর্গম, গোপী-সমূহ সে ন
দেখী গই, শ্রীবৃন্দাবনাধীশ্বরী কৃপা করে মুঝে আপনা
দাস্য কভ দেনগী?
ব্যাখ্যা:
শ্রীবৃন্দাবনের নিকুঞ্জ অঞ্চলে, নিজের প্রেমবিলাসোৎসব দ্বারা পূর্ণ,
মাধবের সেই অতুলনীয় অধরসুধার মাধুর্য আস্বাদনে মোহিত হয়ে,
শ্রীগোবিন্দের প্রিয় ভক্তগণের কাছেও যিনি দুর্লভ,
যাঁকে গোপীগণও দেখে উঠতে পারেননি— সেই শ্রীবৃন্দাবনাধীশ্বরী
আমার উপর কৃপা করে কবে আমাকে
তাঁর দাস্যপদের অধিকার প্রদান করবেন?
মল্লীদাম নিবদ্ধ চারু কবরং সিন্দুর রেখোল্লসত্সীমন্তং নবরত্ন চিত্র তিলকং গণ্ডোল্লসত্কুণ্ডলম্।
নিষ্কগ্রীবমুদার হারমরুণং বিভ্রদ্দুকূলং নবং, বিদ্যুত্কোটিনিভং ‘ স্মরোৎসবময়ং রাধাখ্যমীক্ষেমহঃ ॥১২৯॥
ব্যাখ্যা:
মল্লী কে পুষ্পোঁ কী মালা সে গুঁধে হুয়ে সুন্দর কেশপাশ
বালে, সিন্দূর রেখা সে শোভায়মান মা্ংগ বালে, নবীন রত্ন
খচিত বিচিত্র তিলক যুক্ত, কপোলোঁ পর শোভাশালী
কুন্ডল, গ্রীবা মে কণ্ঠাভরণ ঔর লম্বা হার ধারন
কিয়ে হুয়ে, লাল রং কে নবীন বস্র কো ধারন করনে
বালে, কোটিঃ কোটিঃ বিজলীয়োঁ কে সমান কান্তি সে যুক্ত
ঔর প্রেমোৎসব মে তন্ময় শ্রীরাধা নামক তেজ কা ম্যাঁ দর্শন করু ।
ব্যাখ্যা:
মল্লিকা ফুলের মালা দিয়ে গাঁথা সুন্দর কেশপাশ যাঁর,
সিঁদুর রেখায় শোভিত মা্ংগ যাঁর, নবীন রত্নখচিত বিচিত্র তিলক যাঁর ললাটে,
গণ্ডস্থলে দীপ্তিমান কুণ্ডল শোভা পাচ্ছে, গলায় গ্রীবাভূষণ ও দীর্ঘ হার ধারণকারী,
লাল রঙের নবীন বসনে বিভূষিতা,
কোটি কোটি বিজলির মতো দীপ্তিময় কান্তিযুক্ত,
এবং প্রেমোৎসবে তন্ময়—সেই শ্রীরাধা নামক অলৌকিক তেজের
আমি কখন দর্শন লাভ করব?
প্রেমোল্লাসৈকসীমা পরম রসচমৎকার বৈচিত্র্য সীমা, সৌন্দর্যস্যৈক-সীমা কিমপি নব-ভয়ো-রূপ-লাবণ্য সীমা।
লীলা-মাধুর্য সীমা নিজজন পরমোদার বাত্সল্য সীমা, সা রাধা সৌখ্য-সীমা জয়তি রতিকলা-কেলি-মাধুর্য-সীমা ॥১৩০॥
ব্যাখ্যা:
প্রেম কে উল্লাস কী একমাত্র সীমা, পরম রস কে
চমৎকার বৈচিত্র্য কী সীমা, সৌন্দর্য কী একমাত্র সীমা,
কিসী অনির্বচনীয় নবীন অবস্থাঃ, রূপ ঔর লাবণ্য
কী সীমা, লীলা যুক্ত মাধুর্য কী সীমা, আপনে আশ্রিত
জনোঁ পর পরম উদারতা পূর্ণ বাত্সল্য কী সীমা, সুখ
কী সীমা ঔর প্রেম ক্রীড়া কে মাধুর্য কী সীমা শ্রীরাধা কী জয় হো।
ব্যাখ্যা:
প্রেমের উল্লাসের একমাত্র সীমা,পরম রসের আশ্চর্য বৈচিত্র্যের চরম সীমা,
সৌন্দর্যের একমাত্র পরিণতি,অবর্ণনীয় এক নবীন অবস্থা, রূপ ও লাবণ্যের পরম সীমা,
লীলা-মাধুর্যে পরিপূর্ণতার চরম লক্ষ্যে উপনীত,
নিজের আশ্রিত জনদের প্রতি অপরিসীম মাতৃসুলভ স্নেহের প্রকাশ,
সুখের চূড়ান্ত রূপ,এবং প্রেম-ক্রীড়ার অনুপম মাধুর্যের সীমারূপা
শ্রীরাধার জয় হোক।
যস্যাস্তত্সুকুমার সুন্দর পদোন্মীলন্নখেন্দুচ্ছটা, লাবণ্যৈক লভোপজীবি সকল শ্যামা মণী মণ্ডলম্।
শুদ্ধ প্রেম-বিলাস মূর্তিরধিকোন্মীলন্মহা মাধুরী, ধারা-সার-ধুরীণ-কেলি-বিভবা সা রাধিকা মে গতিঃ ॥১৩১॥
ব্যাখ্যা:
যিঙ্কে উন সুকুমার ঔর সুন্দর শ্রীচরণোঁ কী প্রকাশিত
হোতী হুঈ নখ চন্দ্র কান্তি কে লাবণ্য কে এক লেশমাত্র
সে সম্পূর্ণ ঘোড়শী শিরোমণিযোগ কা সমূহ জীবন প্রাপ্ত
করতা হ্য, শুদ্ধ প্রেম ঔর উসকে বিলাসোঁ কী সाक्षাৎ
মূর্তি ঔর অতিশয় বিকসিত মহামাধুরী কী ধারা কে
সার কী সর্বোত্তম ক্রীড়া-সম্পত্তি সে যুক্ত ওয়ে শ্রীরাধিকা
মেরি গতি (আশ্রয়) হ্যাঁ।
ব্যাখ্যা:
যাঁর কোমল ও সুন্দর চরণযুগলের নখচন্দ্রের দীপ্তি ও সৌন্দর্যের
মাত্র একটি আভাসমাত্র থেকেই সমস্ত 'ঘোড়শী' (অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণী বা পবিত্র নারীগণ)-দের শিরোমণিসমূহ জীবন লাভ করে, যিনি শুদ্ধ প্রেম এবং তার লীলার দৃশ্যমান প্রতিমূর্তি,
এবং যিনি পরিপূর্ণ বিকাশপ্রাপ্ত মহামাধুর্যের প্রবাহের সারস্বরূপ সর্বোত্তম ক্রীড়াসম্পদ দ্বারা সমৃদ্ধ— সেই শ্রীরাধিকা-ই আমার একমাত্র গতি, আমার চরম আশ্রয়।
কলিন্দ-গিরি-নন্দিনী সালিল-বিন্দু সন্ধোহভৃন, মৃদূদ্গতি রতিশ্রমং মিথুনমদ্ভুত ক্রীড়য়া।
অমন্দ রস তুন্দিল ভ্রমর-বৃন্দ বৃন্দাটবী, নিকুঞ্জ বর-মন্দিরে কিমপি সুন্দরং নন্দতি ॥১৩২॥
ব্যাখ্যা:
অতিশয় রস পান সে পুষ্ট ভ্রমর সমূহ সে যুক্ত
শ্রীবৃন্দাবন কে সুন্দর নিকুঞ্জ মন্দির মে কিনচিৎ রতি শ্রম
কো প্রাপ্ত, শ্রীযমুনা জী কে জল বিন্দুয়োঁ কে সমূহ কো
ধারণ করনে বালা কোঈ অনির্বচনীয় মনোহর যুগল
(শ্রীশ্যামাশ্যাম) অদ্ভুত কেলি-বিহার সে আনন্দিত হো রহা হ্য।
ব্যাখ্যা:
অত্যধিক রসপান দ্বারা পুষ্ট ভ্রমরসমূহে পরিপূর্ণ, শ্রীবৃন্দাবনের মনোরম নিকুঞ্জ মন্দিরে— যেখানে শ্রীযমুনার জলবিন্দুগুচ্ছ ধারণ করে আছেন,
সেখানে রতিক্লান্তিতে কিছুটা পরিশ্রান্ত,
কোনো অনির্বচনীয় মনোহর যুগল (শ্রীশ্যামা-শ্যাম),
অদ্ভুত কেলি-বিহারে তন্ময় হয়ে আনন্দে বিহার করছেন।
ব্যাকোশেন্দীবর বিকসিতা মন্দ হেমারবিন্দ, শ্রীমন্নিস্যন্দন রতিরসাঁদোলি কন্দর্প-কেলি।
বৃন্দারণ্যে নব রস-সুধাস্যন্দি পাদারবিন্দং, জ্যোতির্দ্বন্দ্বং কিমপি পরমানন্দ কন্দং চকাস্তি ॥১৩৩॥
ব্যাখ্যা:
খিলে হুয়ে নীল কমল অউর পূর্ণ রূপ সে বিকসিত স্বর্ণ
কমল কি শোভা ওয়ালি, নির্সরিত হোতে হুয়ে রতি রস সে
চঞ্চল বনী হুয়ী প্রেম কেলি ওয়ালি, নবীন রস সুধা কো
প্রবাহিত করনে ওয়ালে চরণ কমল ওয়ালি, পরমানন্দ কি
উৎপত্তি স্থলি (এসী) কোঈ অনির্বচনীয় যুগল জ্যোতি
শ্রীবৃন্দাবন মে প্রকাশিত হো রহী হ্য।
ব্যাখ্যা:
ফোটা নীলকমল ও সম্পূর্ণ বিকশিত সোনালী পদ্মের মতো শোভাময়,
বহমান রতি রসে চঞ্চল প্রেম-কেলিতে বিভোর,
নূতন রস-সুধা প্রবাহিত করে এমন চরণকমল যাঁর,
পরমানন্দের উৎসস্থল—
এমন এক অনির্বচনীয় যুগল-জ্যোতি
শ্রীবৃন্দাবনে প্রকাশমান হচ্ছেন।
তাম্বূলং ক্বচদর্পয়ামিচরণৌ সংবাহয়ামি ক্বচিন্মালাদ্যৈঃ পরিমণ্ডয়ে ক্বচিদহো সংবীজয়ামি ক্বচিত্।
কর্পূরাদি সুভাসিতং ক্বচ পুনঃ সুস্বাদু চাম্ভোমৃতং, পায়াম্যেব গৃহে কদা খলু ভজে শ্রীরাধিকা-মাধবৌ ॥১৩৪॥
ব্যাখ্যা:
অহো! কভী পান কা বীড়া অর্পণ করকে, কভী চরণোঁ
কা সম্বাহন (দবানা) করকে, কভী মালা আদি সে
শৃঙ্গার রচনা করকে, কভী পঙ্খে সে হਵਾ করকে, কভী
কর্পূর আদি সে সুগন্ধিত ঔর স্বাদিষ্ট অমৃত তুল্য জল
কা পান করাকার ম্যাঁ ঘর মে হি শ্রীরাধিকা ঔর মাধব কা
ভজন (সেবা) কব করূঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
অহো! কখনও পানের বিড়া অর্ঘ্য হিসেবে নিবেদন করে,
কখনও চরণ সেবায় নিমগ্ন হয়ে, কখনও মালা প্রভৃতি দিয়ে শৃঙ্গার সাজিয়ে,
কখনও পাখা দিয়ে বাতাস করে,
কখনও কর্পূর প্রভৃতি সুগন্ধি ও অমৃততুল্য রসপূর্ণ জল পান করিয়ে—
আমি কি কখনও আমার ঘরেই শ্রীরাধিকা ও মাধবের
ভজন তথা সেবা করব?
প্রত্যঙ্গোচ্ছলদুজ্জ্বলামৃত – রস – প্রেমৈক – পূর্ণাম্বুধি ল্লাবণ্যৈক সুধানিধিঃ পুরু কৃপা বাত্সল্য সারাম্বুধিঃ।
তারুণ্য-প্রথম-প্রবেশ বিলসন্মাধুর্য সাম্রাজ্য ভূর্গুপ্তঃ কোপি মহানিধির্বিজয়তে রাধা রসৈকাবধিঃ ॥১৩৫॥
ব্যাখ্যা:
প্রত্যেক অংগ সে উছলতে হুয়ে উজ্জ্বল অমৃত রস কী
একমাত্র পরিপূর্ণ সিন্ধু, লাভণ্য কা একমাত্র
(অনুপম) সুধা সাগর, অত্যন্ত কৃপা ঔর বাত্সल्य কে
সার কা সাগর, ইয়ৌবন কে প্রথম প্রবেশ সে সুশীভিত হো
রহে মাধুর্যে কে সাম্রাজ্য কী ভূমি (আশ্রয়), রস কী
একান্ত অবধি (পরাকাষ্ঠা) কোঈ অনির্বচনীয় শ্রীরাধা
নামক গুপ্ত মহানিধি সবসে অধিক উৎকর্ষ সে
বিরাজমান হ্য়।
ব্যাখ্যা:
প্রত্যেক অঙ্গ থেকে বিচ্ছুরিত হচ্ছে
উজ্জ্বল অমৃত-রসের একমাত্র পূর্ণ সিন্ধু,
লাবণ্যের একমাত্র (অনুপম) অমৃত-সাগর,
অত্যন্ত করুণা ও মাতৃস্নেহের সারস্বরূপ এক সাগর,
যৌবনের প্রথম আবির্ভাবে সুশোভিত মাধুর্যের সাম্রাজ্যের ভূমি (আশ্রয়স্থান),
রসের একান্ত সীমা (চূড়ান্ত পরিণতি)— এইরূপ এক অনির্বচনীয় “শ্রীরাধা”-নামক গুপ্ত মহা-ধন
সর্বোচ্চ মহিমায় অধিষ্ঠান করছেন।
যস্যাঃ স্ফূর্জৎপবনখমণি জ্যোতিরেকচ্ছটায়াঃ, সান্দ্র প্রেমামৃতরস মহাসিন্ধু কোটির্বিলাসঃ।
সা চেদ্রাধা রচয়তি কৃপা দৃষ্টিপাতং কদাচিন্, মুক্তিস্তুচ্ছী ভবতি বহুশঃ প্রাকৃতা প্রাকৃতশ্রীঃ ॥১৩৬॥
ব্যাখ্যা:
সঘন প্রেমামৃত রস কে কোঠি-কোঠি মহাসাগর যিঙ্কে
চরণোঁ কে মণি যৈসে নখোঁ সে ছিটকতী হুঈ জ্যোতি কি
কেবল এক ঝলক কি ক্রীড়া (মাত্র) হ্য, বে শ্রীরাধা যদি
কভী (আপনী) কৃপা দৃষ্টি কা নিখ্ষেপ কর দেঁ তো মুক্তি
তথা অনেক প্রকার কী লৌকিক অথবা অলোৗকিক
শোভা-সম্পত্তিঁয়াঁ তুচ্ছ বন জাঁয় ।
ব্যাখ্যা:
অত্যন্ত ঘন প্রেম-অমৃত রসের কোটি কোটি মহাসমুদ্র,
যাহা কেবলমাত্র শ্রীরাধার চরণ-নখরূপ মণির হালকা
আভা-ছটায়ই যেন খেলাচ্ছলে ছিটকাইয়া পড়ে —
সেই শ্রীরাধা যদি কভু আপনার কৃপাদৃষ্টির সামান্য নিঃশেষ বর্ষণ করেন,
তবে মোক্ষ এবং নানা প্রকারের
লোক-পরলোকীয় ঐশ্বর্য বা সৌন্দর্য-সম্পত্তি — সবই তুচ্ছ ও অর্থহীন হইয়া পড়ে।
কদা বৃন্দারণ্যে মধুর মধুরানন্দ রসদে, প্রিয়েশ্বর্যাঃ কেলীভবন নব কুঞ্জানি মৃগয়ে।
কদা শ্রীরাধায়াঃ পদ – কমল মাধ্বীক লহরী, পরীবাহেশ্চেতো মধুকরমধীরং মদয়িতা ॥১৩৭॥
ব্যাখ্যা:
মধুর সে ভী মধুর আনন্দ ঔর রস কো দেনে বালী
(আপনী) প্রিয় স্বামিনী কী শ্রী বৃন্দাবন মে উন নঈ-নঈ
কুঞ্জোঁ কী খোঁজ ম্যাঁ কব করুঁঙ্গা যিনমে বে কেলি বিহার
করতী হ্যাঁ? (ঔর) কব ম্যাঁ শ্রীরাধিকা কে চরণ কমল কে
মাদক রস কী তরংগোঁ কে প্রবাহ দ্বারা (আপনে ) চঞ্চল
হৃদয় রূপী ভৌরে কো উন্মত্ত বনা দুঁঙ্গা ?
ব্যাখ্যা:
মধুর থেকেও অধিক মধুর আনন্দ ও রস প্রদানকারী
আমার প্রিয় স্বামিনীর শ্রীবৃন্দাবনের সেই নূতন নূতন কুঞ্জগুলির সন্ধান
আমি কবে করব— যেথায় তিনি কেলি-বিহারে মগ্ন?
আর কবে আমি শ্রীরাধিকার চরণকমলের
মাদক রসতরঙ্গ প্রবাহ দ্বারা
আমার চঞ্চল হৃদয়রূপী ভোমরাটিকে উন্মত্ত করে তুলব?
রাধাকেলি – নিকুঞ্জ – বীথীষু চরনরাধাভিধামুচ্চরন্, রারাধা অনুরূপমেবপরমং ধম্ম রসেনাচরন্।
রাধায়াশ্চরণাম্বুজং পরিচরন্নানোপচারমদা, কহি স্যাং শ্রুতি শেখরোপরিচরন্নাশ্চর্যচার্যাচরন্ ॥১৩৮॥
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধা কী ক্রীড়া-কুঞ্জোঁ কী গলিয়োঁ মে বিচরণ করতা
হুয়া, শ্রীরাধা নাম কা উচ্চারণ করতা হুয়া, শ্রীরাধা
কে সর্বথা অনুকূল সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম কা আনন্দপূর্ণক
পালন করতা হুয়া, নানা প্রকার কী সামগ্রী দ্বারা
শ্রীরাধা কে চরণ কমল কী প্রসন্নতা সে সেবা করতা
হুয়া ম্যাঁ আশ্চর্য পূর্ণ আরাধনা পদ্ধতি মে প্রবৃত্ত হোকার
কব উপনিষদ-প্রতিপাদিত মার্গ কে ভী ঊপর বিচরণ
করনে বালা বনূঁগা ?
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধার ক্রীড়া-কুঞ্জের গলিতে বিচরণ করতে করতে,
“শ্রীরাধা” নামের উচ্চারণ করতে করতে,
শ্রীরাধার সর্বতোভাবে অনুকূল— সেই সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মকে
আনন্দ সহকারে পালন করতে করতে, নানা প্রকারের উপচারে
শ্রীরাধার চরণকমলকে প্রসন্ন করেসেবায় নিয়োজিত থেকে
আমি কবে সেই আশ্চর্য পূর্ণ আরাধনা-পদ্ধতিতে প্রবৃত্ত হব?—যা উপনিষদ দ্বারা নিরূপিত পথকেও অতিক্রম করে যায়?
যাতায়াতশতেন সঙ্গমিতয়োরন্যোন্যবক্রোল্লসচ্ছন্দ্রালোক্ষণ সম্প্রভূত বহুলানঙ্গাম্বুধিক্ষোভয়োঃ।
অন্তঃ কুঞ্জ – কুটীর তল্পগতয়োঃদিব্যাদ্ভুত ক্রীড়য়োঃ, রাধা – মাধবয়োঃ কদা নু শ্রুণুয়াং মঞ্জীর কাঞ্চীধ্বনিম্ ॥১৩৯॥
ব্যাখ্যা:
দোনোঁ কে পাস সৈকড়োঁ বার আ-জাকার জিঙ্কা (সখিয়োঁ
নে) সংগম করায়া হ্য, এক দੂসরে কে মুখ রূপী প্রফুল্ত্নিত
চন্দ্রোঁ কো দেখকর জিঙ্কে হৃদয় মে সঘন প্রেম -সিন্ধু কী
হলচল মচী হুঈ হ্য, একান্ত কুঞ্জ কুটীর মে শয্যা পর
বিরাজিত ঔর বিচিত্র অলোৗকিক বিলাস মে রত
শ্রীরাধা-মাধব কে নূপুর ঔর মেখলা কী ধ্বনি কব শুনূঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
সখীগণ যাঁদের শত শত বার দুজনার মধ্যে মিলন করিয়েছেন,
এক অপরের মুখরূপ প্রস্ফুটিত চন্দ্রকে দর্শন করে
যাঁদের হৃদয়ে ঘনীভূত প্রেম-সিন্ধুর হিল্লোল উঠেছে,
একান্ত কুঞ্জ-কুটিরে শয্যাশায়ী অবস্থায়
অলৌকিক ও বিচিত্র বিলাসে মগ্ন শ্রীরাধা-মাধবের
নূপুর ও মেখলার ধ্বনি আমি কবে শুনব?
অহো ভূবন – মোহনং মধুর মাধবী- মণ্ডপে, মধূৎসব – সমুৎসুকং কিমপি নীল – পীতচ্ছবিঃ।
বিদগ্ধ মিথুনং মিথো দৃঢ়তারানুরাগোল্লসন্, মদং মদয়তে কদা চিরতরং মদীয়ং মনঃ ॥১৪০॥
ব্যাখ্যা:
অহো! মধুর মাধবী লতা কে মন্দির মে বসন্তোৎসব কে
লিয়ে অত্যন্ত উৎকণ্ঠিত ঔর পরস্পর সুদঢ় অনুরাগ মদ
সে উল্লসিত ত্রিভুবন মোহন নীল ঔর পীত কান্তি যুক্ত
কোঈ অনির্বচনীয় চতুর যুগল (শ্রীরাধা মাধব) মেরে
মন কো কব চিরকাল পর্যন্ত উন্মত্ত করেংগে ?
ব্যাখ্যা:
অহো! মধুর মাধবীলতা কুঞ্জমন্দিরে বসন্তোৎসবের জন্য যাঁরা
অত্যন্ত উৎকণ্ঠিত, এবং একে অপরের প্রতি সুদৃঢ় প্রেমমদে উল্লসিত ,
ত্রিভুবন মোহন নীল ও পীত কান্তি-যুক্ত
সেই অনির্বচনীয় চতুর যুগল (শ্রীরাধা-মাধব)
আমার মনকে কবে চিরকাল উন্মত্ত করে তুলবেন?
রাধানাম সুধারসং রসয়িতুং জিহ্বাস্তু মে বিহ্বলা, পাদী তত্পদকাঙ্কিতাসুচরতাং বৃন্দাটবী – বীথিষু।
তত্কমব করঃ করোতু হৃদয়ং তস্যাঃ পদং ধ্যায়তা, তদ্ভাবোৎসবতঃ পরং ভবতু মে তত্প্রাণনাথে রতিঃ ॥১৪১॥
ব্যাখ্যা:
মেরে রসনা রাধা নাম কে অমৃত কো পীনে কে লিয়ে
ব্যাকুল বনী রহে, মেরে পের উন (শ্রীরাধিকা) কে চরণ
কমলোঁ সে চিহ্নিত শ্রী ধাম বৃন্দাবন কী গলিওঁ মে
বিচরণ করতে রহেঁ, মেরে হাত উনহीं কী সেবা সে সম্বন্ধিত
কার্য করেঁ, হৃদয় উনহीं কে চরণোঁ কা ধ্যান করেঁ ঔর উন
(শ্রীরাধিকা) কে প্রতি (মেরে মন মে রহে হুয়ে) উৎসাহপূর্ণ
ভাব কে কারণ উনকে প্রাণনাথ (শ্রীকৃষ্ণ) মে মেরী প্রীতি হো।
ব্যাখ্যা:
আমার জিহ্বা যেন ‘রাধা’ নামক অমৃত পান করার জন্য
সর্বদা আকুল হয়ে থাকে, আমার পদযুগল যেন শ্রীধাম বৃন্দাবনের
শ্রীরাধিকার চরণচিহ্নে চিহ্নিত গলিতে সর্বদা বিচরণ করে,
আমার হাত যেন কেবল তাঁর (শ্রীরাধিকার) সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট
কর্মেই নিয়োজিত থাকে, হৃদয় যেন সর্বদা তাঁর চরণধ্যানেই নিমগ্ন থাকে,
এবং তাঁদের প্রতি আমার উৎসাহপূর্ণ প্রেমভাবের ফলস্বরূপ তাঁর প্রিয়তম (শ্রীকৃষ্ণ) প্রতিও
আমার হৃদয়ে প্রেম জাগ্রত হয়।
মন্দীকৃত্য মুকুন্দ সুন্দর পদদ্বন্দ্বারবিন্দামল, প্রেমানন্দমমন্দমিন্দু – তিলকাদ্যুন্মাদ কন্দং পরম্।
রাধা – কেলি – কথা – রসাম্বুধি চলদ্বীচীভিরান্দোলিতং, বৃন্দারণ্য নিকুঞ্জ মন্দির বরালিন্দে মনো নন্দতু ॥১৪২॥
ব্যাখ্যা:
শ্রীশিব জী আদি কো অত্যন্ত মত্ত বনা দেনে বালে
শ্রীমুকুন্দ কে সুন্দর চরণ কমলোঁ কে নির্মল প্রেমানন্দ
কা ভী তিরস্কার করে শ্রীরাধা-কথা (চর্চা) কে রস
সাগর কী তরল তরংগোঁ সে ঝকঝোরা হুয়া মেরা মন
শ্রীবৃন্দাবন স্থিত নিকুঞ্জ মন্দির কে ভব্য অঙ্গন মে
আনন্দ কা অনুভব করতা রহে।
ব্যাখ্যা:
শ্রীমুকুন্দের সেই সুন্দর চরণকমলের
নির্মল প্রেম-আনন্দ, যা শ্রীশিবজী প্রভৃতিদেরও
অত্যন্ত মত্ত করে তোলে— সেই প্রেমানন্দকেও তুচ্ছ জ্ঞান করে,
শ্রীরাধা-কথার রসসমুদ্রের তরল তরঙ্গ দ্বারা আন্দোলিত আমার মন যেন শ্রীবৃন্দাবনে অবস্থিত
নিকুঞ্জ মন্দিরের ভব্যমণ্ডপে চিরকাল আনন্দ অনুভব করতে থাকে।
রাধানামৈব কার্যানুদিন মিলিতং সাধনাধীশ কোটিস্, ত্যাজ্যো নিরাজ্য রাধাপদ – কমল – সুধা সত্পুমর্থাগ্র কোটিঃ।
রাধা পাদাব্জ লীলা – ভূবি জয়তি সদা মন্দ মন্দার কোটিঃ, শ্রীরাধা – কিঙ্করীণাং লুঠতি চরণয়োরভুতা সিদ্ধি কোটিঃ ॥১৪৩॥
ব্যাখ্যা:
যহ নিশ্চিত হ্য কি যদি শ্রীরাধা নাম হী প্রতি দিন লেনে
কো মিল যায় তো কাম বন যায়। রাধা-পদ-কমল-
সুধা কী আরতী উতার কর (ইসকী বলিহারী জাকার)
কোটি়-কোটি় শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থ ত্যাজ্য (ত্যাগ করনে যোগ্য)
হো জাতে হ্যঁ। কোটিঁ কল্প বৃক্ষোঁ কো ভী তুচ্ছ করনে বালী
শ্রীরাধিকা চরণ কমলোঁ কী লীলা (নৃপুরাদি কী
ঝংকার সহিত হংস গতি) পৃথ্বী পর সদা সর্বোৎকर्ष রূপ
সে বিরাজমান হ্য (ঔর) শ্রীরাধা কী দাসি়যোঁ কে চরণোঁ
মে কোটিঁ -কোটিঁ আশ্চর্যজনক সিদ্ধি়যাঁ লোটতী রহতী হ্যঁ।
ব্যাখ্যা:
এটা নিশ্চিত— যদি প্রতিদিন ‘শ্রীরাধা’ নাম জপ করার সুযোগ মেলে,
তাহলে সমস্ত সাধনা সম্পন্ন হয়ে যায়। রাধা-পদকমল-সুধার আরতি করে,
(তাঁর প্রতি সম্পূর্ণ আত্মনিবেদন করে) কোটি-কোটি শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থ (ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ) ত্যাজ্য হয়ে যায়।
কোটি কোটি কাল্পবৃক্ষকেও তুচ্ছ করে দিতে পারেন শ্রীরাধিকার পদকমলের লীলা— যেমন নূপুরাদি ঝংকারসহ হাঁসসম গতি— যা সর্বদা পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠতম রূপে প্রকাশিত।
এবং শ্রীরাধার দাসীদের পদতলে কোটি কোটি আশ্চর্যজনক সিদ্ধি লুটিয়ে থাকে।
মিথো ভড্গি কোটি প্রবহদানুরাগামৃত – রসো, তরঙ্গ ভ্রূভঙ্গ ক্ষুভিত বহিরভ্যন্তরমহো।
মদাঘূর্ণন্নেত্রং রচয়তি বিচিত্রং রতিকলা, বিলাসং তত্কুঞ্জ জয়তি নব – কৈশোর – মিথুনম্ ॥১৪৪॥
ব্যাখ্যা:
অহো! পরস্পর কী কোটি়-কোটি় বিলাস ভঙ্গিমাঔঁ সে
প্রবাহিত হোনে বালে অনুরাগ রূপী অমৃত রস সে তরংগ
যুক্ত বনী হুঈ ভূকুটি়যোঁ সে জিসকা বাহ্য ঔর অন্তর
ক্ষোভ কো প্রাপ্ত হ্য (তথা জিসকে) নেত্র মদ সে ঘূম রহে হ্যঁ,
(ঐসা) নবীন কিশোরাবস্থা বালা যুগল
(শ্রীরাধামাধব) কুঞ্জ মে অদ্ভুত রতিকলা পূর্ণ বিলাস
কী রচনা কর রহা হ্য – উসকী জয় হো।
ব্যাখ্যা:
অহো! পরস্পরের কোটি কোটি বিলাস-ভঙ্গিমা থেকে
উৎসারিত যে অনুরাগরূপী অমৃতরসে তরঙ্গায়িত হয়ে উঠেছে ভ্রুকুটি, যার দ্বারা বাহ্য ও অন্তর—উভয়ই আন্দোলিত হচ্ছে,
এবং যার চঞ্চল নেত্র যুগল প্রেম-মদে ঘূর্ণায়মান,
(এমন) এক নবীন কিশোর-কিশোরী যুগল (শ্রীরাধামাধব) কুঞ্জে এক অনির্বচনীয় রতিকলা-পূর্ণ বিলাসের সৃষ্টি করছেন—
তাঁদের জয় হোক।
কাচিদ্বৃন্দাবন নবলতা – মন্দিরে নন্দসুনোঃ, র্দপ্যদোষ্কন্দল পরীরম্ভ নিষ্পন্দ গাত্রী।
দিব্যানন্তাদ্ভুত রসকলাঃ কল্পয়ন্ত্যাবিরাস্তে, সান্দ্রানন্দামৃত রস – ঘন প্রেম – মূত্তিঃ কিশোরী ॥১৪৫॥
ব্যাখ্যা:
শ্রীনন্দননন্দন কী গর্বীলী ভুজাঔঁ কে প্রগাঢ় আলিঙ্গন
সে শিথিল অঙ্গোঁ বালী, সঘন আনন্দামৃত রস ঔর
ঘনীভূত প্রেম কী মূর্ত্তি কোঈ অনির্বচনীয় কিশোরী
শ্রীবৃন্দাবন কে নবীন লতা-মন্দির মে অনন্ত দিব্য ঔর
অদ্ভুত রস পূর্ণ কলাঔঁ কা নির্মাণ করতী হুঈ প্রকাশ হ্য।
ব্যাখ্যা:
শ্রীনন্দনন্দনের গর্বভরা ভুজদ্বয়ের
গভীর আলিঙ্গনে শিথিল হয়ে পড়া অঙ্গযুগল,
ঘন আনন্দামৃত-রস ও সংহত প্রেমের
সচেতন মূর্তি এক অনির্বচনীয় কিশোরী—
শ্রীবৃন্দাবনের নবীন লতা-মন্দিরে অনন্ত দিব্য এবং আশ্চর্য্য-রসে পূর্ণ কলার সৃষ্টিতে লগ্ন হয়ে প্রকাশমান।
ন জানীতে লোকং ন চ নিগমজাতং কুল – পরং, পরাং বা নো জানত্যহহ ন সতাং চাপি চরিতম্।
রসং রাধাযামাভজতি কিল ভাবং ব্রজমণী, রহস্যে তদ্যস্য অবস্থিতিরপি ন সাধারণ গতিঃ ॥১৪৬॥
ব্যাখ্যা:
জো শ্রীরাধা মে স্থিত রস কী উপাসনা করতা হ্য ঔর
ব্রজমণি শ্রীকৃষ্ণ মে নিশ্চিত রূপ সে (স্থিত) ভাব
(প্রীতি) কী (উপাসনা) করতা হ্য বহ (প্রেমমত্ত জীব) ন
ইস লোক কো জানতা হ্য, ন বেদোঁ কে সমূহ কো ঔর ন
কুল পরম্পরা কো। আশ্চর্য হ্য কি বহ ভক্তোঁ কে চরিত্রোঁ
কো ভী নহीं জানতা। জিঙ্কী ইস রহস্য মে স্থিতি হ্য
উন্কী (উন্কে মন কী) সাধারণ গতি নহीं হোতী।
(অসাধারণ গতি হোতী হ্য) ।
ব্যাখ্যা:
যে শ্রীরাধার মধ্যে অবস্থিত রসের উপাসনা করে
এবং ব্রজরত্ন শ্রীকৃষ্ণে নিশ্চিতভাবে স্থিত
ভাব (প্রেম) কে আরাধনা করে,
সে (প্রেমে মত্ত জীব) না এ জগৎকে চেনে,
না বেদের সমূহ জ্ঞানকে চেনে, না চেনে কুল-পরম্পরার বিধান।
আশ্চর্য এই যে, সে ভক্তদের চরিত্রকেও জানে না।
যারা এই রহস্যময় রসতত্ত্বে স্থিত, তাদের মন বা চেতনার গতি—
সাধারণের মতো নয়, (তা) অসাধারণ, অতিলৌকিক।
ব্রহ্মানন্দৈকবাদাঃ কতিচন ভগবদ্বন্দনানন্দ – মত্তাঃ, কেচিদ্গোবিন্দ – সখ্যাদ্যানুপম পরমানন্দ মন্যে স্বদন্তে।
শ্রীরাধা – কিঙ্করীণাং ত্বখিল সুখ – চমৎকার – সারৈক – সীমা, তত্পাদাম্ভোজ রাজন্নখ – মণিবিলসজ্জ্যোতিরেকচ্ছটাপি ॥১৪৭॥
ব্যাখ্যা:
কুছ মহাপুরুষ তো একমাত্র ব্রহ্মানন্দ কা হী বর্ণন করনে
বালে হ্যঁ, কঈ মহাপুরুষ ভগবান কী বন্দন-ভক্তি (দাস্য
রতি) মে উন্মত্ত রহতে হ্যঁ ঔর কুছ অন্য শ্রীগোবিন্দ কো
সখা-ভাব সে ভজকর অনুপম পরমানন্দ কা আস্বাদন
করতে হ্যঁ কিন্তু রাধা দাসিয়োঁ কে লিয়ে তো উন (শ্রীরাধা
জূ) কে চরণ কমলোঁ মে প্রকাশমান মণি যৈসে নখোঁ কী
উল্লসিত জ্যোতি কী এক ছটা ভী সমস্ত সুখোঁ কে
চমৎকার কে সার কী চরম সীমা হ্য।
ব্যাখ্যা:
কিছু মহাপুরুষ তো কেবলমাত্র ব্রহ্মানন্দেরই বর্ণনা করেন,
অনেকে ভগবানের বন্দনা-মূলক ভক্তিতেই (দাস্য রতি) উন্মত্ত হয়ে থাকেন,
আবার কিছু মহাপুরুষ শ্রীগোবিন্দকে সখা-ভাব থেকে ভজে
এবং অনুপম পরমানন্দের আস্বাদ গ্রহণ করেন।
কিন্তু রাধা দাসীদের জন্য—
তাদের স্বামিনী শ্রীরাধার চরণকমলে
যে রত্ন সদৃশ নখরাজির দীপ্ত জ্যোতির একটি কিরণ বিচ্ছুরিত হয়,
তাও সকল সুখ-চমৎকারের সারতত্ত্বের পরমোচ্চ সীমা হয়ে থাকে।
ন দেবব্রহ্মাদ্যান খলু হরিভক্তর্ন সুহৃদা, দিভির্যদ্বৈ রাধা – মধুপতি – রহস্য সুবিদিতম্।
তয়োর্দাসীভূত্বা তদুপচিত কেলি – রস – ময়ে, দুরন্তাঃ প্রত্যাশা দৃশোর্গোচরয়িতুম্ ॥১৪৮॥
ব্যাখ্যা:
জিন শ্রীরাধা-মাধব কা রহস্য ন ব্রহ্মাদি দেবোঁ নে, ন
সম্যক্ রূপ সে হরি ভক্তোঁ নে, ঔর ন ভলী প্রকার সে
(শ্যামসুন্দর কে) সখাঔঁ নে হী জানা হ্য ঊন
(শ্রীরাধামাধব) কী দাসী বনকর ঊনকে সুপুষ্ট কেলি
রস কো নেত্রোঁ সে দেখনে কী অনন্ত আশা (ম্যনে) লগা
রখী হ্য, ইহ কৈসা আশ্চর্য হ্য।
ব্যাখ্যা:
যাঁদের—শ্রীরাধা-মাধবের—রহস্য না ব্রহ্মা-আদির মতো দেবগণ বুঝেছেন,
না সম্পূর্ণরূপে ভক্তগণ উপলব্ধি করেছেন, এমনকি শ্যামসুন্দরের অন্তরঙ্গ সখারাও
এই তত্ত্বকে সম্পূর্ণরূপে জানতে পারেননি—
তাঁদেরই দাসী হয়ে,
তাঁদের সুপরিপক্ব কেলি-রস চক্ষুগোচরে প্রত্যক্ষ করার
যে অনন্ত আশা আমি পোষণ করেছি, এই কি না এক অভূতপূর্ব বিস্ময়!
ত্বয়ি শ্যামে নিত্যে প্রণয়িনি বিদগ্ধে রসনিধৌ, প্রিয়ে ভূয়ো ভূয়ঃ সুদৃঢ়মতি রাগো ভবতু মে।
ইতি প্রেষ্ঠেনোক্তা রমণ মম চিত্তে তব বচো, বদন্তীতি স্মেরা মম মনসি রাধা বিলসতু ॥১৪৯॥
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীশ্যামে ! (হে নব যুবতি) হে নিত্য অনুরাগিনি ! হ্য
সমস্ত কলা কুশলে! হে রস কী নিধি স্বরূপ প্রিয়ে!
আপ মে মেরা বারবার হৃদ্ অনুরাগ হো' ইস প্রকার প্রিয়তম
কে কহনে পর 'হে রমণ! আপ কী যৈসী বাত মেরে মন মে
ভী হ্য' ইস প্রকার মন্দ হাস্য যুক্ত কহতী হুঈ শ্রীরাধা মেরে
মন মে বিলাস করেঁ।
নোট- ইস শ্লোক মে শ্রীশ্যামসুন্দর নে শ্রীরাধা কে প্রতি
জিন তিন সম্বোধনোঁ - হে শ্যামে, হে প্রণয়িনি, হে বিদ্গ্ঘে
কা প্রয়োগ কিয়া হ্য, পরম চতুর শ্রীরাধা নে ইহ কহকর
কি 'হে রমণ! ইহী বাত মেরে মন মে ভী হ্য' উন সম্বোধনোঁ
কা হী প্রয়োগ সপ্তমী কে এক বচন মে আপনে প্রিয়তম কে
প্রতি কর দিয়া হ্য। ইসকা অর্থ হোতা হ্য কি 'আপ শ্যাম
মে, নিত্য প্রণয়ী মে, বিদগ্ধ মে ঔর রসনিধি মে মেরা
সুদঢ় অনুরাগ হো।' শ্লোক মে কহে গয়ে শ্রীরাধা কে মন্দ
হাস্য কা কারণ ইহী হ্য।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীশ্যামে! (হে নব-যুবতী!)
হে নিত্য প্রেমময়ী! হে সমস্ত কলায় পারদর্শিনী!
হে রসের আধারস্বরূপে প্রিয়ে!
আপনার মধ্যে যেন আমার পুনঃ পুনঃ গভীর অনুরাগ জন্মে— এমনভাবে যখন প্রিয়তম বললেন,
তখন মৃদু হাস্যে ভাসতে ভাসতে
শ্রীরাধা উত্তর দিলেন— “হে রমণ! আপনার যেরকম কথা,
ঠিক তেমনটিই আমার মনেও রয়েছে।”
নোট:
এই শ্লোকে শ্রীশ্যামসুন্দর শ্রীরাধাকে যেসব তিনটি সম্বোধনে ডেকেছেন—
"হে শ্যামে", "হে প্রণয়িনী", "হে বিদগ্ধে"— তারই চূড়ান্ত রসিক ও চতুর প্রতিউত্তর দিয়েছেন শ্রীরাধা। তিনি বলছেন—
“হে রমণ! ‘আপনার মতোই আমার ভাব।’”
এ কথার মাধ্যমে তিনি ব্যাকরণ অনুযায়ী সপ্তমী একবচনের ভঙ্গিতে উল্লেখ করে দিলেন যে—
“আপনি যিনি শ্যাম, যিনি নিত্য প্রণয়ী,
যিনি বিদগ্ধ, যিনি রসনিধি, তিনিতেই আমার গাঢ় অনুরাগ।” এই চূড়ান্ত রসচাতুর্যের সূক্ষ্ম ইঙ্গিতেই শ্রীরাধার মৃদু হাস্য ফুটে উঠেছে।
সদানন্দ বৃন্দারণ্য – নবলতা – মন্দির বরে, ধ্বমন্দৈঃ কন্দর্পোন্মদরতি – কলা – কৌতুক রসম্।
কিশোরং তজ্জ্যোতির্যুগলমতিঘোরং মম ভব, জ্বলজ্জ্বালং শীতঃ স্বপদ – মকরন্দৈঃ শময়তু ॥১৫০॥
ব্যাখ্যা:
সদা আনন্দ সে পরিপূর্ণ শ্রীবৃন্দাবন কে নবীন লতা
মন্দির মে মহাপ্রেম রূপী (কাম) মদ সে উন্মত্ত বনী হুঈ,
রতি কলা পূর্ণ আশ্চর্যময় রসরূপ বহ কিশোর যুগল
জ্যোতি আপনে চরণ কমলোঁ কে অত্যন্ত শীতল মকরন্দ
রস সে অত্যন্ত ভয়ানক ঔর প্রচণ্ড জ্বালাপূর্ণ মেরে
ভব-সন্তাপ (সাংসারিক কষ্ট) কো শমন করে ।
ব্যাখ্যা:
সদা আনন্দে পূর্ণ,
শ্রীবৃন্দাবনের নবীন লতা-মন্দিরে,
মহা-প্রেমরূপী (কাম) উন্মাদনায় উন্মত্ত হয়ে, যে কিশোর যুগল রস-স্বরূপ,
রতিকলায় পরিপূর্ণ এক আশ্চর্যময় দীপ্তি—
তাঁদের সেই চরণকমলের অত্যন্ত শীতল মকরন্দ-রস
আমার এই ভয়ংকর ও প্রবল জ্বালাপূর্ণ ভব-সন্তাপ (জন্ম-মৃত্যু-বেদনা, সংসারদুঃখ) শমন করুক।
উন্মীলন্নব মল্লিদাম বিলসদ্ধম্মিলভারে বৃহ ছ্ছোণী মণ্ডল মেখলা কলরবে শিঞ্জান মঞ্জীরিণী ।
কেয়ূরাঙ্গদ কঙ্কণাবলিলসদ্দোবল্লি দীপ্তিচ্ছটে , হেমাম্ভোরুহ কুড্মলস্তনি কদা রাধে দৃশা পোয়সে ।।১৫১।।
ব্যাখ্যা:
খিলতী হুঈ নবীন মল্লী কী মালা সে শোভিত
কেশপাশ বালী ! পৃহু নিতম্ব মণ্ডল পর কিন্কিণী কী
মধুর ধ্বনি বালী ! বজতে হুয়ে সুন্দর নূপুর বালী কেয়ূর,
অঙ্গদ তথা কঙ্কণাঅলি সে শোভিত ভুজ-লতাঔঁ কী
ছবি ছটা বালী ঔর স্বর্ণ কমল কী কলী যৈসে
বক্ষস্থল বালী হে শ্রীরাধে! (আপকে ঐসে রূপ কো ম্যাঁ)
কব নেত্রোঁ সে পান করুঁঙ্গা ?
ব্যাখ্যা:
ফুটে ওঠা নবীন মল্লিকা মালা দ্বারা শোভিত
চুলের বিনুনি যাঁর!
প্রসারিত নিতম্বমণ্ডলে কিঙ্কিণীর মধুর ধ্বনি ধ্বনিত! বাজতে থাকা অপরূপ নূপুর যাঁর চরণে! কেয়ূর, অঙ্গদ ও কঙ্কণাবলিতে শোভিত
ভুজলতার অপরূপ রূপচ্ছটা যাঁর!
আর স্বর্ণকমল কলির ন্যায় মনোহর
যাঁর বক্ষদেশ— হে শ্রীরাধে!
আপনার এমন রূপ আমি কবে চক্ষু দ্বারা পান করব?
আমর্যাদোন্মীলৎসুরত রস পীয়ূষ জলধেঃ , সুধান্গৈরুত্তুঙ্গৈরিব কিমপি দোলায়িত তনুঃ ।
স্ফুরন্তী প্রেয়োঙ্কে স্ফুট কনক – পঙ্কেহ মুখী , সখীনাং নো রাধে নয়নসুখমাধাস্যসি কদা।।১৫২।।
ব্যাখ্যা:
মর্যাদা কো তোড়কর উমড়তে হুয়ে মধুর প্রেমানন্দ রূপী
অমৃত সমুদ্র কী উছলতী হুঈ তরংগোঁ সে আন্দোলিত
(ঝকোরে লেতা হুয়া) শরীর বালী, প্রিয়তম কী গোদ মে
দমকতী হুঈ, খিলে হুয়ে স্বর্ণ কমল কে সমান মুখ
বালী হে শ্রীরাধে! আপ হম সখিয়োঁ কে নেত্রোঁ কো কব
আনন্দ প্রদান করেংগী ?
ব্যাখ্যা:
মর্যাদার সীমা ভেঙে উঠে আসা
মধুর প্রেমানন্দ-রূপী অমৃত-সমুদ্রের উচ্ছ্বাসিত তরঙ্গে আন্দোলিত
(দোলা খেতে থাকা) দেহ যাঁর, প্রিয়তমের কোলের মাঝে দীপ্তিমান,
ফুটে ওঠা স্বর্ণকমলের মত উজ্জ্বল মুখ যাঁর—
হে শ্রীরাধে! আপনি আমাদের—
এই সখীগণের নেত্রকে কবে আনন্দ দান করবেন?
ক্ষরন্তীব প্রত্যক্ষরমনুপম প্রেম – জলধি , সুধান্ধারা বৃষ্টীরিব বিদধতী শ্রোত্রপুটযোঃ ।
রসাদ্রী সন্মৃদ্বী পরম সুখদা শীতলতরা , ভবিত্রী কি রাধে তব সহ ময়া কাপি সুকথা।।১৫৩।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! প্রত্যেক অক্ষর দ্বারা অনুপম প্রেম-সমুদ্র কো
উড়েলতী হুঈ, কানোঁ মে অমৃত ধারা কী মানোঁ বর্ষা করতী
হুঈ, রস সে ভীগী হুঈ, অত্যন্ত কোমল, পরম সুখ
দায়িনী (এবং) পরম শীতল আপকী কোঈ অনির্বচনীয়
সুন্দর চর্চা ক্যা কবহী মেরে সাথ হোগী ?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! প্রতিটি অক্ষরে উথলে ওঠে এক অনুপম প্রেমসমুদ্র, যা শ্রবণে যেন অমৃতধারার বর্ষণ,
রসে ভেজা, অতীব কোমল,
পরম শান্তিদায়িনী, অপার সুখপ্রদ,
এমন কোনও অনির্বচনীয় সুন্দর আলোচনা
আপনার সঙ্গে আমার আদৌ হবে কি কখনও?
অনুল্লিখ্যানন্তানপি সদপরাধান্মধুপতি মহাপ্রেমাবিষ্টস্তব পরমদেয়ং বিমৃশতি ।
তৱৈকং শ্রীরাধে গৃণত ইহ নামামৃত রসং , মহিম্নঃ কঃ সীমাং স্পৃশতি তব দাস্যকৈমনসাম্ ।।১৫৪।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! মধুপতি শ্রীশ্যামসুন্দর আপকে মহাপ্রেম কে
আবেশ মে ভরকর ইস লোক মে কেৱল আপকে হী নাম
রূপী অমৃত রস কো গ্ৰহণ করনে বালে উপাসক কে
অনন্ত অপরাধোঁ কা ভী লেখা-জোখা নহीं রখতে (ঔর)
ইস বিচার মে পড় जातে হ্যঁ কি ইসকো ক্য়া দিয়া যায় ?
(তো ফির) আপকে একমাত্র দাস্য মে অনুরক্ত চিত্ত বালোঁ
কী মহিমা-সীমা কো কৌন স্পর্শ কর সকতা হ্য ?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! মধুপতি শ্রীশ্যামসুন্দর আপনার মহাপ্রেমে অভিভূত হয়ে,
এই জগতে শুধুমাত্র আপনার নামরূপ অমৃত রসে নিমগ্ন উপাসকের
অসংখ্য অপরাধেরও কোনো হিসাব রাখেন না, বরং ভাবনায় পড়ে যান— “তাকে কী পুরস্কার দেওয়া যায়?” (তবে) যিনি কেবলমাত্র আপনার দাস্যভক্তিতেই হৃদয় সঁপেছেন,
তার গৌরবের সীমা কে-ই বা ছুঁতে পারে?
লুলিত নব লবঙ্গোদার কর্পূরপুর প্রিয়তম – মুখ – চন্দ্রোদ্গীর্ণ তাম্বূল – খণ্ডম্ ।
ঘনপুলক কপোলা স্বাদয়ন্তী মদাস্যে র্পযতু কিমপি দাসী – বন্দলা কহি রাধা।।১৫৫।।
ব্যাখ্যা:
টুকড়ে কী গঈ তাজা লৌং ঔর ভরপূর কর্পূর সে যুক্ত,
প্রিয়তম কে মুখ চন্দ্র সে উদ্গীর্ণ (শ্রীরাধা কে মুখ মে
দিয়ে গয়ে) খণ্ডিত পান কা স্বাদ লেতী হুঈ, সঘন
রোমাঞ্চোঁ সে ভরে কপোল যুক্ত ঔর দাসী পর অনির্বচনীয়
বাত্সল্য রখনে বালী শ্রীরাধা কবহী (উস পান কো) মেরে
মুখ মে দেগী?
ব্যাখ্যা:
টুকরো করা টাটকা লবঙ্গ ও পরিপূর্ণ কর্পূর মিশ্রিত,
প্রিয়তমের মুখচন্দ্র থেকে উৎসারিত (শ্রীরাধার মুখে দেওয়া)
ভগ্ন পান রসের আস্বাদ নিতে নিতে,
ঘন রোমাঞ্চে ভরা গণ্ডযুক্ত এবং
দাসীর প্রতি অনির্বচনীয় মাতৃত্বভাব পোষণকারিণী
শ্রীরাধা কি কখনও (সে পান) আমার মুখে দেবেন?
সৌন্দর্যমৃত – রাশিরদ্ভুত মহালাবণ্য – লীলা – কালা , কালিন্দীবর – বোটি – ডম্বর পরিস্ফূর্জত্কটাক্ষচ্ছবি ।
সা কাপি স্মরকেলি – কোমল – কালা – বৈচিত্র্য – কোটি স্ফুরত্প্রেমানন্দ ঘনাকৃতিদিশতু মে দাস্যং কিশোরো – মণিঃ।।১৫৬।।
ব্যাখ্যা:
(জো) সৌন্দর্য রূপী অমৃত কী রাশি হ্যঁ, (জো) মহা
অদ্ভুত লাবণ্যময়ী লীলা কলাঔঁ সে যুক্ত হ্যঁ, শ্রীযমুনা
কী মনোহর তরংগোঁ কে সমূহ কী ভাঁতি জিঙ্কে কটাক্ষোঁ
কী ছবি ছিটক রহী হ্য বে রতি বিনোদ কী কোমল
কলাঔঁ কী কোটি় বিচিত্রতাঔঁ সে উল্লসিংত প্রেমানন্দ
কী সঘন মূর্তি কোঈ অনির্বচনীয়া কিশোরিঅঁ কী
শিরোমণি (শ্রীরাধা) মুঝে আপনা দাস্য প্রদান করেঁ।
ব্যাখ্যা:
(যিনি) সৌন্দর্যরূপ অমৃতের ভাণ্ডার,
(যিনি) মহা-অদ্ভুত লাবণ্যময় লীলা কলায় পূর্ণ,
যমুনার মনোহর তরঙ্গমালার মতো
যাঁর চাহনির ছটা ছড়িয়ে পড়ছে,
রতির কোমল কৌশলের কোটি অভিনবতায় উল্লसित
সে অনির্বচনীয়া কিশোরীকুল শিরোমণি (শ্রীরাধা) যেন আমাকে দাস্য দান করেন।
দুকূলমতি কোমলং কলয়দেব কৌশুম্ভকম্ , নিবদ্ধ মধু – মল্লিকা ললিত মাল্য – ধম্মিল্লকম্ ।
বৃহৎকটিতট স্ফুরন্মুখর মেখলালংকৃতং , কদা নু কলয়ামি তত্কনক – চম্পকাভং মহঃ।।১৫৭।।
ব্যাখ্যা:
অত্যন্ত কোমল করুঁভী (লাল) রং কে বস্ত্র কো ধারণ
কিয়ে হুয়ে, বাণী মে বসন্ত কালীণ মল্লী কে ফূলোঁ কী
মালা বাঁধে হুয়ে (ঔর) বিশাল কাটিতট (নিতম্ব) মে
দমকতী হুয়ী শব্দায়মান মেখলা (কর্ধনী) সে
সুশোভিত, উস স্বর্ণ চম্পক যৈসী কান্তি সে যুক্ত তেজ
কা ম্যাঁ কব দর্শন করুঁঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
অত্যন্ত কোমল কুঁচকী লাল বস্ত্র পরিহিতা,
বেণীতে বসন্তকালীন মল্লিকা ফুলের মালা বাঁধা,
প্রশস্ত নিতম্বতটে দীপ্তিমান,
ধ্বনিত কণ্ঠনির্গত মেখলায় শোভিত,
স্বর্ণচম্পকসদৃশ দীপ্তি দ্বারা বিভাসিত—
সে তেজঃপূর্ণ রূপ আমি কবে দর্শন করব?
কদা রাসে প্রেমোন্মদ রস – বিলাসেদ্ভুতময়ে , দিশোর্মধ্যে ভ্রাজন্মধুপতি সখী – বৃন্দ – বলয়ে ।
মুদান্তঃ কান্তেন স্বরচিত মহালাস্য – কলয়া , নিষেবে নৃত্যন্তী ব্যজন নব তাম্বূল – সকলৈঃ।।১৫৮।।
ব্যাখ্যা:
দোনোঁ দিশাঔঁ মে (দোনোঁ ঔর) শ্রীকৃষ্ণ ঔর
মণ্ডলাকার খড়ী হুয়ী সখি়যোঁ কে সমূহ সে সুশোভিত,
প্রেম কে উৎকঠ মদ সে ভরে রসময় বিলাস সে যুক্ত রাস
মে, মণ্ডল কে ভিতর, স্বয়ং উদ্বঘাৱিত নৃত্য কলা দ্বারা
প্রিয়তম কে সাথ হর্ষপূর্ণক নৃত্য করতী হুয়ী শ্রীরাধা কী
ম্যাঁ সুন্দর পঙ্খা ঝলকর ঔর পান কী ছোটী বীড়ি়যাঁ
দেকর কব সেবা করুঁঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
উভয় দিকে শ্রীকৃষ্ণ ও
বৃত্তাকারে দাঁড়ানো সখীগণের দ্বারা শোভিত,
প্রেমের তীব্র উন্মাদনায় পরিপূর্ণ রসময় ক্রীড়ায়,
মণ্ডলের মধ্যে, স্বতঃস্ফূর্ত নৃত্যকলায়
প্রিয়তমের সঙ্গে আনন্দভরে নৃত্যরত
শ্রীরাধার আমি কবে সুন্দর পাখা দোলাবো ও পানের ছোট বিঁড়ি অর্পণ করে সেবা করব?
প্রসৃমর পটবাসে প্রেম – সীমা – বিকাসে , মধুর – মধুর হাসে দিব্য ভূষা – বিলাসে ।
পুলকিত দয়িতাংসে সম্বলদ্বাহু – পাশে , তদতিললিত রাসে কহি রাধামুপাসে।।১৫৯।।
ব্যাখ্যা:
(যহাঁ) সুগন্ধিত চূর্ণ (বারীক পিসে হুয়ে সুগন্ধিত
পদার্থ) বিখরা হুয়া হ্য, (যহাঁ) প্রেম অপনী পূর্ণ সীমা
বিলাস হো রহা হ্য (অর্থাৎ বে বজ রহে হ্যঁ) যহাঁ প্রিয়া-
প্রিয়তম কে অংস (কন্ধে) রোমাঞ্চিত হো রহে হ্যঁ ঔর উন্কী
ভুজাঐঁ এক দূসরে কে চারোঁ ঔর লিপট রহী হ্যঁ, ঐসে উস
অতিশয় রমণীয় রাস মে (নৃত্য করতী হুঈ) শ্রীরাধা কী
ম্যাঁ কব উপাসনা করুঁঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
যেখানে সুগন্ধি চূর্ণ ছড়ানো আছে,
যেখানে প্রেম তার পরিপূর্ণ সীমায় ক্রীড়া করছে,
যেখানে প্রিয়া-প্রিয়তমের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রোমাঞ্চ জেগে উঠছে
এবং তাঁদের বাহুগুলি একে অপরকে জড়িয়ে আছে—
সেই অতিশয় মনোরম রাসমণ্ডলে (নৃত্যরত)
শ্রীরাধার আমি কবে উপাসনা করব?
যদি কনক – সরোজ কোটি – চন্দ্রাংশু – পূর্ণ , নব – নব মকরন্দ – স্যন্দি সৌন্দর্য – ধাম ।
ভবতি লসিত চঞ্চত্খঞ্জন দ্বন্দ্বমাস্য , তদপি মধুর হাস্যং দত্ত দাস্যং ন তস্যাঃ ।।১৬০।।
ব্যাখ্যা:
যদি কোটি়-কোটি় চন্দ্রমাঔঁ কী কিরণোঁ সে পূর্ণ ঔর
নূতনাতিনূতন পরাগ কো নির্ঝরিত করনে সে সৌন্দর্য কা
ধাম বনা হুয়া তথা দো চঞ্চল খঞ্জনোঁ কী শোভা সে যুক্ত
কোঈ স্বর্ণ কমল হো তো ভী মধুর-মধুর হাস্য সে
মণ্ডিত শ্রীরাধা কে মুখ কী দাসতা কে ভী বহ যোগ্য
নহीं হোগা।
ব্যাখ্যা:
যদি কোটি কোটি চাঁদের কিরণে পরিপূর্ণ
এবং সর্বনতুন পরাগ ঝরিয়ে গঠিত হয় এমন
সৌন্দর্যের আধারস্বরূপ কোন সোনার কমল ফোটে
যা দুই চঞ্চল খঞ্জনচক্ষুর শোভায়ও শোভিত হয়,
তবুও রাধার মধুর-মধুর হাস্যে ভরা মুখের দাসত্বের যোগ্য সে নয়।
সুধাকরমুধাকরং প্রতিপদস্ফুরন্মাধুরী, ধুরোণ নব চন্দ্রিকা জলধি তুন্দিলং রাধিকে।
অতৃপ্ত হরি – লোচন – দ্বয় চকোর – পেয়ং কদা, রসাম্বুধি সমুন্নতং বদন – চন্দ্রমীক্ষে তব।।১৬১।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে ! চন্দ্রমা কো ব্যর্থ সিদ্ধ করনে বালে,
প্রতিক্ষণ উমড়তে হুয়ে माधुर्य কো ধারণ কিয়ে হুয়ে নবীন
চাঁদনী কে সমুদ্র কো বঢ়ানে বালে, শ্রীশ্যামসুন্দর কে
চকোর কে সমান অতৃপ্ত যুগল নেত্রোঁ সে পান করনে যোগ্য
ঔর রস সাগর সে উদিত হোने বালে আপকে মুখ চন্দ্র
কো ম্যাঁ কব দেখুঁঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে! যিনি চাঁদকে অর্থহীন করে তোলেন,
যিনি প্রতিক্ষণে নবীন চাঁদের আলোয় ভরা সৌন্দর্য ঢালেন,
যার মুখচন্দ্র হচ্ছে রসসমুদ্র থেকে উদিত,
যা শ্রীশ্যামসুন্দরের চাতকদৃষ্টির ন্যায় তৃষ্ণার্ত চোখের জন্য পানের যোগ্য,
সেই আপনার মুখচন্দ্র আমি কবে দর্শন করব?
অঙ্গ – প্রত্যঙ্গ রিঙ্গন্মধুরতর মহা কীত্তি – পীয়ূষ সিন্ধোরিন্দোঃ কোটিবিনিদদ্বদনমতি মদালোল নেত্রং দধত্যাঃ।
রাধায়া সৌকুমার্যাদ্ভুত ললিত তনোহ কেলি – কল্লোলীনীনা মানন্দস্যন্দিনীনাং প্রণয় – রসময়ান কি বিগাহে প্রবাহান।।১৬২।।
ব্যাখ্যা:
জিঙ্কে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সে অত্যন্ত মধুর (রূপ-সৌন্দর্য কে )
বিশাল বাভব কে অমৃত সমুদ্র বহতে হ্যঁ, (জো) কোটি়-
কোটি় চন্দ্রোঁ কো লজ্জিত করনে বালে ঔর মদ ভরে চঞ্চল
নেত্র যুক্ত মুখ বালী হ্যঁ, (জো) অদ্ভুত সুকুমার ঔর
সুন্দর শরীর বালী হ্যঁ (উন) শ্রীরাধা কী আনন্দ কো
নির্ঝরিত করনে বালী বিলাস-সরিতাঔঁ কে প্রেম রস সে
পরিপূর্ণ ধারাঔঁ মে ক্যা (ম্যাঁ) খান করুঁঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
যার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে অপার সৌন্দর্যের
অমৃত-সাগর বহে যায় অতিশয় মাধুর্যে,
যার মুখটি কোটিকোটি চন্দ্রকে লজ্জায় ফেলে
এবং যাঁর চঞ্চল চোখ ভরা থাকে প্রেমমদে,
সেই শ্রীরাধার লীলাধারায় আমি কবে স্নান করব?
মৎকণ্ঠে কি নখরশিখয়া দৈত্যরাজোডিস্ম নাহং, মৈবং পীডা কুরু কুচ – তটে পূতনা নাহমস্মি।
ইত্তং কীরৈরনুকৃত – বচঃ প্রেয়সা – সঙ্গতায়াঃ, প্রাতঃ শ্রোষ্যে তব সখি কদা কেলি – কুজে মৃজন্তী।।১৬৩।।
ব্যাখ্যা:
মেরে কণ্ঠ মে নখাগ্র সে (ঐসী পীড়া) ক্যোঁ করতে হো? ম্যাঁ
দৈত্যরাজ (তৃণাৱর্ত) নহीं হুঁ। মেরে শ্রীঅঙ্গ যুগল কো ঐসী
পীড়া মত দো, ম্যাঁ পূতনা নহीं হুঁ।' হে সখী, প্রিয়তম কে
সাথ সমাগম কো প্রাপ্ত আপকে, তোতোঁ দ্বারা জ্যোঁ কে ত্যোঁ
দোহরায়ে গয়ে, ইস প্রকার কে বচনোঁ কা প্রাতঃকাল কেলি
কুঞ্জ কো বুহারতী হুয়ি ম্যাঁ কব শুনুঁঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
“আমার কণ্ঠে নখাগ্র দিয়ে এমন কষ্ট দিচ্ছ কেন? আমি কোনো অসুররাজ (তৃণাবর্ত) নই।
আমার শ্রীঅঙ্গ যুগলকে এতটা যন্ত্রণা দিও না,
আমি পুতনা নই।” — হে সখি!
প্রভাতকালে কেলিকুঞ্জ ঝাড়ু দিতে দিতে
প্রিয়তমের সঙ্গে মিলিত আপনাকে এইরূপ বচন বলতে শুনে
যখন টিয়ারা সেই কথা হুবহু পুনরাবৃত্তি করে সেই দৃশ্য আমি কবে দেখব?
জাগ্রত্স্বপ্ন সুষুপ্তিষু স্ফুরতু মে রাধাপদাব্জচ্ছটা, বৈকুণ্ঠে নরকেথ বা মম গতির্নান্যাস্তু রাধাং বিনা।
রাধা – কেলি – কথা – সুধাম্বুধি মহাবীচোবিরান্দোলিতং, কালিন্দী – তট – কুঞ্জ – মন্দির – বরালিন্দে মনো বিন্দতু।।১৬৪।।
ব্যাখ্যা:
জাগতে, সোতে তথা সুষুপ্তি (গহরী নীঁদ) কী দশা মে
শ্রীরাধা কে চরণ কমলোঁ কী ছঠা কা মেরে হৃদয় মে
স্ফুরণ হো। শ্রীরাধা কে বিনা বৈকুণ্ঠ অথবা নরক মে
ভী (শ্রীরাধা কী শরণ কো ছোড়কর) মেরী অন্য কোঈ
গতী ন হো। শ্রীরাধা কী কেলি কথা রূপী সমুদ্র কী
উত্তাল তরংগোঁ মে ঝকোরে লেতা হুয়া মেরা মন শ্রীযমুনা কে
তট পর স্থিত নিকুঞ্জ মন্দির কে বিশাল আঙন মে
আনন্দ প্রাপ্ত করে।
ব্যাখ্যা:
জাগ্রত, স্বপ্ন এবং সুষুপ্তি — তিন অবস্থাতেই
আমার হৃদয়ে শ্রীরাধার চরণকমলের জ্যোতি উদ্ভাসিত হোক।
শ্রীরাধাকে ছাড়া — বৈকুণ্ঠ হোক বা নরক —
কোথাও যেন আমার গতি না হয়।
শ্রীরাধার কেলি-কথা নামক
সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গে দোল খেতে খেতে
আমার মন যেন আনন্দলাভ করে
শ্রীযমুনার তীরে অবস্থিত নিকুঞ্জ-মন্দিরের বিশাল প্রাঙ্গণে।
অলিন্দে কালিন্দী – তট নবলতা – মন্দিরবরে রতামর্দোভাবূতশ্রমজল ভরাপূর্ণবপুষোঃ।
সুখস্পর্শনামোলিতনয়নযোঃ শীতমতুলং, কদা কুয্র্যা সংবীজনমহহ রাধা মুরভিদোঃ।।১৬৫।।
ব্যাখ্যা:
অহো! জিঙ্কে শরীর প্রেম সঙ্ঘ্রাম কে কারণ নিকলে হুয়ে
শ্রমজল সে লথপথ হো রহে হ্যঁ, (পরস্পর অঙ্গোঁ কে) সুখদ
স্পর্শ সে জিঙ্কে দোনোঁ নেত্র মুঁদে হুয়ে হ্যঁ, ঐসে শ্রীরাধামাধব
কো ম্যাঁ শ্রীযমুনা-তট পর (স্থিত) নবীন লতা মন্দির কে
আঙন মে কব অনুপম শীতল পঙ্খা ঝলুঁঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
অহো! প্রেম-সংগ্রামের ফলে যাঁদের শরীর থেকে নির্গত ঘামজলে ভেজা,
পারস্পরিক অঙ্গ-স্পর্শের সুখে
যাঁদের দুই নয়ন অর্ধনিমীলিত, সেই শ্রীরাধামাধবকে
আমি কবে শ্রীযমুনাতীরে অবস্থিত নতুন লতা-মন্দিরের প্রাঙ্গণে
অনুপম শীতল পাখা দিয়ে বাতাস করব?
ক্ষণং মধুর গানতঃ ক্ষণমমন্দ হিন্দোলতঃ, ক্ষণং কুসুম বাতুতঃ সুরত – কেলি – শিল্পঃ ক্ষণম্।
অহো মধুরসদস প্রণয় – কেলি বৃন্দাবনে, বিদগ্ধবরনাগরী – রসিক – শেখরৌ – খেলতঃ।।১৬৬।।
ব্যাখ্যা:
অহো! শ্রেষ্ঠ মধুর রস কী প্রেম-ক্রীড়াঔঁ সে পূর্ণ
শ্রীবৃন্দাবন মে চতুর শিরোমণি শ্রীরাধা তথা রসিক
শেখর শ্রীশ্যামসুন্দর কবহী মধুর গান করকে, কবহী বেগ
কে সাথ হিঁডোলে় মে ঝূলকর, কবহী ফূলোঁ কী হবা সে
খেলতে হুয়ে তথা কবহী প্রেম -বিহার কী কলাঔঁ কে দ্বারা
(অর্থাৎ কলা প্রদর্শিত করতে হুয়ে) খেলতে রহতে হ্যঁ।
ব্যাখ্যা:
অহো! শ্রেষ্ঠ মধুর রসের প্রেম-ক্রীড়ায় পূর্ণ
শ্রীবৃন্দাবনে চতুরদের শিরোমণি শ্রীরাধা
ও রসিক শিখর শ্রীশ্যামসুন্দর
কখনো মধুর গান করেন, কখনো দুলনায় জোরে দুলেন,
কখনো ফুলের হাওয়ায় খেলেন
এবং কখনো প্রেম-বিহারের নানা কলা প্রদর্শন করে ক্রীড়া করেন।
অদ্যশ্যাম কিশোর মৌলিরহহ প্রাপ্তো রজন্যা – মুখে, নীত্বা তাং করযোঃ প্রগৃহ্য সহসা নীপাটবোঁ প্রাবিশত।
শ্রোষ্যে তল্প মিলন্মহা রতিভরে প্রাপ্তেপি শীত্কারিতং, তদ্বোচী – সুখ – তর্জনং কিমু হরেঃ স্বশ্রোত্র রন্ধ্রাধিতম্।।১৬৭।।
ব্যাখ্যা:
কৈসে আশ্চর্য কী বাত হ্যকি, আজ কিশোর শিরোমণি
শ্রীশ্যামসুন্দর সায়ংকাল (শ্রীরাধা জূ) কা হাত
পকড়কর সহসা কদম্ব বন মে প্রবিষ্ট হো গয়ে। বহাঁ
শ্রীহরি কী শৈযা পর (পরস্পর) সঙ্ঘম মে বিশাল রতি
প্রবাহ কী বৃদ্ধি হোনে পর রতি-সুখ কী তরঙ্গোঁ কে গর্জন
কে সমান সীত্কার কো নিকট রহকর ক্যা (ম্যাঁ) শুনুঁঙ্গী?
ব্যাখ্যা:
কী আশ্চর্যের কথা! আজ কিশোরদের শিরোমণি শ্রীশ্যামসুন্দর
সন্ধ্যাবেলায় হঠাৎ শ্রীরাধাজীর হাত ধরে
কদমবনে প্রবেশ করলেন। সেখানে শ্রীহরির শয্যায়
(উভয়ের) মিলনে বিরাট রতিক্রিয়ার প্রবাহ বাড়তে থাকলে, রতি-সুখের তরঙ্গের গর্জনের মত
যে শব্দ (সীত্কার) হয়, তা কি আমি কাছ থেকে শুনব?
শ্রীমদ্রাধে ত্বমথ মধুরং শ্রীযশোদাকুমারে, প্রাপ্তে কৈশোরকমতিরসাদ্বল্গসে সাধু – যোগম্।
ইত্তং বালে মহসি কথয়া নিত্যলীলা – বয়ঃশ্রী, জাতাবেশা প্রকাশ সহজা কিন্নু দৃশ্যা কিশোরী।।১৬৮।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রী রাধে! শ্রীযশোদা কুমার কে কিশোরাৱস্থা কো প্রাপ্ত
হোনে পর আপ ভী অতি রসাৱেশ কে কারণ ইসী
(কিশোরাৱস্থা রূপী) মধুর সংযোগ কো সহসা প্রাপ্ত হো
রহী হো।' ইস প্রকার কহে জানে পর বাল অৱস্থা কে
প্রকাশ মে (বাল্যকাল মে) জিঙ্কো নিত্য কিশোর লীলা
কী শোভা কা ঔবেশ হো গয়া হ্য (ঔর তদনন্তর)
জিঙ্কা সহজ রূপ প্রকাশ হো গয়া হ্য (অর্থাৎ জিঙ্কী
সহজ কিশোরাৱস্থা প্রকাশ হো গঈ হ্য) (ঐসী আপ)
কিশোরী কো ক্যা ম্যাঁ দেখুঁঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! যখন শ্রীযশোদার কুমার কিশোরবয়সে উপনীত হন,
তখন আপনিও অতিরস-আবেশের কারণে এই (কিশোরবয়সরূপ) মধুর সংযোগে
হঠাৎ প্রবিষ্ট হয়েছেন। এইরূপ বলা হলে,
শৈশবের প্রকাশ থাকা সত্ত্বেও যাঁরা নিত্য কিশোর লীলার শোভায় অভিভূত,
এবং পরে যাঁদের স্বাভাবিক রূপ প্রকাশ পেয়েছে
(অর্থাৎ যাঁদের সহজ কিশোরভাব প্রকাশিত হয়েছে), সেই কিশোরী আপনাকে
আমি কি দেখতে পাবো?
এক কাঞ্চন চম্পকচ্ছবি পরং নীলাম্বুদ শ্যামলং, কন্দপ্পোত্তরল তথৈকমপরং নৈবানুকূল বহিঃ।
কিঞ্চক বহুমান – ভঙ্গি রসবচ্চাটূনি কুর্বত্পরং, বীক্ষে ক্রীড়তি কুঞ্জসোম্নি তদহো দ্বন্দ্বমহা মোহনম্।।১৬৯।।
ব্যাখ্যা:
অহো ! এক (শ্রীরাধা) কী কান্তি তো স্বর্ণ চম্পক পুষ্প
জৈসী হ্য, দূসরে (শ্রীশ্যামসুন্দর) কা বর্ণ নীল মেঘ কে
সমান শ্যাম হ্য। এক (শ্রীশ্যামসুন্দর) মহাপ্রেমাৱেশ কে
কারণ অত্যন্ত চঞ্চল হ্যঁ তো দূসরা (শ্রীরাধা) ঊপর সে
প্রতিকূল বন়া রহতা হ্য। এক (শ্রীরাধা) অনেক প্রকার
কী মান-চেষ্টাঐঁ করতী হ্যঁ তো দূসরা (শ্রীশ্যামসুন্দর)
রসপূর্ণ অনুনয়-বিনয় করনে বালে হ্যঁ। (ইস প্রকার
কা) মহামোহন বহ যুগল (শ্রীরাধা- শ্যামসুন্দর)
নিকুঞ্জ সীমা কে অন্দর ক্রীড়া কর রহে হ্যঁ, (ক্যা ম্যাঁ উনহেঁ)
দেখুঁঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
অহো! একজন (শ্রীরাধা) -র কান্তি স্বর্ণচম্পা ফুলের মতো,
আর অন্যজন (শ্রীয়ামসুন্দর) -এর বর্ণ নীল মেঘের ন্যায় শ্যাম। একজন (শ্রীয়ামসুন্দর) মহাপ্রেমাবেশের কারণে
অত্যন্ত চঞ্চল,
আর অন্যজন (শ্রীরাধা) উপর থেকে
প্রতিকূল ভাব ধরে রাখেন। একজন (শ্রীরাধা) নানা রকম মানের ভঙ্গি করেন,
আর অন্যজন (শ্রীয়ামসুন্দর)
রসে পূর্ণ অনুনয়-বিনয় করেন। এইরূপ মহান মোহনের সেই যুগল (শ্রীরাধা-শ্যামসুন্দর)
নিকুঞ্জ সীমার ভিতর ক্রীড়া করছেন আমি কি তাঁদের দেখতে পাবো?
বিচিত্র রতি বিক্রম দধদানুক্রমাদাকুলং, মহা মদন – বেগতো নিবৃত মঞ্জু কুঞ্জোদরে।
অহো বিনিময়ান্নবং কিমপি নীল – পীতং পট, মিথো মিলিতমদ্ভুতং জয়তি পীত – নীলং মহঃ।।১৭০।।
ব্যাখ্যা:
একান্ত কুঞ্জ কে মনোহর ভীতরী ভাগ মে অনঙ (কাম)
কে মহাবেগ সে আকুল বনা হুয়া, অনুক্রম সে (এক কে
বাদ দূসরে কে ক্রম সে) বিচিত্র রতি পরাক্রম প্রদর্শিত
করতা হুয়া তথা কিসী অনির্বচনীয় ঢঙ্ঘ সে আপনে
নীলে, পীলে বস্ত্রোঁ কো অদল-বদল করনে বালা, পরস্পর
সংযুক্ত, অদ্ভুত পীলা-নীলা তেজ সর্বোত্তর্ষতা সে
বিরাজমান হ্য।
ব্যাখ্যা:
একান্ত কুঞ্জের মনোহর অভ্যন্তর ভাগে, অনঙ্গ (কাম) -এর মহা-তরঙ্গে আকুল হয়ে,
ক্রমানুসারে (একটির পর একটি)
বিচিত্র রতি-পরাক্রম প্রদর্শন করতে করতে এবং এক অনির্বচনীয় ভঙ্গিতে
নিজেদের নীল ও পীত বস্ত্র আদান-প্রদান করতে করতে,
যুগলভাবে সংযুক্ত, অদ্ভুত পীত-নীল তেজ
সর্বোচ্চ শ্রী সহকারে বিরাজ করছে।
করে কমলমদ্ভুতং ভ্রময়তোমিথোঁসাপিত , স্ফুরত্পুলক দোর্লতা যুগলযোঃ স্মরোন্মত্তযোঃ।
সহাস – রস – পেশলং মদ করীন্দ্র – ভঙ্গীশত গতিরসিকযোর্দ্বযোঃ স্মরত চার বৃন্দাবনে ।।১৭১।।
ব্যাখ্যা:
হাথ মে অদ্ভুত প্রকার সে কমল কো ঘুমাতে হুয়ে, রোমাঞ্ছোঁ
সে দমকতী হুয়ী ভুজলতা কো এক দূসরে কে কন্থে পর রখে
হুয়ে, অনঙ (মহাপ্রেম) সে উন্মত্ত বনে হুয়ে, সরস হ্যঁসী সে
সুন্দর দিখতে হুয়ে দোনোঁ রসিকোঁ (শ্রীরাধা-শ্যামসুন্দর)
কী সুন্দর শ্রীবৃন্দাবন মে মত্ত গজরাজ কী শতশত
ভঙ্গিঅঁ (অদাঔঁ) বালী গতী (চাল) কা স্মরণ করো।
ব্যাখ্যা:
হাতে এক আশ্চর্য ভঙ্গিতে পদ্ম ঘুরাতে ঘুরাতে,
রোমাঞ্চে দীপ্ত ভুজলতা একজনের কাঁধে অন্যজনের তুলে ধরে,
অনঙ্গ (মহাপ্রেম) -এর উন্মাদনায় উন্মত্ত হয়ে,
রসাল হাসিতে শোভিত হয়ে যে দুইজন রসিক (শ্রীরাধা-শ্যামসুন্দর),
তাদের সেই সুন্দর শ্রীবৃন্দাবনে মাতাল গজরাজের শতশত ভঙ্গিমা সহিত
গতি (চাল) — স্মরণ করো।
খেলন্মুগ্ধাক্ষি মীন স্ফুরদধরমণোভিদ্রুম – শ্ৰোণি – ভার , দ্বীপায়ামোত্তরঙ্গ স্মরকলভ – কাটাটোপরুহাযাঃ।
গম্ভীরাবর্তনাভের্বহলহরি মহা প্রেম – পীয়ূষসিন্ধোঃ , শ্রীরাধাযা পদাম্ভোরুহ পরিচরণে যোগ্যতামেব মৃগ্যে ।।১৭২।।
ব্যাখ্যা:
(যিসমেঁ) মুগ্ধ (ভোলে-ভোলে) নেত্রোঁ রূপী মছলিয়াঁ
খেল রহী হ্যঁ, (যিসমেঁ) অধর রূপী মূঙার্মাণি চমক রহে
হ্যঁ, (যিসমেঁ) ভারী নিতম্ব-মণ্ডল রূপী দ্বীপ হ্যঁ,
(যিসমেঁ) উমঙ্ঘ ভরে অনঙ (কামদেব) রূপী হাতী কে
বচ্চে কে গণ্ডস্থলোঁ কে সমান বক্ষোজ (যিসমেঁ) রূপী
আয়াম (বিস্তার) হ্যঁ, (যিসমেঁ) গহরী ভঁবর কে সমান
নাভি হ্য, (ঐসী) শ্রীহরি কে অসীম প্রেমামৃত কী সিন্ধু
স্বরূপা শ্রীরাধা কে চরণ কমলোঁ কী পরিচর্যা (সেবা)
করনে কী যোগ্যতা কো হী ম্যাঁ খোঁজনা (চাহতা) হুঁ।
ব্যাখ্যা:
যেখানে মোহমুগ্ধ নয়নের মত মাছেরা খেলছে,
যেখানে অধর দুইটি ঝলমলে মুঙ্গারমণির মতো,
যেখানে বৃহৎ নিতম্বমণ্ডল যেন দ্বীপসম,
যেখানে উচ্ছ্বাসময় অনঙ্গ (কামদেব) নামক হাতিশাবকের
গণ্ডস্থলের সদৃশ বক্ষযুগল আয়তনে প্রসারিত,
যেখানে গভীর ঘূর্ণির মত গভীর নাভি,
সেই শ্রীহরির অসীম প্রেম-অমৃতরূপ সাগরময়ী
শ্রীরাধার পদকমলের সেবার
যোগ্যতা আমি সন্ধান করতে চাই।
বিচ্ছেদাভাস মানাদহহ নিমিষতো গাত্রবিস্ত্রসনাদৌ , চঞ্চত্কল্পাগ্নি – কোটি জ্বলিতমিব ভবেদ্বাহভব্যন্তরং চ।
গাঢ় স্নেহানুবন্ধ – প্রথিতমিব তযোরদ্ভুত প্রেম – মূত্তর্যোঃ , শ্রীরাধা – মাধবাখ্যং পরমিহ মধুরং তদ্দ্বয়ং ধাম জানে ।।১৭৩।।
ব্যাখ্যা:
আশ্চর্য হ্যকি শরীর কে (এক দূসরে সে) পৃথক হোনে পর
নিমেষ মাত্র কে বিয়োগ কী সম্ভাৱনা সে জিঙ্কে বাইরে
ঔর ভীতর প্রকাশমান কোটি প্রলয় কাল কী অগ্নিঅঁ
মানোঁ প্রজ্বলিত হো উঠতী হ্যঁ (ঐসে) স্নেহ কে প্রগাঢ় সূত্র মে
বঁধে, প্রেম কী অদ্ভুত মূর্তি শ্রীরাধামাধব নামক উস
যুগল কো ইস লোক মে পরম মধুর প্রকাশ মানতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
আশ্চর্য এই যে, শরীর পরস্পর থেকে একটুখানি বিচ্ছিন্ন
হওয়ার সম্ভাবনাতেই যেন এক নিমিষে—
বাহিরে ও অন্তরে কোটি কোটি মহাপ্রলয়ের
আগুন জ্বলে ওঠে যাঁদের মধ্যে, এমনি গভীর স্নেহের বন্ধনে আবদ্ধ,
অদ্ভুত প্রেম-মূর্তি রাধা-মাধব নামক
সেই যুগলকে আমি এই জগতে পরম মধুর দীপ্তি বলে মানি।
কদা রত্যুন্মুক্তং কচভরমহং সংযময়িতা, কদা বা সংধাস্যে ত্রুটিত নব – মুক্তাবলিমপি।
কলা বা কস্তূর্য্যোস্তিলকমপি ভূযো রচয়িতা , নিকুঞ্জান্তবৃত্তে নব রতি – রণে যৌবন মণেঃ ।।১৭৪।।
ব্যাখ্যা:
নিকুঞ্জ মন্দির কে ভীতর নবীন প্রেম যুদ্ধ কে সমাপ্ত হো
জানে পর যুবতি শেখর শ্রীরাধা কে, প্রেম-ক্রীড়া কে প্রসঙ্ঘ
মে, খুলকর ছূটে হুয়ে কেশপাশ কো ম্যাঁ কব বাঁধুঁঙ্গী?
অথবা মোতীয়োঁ কী টূটি লড় কো কব জোড়ুঁঙ্গী অথবা
কস্তূরী সে দুবারা তিলক কী রচনা কব করুঁঙ্গী ?
ব্যাখ্যা:
নিকুঞ্জ মন্দিরের অন্তঃপুরে নবীন প্রেম-যুদ্ধ শেষ হলে,
যৌবনশ্রেষ্ঠা শ্রীরাধিকার প্রেম-ক্রীড়ার প্রসঙ্গে
খুলে পড়ে যাওয়া কেশপাশ আমি কবে গেঁথে দেব?
অথবা ছিঁড়ে যাওয়া মুক্তার মালা কবে জোড়া দেব?
অথবা কস্তুরি দিয়ে কবে পুনরায় তিলক আঁকব?
কি ব্রুমোন্যত্র কুণ্ঠোকৃতকজনপদে ধাম্ন্যপি শ্রীবিকুণ্ঠে , রাধা মাধুর্য্য বেত্তাপধুপতিরথ তন্মাধুরী বেত্তি রাধা।
বৃন্দারণ্য – স্থলীয়ং পরম – রস – সুধা – মাধুরীণাং ধুরীণাং , তদ্বন্দ্বং স্বাদনীয় সকলমপি দদৌ রাধিক – কিঙ্করীভ্যঃ ।।১৭৫।।
ব্যাখ্যা:
(যবকি) শ্রীবৈকুণ্ঠ-ধাম ভী কুণ্ঠিত (মন্দ) প্রদেশ
বন গয়া হ্য তব অন্যত্র কা তো কহনা হী ক্যা!
(ক্যোঁকি) শ্রীরাধা কে মাধুর্যে কো মধুপতি শ্রীকৃষ্ণ
জানতে হ্যঁ ঔর শ্রীকৃষ্ণ কে মাধুর্যে কো শ্রীরাধা জানতী
হ্যঁ। (কিন্তু) পরম রসামৃত মাধুর্যে মে সবসে অগ্ৰণী ইস
শ্রীবৃন্দাবন ভূমি নে উস আস্বাদন কে যোগ্য (রস
স্বরূপ) যুগল কো সম্পূর্ণ রূপ সে শ্রীরাধা কিন্করীগণ
(দাসিয়োঁ) কো প্রদান কর দিয়া হ্য।
ব্যাখ্যা:
যখন শ্রীবৈকুণ্ঠধামও নিস্তেজ (মন্দ) ভূমিতে পরিণত হয়েছে,
তখন অন্য স্থানগুলোর তো কথাই নেই!
কারণ, শ্রীরাধার মাধুর্যকে জানেন মধুপতি শ্রীকৃষ্ণ,
আর শ্রীকৃষ্ণের মাধুর্যকে জানেন কেবল শ্রীরাধা।
তবে, চূড়ান্ত রসামৃত মাধুর্যের ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে থাকা এই শ্রীবৃন্দাবন ভূমিই একমাত্র সেই রসোপযোগী
(রস-স্বরূপ) যুগলকে পরিপূর্ণভাবে শ্রীরাধার কিঙ্করীগণকে (দাসীদের) প্রদান করেছে।
লসদ্বদন – পঙ্কজা নব গম্ভীর নাভি- ভ্র্মা , নিতম্ব – পুলিনোল্লসন্মুখর কাঞ্চি – কাদম্বিনী।
বিশুদ্ধ রস – বাহিনী রসিক – সিন্ধু – সঙ্গোন্মদা , সদা সুর – তরঙ্গিণী জয়তি কাপি বৃন্দাবনে ।।১৭৬।।
ব্যাখ্যা:
মুখ রূপী কমল সে সুশোভিত, নবীন গহরী নাভি রূপী
ভঁবর সে যুক্ত, নিতম্ব রূপী তট পর সুশোভিত
শব্দাযমান কাঁচী (কিঙ্কিণী) রূপী মেঘমালা বালী,
বিশুদ্ধ রস (প্রেম রস) কো বহানে বালী ঔর রসিক
(শ্রীকৃষ্ণ) রূপী সাগর কে সঙ্ঘম কে লিয়ে উন্মত্ত বনী
হুঈ কোঈ এক অনির্বচনীয় সুরত রং বালী শ্রীরাধা
গঙ্ঘা কী ভাঁতি শ্রীবৃন্দাবন মে সদৈব ঊৎকর্ষ সহিত
বিরাজমান হ্যঁ।
ব্যাখ্যা:
মুখরূপী কমলে বিভূষিতা,
নবীন গভীর নাভিরূপী ঘূর্ণির দ্বারা যুক্ত,
নিতম্বরূপী তীরে ধ্বনিময় কিঙ্কিণীর মেঘমালায় শোভিতা, বিশুদ্ধ প্রেমরস প্রবাহিনী,
এবং রসিক (শ্রীকৃষ্ণ) নামক সাগরের সঙ্গে মিলনের জন্য উন্মত্ত—
এইরূপ অনির্বচনীয় সুরত-রঙে বিভোর
শ্রীরাধা গঙ্গার ন্যায় শ্রীবৃন্দাবনে সদা উৎকৃষ্টভাবে বিরাজমান।
অনঙ্গ নব রঙ্গিণী রস – তরঙ্গিণী সঙ্গতাং , দধত্সুখ – সুধাময়ে স্বতনু – নীরধৌ – রাধিকাম্।
অহো মধুপ – কাকলী মধুর – মাধবী মণ্ডপে , স্পরক্ষুভিতমেধতে সুরত সীধুমত্ত মহঃ ।।১৭৭।।
ব্যাখ্যা:
মহাপ্রেম (অনঙ) কে নবীন আহ্বাদ সে সম্পন্ন রস নদী
কী ভাঁতি সঙ্ঘম কো প্রাপ্ত শ্রীরাধিকা কো, সুখ রূপী
অমৃত সে পরিপূর্ণ আপনে শরীর রূপী সাগর মে, ধারন
করনে বালা (শ্যাম) তেজ ভোঁরোঁ কী গুজ্জার সে যুক্ত
মধুর মাধবীলতা কে মণ্ডপ মে, মদন (কাম) সে ক্ষুব্ধ
ঔর সুরত-আসভ সে উন্মত্ত হোকার, বৃদ্ধি কো প্রাপ্ত হো
রহা হ্য।
ব্যাখ্যা:
মহাপ্রেম (অনঙ্গ) এর নবীন আহ্লাদে পূর্ণ
রসরূপিণী নদীর মতো সংযোজনে লীন
শ্রীরাধিকাকে— সুখরূপী অমৃতে পূর্ণ
নিজ দেহরূপ সাগরে ধারণকারী (শ্যাম)
গুঞ্জনরত ভোমরাদের সাথে
মধুমাধবীলতার মণ্ডপে— কামদেব দ্বারা চঞ্চল
এবং সুরতাসব (রতিক্রিয়ার মদিরা) দ্বারা উন্মত্ত হয়ে উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছেন।
রোমালীমিহিরাত্মজা সুললিতে বন্ধূক – বন্ধু প্রভা , সর্বাঙ্গস্ফুটচম্পকচ্ছবিরহো নাভী – সরঃ শোভনা।
বক্ষোজস্তবকা লসদ্ভুজলতা শিজাপতঞ্চ কৃতিঃ , শ্রীরাধা হরতে মনোমধুপতেরন্যেব বৃন্দাটবী ।।১৭৮।।
ব্যাখ্যা:
অহো ! (জিঙ্কী) রোমাৱলি হী যমুনা হ্য, (অধরোষ্ঠ)
বন্ধূক পুষ্প কে সমান কান্তি বালে হ্যঁ, মনোহর সৰ্বাগ মে
প্রফুল্লিত চম্পা পুষ্প জৈসী ছবি হ্য, জী নাভি রূপী
সরোবর সে শোভাবান হ্যঁ, জিঙ্কে শ্রীঅঙ্ঘ যুগল হী
(পুষ্পোঁ কে ) গুচ্ছে হ্যঁ, শোভাবান ভুজা হী লতা হ্যঁ,
ভূষণোঁ কা রব পক্ষিযোঁ কী ঝঙ্খার হ্য (ঐসী) শ্রীরাধা,
দূসরী বৃন্দাটবী কী ভাঁতি, মধুপতি শ্রীকৃষ্ণ কে মন কো
হরণ কর রহী হ্যঁ।
ব্যাখ্যা:
অহো! যাঁর রোমাবলীই যেন যমুনা,
যাঁর অধরদ্বয় বন্ধুক-পুষ্পসম কান্তিযুক্ত,
সুন্দর অঙ্গসমূহে প্রস্ফুটিত চাঁপাফুলের মতো জ্যোতি, যাঁর জিহ্বা নাভিরূপ সরোবর হতে শোভিত,
যাঁর শ্রীঅঙ্গ-যুগল যেন পুষ্পগুচ্ছ,
ভূষিত ভুজা যেন লতার মতো দোলিত,
আলংকারিক ধ্বনি যেন পক্ষীদের কলতান,
এমন শ্রীরাধা, যেন আর এক বৃন্দাটবী,
মধুপতি শ্রীকৃষ্ণের মন মোহিত করছেন।
রাধামাধবযোবিচিত্র সুরতারম্ভে নিকুঞ্জোদর স্ত্রস্ত প্রস্তর সঙ্গতৈর্বপুরলং কুর্বেঙ্গ রাগঃ কদা।
তত্রৈব ত্রুটিতাঃ স্রজো নিপতিতাঃ সংধায়ভূযঃ কদা , কণ্ঠে ধারয়িতাস্মি মার্জন কৃতে প্রাতঃ প্রবিষ্টাস্ম্যহম্ ।।১৭৯।।
ব্যাখ্যা:
প্রাতঃকাল মার্জন (সফাই) কে লিয়ে প্রবিষ্ট হোকর
শ্রীরাধা মাধব কী সুরত লীলা কে প্রারম্ভ মে, নিকুঞ্জ কে
ভীতর মর্দিত শৈয়া পর লগে হুয়ে অঙ্ঘরাগ সে (ম্যাঁ) আপনে
শরীর কো কব সুশোভিত করুঁঙ্গী ঔর কব বহীঁ টূঠ কর
গিরী হুঈ মালাঁও কো ফির গুঁঁথ কর আপনে কণ্ঠ মে
পহনুঁঙ্গী?
ব্যাখ্যা:
প্রভাতে পরিস্কারের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করে,
শ্রীরাধা-মাধবের সুরত-লীলা যখন শুরু,
নিকুঞ্জের অন্তঃস্থলে বিছানায় লাগানো
যে অঙ্গরাগ তখন মর্দিত, সেই অঙ্গরাগ দিয়ে আমি কবে
আমার শরীরকে শোভিত করব? আর সেই ছিন্ন হয়ে পড়া মালাগুলি,
আমি কবে আবার গেঁথে নিজ গলায় ধারণ করব?
শ্লোকান্প্রেষ্ট যশোঙ্কিতান্ গৃহশুকানধ্যাপয়েত্কহিচিদ্ , গুঞ্জা – মঞ্জুলহার বর্হমুকুটং নির্মাতি কালে কিচিত্।
আলিখ্য প্রিয়মূর্ত্তিমাকুল কুচৌ সঙ্গট্টয়েদ্বা কদা প্যেবং ব্যাপ্তিবির্দিন নযতি মে রাধা প্রিয় স্বামিনী ।।১৮০।।
ব্যাখ্যা:
কভি ঘর কে তোতোঁ কো প্রিয়তম কে যশ কা গান করনে
বালে শ্লোক পড়াতী হ্যঁ, কিসী সময গুব্জা (ঘুঙ্ঘচী,
চিরমিটী) কে সুন্দর হার তথা মোরমুকুঠ বনাতী হ্যঁ ঔর
কভি প্রিয়তম কা চিত্র বনাকর আপনে আকুল বক্ষস্থল
(কুচোঁ) সে লগাতী হ্যঁ, ইস প্রকার কে কার্যোঁ সে মেরী প্রিয়
স্বামিনী শ্রীরাধা দিন কো ব্যতিত করতী হ্যঁ।
ব্যাখ্যা:
কখনো গৃহস্থ তোতাপাখিদের প্রিয়তমের যশগানকারী শ্লোক শেখান,
আবার কখনো গুবজার সুন্দর হার
এবং ময়ূরমুকুট গড়ে তোলেন তিনি। আর কখনো প্রিয়তমের ছবি এঁকে
তা নিজের ব্যাকুল বক্ষস্থলে জড়িয়ে ধরেন।
এইরূপ নানা কাজে আমার প্রিয় স্বামিনী শ্রীরাধা দিন কাটিয়ে দেন।
প্রেয়ঃ সঙ্গ – সুধা সদানুভবনী ভূযো ভবদ্ভাবিনী , লীলা – পঞ্চম রাগিণী রতি – কলা – ভঙ্গী – শতোদ্ভাবিনী।
কারুণ্য – দ্রব – ভাবিনী কটি– তটে কাঞ্চোকলারাবিণী , শ্রীরাধৈব গতির্মমাস্তু পদযোঃ প্রেমামৃত – শ্রাবিণী ।।১৮১।।
ব্যাখ্যা:
সদৈব প্রিয়তম কে সঙ্যোগ রূপী সুধা কা অনুভব করনে
বালী ক্রিয়মাণ (বর্তমান লীলা) কী পুনঃ ভাবনা
করনে বালী, (অর্থাৎ প্রেম লীলা সে নিত্য অতৃপ্ত রহনে
বালী), লীলাপূর্বক পঞ্চম রাগ গানে বালী, শত-শত
রতি কলাঔঁ কী ভঙ্গিঁয়োঁ কা প্রাকব্য করনে বালী,
করুণা সে দ্রৱিত হোনে বালী, কাটि প্রদেশ মে মেখলা
(করধনী) কে কলরব (মধুর ধ্বনি) বালী, তথা চরণোঁ
সে প্রেমামৃত কো প্রবাহিত করনে বালী শ্রীরাধা হী মেরী
গতি (আশ্রয়) হোঁ।
ব্যাখ্যা:
সদৈব প্রিয়তমের সঙ্গরূপী অমৃতের
আনুভব যাঁর অন্তরে জাগে, লীলাময় বর্তমান রসক্রীড়ার
পুনরায় অনুভব করেন তিনি। লীলার ভঙ্গিমায় গান করেন
পঞ্চম রাগে, সুরে, প্রেমের ছোঁয়ায়। শত শত রতিকলার বিভঙ্গ যাঁর চরণে,
করুণায় গলিত হৃদয় তাঁর। কটি অঞ্চলে করধনীর
মধুর ঝংকার বেজে ওঠে যাঁর চলনে, চরণ হতে প্রেমামৃত ধারা
উচ্ছ্বসিত হয় যাঁর পদে। সেই শ্রীরাধাই হোন আমার একমাত্র আশ্রয়।
কোটীন্দুচ্ছবি হাসিনী নব – সুধা – সম্ভার সম্ভাষিণী , বক্ষোজ দ্বিতয়েন হেম – কলশ শ্রীগর্ব – নির্বাসিনী।
চিত্র – গ্রাম – নিবাসিনো নব – নব প্রেমোৎসবোল্লাসিনী , বৃন্দারণ্য – বিলাসিনো কিমুরহো ভূয়াংদুল্লাসিনী ।।১৮২।।
ব্যাখ্যা:
কোড়োঁ চন্দ্রমাওঁ কী শোভা কা উপহাস (হঁসী) করনে
বালী, নবীন অমৃত কী রাশি কে সমান বার্তালাপ করনে
বালী (অর্থাৎ সম্ভাষণ কে দ্বাৰা অমৃত কী রাশি
বরসানে বালী), যুগল বক্ষোজোঁ সে স্বর্ণ কলশোঁ কী
ছবি কা তিরস্কার করনে বালী, বরসানে মে নিবাস
করনে বালী, নয়ে-নয়ে প্রেম কে উৎসব মে উৎসাহ প্রদর্শিত
করনে বালী, একান্ত বৃন্দাবন মে নিবাস করনে বালী,
(শ্রীরাধা) ক্যা কভি মেরে হৃদয় কো উল্লসিত করনে
বালী বনেঙ্গী?
ব্যাখ্যা:
কোটি কোটি চন্দ্রের শোভাকেও যাঁর রূপ হাস্য করে,
নবীন অমৃতরাশির মতো যাঁর বাক্য বারিধি ঝরে।
যুগল বক্ষে স্বর্ণকলশের ছবিকেও যিনি করেন তিরস্কার,
বরসানার যাঁর নিত্য বাস নব নব প্রেমোৎসবে যিনি উদ্যমসঞ্চার।
নিবিড় বৃন্দাবনে যাঁর একান্ত নিত্য অধিবাস—
সেই শ্রীরাধা কি কখনও আমার হৃদয় করবে হর্ষে উদ্ভাস?
কদা গোবিন্দারাধন ললিত তাম্বূল শকলং , মুদা স্বাদং স্বাদং পুলকিত তনুর্মে প্রিয় সখো।
দুকূলেনোন্মীলন্নব কমল কিন্জল্ক রুচিনা , গিপোতাঙ্গী সংগীতক নিজকলা: শিক্ষয়তি মাম্ ।।১৮৩।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীগোবিদ্ন্দ কে আরাধন (প্রসন্নতা) কে লিয়ে (উন্কে দ্বাৰা
অর্পিত) সুন্দর পান কে টুকড়ে কা মোদপূর্বক বারম্বার
আস্বাদন করতী হুঈ, হর্ষ সে রোমাঞ্চিত শরীর বালী,
প্রফুল্লিত নূতন কমল কে কেশর কী কান্তি বালে
(পীলে) দুকূল সে (ঝীনে বস্ত্র সে) আচ্ছাদিত অঙ্ঘোঁ
বালী মেরী প্রিয় সখী শ্রীরাধা মুঝে আপনী সংগীত-কল
কব সিখায়েঙ্গী?
ব্যাখ্যা:
শ্রীগোবিন্দের আরাধনার নিমিত্তে তাঁহার দান-করা পানের টুকরোর
সুস্বাদ আস্বাদনে বারবার তৃপ্ত হয়ে, আনন্দে কাঁপে যাঁহার দেহভর।
প্রস্ফুটিত নবীন কমলের
কেশরের মতো দীপ্ত যাঁহার পীত বসন–
সেই মৃদু ঝিলিমিলি আঁচলে
আবৃত অঙ্গ আমার প্রিয় সখী রাধা,
আমায় কবে শেখাবেন তাঁহার সংগীত কলার অনুক্ষণ?
লসদ্দশন – মৌক্তিক প্রবর – কান্তি – পূরাস্ফুরন , মনোজ্ঞ নব পল্লবাদর – মণিছটা – সুন্দরম্।
চরণ্মকর – কুন্ডলং চকিত চারু নেট্রাঞ্চলং , স্মরামি তব রাধিকে বদনমন্ডলং নির্মলম্ ।।১৮৪।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে ! শ্রেষ্ঠ মোতীয়োঁ কী ভাঁতি শোভিত দর্শনোঁ কী
কান্তি কে পুজ্জ সে প্রকাশ যুক্ত বনে হুয়ে, নঈ ঔর
মনোহর কোপলোঁ কে সমান অধর মণি কী ছটা সে সুন্দর
বনে হুয়ে, চঞ্চল মকরাকৃত কুন্ডলোঁ সে মন্ডিত তথা
চকিত ঔর সুন্দর নেত্র কঠাক্ষোঁ সে যুক্ত আপকে নির্মল
বদন-মন্ডল কা ম্যাঁ স্মরণ করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে! উৎকৃষ্ট মুক্তোর মতো দীপ্ত যাঁহার দর্শনের দীপ্তি-সমাহার
আলোকময় করেছে চারিপাশ, নবকিশলয়ের মতো নবীন
ও মনোহর অধর-মণির আভায় শোভিত যাঁহার ওষ্ঠদ্বয়।
চঞ্চল মকরাকার কুন্ডলে বিভূষিতা, বিস্ময়মিশ্রিত মনোমোহন চাহনিতে
ভরা যাঁহার নির্মল মুখমণ্ডল— আমি সেই মুখচ্ছবির স্মরণ করি।
চলত্কুটিল কুন্তলং তিলক – শোভি – ভালস্থলং , তিল – প্রসব নাসিকা – পুট – বিরাজি মুক্তা – ফলম্।
কলঙ্করহিতামৃতচ্ছবি সমুজ্জ্বলং রাধিকে , তবাতি রতি – পেশলং বদন – মন্ডলং ভাবয়ে ।।১৮৫।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে ! চঞ্চল ঘুঘরালী অলকোঁ বালে, তিলক সে
শোভিত ভাগ বালে, তিল কে ফুল কে সমান নাসাপুঠ মে
শোভিত মোতী বালে, নিষ্কলঙ্ক চন্দ্রমা সে ভী অত্যন্ত
উজ্জ্বল ঔর অতিশয় প্রেম সে সুন্দর দীখনে বালে
আপকে মুখমণ্ডল কী ম্যাঁ ভাবনা করতা হুঁ (ধ্যান
করতা হুঁ) ।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে! চঞ্চল ও ঘুঙরানো কেশপাশে শোভা পায়
আপনার অলক-শ্রেণি, তিলকচিহ্নে অলোকসামান্য
বিলাসিত মুখমণ্ডল। তিলফুল সদৃশ নাসারন্ধ্রে মুক্তার শোভা,
কলঙ্কহীন পূর্ণচন্দ্রকেও হার মানায়
আপনার মুখচ্ছবির দীপ্তি। চরম প্রেমের স্নিগ্ধতায় যিনি সর্বাধিক
আকর্ষণীয়রূপে প্রকাশমান— আমি আপনার সেই মুখমণ্ডলের ধ্যান করি।
পূর্ণ প্রেমামৃত – রস সমুল্লাস সৌভাগ্যসারং , কুঞ্জে – কুঞ্জে নব রতি – কলা – কৌতুকেনাত্তকেলি।
উত্ফুলেন্দীবর কনকযোঃ কান্তি – চৌরং কিশোরং , জ্যোতির্দ্বন্দ্বং কিমপি পরমানন্দ কন্দং চকাস্তি ।।১৮৬।।
ব্যাখ্যা:
পূর্ণ প্রেমামৃত রস কে উল্লাস রূপী সৌভাগ্য কী সার
রূপা, প্রত্যেক কুঞ্জ মে নবীন রতি-কলা কে চমৎকার সে
(পূর্ণ) ক্রীড়া করনে বালী, খিলে হুয়ে নীলে ঔর পীলে
কমলোঁ কী শোভা কো চুরানে বালী, পরম আনন্দ কী
মূল স্বরূপা কোঈ অনির্বচনীয় কিশোরাৱস্থা বালী
যুগল জ্যোতি সুশোভিত হো রহী হ্যৈ।
ব্যাখ্যা:
পূর্ণ প্রেমামৃত-রসের উল্লাসরূপ সৌভাগ্যের সারস্বরূপা,
প্রত্যেক কুঞ্জে নবীন রতিকলার চমৎকার্যে ক্রীড়া করিয়া যিনি থাকেন,
ফুটে থাকা নীল ও হলুদ কমলের শোভাকেও
চুরি করিয়া লয় এমন, পরম আনন্দের মূলস্বরূপা
কোনো অনির্বচনীয় কিশোর অবস্থা বিশিষ্ট
যুগল জ্যোতি শোভিত হইতেছেন।
যযোন্মীলত্কেলি – বিলসিত কাটাক্ষৈক কলয়া , কৃতো বন্দী বৃন্দাবিপিন কলভেন্দ্রো মদকলঃ।
জডীভূতঃ ক্রীডামৃগ – ইব যদাজ্ঞা – লব কৃতে , কৃতী নঃ সা রাধা শিথিলযতু সাধারণ – গতিম্ ।।১৮৭।।
ব্যাখ্যা:
বিৱিধ ক্রীড়া-ৱিলাসোঁ কা বিকাস করনে বালে আপনে
মত্ত কিশোর গজরাজ (শ্রীশ্যামসুন্দর) কো বন্দী বনা
লিয়া হ্যৈ অৰ্থাৎ আপনে বশ মে কর লিয়া হ্যৈ ঔর (জো)
স্বয়ং কুশল (হোনে পর ভী) জিনকী (শ্রীরাধা কী)
আজ্ঞা কে সংকেত মাত্র কে লিয়ে অৰ্থাৎ আজ্ঞা কা পালন
করনে কে লিয়ে ক্রীড়ামুগ (বচ্চোঁ কে খেলনে কা হিরণ কা
খিলৌনা) কী তরহ জড় বন জাতা হ্যৈ, বহ শ্রীরাধা
হমারী সাংসারিক গতি কো শিথিল করে।
ব্যাখ্যা:
বিবিধ ক্রীড়া-বিলাসের বিকাশ ঘটাইতে যিনি সক্ষম,
নিজের মত্ত কিশোর গজরাজ (শ্রীশ্যামসুন্দর)
যাঁহাকে বন্দী করিয়াছেন, অর্থাৎ নিজ বশে করিয়াছেন, এবং (যিনি) নিজেই কুশলী হইলেও,
শ্রীরাধার আজ্ঞা-সংকেতমাত্র পালনের নিমিত্তে
ক্রীড়ামৃগ (শিশুদের খেলনার হরিণ)-এর ন্যায়
জড় বস্তুর মত হইয়া যান —
সে শ্রীরাধা আমাদের সংসারগতিকে শিথিল করুন।
শ্রীগোপেন্দ্র – কুমার – মোহন – মহাবিদ্যে স্ফুরন্মাধুরী , সারস্ফার রসাম্বুরাশি সহজ প্রস্যন্দি – নেট্রাঞ্চলে।
কারুণ্যার্দ্র কাটাক্ষ – ভঙ্গি মধুরস্মেরাননাম্ভোরুহে , হা হা স্বামিনি রাধিকे ময়িকৃপা – দৃস্টি মনাং নিক্ষিপ ।।১৮৮।।
ব্যাখ্যা:
জো নন্দনন্দন কো মোহিত করনে বালী মহা বিদ্যা রূপা
হ্যাঁ, জিনকে নেত্রোঁ কী কোৰোঁ সে উমড়তী হুঈ মহা মাধুরী কে
সার কা উছলতা হুয়া রস-সমুদ্র সহজ রূপ সে
প্রবাহিত হোতা রহতা হ্যৈ, জিনকী কঠাক্ষ-ভঙ্ঘিমায়েঁ
করুণা সে ভীগী হুঈ হ্যাঁ, জিনকা মুখ কমল মধুর-মধুর
মুস্করাতা রহতা হ্যৈ (এসী) হে স্বামিনী রাধিকে ! মুঝ
পর থোড়়ী -সী কৃপা দৃষ্টি কিজিয়ে, 'হা-হা' অৰ্থাৎ ম্যাঁ
মহান্ কষ্ট মে হুঁ।
ব্যাখ্যা:
যিনি নন্দনন্দনকে মোহিত করিবার মহান বিদ্যা-রূপিণী,
যাঁহার নয়নের কোণ হইতে উদিত মহামাধুর্যের
সারস্বরূপ রসসমুদ্র স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রবাহিত হয়,
যাঁহার কাটাক্ষ-ভঙ্গিমা করুণায় স্নিগ্ধ,
যাঁহার মুখকমল সদা মধুর মধুর হাসিতে প্রস্ফুটিত —
হে স্বামিনী রাধিকে!
আমার প্রতি একটুখানি কৃপাদৃষ্টি করুন,
"হা-হা!" — আমি মহা কষ্টে আছি।
ওষ্ঠ প্রান্তোচ্ছলিত দয়িতোদ্গীর্ণ তাম্বূল রাগা রাগানুচ্চৈর্নিজ – রচিতয়া – চিত্র ভঙ্গযোন্নয়ন্তী।
তির্যগ্গ্রীবা রুচির রুচিরোদঞ্চদাকুঞ্চিতধুঃ , প্রেয়ঃ পাশ্বেঁ বিপুল পুলকৈর্মন্ডিতা ভাতি রাধা ।।১৮৯।।
ব্যাখ্যা:
প্রিয়তম কো উদ্বীৰ্ণ কিয়ে হুয়ে অৰ্থাৎ আপনে মুখ সে
উনকে মুখ মে দিয়ে হুয়ে পান কা রঙ জিনকে ওষ্ট প্ৰান্ত
মে উছল আয়া হ্যৈ, জো গ্ৰীবা কো তিৰ্ছী করে অত্যন্ত
সুন্দরতা সে কুছ উঠী হুঈ ভুকুটি কো বঙ্ক কিয়ে হুয়ে,
বিৱিধ রাগোঁ কো স্বরচিত বিচিত্র ভঙ্ঘিমায়োঁ সহিত উচ্ছ
স্বর সে গান কর রহী হ্যাঁ, বিপুল পুলকাৱলি সে মণ্ডিত
ৱে শ্রীরাধা প্রিয়তম কে পার্থ মে শোভা পা রহী হ্যাঁ।
ব্যাখ্যা:
প্রিয়তমের মুখে নিজ মুখ হইতে প্রদানকৃত পানের রস যাঁহার ওষ্ঠপ্রান্তে উঠিয়া এসেছে,
যিনি গ্রীবা বাঁকাইয়া, সামান্য তুলিয়া ধরা ভ্রূকে
সুন্দর ভঙ্গিতে বাক্ করিয়া,
বিভিন্ন রাগ নিজে সৃষ্টি করিয়া
চমৎকার ভঙ্গিমার সহিত উচ্চস্বরে গান গাইতেছেন,
বিশাল রোমাঞ্চরাশি দ্বারা যিনি শোভিত —
তাঁহি শ্রীরাধা প্রিয়তমের পাশে অপূর্ব শোভা পাইতেছেন।
কিং রে ধুর্ত্ত – প্রবর নিকটং যাসি নঃ প্রাণ – সখ্যা , নূনংবালা কুচ – তট – কর – স্পর্শ মাত্রাদ্বিমুহ্যেত।
ইত্থং রাধে পথে – পথে রসান্নাগরং তেনুলগ্নং , ক্ষিপ্ত্বা ভঙ্গয়া হৃদযমুভযোঃ কহি সম্মোয়িষ্যে ।।১৯০।।
ব্যাখ্যা:
রে ধূর্ত শিৰোমণি ! হমারী প্ৰাণ প্যারি সখী কে নিকট
ক্যোঁ জাতে হো? নিশ্চয় হী উন বালা কে কুচ তটী কে
কর-স্পর্শ মাত্র সে হী তুম মূর্ছিত হো জাওগে! ' হে
শ্রীরাধে! পগ-পগ পর, রস কে কাৰণ, তুম্হারা অনুগমন
করনে বালে নাগর শ্রীকৃষ্ণ কী ইস প্ৰকাৰ প্ৰতাড়না
করকে (ডোঁট করে) ম্যাঁ আপনি দোनों কে হৃদয় কো কব ভলী
ভাঁতি প্ৰমুদিত করুঁগী ?
ব্যাখ্যা:
রে ধূর্তশিরোমণি! আমাদের প্রাণপ্রিয়া সখীর নিকট
তুমি কেন গমন করিতেছ? নিশ্চয়ই সেই বালিকার
বক্ষসীমার করস্পর্শমাত্রে তুমি অচৈতন্য হইয়া পড়িবে!
হে শ্রীরাধে! রসের কারণে প্রতি পদে
তোমার অনুগমন করিয়া চলিতেছে যে নাগর শ্রীকৃষ্ণ, তাঁহাকে এইরূপ তিরস্কার করিয়া আমি
আপনাদের উভয়ের হৃদয় কবে পরিপূর্ণভাবে প্রফুল্ল করিব?
কদা বা রাধায়াঃ পদকমলমায়োজ্য হৃদয়ে দয়েশং নিঃশেষ নিয়তমিহ জহ্যমুপবিধিম্।
কদা বা গোবিন্দঃ সকল সুখদঃ প্রেম করণা দনন্যে ধন্যে যে স্বযমুপনয়েত স্মরকলাম্।।১৯১।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধা কে দয়ালু চরণ কমল কো হৃদয় মে ধারন
করকে ম্যাঁ নিয়মিত বেদ-বিদহিঁয়োঁ কো ইস সংসার মে কব
শ্রীগোবিন্দ শ্রীরাধা সে অনন্য প্রেম করনে কে কাৰণ ধন্য
বনী হুঈ মুঝকো স্বয়ং হী কাম ভাবনা কী উদ্বীপক
গায়ন, বাদন আদি কলাঁও কী শিক্ষা কব দেঙ্গে ?
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধার দয়াময় চরণকমলকে হৃদয়ে ধারণ করিয়া,
আমি এই সংসারে নিয়মিত বেদবিধির পালন করিতে করিতে,
শ্রীগোবিন্দ যিনি শ্রীরাধার প্রতি অনন্য প্রেমে তৃপ্ত হইয়াছেন,
তাঁহার দ্বারা ধন্য হইয়া আমি কবে সেই কামভাবনা
উদ্দীপক গায়ন, বাদন প্রভৃতি কলাগুলির
শিক্ষা নিজ কর্ণে গ্রহণ করিব?
কবা চা প্রোদ্ধাম স্মর – সমর – সংরম্ভ – রভস , স্বেদাম্ভঃ প্লুত লুলিত চিত্রাখিলতন্নূ।
গতো কুঞ্জ – দ্বারে সুখ মরুতি – সংবীজ্য পরয়া , মুবাহং শ্রীরাধা – রাসিক – তিলকো স্যাং সুকৃতিনী।।১৯২।।
ব্যাখ্যা:
আকর খড়ে হুয়ে, উৎকট সুরত-সঙ্ঘ্ৰাম কে বেগ সে উৎপন্ন
স্বেদ সলিল (পসীনা) সে ভীগে হুয়ে শিথিল অউর
বিচিত্র শরীর বালে, শ্রীরাধা অউর রসিক শিৰোমণি
শ্রীকৃষ্ণ কো পরম প্রসন্নতা সে পঙ্খা ঝলকর ম্যাঁ কব
পুণ্যশালিনী বনুঁগী।
ব্যাখ্যা:
এসে দাঁড়াইয়াছেন — অতিশয় সুরত-সংগ্রামের তীব্র
প্রবাহে উৎপন্ন ঘর্মসলিলে স্নাত, শিথিল ও বিচিত্র শরীরধারী, সেই শ্রীরাধা ও রসিকশিরোমণি
শ্রীকৃষ্ণকে পরম আনন্দে পাখা দুলাইয়া
আমি কবে পুণ্যশালিনী হইব?
মিথঃ প্রেমাবেশাদ্ধন পুলক দোর্বল্লি রচিত , প্রগাঢ়া শ্লেভেণোৎসব রসভারোন্মীলিত দৃশৌ।
নিকুঞ্জক্লুপ্তেভৈ নব কুসুম – তল্পেধি – শয়িতৌ , কদা পত্সম্বাহাদিভিরহমধোশৌ নু সুখয়ে।।১৯৩।।
ব্যাখ্যা:
(জো) পরস্পর প্রেমাৱেশ কে কাৰণ ঘনে রোমাঞ্চোঁ সে যুক্ত
ভুজলতাঁও দ্বারা কিয়ে গয়ে প্রগাঢ় আলিঙন কে আনন্দ
রস কী অধিকতা সে নেত্ৰ বন্ধ কিয়ে হুয়ে হ্যাঁঁ, (তথা জো)
নিকুঞ্জ মে বিছী হুঈ নবীন ফুলোঁ কী শৈয়া পর শয়ন কর
রহে হ্যাঁঁ (উন) আপনে অধীশ্ৰরোঁ (শ্রীশ্যামা-শ্যাম) কে
চরণ পৎলোঠ কর তথা অন্য সেবা করে কে ম্যাঁ উনহেঁ কব
সুখী করুঁগী ?
ব্যাখ্যা:
যাঁহারা পরস্পরের প্রেমাবেশে গাঢ় রোমাঞ্চে পূর্ণ
ভুজলতার দ্বারা কৃত ঘন আলিঙ্গনের আনন্দ-রসের অতিরিক্ততায় নেত্র মুদিত
করিয়াছেন, এবং নিকুঞ্জে বিছানো নবীন পুষ্পশয্যায় শয়ন করিতেছেন — সেই আমার
আধীশ্বরদ্বয় (শ্রীয়ামা-শ্যাম) এর পদপদ্মে লুটাইয়া ও অন্যান্য সেবা করিয়া আমি কবে তাঁহাদের সুখী করিব?
মদারুণ বিলোচনং কানক – দপঙ্কামোচনং , মহা প্রণয়মাধুরী রস – বিলাস নিত্যোৎসুকম্।
লসন্নববয়ঃ থিয়া ললিত ভঙ্গি – লীলাময়ং , হৃদা তদহমুদ্বহে কিমপি হেমগৌরং মহঃ।।১৯৪।।
ব্যাখ্যা:
মদ সে মত্ত বনে হুয়ে অরুণ (লালীয়ুক্ত) নেত্ৰ বা লে,
স্বর্ণ কে গর্ব কো খণ্ডিত করনে বা লে, মহা প্রেম মাধুরী
সে যুক্ত রস-বিলাস কে লিয়ে সদৈৱ উৎকণ্ঠিত রহনে
বালে, নবীন কিশোর অৱস্থা কী কান্তি সে সুশোভিত
অউর সুন্দর ভাৱ-ভঙিঅোঁ কে মাধুর্য সে যুক্ত কিসি
অনির্বচনীয় স্বর্ণ কে সমান গৌর তেজ উস (শ্রীরাধা)
কো ম্যাঁ হৃদয় মে ধারণ করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
মদে মাতাল হইয়া উঠা অরুণ (লালিমাযুক্ত) নেত্রবিশিষ্ট,
স্বর্ণের গরিমা যাঁহার কাছে নিঃশেষে লজ্জিত,
মহা প্রেম-মাধুর্যে পরিপূর্ণ, রস-বিলাসে সদা
উৎকণ্ঠিত, নবীন কিশোর অবস্থার কান্তিতে
ভূষিত, এবং চমৎকার ভাব-ভঙ্গিমার মাধুর্যে
যুক্ত, এমন এক অনির্বচনীয় স্বর্ণসম গৌর
তেজস্বিনী সেই (শ্রীরাধাকে) আমি হৃদয়ে
ধারণ করি।
মদাপূর্ণনেত্রং নব রতি – রসাবেশ – বিবশো ল্লসদ্গাত্রং প্রাণ – প্রণয় – পরিপাটযাং পরতম্।
গিথো গাঢাশ্লেষাদলয়মিব – জাতং মরিকত , দ্রুত স্বর্ণচ্ছার্য স্ফুরতু মিথুনং তন্মম হৃদি।।১৯৫।।
ব্যাখ্যা:
মদ সে জিসকে নেত্ৰ ঘূম রহে হ্যাঁঁ, নবীন প্রেম রস কে আবেগ
সে জিসকা শরীর বিবশ অউর প্রফুল্লিত হো রহা হ্যাঁঁ, জো
প্রাণোঁ সে ভী প্রিয় প্রেম-পরিপাটি মে সর্বশ্রেষ্ঠ হ্যাঁঁ, জো
পরস্পর গাঢ়ালিঙন সে মানো কঙ্কণ জৈসী আক্রিতি কো
প্রাপ্ত হ্যাঁঁ বহ ইন্দনীল মণি অউর তরল কনক কে সমান
কান্তি বিলে যুগল (শ্রীয়শ্যামা শ্যাম) মেরে হৃদয় মে
প্রকাশিত হোঁ।
ব্যাখ্যা:
যাঁহার নেত্র মদের প্রভাবে ঘূর্ণায়মান, নবীন প্রেমরসের
আবেশে যাঁহার দেহ বিহ্বল ও প্রফুল্ল হয়ে উঠেছে,
যিনি প্রাণ থেকেও প্রিয়, প্রেম-পরম্পরায় শ্রেষ্ঠ,
যাঁহারা একান্ত আলিঙ্গনে যেন কঙ্কণ সদৃশ আকৃতি ধারণ করেছেন — সেই ইন্দ্রনীল
মণি ও তরল সোনার ন্যায় কান্তিযুক্ত যুগল
(শ্রীশ্যামা-শ্যাম) আমার হৃদয়ে প্রকাশিত হোক।
পরস্পরং প্রেম – রসে – নিমগ্ন মশেষ সম্মোহন রূপ – কেলি।
বৃন্দাবনান্তর্নবকুঞ্জগেহে , তন্নীলপোতং মিথুন চকাস্তি।।১৯৬।।
ব্যাখ্যা:
পরস্পর প্রেম-রস মে নিমগ্র এবং সৗন্দর্য পূর্ণ ক্রীড়াঁও সে
সব কো মোহিত করনে বালা বহ গৗর-শ্যাম যুগল
শ্রীবৃন্দাবন কে মধ্য মে স্থিত নবীন কুঞ্জ গৃহ মে
প্রকাশিত হো রহা হ্য।
ব্যাখ্যা:
পরস্পরের প্রেমরসে নিমগ্ন এবং সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ
ক্রীড়ার দ্বারা সকলকে মোহিত করিতে সক্ষম
সেই গৌর-শ্যাম যুগল — শ্রীবৃন্দাবনের
মধ্যস্থিত নবীন কুঞ্জগৃহে বিকশিত হইতেছেন।
আশাস্য – দাস্যং – বৃষভানুজায়া স্তীরে সমধ্যাস্য চ ভানুজায়াঃ।
কদা নু বৃন্দাবন – কুঞ্জ – বীথী ধ্বহং নু রাধে হ্যাতিথির্ভবেয়ম্।।১৯৭।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! আপনি শ্রীবৃষভানু নন্দিনী কে দাস্য কী আশা
লগা কর ঔর যমুনা জী কে তট পর ভলী প্রকার স্থিত
হো কর ম্যাঁ শ্রীবৃন্দাবন কী কুঞ্জ গলিঁয়োঁ মে কব অভ্যাগত
বনূঁগা? (অতিথি কিন্বা অভ্যাগত বননে কা লাভ ইহ
হ্য় কি শ্রীবৃন্দাবন কী কুঞ্জ গলিঁয়োঁ মে বিচরণ করনে
বালে ভিক্ষুন্কো হী ব্রহ্মাদিকোঁ কো ভী দুর্লভ,
শ্রীরাধা-দাস্য ভিক্ষা মে মিলতা হ্য।)
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! আমি শ্রীবৃষভানুনন্দিনীর দাস্যলাভের
আশায় বুক বেঁধে, শ্রীযমুনার তীরে সুপ্রতিষ্ঠিত হইয়া,
শ্রীবৃন্দাবনের কুঞ্জগলিতে কবে আগত
অতিথি হবো? (কারণ, শ্রীবৃন্দাবনের কুঞ্জগলিতে
বিচরণকারী ভিক্ষুকদেরই—যাঁহারা শ্রীরাধা-দাস্য ভিক্ষা করেন—
তাঁহাদেরকেই ব্রহ্ম প্রভৃতিদের নিকটেও
অদ্বিতীয় এমন রাধা-দাস্য প্রাপ্ত হয়)।
কালিন্দী – তট – কুঞ্জে , পুঞ্জীভূতং রাসামৃতং কিমপি।
অদ্ভুত কেলি – নিধানং , নিরবধি রাধাভিধানমুল্লসতি।।১৯৮।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীয়মুনা-তট পর স্থিত কুঞ্জ মে, আশ্চর্য জনক কেলিঁয়োঁ
কা আশ্রয়, কোঈ অনির্বচনীয় শ্রীরাধা নামক ঘনীভূত
রসামৃত অসীম রূপ সে উমড় রহা হ্য।
ব্যাখ্যা:
শ্রীয়মুনা-তটে অবস্থিত কুঞ্জে, আশ্চর্যজনক কেলি-লীলার আশ্রয়রূপ,
“শ্রীরাধা” নামক এক অনির্বচনীয় ঘনীভূত রসময় অমৃত
অসীমরূপে উদ্দাম হইয়া প্রবাহিত হইতেছে।
প্রীতিরিব মূর্তি – মতী রস – সিন্ধোঃ সার সম্পদিব বিমলা।
বৈদগ্ধীনাং হৃদয়ং – কাচন বৃন্দাবনাধিকারণী জয়তি।।১৯৯।।
ব্যাখ্যা:
মূর্তিমান প্রীতি জৈসী, রস-সমুদ্র কী সার-সম্পত্তি কী
ভাবিঁতি নির্মল ঔর চতুরতা কী সর্বস্ব কোঈ
অনির্বচনীয়া শ্রীবৃন্দাবন-স্বামিনী কী জয় হো।
ব্যাখ্যা:
প্রেমের মূর্তির ন্যায়,
রস-সমুদ্রের সার-ধনরূপে নির্মল,
চতুরতার সমগ্র রূপে পূর্ণ— এই অনির্বচনীয় শ্রীবৃন্দাবন-স্বামিনীর জয় হোক!
রসঘন মোহন মূত্তি , বিচিত্রকেলি – মহোৎসবোল্লসিতম্।
রাধা – চরণ বিলোডিত , রুচির শিখন্ডং – হরি বন্দে।।২০০।।
ব্যাখ্যা:
(জো) ঘনীভূত রস কী মোহন মূর্তি হ্যাঁ, (জো) বিচিত্র
কেলিওঁ কে মহান্ আনন্দ সে উল্লসিত রহতে হ্যাঁ ঔর
জিঙ্কা সুন্দর মোর মুকুঠ শ্রীরাধা কে চরণোঁ পর লোটতা
রহতা হ্যাঁ, উন শ্রীহরि কী ম্যাঁ বন্দনা করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
(যিনি) ঘনিভূত রসরূপ মোহন মূর্তি,
(যিনি) বিচিত্র কেলির মহান আনন্দে সদা উল্লসিত, এবং যাঁর সুন্দর ময়ূরমুকুট
শ্রীরাধার চরণে লুটিয়ে থাকে—
আমি সেই শ্রীহরির বন্দনা করি।
কদা গায়ং গায়ং মধুর – মধুরোত্যা মধুভিদ শ্চরিত্রাণি স্ফারামৃত – রস বিচিত্রাণি বহুশঃ।
মৃজন্তী তৎকেলি – ভবনমভিরামং মলয়জচ্ছটাভিঃ সিঞ্চন্তী রসহৃদ নিমগ্নাস্মি ভবিতা।।২০১।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীমধুসূদন কে প্রচুর অমৃত রস সে ভরে বিচিত্র লীলা-
চরিত্রোঁ কো অত্যান্ত মধুর রীতি সে গা-গাকার, উন্কে
(শ্রীমধুসূদন কে) সুন্দর কেলি-গৃহ কা পরিষ্কার
(সাফাই) করতি হুঁঈ ঔর উসে অধিক মাত্রা মেঁ চন্দন সে
ছিঁড়কতি হুঁঈ (ম্যাঁ) রস-সরোবর মেঁ কব নিমগ্র হো
জাঁওঙী?
ব্যাখ্যা:
শ্রীমধুসূদনের প্রচুর অমৃত-রসে পূর্ণ বিচিত্র লীলা-চরিত্রসমূহ
অত্যন্ত মধুর ভঙ্গিতে গেয়ে গেয়ে,
তাঁর (শ্রীমধুসূদনের) সুন্দর কেলি-গৃহ পরিস্কার করতে করতে
এবং তা অধিক চন্দনে সিঞ্চিত করে
(আমি) রসসারোবরে কবে নিমগ্ন হব?
উদঞ্চরোমাঞ্চ – প্রচয় – খচিতাং ভেপথুমতোং , দধানাং শ্রীরাধামতিমধুর লীলাময় তনুম্।
কদা বা কস্তুর্যা কিমপি রচয়ন্ত্যেব কুচয়ো বিচিত্রাং পত্রালীমহমহহ উইক্ষে সুকৃতিনী ॥২০২।।
ব্যাখ্যা:
উঠতে হুয়ে রোমাঞ্চোঁ কে সমূহ সে ভরে হুয়ে, কম্পন সে যুক্ত,
অত্যন্ত মধুর লীলাময় শরীর কো ধারন করনে বালি
শ্রীরাধা কো, अपने শ্রীঅং যুগল পর কস্তূরী সে কুছ
বিচিত্র পত্রাবলি কি রচনা করতি হুয়ী, অহা!
ভাগ্যশালিনী ম্যাঁ কব দেখুঁগী ?
ব্যাখ্যা:
উঠে আসা রোমাঞ্চ-সমূহে পূর্ণ, কম্পনময়,
অত্যন্ত মধুর লীলাময় শরীরধারিণী
শ্রীরাধা নিজের শ্রীঅঙ্গ যুগলে কস্তুরী দ্বারা
কিছু বিচিত্র পত্রাবলির রচনা করছেন—
অহা! সেই দৃশ্য আমি সৌভাগ্যবতী কবে দেখব?
ক্ষণং সোত্কুর্বন্তী ক্ষণমথ মহাভেপথুমতী , ক্ষণং শ্যাম শ্যামেত্যমুমভিলপন্তী পুলকিতা।
মহা প্রেমা কাপি প্রমদ মদনোদ্ধাম – রাসদা , সদানন্দা মূর্তির্জয়তি বৃষভানোঃ কুলমণিঃ।।২০৩।।
ব্যাখ্যা:
কভি সীত্কার করতি হুয়ী, কভি জোর-জোর সে
কাঁপতি হুয়ী, কভি রোমাঞ্চিত হোকর, হে শ্যাম হ্যায়
শ্যাম কহতি হুয়ী, মহা প্রেম-স্বরূপা, প্রকৃষ্ট
মদ বালে উন্মত্ত প্রেম-রাস কো দেনে বালি
নিত্যআন্নদ স্বরূপিণী কিসি অনির্বচনীয়া
শ্রীবৃষভানু কে কুল কি মণি কি জয় হো।
ব্যাখ্যা:
কখনও শীৎকার করতে করতে, কখনও প্রবলভাবে কাঁপতে কাঁপতে,
কখনও রোমাঞ্চে ভরে উঠে, “হে শ্যাম! হে শ্যাম!” বলতে বলতে,
মহাপ্রেম-স্বরূপিণী, প্রকৃষ্ট মদে উন্মত্ত প্রেমরস প্রদানকারিণী,
নিত্য-আনন্দরূপিণী, কোনো এক অনির্বচনীয়া
শ্রীবৃষভানুকুল-তিলকাকে জয় হোক।
যস্যাঃ প্রেমঘনাকৃতেঃ পদ – নখ – জ্যোৎস্না ভরাস্নাপিত স্বান্তানাং সমুদেতি কাপি সরসা ভক্তিশ্চমৎকারিণী।
সা মে গোকুল ভূম – নন্দনমনশ্চোরী কিশোরী কদা , দাস্যং দাস্যতি সর্ব বেদ – শিরসাং ইয়ত্তব্রহস্যং পরম্।।২০৪।।
ব্যাখ্যা:
ঘনিভূত প্রেম কি মূর্তি জিন (শ্রীরাধা) কে
চরণোঁ কে নখোঁ কি চাঁদনী কে প্রবাহ মে স্রাপিত
(স্রান করায়ে হুয়ে) অন্তঃকরন মে কিসি
অনির্বচনীয়া সরস তথা চমৎকৃত কর দেনে
বালি ভক্তি কা প্রাদুর্ভাব হো যাতা হ্যায়, গোকুল
রাজকুমার কে চিত্ত কো হরণ করনে বালি ঔয়ে
কিশোরী (শ্রীরাধা) মুঝে (অপনা) বহ দাস্য
কব প্রদান করবেনগী জো সমস্ত উপনিষদোঁ কা
পরম রহস্য হ্যায়? (অর্থাৎ উনমেঁ ছুপি হুয়ী সার
বস্তু হ্যায়। )
ব্যাখ্যা:
ঘনীভূত প্রেমের মূর্তি, যাঁর (শ্রীরাধার)
চরণনখের চাঁদনির প্রবাহে স্নাত
অন্তঃকরণে এক অনির্বচনীয়,
সারবস্তু ও চমকপ্রদ ভক্তির
আবির্ভাব ঘটে,
গোকুলের রাজপুত্রের চিত্ত হরণকারিণী
সেই কিশোরী (শ্রীরাধা) আমায় কবে
প্রদান করবেন সেই দাস্য,
যা সমস্ত উপনিষদের পরম রহস্য?
কামং তূলিকয়া করেণ হরিণা ইয়ালক্তকৈরংকিতা , নানাকেলি – বিদগ্ধ গোপ – রমণী – বৃন্দে তথা বন্দিতা।
যা সংগুপ্ততয়া তথোপনিষদাং হৃদ্যেব বিদ্যোততে , সা রাধা – চরণ – দ্বয়ী মম গতির্লাস্যৈক- লীলাময়ী।।২০৫।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীহরি নে আপনে হাত সে ভলী ভাঁতি জিনহেঁ
মহাবর সে অঙ্কিত (চিত্ৰিত) কিয়া হ্যায়, (জো)
নানা কেলিওঁ মে চতুর গোপাঙ্গনাওঁ কে ইউথ মে
হৃদয় মে হী প্রকাশিত হ্যাঁ, ঔয়ে একমাত্র লাস্য
(নৃত্য) লীলা সে পূর্ণ শ্রীরাধা কে যুগল চরণ
মেরি গতি হ্যাঁ।
ব্যাখ্যা:
শ্রীহরি নিজ হাতে যাঁদের
মহাওর দিয়ে সুচারুরূপে অঙ্কিত করেছেন,
যাঁরা নানান ক্রীড়ায় পারদর্শী গোপাঙ্গনাদের
দলে হৃদয়ে নিজে থেকেই প্রকাশমান,
সেই একমাত্র লাস্য (নৃত্য) লীলায় পূর্ণ
শ্রীরাধার যুগল চরণই আমার গতি (আশ্রয়)।
সান্দ্র প্রেম – রাসৌধ – বর্ষিণি নভোন্মীলন্মহামাধুরী , সাম্রাজ্যৈক – ধুরীণ কেলি – বিভবত্কারুণ্য কল্লোলিনি।
শ্রীবৃন্দাবনচন্দ্র – চিত্ত – হরিণী – বন্ধু স্ফুরদ্বাগুরে , শ্রীরাধে নভ – কুঞ্জ – নাগরি তব ক্রীতাস্মি দাস্যোৎসবৈঃ।।২০৬।।
ব্যাখ্যা:
ঘনে প্রেম রস কে সমূহ কো বরসানে বালী, নূতন
উল্লসিত মহামাধুরি কে সাম্রাজ্য কী মুখ্যতম
কেলি (শৃঙ্গারকেলি) সে প্রকাশ হোনে বালী
করুণা কী সরিতা, শ্রীবৃন্দাবন চন্দ্র কে মন
রূপী হরিণ কো বশ মে করনে কে লিয়ে রস্সী
রূপা ঔর নৱীন কুঞ্জোঁ মে কী জানে বালী
ক্রীড়াওঁ মে নিপুণ হে শ্রীরাধে! ম্যাঁ আপকে দাস্য
কে আনন্দোল্লাসোঁ দ্বারা খরীদ লী গই হুঁ।
ব্যাখ্যা:
ঘন প্রেম রসের ধারা যে বর্ষণ করেন,
নূতন উল্লसित মহান মাধুর্যের
সাম্রাজ্যের প্রধান কেলি থেকে উদিত করুণার এক সরিতা,
শ্রীবৃন্দাবনচন্দ্রের হৃৎকমলরূপ হরিণকে
আবিষ্ট করতে যিনি রজ্জুরূপা,
নূতন কুঞ্জে ক্রীড়া করতে যিনি চূড়ান্ত দক্ষ,
হে শ্রীরাধে! আমি আপনার দাস্য-সুখের
আনন্দোল্লাসে কিনে নেওয়া এক ক্রীতদাসী।
স্বেদাপুরঃ কুসুম চয়নৈর্দূরতঃ কণ্টকাঙ্কো , বক্ষোজেস্যাস্তিলক বিলয়ো হন্ত ঘর্মাম্ভসৈব।
ওষ্ঠঃ সখ্যা হিম – পবনতঃ সব্রণো রাধিকে তে , ক্রুরাস্বেৱং স্বঘটিতমহো গোপয়ে প্রেষ্ঠসঙ্গম্।।২০৭।।
ব্যাখ্যা:
দূর দেশ সে ফুল বীননে কে কারণ হমারী সখী
কে পসীনা বহ রহা হ্যৈ, (বিহার সে নহीं) ইনে
কে নহीं) খেদ হ্যৈ কি, পসীনে সে হী ইনকা
তিলক ধুল গয়া হ্যৈ, (প্রিয়তম কে সঙ্গ সে
নহीं) ঔর ইনে কে অধরোষ্ঠ ঠন্ডী হਵਾ সে ব্ৰণ
শ্রীরাধিকে ! ইস প্রকার (কহকর) স্বয়ং
আপকে দ্বারা রচিত প্রিয়তম সঙ্গ কো ম্যাঁ ক্রূর
সখীয়োঁ সে ছুপা লুঁগী।
ব্যাখ্যা:
দূর দেশ থেকে ফুল তুলতে গিয়ে
আমাদের সখীর শরীরে ঘাম জমেছে (বিহারজনিত নয়, তা নয়)
দুঃখের বিষয়, ঘামের ছোঁয়াতেই তাঁর তিলক মুছে গেছে—
(প্রিয়তমের সঙ্গে মিলনের ফলে নয়)। এবং তাঁর ওষ্ঠাধর যেন
ঠান্ডা হাওয়ায় আচ্ছন্ন। হে শ্রীরাধিকে! আমি এমন করেই
আপনারই রচিত প্রিয়তম-সংগম নিষ্ঠুর সখীদের কাছ থেকে গোপন করে রাখব।
পাতং – পাতং পদ কমলযোঃ কৃষ্ণভৃঙ্গেণ তস্যা , স্মেরাস্যেন্দোর্মুকুলিত কুচ দ্বন্দ্ব হেমারবিন্দম্।
পীত্বা বক্ত্রাম্বুজমতিরসান্নূনমন্তঃ প্রবেষ্টু মত্যাবেশান্নখরশিখয়া পাটচমানং কিমীক্ষে।।২০৮।।
ব্যাখ্যা:
উন হঁসতে হুয়ে মুখ চন্দ্র বালী (শ্রীরাধা) কে
পদ কমলোঁ মে শ্রীকৃষ্ণ রূপী ভ্রমর কে দ্বারা
বার-বার গিরকর (ঔর) অত্যান্ত রস পূরবক
(উন্কে) মুখ কমল কা পান করকে,
অত্য়ধিক আৱেশ মে তত্কাল (উন্কে বক্ষস্থল
কে) অন্দর প্রবেশ পানে কে লিয়ে বন্দ স্বর্ণ
কমল জৈসে শ্রীয়ংগ যুগল কো নখাগ্র সে
বিদির্না হোতে হুয়ে ক্যা ম্যাঁ দেখুঁগী?
ব্যাখ্যা:
সেই হাস্যোজ্জ্বল মুখচন্দ্রবতী (শ্রীরাধার)
চরণকমলে শ্রীকৃষ্ণরূপী ভ্রমর বারবার পতিত হয়ে,
অত্যন্ত রসসিক্তভাবে তাঁর মুখকমলের পান করে,
গভীর আবেগে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বক্ষদেশে প্রবেশের আকাঙ্ক্ষায়
বদ্ধ স্বর্ণকমলের ন্যায় তাঁর দুই অঙ্গে
নখাগ্র দ্বারা বিদীর্ণ হচ্ছেন — এই দৃশ্য কি আমি কখনো দেখব?
অহো তেমী কুঞ্জাস্তদানুপম রাসস্থলমিদং , গিরিদ্রোণো সৈব স্ফুরতি রতি – রঙ্গে – প্রণয়িনী।
ন বোক্ষে শ্রীরাধাং হর – হর কুতোপীতি শতধা বিদীর্যেন্ত প্রাণেশ্বরি মম কদা হন্ত হৃদযম্।।২০৯।।
ব্যাখ্যা:
অহহ ! ওয়ে হী য়ে কুঞ্জ হেঁ, ওহী অনুপম রাস-
স্থলী হ্যৈ, (শ্রীশ্যামা শ্যাম কে) রতি রঙ সে
প্রেম করনে ওয়ালী ওহী গোবর্ধন পর্বত কী কন্দরা
হ্যৈ (কিন্তু) খেদ হ্যৈ, কহीं ভী শ্রীরাধা কে দর্শন
নহीं হো রহে হ্যাঁ! হে প্রাণে শ্বরী! ইস কষ্ট সে মেরা
হৃদয় সও টুকড়ে হোকার কব বিদীর্ণ হো
জায়েগা ?
ব্যাখ্যা:
আহা! এই যে সেই কুঞ্জগুলি,
এই সেই অনুপম রাসস্থলী,
(শ্রীশ্যামা-শ্যাম)-এর রতি-রঙে প্রেমময়
সেই গোবর্ধন পর্বতের গুহাও এই। (কিন্তু) হায়! কোথাও শ্রীরাধার
দর্শন মিলছে না! হে প্রাণেশ্বরী! এই বেদনায়
আমার হৃদয় কখন শত খণ্ডে বিদীর্ণ হয়ে যাবে?
ইহৈবাভূত্কুঞ্জে নভ – রতি – কলা মোহন তনোরহোত্রৈবনৃত্যদ্দয়িত সহিতা সা রসনিধিঃ।
ইতি স্মারং – স্মারং তব চরিত – পীয়ূষ – লহরী , কদা স্যাং শ্রীরাধে চকিত ইহ বৃন্দাবন – ভূবি।।২১০।।
ব্যাখ্যা:
মোহনাঙগী (শ্রীরাধা) কা নবীন রতি-কৌশল
ইসী কুঞ্জ মে (প্রকঠ) হুয়া। অহো! রস কী
সাগর রূপ উন (শ্রীরাধা) নে প্রীয়তম কে সাথ
ইহীঁ বৃত্য কিয়া।' ইস প্রকার আপকে
চরিতামৃত কী তরগোঁ কো বারবার স্মরণ কর্তা
হুয়া ম্যাঁ, হে শ্রীরাধে! ইস শ্রীবৃন্দাবন ভূমি মে
কব চকিত হোকার রহুঁগা ?
ব্যাখ্যা:
মোহনাঙ্গী (শ্রীরাধা)-র নবীন রতিকৌশল
এই কুঞ্জেই প্রকাশিত হয়েছে।
আহা! রসের সাগররূপিণী সেই (শ্রীরাধা)
প্রিয়তমের সঙ্গে এখানেই ক্রীড়া করেছিলেন।
এইভাবে আপনার চরিতামৃতের তরঙ্গসমূহকে বারবার স্মরণ করতে করতে
আমি, হে শ্রীরাধে! এই শ্রীবৃন্দাবন-ভূমিতে
কখন বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে থাকব?
শ্রীমদ্বিম্বাধরে তে স্ফুরতি নব সুধা – মাধুরী– সিন্ধু কোটির্নৈত্রান্তস্তে বিকোর্ণাদ্ভুত কুসুম ধনুশ্চণ্ড সত্কাণ্ডকোটিঃ ।
শ্রীবক্ষোজে ত্বাতি প্রমদ রাস – কলা– সার – সর্বস্ব কোটিঃ, শ্রীরাধে ত্বত্পদাব্জাস্রবতি নিরবধি প্রেম – পীয়ূষ কোটিঃ ।।২১১।।
ব্যাখ্যা:
আপকে শোভাশালী বিম্বাধর সে কোটি-কোটি
নবীন সুধা মাধুরী কে সমুদ্র প্রকাশিত হো রহে
হ্যাঁ, আপকে নেত্রোঁ কে কাটাক্ষ অদ্ভুত অনঙ্গ
(কামদেব) কে কোটি-কোটি উগ্র ঔর নুকীলে
বাণোঁ কো বিক্খেরেতে রহেতে হ্যাঁ, আপকে শীভাশালী
বক্ষোজ মে অত্যন্ত উত্তম প্রকার কে মদ্পূর্ণ রস-
কৌশল কে কোটি-কোটি সার-সর্বস্ব স্ফুরিত
হো রহে হ্যাঁ। হে শ্রীরাধে! আপকে চরণ কমল সে
পরমোন্নত প্রেমামৃত নিরন্তর নিৰ্সরিত হোতা রহতা হ্যাঁ।
ব্যাখ্যা:
আপনার শোভাময় বিম্বাধর থেকে
কোটি কোটি নতুন সুধামাধুর্যের সমুদ্র বিকীর্ণ হচ্ছে,
আপনার নেত্রের কাটাক্ষ ছড়িয়ে দেয়
অদ্ভুত অনঙ্গ (কামদেব)-এর কোটি কোটি উগ্র ও সূচালো বাণ।
আপনার শোভাময় বক্ষযুগলে
পরম উৎকৃষ্ট প্রেমমদভরা রতিকৌশলের কোটি কোটি
সারসারব স্ফুরিত হচ্ছে। হে শ্রীরাধে!
আপনার চরণকমল হতে পরমোন্নত প্রেমামৃত
নিরবচ্ছিন্নভাবে স্রোতের মতো নির্গত হতে থাকে।
সান্দ্রানন্দোন্মদরসঘন প্রেম – পীয়ূষ মূর্তৈঃ, শ্রীরাধাযা অথ মধুপতেঃ সুপ্তয়োহ কুঞ্জ – তল্পে ।
কুর্বাণাহ মৃদু – মৃদু পদাম্ভোজ – সম্বাহনানি, শয্যান্তে কি কিমপি পতিতা প্রাপ্ত তন্দ্রা ভবেয়ম্ ।।২১২।।
ব্যাখ্যা:
সঘন আনন্দ ঔর উন্মত্ত বনানে ওয়ালে রস
সে যুক্ত সঘন প্রেমামুত কি মূর্তি, কুজ শৈয়া পর
শয়ন করতে হুয়ে শ্রীরাধা ঔর মাধব কে চরণ
কমলোঁ কো অত্যন্ত কোমলতা পূর্বক সম্ভাহন
(দবাতি হুয়ী) করতি হুয়ী মৈ শৈয়া কে নিকট হি
ক্যা কুছ-কুছ লুঢ়ক জাউঙ্গী ঔর ঊঙ্ঘনে লাগুঁগী ?
ব্যাখ্যা:
ঘন আনন্দ এবং উন্মত্ত করে তোলার মতো
রসে পূর্ণ ঘন প্রেমামৃতের মূর্তি, কুঞ্জ-শয্যায় শয়নরত
শ্রীরাধা ও মাধবের চরণকমলে অত্যন্ত কোমলভাবে সংবাহন
(মৃদু চাপ) করতে করতে আমি কি শয্যার পাশেই
কিছুটা গড়িয়ে পড়ে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ব?
রাধা পদারবিন্দোচ্ছলিত নব রস প্রেম – পীয়ূষ পুঞ্জে, কালিন্দী – কূল – কুঞ্জে হৃদি কলিত মহোদার মাধুর্য– ভাবঃ ।
শ্রীবৃন্দারণ্য – বিত্থী ললিত রতিকলা – নাগরী তাং গরীয়ো, গম্ভীরকানুরাগান্মনসি পরিচরণ বিস্মৃতান্যঃ কদা স্যম্ ।।২১৩।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধা কে চরণ কমল সে উচ্ছলিত (নিকলে
হুয়ে) নূতন রস ঔর প্রেমামৃত কে সমূহ সে যুক্ত
যমুনা তটবর্তী কুজ মেঁ, আপনে হৃদয় মেঁ অত্যন্ত
উদার মাধুর্য রস কো ধারন করে মৈ
শ্রীবুন্দাবন কি গলিওঁ মেঁ সুন্দর রতি কলা মেঁ
নিপুণ ঔর গরিমাযুক্ত-গম্ভীর অনুরাগ সে ভরী
উন শ্রীরাধা কি মানসিক (ভাবনা) সেবা
করতা হুয়া অন্য বাহরী বিষয়োঁ কো ক্যাব ভুল যাওঁগা ?
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধার চরণকমল থেকে উৎসারিত
নূতন রস ও প্রেমামৃতের সমাহারে পূর্ণ
যমুনা তটবর্তী কুঞ্জে, নিজ হৃদয়ে অত্যন্ত উদার
মাধুর্য-রস ধারণ করে আমি বৃন্দাবনের গলিতে
সুন্দর রতিকলায় নিপুণ ও গম্ভীর-গরিমাময় অনুরাগভরে পরিপূর্ণ
শ্রীরাধার মানসিক (ভাবনাময়) সেবা করতে করতে কবে সমস্ত বাহ্যিক বিষয় ভুলে যাব?
অদৃষ্ট্বা রাধাঙ্কে নিমিষমপি তং নাগর – মণি, তয়া বা খেলন্তং ললিত ললিতানঙ্গ কলয়া ।
কদাহং দুঃখাব্ধৌ সপদি পতিতা মূর্চ্ছিতবতী, ন তামাস্বাস্যার্ত্তা সুচিরমনুশোচে নিজ দশাম্ ।।২১৪।।
ব্যাখ্যা:
উন নাগর শিরোমণি (শ্রীশ্যামসুন্দর) কো এক
ক্ষণ কে লিয়ে ভী শ্রীরাধা কে অঙ্ক মেঁ ন দেখকর
অথবা উনকে সাথ অত্যন্ত সুন্দর মহাপ্রেম
(কাম) কলাওঁ দ্বার ক্রীড়া করতে ন দেখকর
উন বিরহ সে পীড়িত (শ্রীরাধা) কো বিনা
ধীরজ বঁধায়ে তৎকাল হী দুঃখ সাগর মেঁ পড়কর
মূল্ছিত হুঈ ম্যাঁ কব আপনী (উস) দশা পর
চিরকাল তক পশ্চাত্তাপ করুঁগী ? (পশ্চাত্তাপ
ইস বাত কা হ্যৈ কি ম্যাঁ ক্যোঁ মূল্ছিত হো গঈ? যদি
সাৱধান রহতী তো শ্রীরাধা কো ধৈর্যঁ বঁধাতী) ।
ব্যাখ্যা:
সেই নাগরশিরোমণি (শ্রীর্যামসুন্দর) কে
এক মুহূর্তের জন্যও শ্রীরাধার অঙ্গে নাদেখে অথবা তাঁদের সঙ্গে
অত্যন্ত সুন্দর মহাপ্রেম (কাম) কলায় ক্রীড়া করতে নাদেখে,
বিরহে ক্লিষ্ট (শ্রীরাধাকে) ধৈর্য না বেঁধে
অবিলম্বে দুঃখসাগরে পতিত হয়ে
অচৈতন্য হয়েছি — আমি কবে
আমার (সেই) অবস্থার জন্য দীর্ঘকাল ধরে অনুতাপ করব?
(অনুতাপ এই কারণে যে, আমি কেন অচৈতন্য হয়ে পড়লাম?
যদি সচেতন থাকতাম, তবে শ্রীরাধাকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম!)
ভূয়োভূয়ঃ কমলনয়নে কি মুধাবার্যতে'সৌ, বাঙ্গাত্রেপি স্বদনুগমনং ন ত্যজত্যেব ধূর্তঃ ।
কিচ্ছিদ্রাধে কুচ – তটি – প্রান্তমস্য প্রদীয়ং শচক্ষুর্দ্বারা তমনুপতিতং চূর্ণতামেতু চেতঃ ।।২১৫।।
ব্যাখ্যা:
হে কমল নয়নী! ইন (শ্রীকৃষ্ণ) কো (আপ)
বার-বার ব্যর্থ হী ক্যোঁ রোক রহী হো? কেৱল
কহ দেনে ভর সে ধূর্ত (শ্রীকৃষ্ণ) আপ কা পীছা
করনা নেহीं ছোড়েঙ্গে। হে শ্রীরাধে! (আপ) কুচত ট
কোর কী তনিক (ঝাঁকী) (ইনকো) কারা
দীজিয়ে (জিসসে) ইনকা মৃদুল চিত্ত নেত্র-মার্গ
সে উন (কুচতট) পর গিরকর চূর-চূর হো যায়।
ব্যাখ্যা:
হে কমলনয়নী! আপনি কেন
এই (শ্রীকৃষ্ণ) কে বারবার অকারণে বাধা দিচ্ছেন?
শুধু বললেই এই ধূর্ত (শ্রীকৃষ্ণ) আপনার পিছু ধাওয়া থামাবে না।
হে শ্রীরাধে! আপনার কুচতটের একটু (ঝলক)
তাঁকে দেখিয়ে দিন, যাতে তাঁর কোমল হৃদয়
নয়নপথে সেখানে পতিত হয়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
কিং বা নস্তৈঃ সুশাস্ত্রৈঃ কিমথ তদিতৈর্বর্ত্মভিঃ সদ্গৃহীতৈ যন্ত্রাস্তি প্রেম – মূর্তৈর্নহি মহিম – সুধা নাপি ভাবস্তদীয়ঃ ।
কিং বাকৈকুণ্ঠ লদম্যাপ্যাহহ পরময়া যত্র মে নাস্তি রাধা, কিন্ত্বাশাপ্যস্তু বৃন্দাবন ভূবি মধুরা কোটি জন্মান্তরেপি ।।২১৬।।
ব্যাখ্যা:
হমেঁ উন সুন্দর শাস্ত্রোঁ সে ক্যা প্রয়োজন হ্য ঐবং
উনসে নিকলে তথা মহা পুরুষোঁ দ্বারা স্বীকার
কিয়ে গয়ে উন মার্গোঁ (সম্প্রদায়োঁ) সে ভী ক্যা
লেনা হ্য? জিনমেঁ প্রেম-মূর্তি শ্রীরাধা কে
মহিমামৃত কা অভাব হ্য ঐবং উনসে সম্বন্ধিত
ভক্তি ভাব ভী নহीं হ্য। আহহ! হমেঁ উস সর্বোত্তম
বৈকুন্ঠ কী শোভা সে ভী ক্যা মতলব হ্য, জহাঁ
হমারী শ্রীরাধা নহीं হ্য। কিন্তু কোটि কোটি
জন্মোঁ মেঁ ভী মেরী মধুর আশা তো শ্রীবৃন্দাবন
কী ভূমি মেঁ লগী রহে।
ব্যাখ্যা:
আমাদের ঐ সমস্ত সুন্দর শাস্ত্রের সঙ্গে কী প্রয়োজনে?
আর সেই সব পথের (সম্প্রদায়ের) সঙ্গেও কী কাজ, যা ঐ শাস্ত্র থেকে উদ্ভূত এবং মহাপুরুষদের
দ্বারা গৃহীত হলেও—
যেখানে প্রেমমূর্তি শ্রীরাধার মহিমামৃত অনুপস্থিত,
যেখানে তাঁর সঙ্গে যুক্ত ভক্তিভাবও নেই?
আহা! সেই শ্রেষ্ঠ শ্রীবৈকুণ্ঠের সৌন্দর্যের সঙ্গেও আমাদের কী দরকার,
যেখানে আমাদের শ্রীরাধা নেই? তবে, কোটি কোটি জন্মে জন্মেও
আমার মধুর আশা যেন শ্রীবৃন্দাবনের ভূমিতেই নিবদ্ধ থাকে।
শ্যাম – শ্যমেত্যানুপম রসাপূর্ণ বর্ণৈর্জপন্তী, স্থিত্বা – স্থিত্বা মধুর – মধুরোত্তারমুচ্চারয়ন্তী ।
মুক্তাস্থলান্নয়ন গলিতানশ্রু বিন্দূন্বহন্তী, হৃষ্যদ্রোমা প্রতি – পদি চমৎকুর্বতী পাতু রাধা ।।২১৭।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্যাম ! হে শ্যাম! ইস প্রকার কে অনুপম
রস সে পূর্ণ অক্ষরোঁ কা জপ করতী হুঈ, রুক-
রুককর অত্যন্ত মধুরতা পূরবক ঊঁচে স্বর সে
(উসী নাম কা) উচ্চারণ করতী হুঈ, নেত্রোঁ সে
ঝরতে হুয়ে মোতীয়োঁ কে সমান স্থূল আসুঁ কী
বুঁদোঁ কো বহন করতী হুঈ, রোমাঞ্জ ভূষিতা,
ক্ষণ-ক্ষণ মেঁ চমৎকার কী সৃষ্টि করনে বালী
(দর্শক কে চিত্ত মেঁ আশ্চর্য উৎপন্ন করনে বালী)
শ্রীরাধা মেরী রক্ষা করেঁ। (হদয় কে সহজ
নীরসতা রূপ কষ্ট কো দূর করেঁ) ।
ব্যাখ্যা:
হে শ্যাম! হে শ্যাম!— এইরূপ অপূর্ব রসভরা অক্ষরসমূহের জপে
নিয়ত তৎপর, থেমে থেমে অতি মাধুর্যে ভরা উচ্চস্বরে সেই নাম উচ্চারণ করতে করতে,
নয়ন থেকে ঝরতে থাকা মুক্তোর ন্যায় স্থূল অশ্রুবিন্দুগুলি বহন করতে করতে,
রোমাঞ্চে ভূষিতা, এবং প্রতিক্ষণে দর্শকের হৃদয়ে বিস্ময় সৃষ্টি
করতে করতে— সেই চমৎকারময়ী শ্রীরাধা
আমার রক্ষা করুন,
(আমার হৃদয়ের স্বাভাবিক নিরসতা রূপ কষ্ট দূর করুন)।
তাদ্দংমূর্তির্ব্রজপতি – সুতঃ পাদয়োর্মে পতিত্বা, দন্তাগ্রেণাথ ধৃত্বা তৃণকমমলান্কাকুবাদান্ব্রবীতি ।
নিত্যং চানুব্রজতি কুরুতে সঙ্গমায়োধ্যমং চে, ত্যুদ্বেগং মে প্রণয়িনী কিমাবেদয়েযং নু রাধে ।।২১৮।।
ব্যাখ্যা:
মোহন মূর্তি ব্রজেশনন্দন মেরে পৈরোঁ মেঁ গিরকর
তথা দाँতোঁ মেঁ তিঙ্কা দবাকর অনুনয়-বিনয়
পূর্ণ বাতেঁ করতে হেঁ, মেরা অনুগমন করতে হেঁ ঔর
সঙ্গম কে লিয়ে চেষ্ঠা করতে হেঁ। ইস প্রকার কে
অপনে মানসিক উদ্দেশ কো হে প্রীতিযুক্তা
শ্রীরাধে! ম্যাঁ (আপ সে) কহাঁ তক নিবেদন করুঁ ?
ব্যাখ্যা:
মোহন মূর্তি ব্রজেশনন্দন (শ্রীকৃষ্ণ) আমার পদতলে লুটিয়ে পড়ে,
দাঁতের মাঝে তৃণ ধরে অনুনয়-বিনয় ভরা
বাক্য বলেন, আমার অনুগমন করেন এবং
সংগমের জন্য সদা চেষ্টারত থাকেন।
এইরূপ আমার অন্তঃস্থ মানসিক উদ্দেগের
বর্ণনা, হে প্রেমপূর্ণা শ্রীরাধে, আমি আপনাকে কতটুকু নিবেদন করব?
চলল্লীলাগত্যা কচিদনুচল্লদ্ধংস মিথুনং, ক্বচিৎকেকিন্যগ্রেকৃত নাটন চন্দ্রক্যানুকৃতি ।
লতাশ্লিষ্টং শাখি প্রবরমনুকুর্বৎ ক্বচিদহো, বিদগ্ধ – দ্বন্দ্বং তদ্রমত ইহ বৃন্দাবন – ভুবি ।।২১৯।।
ব্যাখ্যা:
কহিঁ বিলাস পূর্ণ চাল সে চলতে হুয়ে, কহিঁ
হংস-হংসনী কি চাল কা অনুকরণ করতে হুয়ে,
কহিঁ মোরনী কে আগে নাচনে বালে মোর কা
অনুকরণ করতে হুয়ে ঔর কহিঁ লতা দ্বারা
আলিঙ্গিত তরুবর কা অনুকরণ করতে হুয়ে,
আহাআহা! বহ চতুর যুগল (শ্রীয়শ্যামা শ্যাম)
ইস বৃন্দাবন ভূমি মেঁ রমন কর রহে হেঁ।
ব্যাখ্যা:
কহিঁ বিলাস পূর্ণ চাল সে চলতে হুয়ে, কহিঁ
হংস-হংসনী কি চাল কা অনুকরণ করতে হুয়ে,
কহিঁ মোরনী কে আগে নাচনে বালে মোর কা
অনুকরণ করতে হুয়ে ঔর কহিঁ লতা দ্বারা
আলিঙ্গিত তরুবর কা অনুকরণ করতে হুয়ে,
আহাআহা! বহ চতুর যুগল (শ্রীয়শ্যামা শ্যাম)
ইস বৃন্দাবন ভূমি মেঁ রমন কর রহে হেঁ।
ব্যাকোশেন্দীবরাস্টা পদ – কমল রুচা হারি কান্ত্যা স্বয়ায়াত্ কালিন্দীয়ং শীতলং সেবমানম্ ।
সান্দ্রানন্দং নব – নব রসং প্রোল্লসৎকেলি – বৃন্দম্, জ্যোতির্দ্বন্দ্বং মধুর – মধুরং প্রেম – কন্দং চকাস্তি ।।২২০।।
ব্যাখ্যা:
অপনী কান্তু সে খিলে হুয়ে নীল কমল তথাঃ
সুবর্ণ কমল কি কান্তিয়োঁ কো হরনে বালা,
শ্রীযমুণা কি সুগন্ধিত শীতল বায়ু কা সেবন
করতা হুয়া, সঘন আনন্দ স্বরূপ নিত্য নূতন
রস সে পরিপূর্ণ, শোভাবান ক্রীড়া সমূহ সে
যুক্ত, মধুরাতি মধুর প্রেম কা মূল কারণ
(এসা) যুগল স্বরূপ প্রকাশ সে সুশোভিত হো রহে হেঁ।
ব্যাখ্যা:
নিজের কান্তির প্রভাবে বিকশিত নীল কমল ও স্বর্ণ কমলের ঔজ্জ্বল্যকেও ম্লান করে দেওয়া,
শ্রীয়মুনার সুগন্ধযুক্ত শীতল বায়ুর আস্বাদন করছে—
যিনি সঘন আনন্দময় নিত্য নতুন রসের পূর্ণতায় নিমগ্ন,
বিভিন্ন মনোহর ক্রীড়া-সম্পদে বিভূষিত,
মধুর থেকে মধুরতম প্রেমের মূল উৎস সেই যুগলরূপ,
আলোকিত হচ্ছেন দীপ্তিময় প্রকাশে।
কদা মধুর সারিকাঃ স্বরস পদ্যমধ্যাপয়ৎপ্রদায় কর তালিকাঃ ক্বচন নর্তয়ৎকেকিনম্ ।
ক্বচিত্ কনক ভল্লরীবৃত তামাল লীলাধনং, বিদগ্ধ মিথুনং তদদ্ভুতমুদেতি বৃন্দাবনে ।।২২১।।
ব্যাখ্যা:
কভী তো মধুর স্বর বালা সারিকাওঁ
(মাইনাওঁ) কো স্বকীয় রস (শৃঙ্গার রস) সে
পূর্ণ শ্লোক পড়াতা হুয়া, কভী আপনী হাত সে
তালি বাজাকর মোড় কো নাচাতা হুয়া, তথাঃ
কইঁ সোনার লতা সে আলিঙ্গিত তামাল কি
লীলা কো আপনা সর্বস্ব মানতা হুয়া বাহ
অদ্ভুত চতুর যুগল (শ্রীশ্যামাশ্যম)
শ্রীবৃন্দাবন মে প্রকাশ হো রহে হেঁ।
ব্যাখ্যা:
কখনও মধুর স্বরের অধিকারী সারিকা (ময়না পাখি) দের নিজস্ব রস (শৃঙ্গার রস) পূর্ণ শ্লোক আবৃত্তি করিয়ে,
কখনও নিজের হাত দিয়ে তালি বাজিয়ে ময়ূরকে নাচিয়ে তোলে,
এবং কখনও স্বর্ণলতা দ্বারা আলিঙ্গিত তামাল গাছের লীলাকেই নিজের সর্বস্ব বলে মেনে নেয়—
এইরূপ সেই অনির্বচনীয় চতুর যুগল (শ্রীশ্যামা-শ্যাম)
শ্রীবৃন্দাবনে অপূর্বভাবে প্রকাশিত হচ্ছেন।
পত্রালী ললিতাং কপোল-ফলকে নেত্রাম্বুজে কাজ্জলং, রঙ্গ বিম্বফলাধরে চ কুচযোঃ কাশ্মীরজা-লেপনম্ ।
শ্রীরাধে নব-সঙ্গমায়-তরলে পাদাঙ্গুলি-পঙ্ক্তিষু, ন্যাস্যন্তী প্রণযাদলক্তক-রসং পূর্ণা কদা স্যমহম্ ।।২২২।।
ব্যাখ্যা:
নব সংগম কে লিয়ে অধীর হে শ্রীরাধে! আপকে
কপোলোঁ পর পত্রাৱলী, আপকে কমল জৈসে নএত্রোঁ
মে কাজ্জল, বিম্ব ফল কে সমান আধর পর
রং, বক্ষস্থল পর কেশর কা লেপন অউর চরণোঁ
কি অঙুলীয়োঁ কি পংক্তীয়োঁ মে প্রেম পূর্বক মহাৱর
লগাতী হুঈ ম্যাঁ কভ পূর্ণ রূপ সে কৃতার্থ হৌঁগী।
ব্যাখ্যা:
নব-সংগমের জন্য অত্যন্ত অধীর হে শ্রীরাধে!
আপনার গালদেশে পাতার নকশা অঙ্কন করে,
কমল সম অনুপম নেত্রে কাজল পরিয়ে,
বিম্বফলের মতো অধরে রং লাগিয়ে, বক্ষে কেশরের প্রলেপ দিয়ে
এবং প্রেমভরে আপনার পদাঙ্গুলির সারিতে
মহাবর অঙ্কন করতে করতে আমি কবে সম্পূর্ণরূপে কৃতার্থ হবো?
শ্রীগোবর্দ্ধনং এক এব ভবতা পাণৌ প্রয়ত্নাদ্ধৃতো, রাধাবর্ষ্মণি হেম-শৈল যুগলে দৃস্টেপি তে স্যাদ্ভযম্ ।
তদ্গোপেন্দ্রকুমার মা কুরু বৃথা গর্ব পরীহাসতঃ, কার্হ্যেবং বৃষভানুনন্দিনি তব প্রেয়াংসমাভাষয়ে ।।২২৩।।
ব্যাখ্যা:
আপনে এক হী শ্রীগোবর্ত্ধন কো প্রযাত্রা পূর্বক
হাথ পর উঠায়া থা অউর শ্রীরাধা কে শরীর মে
সুবর্ণ কে দো পর্বতোঁ কো দেখতে হী আপ ডর
জায়ঁগে। অতঃ হে গোপেন্দ্রকুমার ! ব্যর্থ হী গর্ব
মত করো।' হে শ্রীবৃষভানু নন্দিনী! আপকে
প্রিয়তম সে ইস প্রকার পরিহাস পূর্বক ম্যাঁ কভ কহুঁগী ?
ব্যাখ্যা:
“তুমি তো কেবল একটিমাত্র শ্রীগোবর্ধন পর্বতই
বহু প্রয়াসে হাতে তুলে ধরেছিলে, আর এখন শ্রীরাধার শরীরে
যদি সেই সোনার দুই পর্বত (স্তন) দর্শন করো, তাহলে তো তুমি
ভয়ে থরথর করে কাঁপতে থাকবে। অতএব হে গোপেন্দ্রকুমার!
অহেতুক অহংকার কোরো না।” হে শ্রীবৃষভানুনন্দিনী!
আমি কবে তোমার প্রিয়তম শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে
এমন রসপূর্ণ পরিহাস করে কথা বলবো?
অনঙ্গ জয় মঙ্গল ধ্বনিত কিংকিণী ডিণ্ডিম, স্তনাদি বর তাডনৈর্নখর-দন্ত-ধাতৈর্যুতঃ ।
অহো চতুর নাগরী নব-কিশোরযোর্মঞ্জুলে, নিকুঞ্জ-নিলয়াজিরে রতিরণোৎসবো জৃম্ভতে ।।২২৪।।
ব্যাখ্যা:
কাম- বিজয় রূপ মঙ্গল কী সূচক কিঙ্কিণী
রূপ নগাড়ে কী ধ্বনি সে তথা বক্ষোজ আদিকে
অচ্ছী তরহ মর্দন এবং (উন পর) নাখূন অউর
দाँতোঁ দ্বারা কিয়ে গয়ে ঘাওঁ সে যুক্ত, চতুর
নাগরী শ্রীরাধা অউর নৱল কিশোর শ্রীকৃষ্ণ
কা সুরত-সঙ্গ্রাম রূপী উৎসব আহো, সুন্দর
নিকুঞ্জ-গৃহ কে প্রাঙ্গণ মে চল রহা হ্যৈ।
ব্যাখ্যা:
কাম-বিজয়রূপ মঙ্গলসূচক কিঙ্কিণী
রূপ নগাড়ার ধ্বনি দ্বারা, এবং বক্ষস্থল প্রভৃতি অঙ্গে
সুশোভিতভাবে মর্দন ও নখ ও দন্ত দ্বারা কৃত
আঘাতে চিহ্নিত হয়ে, চতুর নাগরী শ্রীরাধা ও
নবীন কিশোর শ্রীকৃষ্ণ– এই উভয়ের সুরত-সংগ্রাম রূপ
এক মহান উৎসব আহা! সুন্দর নিকুঞ্জ গৃহের প্রাঙ্গণে চলমান রয়েছে।
যূনোর্ভীক্ষ্য দরত্রপা নাট-কলামাদীশক্ষ্যয়ন্তী দৃশোভৃণ্যানা চকিতেন সঞ্চিত মহা রত্নস্তনং চাপ্যুরঃ ।
সা কাচিদ্বেবৃষভানুএশ্মনি সখী মালাসু বালাবলী, মৌলিঃ খেলতি বিশ্ব-মোহন মহা সারূপ্যমাচিন্বতী ।।২২৫।।
ব্যাখ্যা:
নঠ জৈসী কলाও কো দেখকর আপনে নেত্রোঁ কো
(কটাক্ষ-পাত আদি কী) দীক্ষা দেনি হুয়ী,
মহারাত্রোঁ কে কোষ রূপী শ্রীঅংগ যুগল ওয়ালে
বক্ষস্থল কো চকিত ভাব সে ঢঙ্কতি হুয়ী,
সংসার কো মোহিত করনে ওয়ালে শ্রীশ্যামসুন্দর
কে সাথ পূর্ণ সমানতা কা সংগ্রহ করতি হুয়ী
(রূপ অউর গুণ মে পূর্ণত্যা উনকে সমান হোনে
কি ইচ্ছা আপনে মন মে রাখতি হুয়ী) কিশোরিয়োঁ
কি শিরোমণি কোঈ অনির্বচনীয়া (শ্রীরাধা)
শ্রীবৃষভানু-য়ৃহ মে সখিয়োঁ কে মধ্য ক্রীড়া কর
রহী হ্যাঁয়।
ব্যাখ্যা:
নটজাতীয় কলাবলীর প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে
নিজ দৃষ্টিকে (অর্থাৎ চাহনিকে) দীক্ষা প্রদান করছেন তিনি,
মহারাত্রির কোষস্বরূপ নিজ শ্রীয়ঙ্গ যুগল দ্বারা
বক্ষস্থলকে বিস্মিতভাবে আবৃত করছেন,
এইভাবে সমগ্র জগৎকে মোহিতকারী
শ্রীশ্যামসুন্দর এর সাথে পূর্ণ সাম্য (রূপ ও গুণে)
সংগ্রহ করার অভিলাষ যাঁর মনে জাগে কিশোরীদের শিরোমণি,
এক অনির্বচনীয়া (শ্রীরাধা), শ্রীবৃষভানু গৃহে
সখীদের মাঝে ক্রীড়ায় লিপ্ত আছেন।
জ্যোতিঃ পুঞ্জদ্বয়মিদমহো মণ্ডলাকরমস্যা, বক্ষস্যুন্মাদয়তি হৃদয়ং কিম্ ফলত্যন্যদগ্রে |
ভ্রূ কোদণ্ডং নকৃতঘটনং সত্কটাক্ষৌঘ বাণৈঃ, প্রাণান্হন্যাত্কিমু পরমতো ভাবি ভূযো ন জানে ।।২২৬।।
ব্যাখ্যা:
কৈসে আশ্চর্য কি বাত হ্যায় কি, ইন (শ্রীরাধা) কে
বক্ষস্থল পর মণ্ডলাকার ইহ দো জ্যোতি সমূহ
(শ্রীঅংগ) (দেখনে মাত্র সে হী) হদয় কো উন্মত্ত
বনা রহে হ্যায় তো আগে চলকর ইহ ন জানে ক্যা
কটাক্ষ রূপী বাণ-সমূহ সে যুক্ত হুয়ে বিনা হী
ভূকুটি রূপী ধনুষ প্রাণীং কা হনন কর রহা হ্যায়-
ইসসে আগে ঔর ক্যা হোগা ইহ ম্যাঁ নহীঁ
জান্তা।
ব্যাখ্যা:
কী আশ্চর্য!
এই (শ্রীরাধার) বক্ষস্থলে মন্ডলাকার যে দুটি জ্যোতিরাশি (অর্থাৎ শ্রীঅঙ্গ),
দৃষ্টির স্পর্শমাত্রেই হৃদয়কে উন্মত্ত করে তুলছে,
তাহলে ভাবা যায়—
অগ্রবর্তী হয়ে (তাঁর) ভ্রুকুটির ধনুর্বৎ বাঁক
যখন কাটাক্ষরূপী অন্বেষণবাণে সজ্জিত হয়ে ওঠে,
তখন তা প্রাণীকুলকে নিঃশেষে আঘাত করে—
এর পরিণামে কী ঘটবে, তা আমি জানি না।
ভোঃ শ্রীদামনসুবল বৃষভস্তোক কৃষ্ণার্জুনাদ্যাঃ, কিম্বো দৃস্টং মম নু চকিতা দৃগ্গতা নৈব কুঞ্জ ।
কাচিদ্দেবী সকল ভুবনাপ্লাবিলাবণ্যপূরা দূরাদেবাখিলমহরত প্রেয়সো বস্তু সখ্যুঃ ॥২২৭।।
ব্যাখ্যা:
অর্জুনাদি সখাওঁ ! ক্যা তুমনে দেখা হ্যায়? মেরি
চকিত দৃষ্টি তো কুঞ্জ কে অন্দর যা হী নহীঁ
পাই। অপনে সৌন্দর্য কে প্রবাহ সে সম্পূর্ণ
লোকোঁ কো ড্বা দেনে বালি কিসি দেবী
(শ্রীরাধিকা) নে তুমহারে প্রিয় সখা (শ্রীকৃষ্ণ)
কে সর্ভস্ব কো দূর সে হী হরণ কর লিয়া হ্যায়।
ব্যাখ্যা:
হে অর্জুনাদি সখাগণ! তোমরা কি দেখেছো?
আমার বিস্মিত দৃষ্টি তো কুঞ্জের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতেই পারেনি। অত্যন্ত আশ্চর্য—
নিজের রূপ-মাধুর্যের প্রবাহে সমস্ত লোকত্রয়কে প্লাবিত করে দেওয়া
এক দেবী (অর্থাৎ শ্রীরাধিকা)
তোমাদের প্রিয় সখা শ্রীকৃষ্ণের সমস্ত স্বত্ব—
দূর থেকেই হরণ করে নিয়েছেন।
গত দূরে গাভো দিনমপি তুরীয়াংশমভজদ্বয়ং দাতুং ক্ষান্তাস্তব চ জননী বত্র্মনয়না ।
অকস্মাত্তূষ্ণীকে সাজল নয়নে দীন বদনে, লুঠত্যস্যাং ভূমৌ ত্বয়ি নহি ন ওয়য়ং প্রাণিণিষবঃ ।।২২৮।।
ব্যাখ্যা:
গায় বহুত দূর চলি গই হ্যাঁ, দিন ভি চৌথাই শেষ
রহ গয়া হ্যায়, হম তুম্হেঁ ছোড়কর যা নহীঁ সকতে
ঔর (উধর) তুম্হারী মাঁ কী আঁখোঁ তুম্হারী রাহ
পর লগী হ্যাঁ (সখাওঁ কা তাত্পর্য য়হ হ্যায় কী
যদি হম তুম্হেঁ ছোড়কর যা সকতে তো হম তুম্হারী
মাঁ কো তুম্হারী বর্তমান স্থিতি কী সূচনা দে
দেতে ঔর বে তুম্হেঁ আকর সংভাল লেতीं) । তুম
যব ইস প্রকার আচানক হী চুপ হো গয়ে হো
ঔর আঁখোঁ মে আঁসুঁ ভরকর উদাস মুখ সে ইস
ভূমি পর লোট রহে হো তো হম ভী জীনা নহীঁ
চাহতে।
(শ্রীশ্যামসুন্দর কী য়হ স্থিতি শ্রীরাধা কে
আচানক দর্শন সে ঐসী বনী হ্যায়) ।
ব্যাখ্যা:
গোবর্দ্ধনের গাভীগুলি অনেক দূরে চলে গেছে,
দিনও প্রায় এক-চতুর্থাংশ মাত্র অবশিষ্ট আছে।
আমরা তোমাকে ছেড়ে যেতে পারি না,
আর ওদিকে তোমার জননী যশোদা-মাতা চোখ মেলে তোমার প্রতীক্ষায় আছেন।
(সখাগণ বলতে চায়— যদি আমরা তোমাকে ছেড়ে যেতে পারতাম,
তাহলে তোমার বর্তমান অবস্থার কথা গিয়ে মা যশোদাকে জানাতাম
এবং তিনিই এসে তোমাকে আগলে নিতেন।)
কিন্তু এখন—
তুমি হঠাৎ নিস্তব্ধ হয়ে গেছ,
চোখে জল, মুখে বিষাদের ছায়া, আর ভূমিতে লুটিয়ে পড়ে আছো।
এ অবস্থায় আমরা কেউই আর বাঁচতে চাই না।
(শ্রীশ্যামসুন্দরের এই অবস্থা শ্রীরাধিকার আকস্মিক দর্শনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।)
নাসাগ্রে নব মৌক্তিকং সুরুচিরং স্বর্ণোজ্জ্বলং বিভ্রতী, নানাভঙ্গিরনগরঙ্গ বিলসল্লীলাতরঙ্গাবলিঃ ।
রাধে ত্বং প্রবিলোভয় ব্রজ-মণি রত্নচ্ছটা-মঞ্জরী, চিত্রোদঞ্চিত কঞ্চুকস্থি গত্যোর্ভক্ষোজয়োঃ শোভয়া ।।২২৯।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাঘে! নাসিকা কে অগ্রভাগ মেঁ স্বর্ণ
জঠিত উজ্জ্বল সুন্দর নূতন মুক্তা কো ধারন
করতী হুঈ, (এবং) অনেক প্রকার কে হাৱ-ভাৱোঁ
সে যুক্ত প্রেম-রংগ কী লীলা তরংগোঁ কে সমূহ সে
সুশোভিত হোতী হুঈ, আপ বিভিন্ন রত্নোঁ কী ছঠা
সমূহ সে চিত্র-বিদিত্র বনী হুঈ তথা ঊপর কী
ঔর উঠী হুঈ কঞ্চুকী সে ঢকে হুয়ে শ্রীঅংগোঁ কী
সোভা সে ব্রজমণি শ্রীশ্যামসুন্দর কো লুভাইয়ে।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে!
আপনি নাসিকার অগ্রভাগে সুবর্ণ অলংকারে গাঁথা, উজ্জ্বল ও সুন্দর এক নবীন মুক্তা ধারণ করেছেন।
বিভিন্ন রত্নের বিভার সংমিশ্রণে আপনি বিচিত্র ভাবে শোভিত হয়ে উঠেছেন।
আপনার দেহভঙ্গিমা, চাহনি ও মুখচালনার নানা রসপূর্ণ অভিব্যক্তি— প্রেমরসে রঙিন লীলাতরঙ্গসমূহ দ্বারা আপনাকে অলঙ্কৃত করেছে।
উপরদিকে কিছুটা উত্তোলিত কঞ্চুক (উর্ধ্ববাস) দ্বারা আবৃত আপনার দেহলাবণ্য এক অপূর্ব মোহময় রূপ ধারণ করেছে।
এই অপরূপ শোভা দ্বারা আপনি গোলোকে শোভাময় বৃজরত্ন শ্রীশ্যামসুন্দরকে আকর্ষিত করুন, তাঁকে মোহিত করুন।
অপ্রেক্ষে কৃত সিদ্ধান্তাপি সুচিরং ভীক্ষেত দৃক্কোণতো, মৌনে দাঢর্চমুপাশ্রিতাপি নিগদেত্তামেব যাহিত্যহো ।
অস্পর্শে সুধৃতাশয়াপি করয়োর্ধূত্বা বহির্যাপয়ে দ্রাধায়া ইতি মানদস্থিতিমহং প্রেক্ষে হাসন্তী কদা ।।২৩০।।
ব্যাখ্যা:
কৈসা আশ্চর্য হ্যৈ কি (প্রিয়তম কী ঔর) ন
দেখনে কা নিশ্চয় করে ভী বহুত দের তক
উনকী ঔর নেত্র কে কোণে সে দেখ লেতী হ্যাঁঈ,
হৃদতাপপূর্বক মৌন কা আশ্রয় লেনে পর ভী 'উসী
কে পাস যায়িয়ে' ইয়হ কহ দেতী হ্যাঁঈ, (প্রিয়তম
কো) স্পর্শ ন করনে কা সুদৃঢ় বিতার করে ভী
উনকে দোণো হাত পকড় কর (কুঞ্জ সে) বাহার
নিকাল দেতী হ্যাঁঈ। শ্রীরাধা কে মান কি ইস
প্রকার কি বিচিত্র (বিপরীত) স্থিতি কো হঁসতী
হুঁঈ ম্যাঁ কভ দেখুঁঈগী ?
ব্যাখ্যা:
কী আশ্চর্য!
(শ্রীশ্যামসুন্দর প্রীতমের দিকে) না দেখার দৃঢ় সংকল্প করেও, দীর্ঘ সময় ধরে তাঁকে চোখের কোণ দিয়ে চেয়ে দেখেন।
নিরব থাকার কঠোর প্রতিজ্ঞা নিয়েও, হঠাৎ বলে ওঠেন— ‘তাঁর কাছেই চলে যান।’
স্পর্শ না করার মনোসংকল্প করেও, তাঁর দুই হাত ধরে নিজে হাতে কুঞ্জ থেকে বাইরে নিয়ে আসেন।
এইভাবে শ্রীরাধার মান (অভিমান) যখন একেবারে বিপরীত আচরণে পরিণত হয়— এই রকম অদ্ভুত রসভঙ্গিমার দৃশ্য, হাসিমুখে আমি কবে দেখব?
রাসাগাধে রাধা হৃদি – সরসি হংসঃ করতলে, লসদ্বংশস্রোত্যস্যমৃত – গুণ – সঙ্গঃ , প্রতি – পদম্ ।
চলত্পিচ্ছোত্তংসঃ সুরচিতবতংসঃ প্রমদয়া, স্ফুরদ্গুঞ্জা – গুচ্ছঃ স হি রাসিক – মৌলির্মিলতু মাম্ ।।২৩১।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধা কে আগাধ রস সে পরিপূর্ণ হৃদয় রূপী
সরোবর মে জী হংস কে সমান হ্যাঁঈ, হাত মে
শোভাব্যমান বংশী কে ছিদ্ঠোং মে সে (প্রকঠ হোনে
ওয়ালে) আনন্দময় গুণ (সংগীত-ভেদ) প্রতিক্ষণ
জিনকে সাথ মে রহতে হ্যাঁঈ, চঞ্চল মোর মুকুট
ধারণ করনে বালে, প্রমদা (শ্রীরাধা) দ্বারা
সুরুচিপূর্বক পেহিনায়ে গয়ে কানোঁ কে আভূষণোঁ
সে সুশোভিত ঔর দেদীপ্যমান গুর্জাঁও কে
গুচ্ছ সে অলংকৃত বহ রসিক শেখর
(শ্রীশ্যামসুন্দর) মুঝে মিলেঁ ।
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধার অগাধ রসপূর্ণ হৃদয়-সরোবরে যেন (শ্রীশ্যাম) এক রাজহংস স্বরূপ।
তাঁর হাতে শোভা পাওয়া বাঁশির ছিদ্রগুলি থেকে নির্গত হয় আনন্দময় গুণের সুর, যা প্রতি মুহূর্তে তাঁর সঙ্গী।
তিনি পরিধান করেন চঞ্চল ময়ূরপুচ্ছ-মুকুট,
শ্রীপ্রমদা (শ্রীরাধা) কর্তৃক রুচিপূর্ণভাবে পরানো কানের অলঙ্কারে তিনি শোভিত,
এবং দীপ্তিমান গুজর ফুলের গুচ্ছে সুসজ্জিত।
সেই রসিকশেখর শ্রীশ্যামসুন্দর যেন আমাকে প্রাপ্ত হন।
অকস্মাত্কস্যাশ্চিন্নব – বসনমাকর্ষতি পরাং , মুরল্যা ধমিলে স্পৃশতি কুরুতেন্যা কর ধৃতিম্ ।
পতন্নিত্যং রাধা – পদ – কমল – মূলে প্রজ – পুরে , তদিত্থং বীথোষু ভ্রমতি স মহা লম্পট – মণিঃ ।।২৩২।।
ব্যাখ্যা:
অচানক কিসী এক (গোপী) কে নবীন বস্র
কো খীঁচতে হ্যাঁঈঁ, দ্বিতীয়ী কিসী কে কেশপাশ কো
বংশী সে স্পর্শ করতে হ্যাঁঈঁ, কিসী দ্বিতীয়ী কা হাত
পকড়তে হ্যাঁঈঁ কিন্তু নিত্য হী শ্রীরাধা কে পদ-
কমল কে মূল মে লোটতে রহতে হ্যাঁঈঁ । ইস প্রকার
ব্রজপুর কী গলীয়োঁ মে বহ মহা লম্পট
শিরোমণি (শ্রীশ্যামসুন্দর) ঘূমতে রহতে হ্যাঁঈঁ ।
ব্যাখ্যা:
হঠাৎ কোনো এক (গোপীর) নবীন বসন টেনে ধরেন,
আর এক জনের কেশপাশে বাঁশির স্পর্শ করেন,
অন্য আরেক জনের হাত আকর্ষণ করেন,
তবুও সর্বদা শ্রীরাধার পদকমলের মূলে গড়াগড়ি খান।
এইভাবেই সেই মহালম্পটশিরোমণি শ্রীশ্যামসুন্দর বৃজপুরীর গলিতে গলিতে ঘুরে বেড়ান।
একস্যা রতিচৌর এব চকিতং চান্যাস্তনান্তে করং , কৃত্বা কর্ষতি ভেণুনান্য সদৃশো ধম্মিল্ল – মাল্লী – স্রজম্ ।
ধত্তেন্যা ভুজ – বল্লিমুত্পুলকিতাং সংকেতযত্যান্যয়া , রাধাযাঃ পদয়োর্লুন্তত্যালমমুম্ , জানে মহা লম্পটম্ ।।২৩৩।।
ব্যাখ্যা:
কিসী এক (গোপী) কে সাথ লুক ছিপকর প্রেম
করতে হ্যাঁঈঁ, দ্বিতীয়ী কে বক্ষ স্থল পর হাত রখতে হ্যাঁঈঁ,
কিসী সুনয়নী কে কেশপাশ মে বঁধী মল্লী কী
মালা কো বেণু সে খীঁচতে হ্যাঁঈঁ, অন্য কিসী কী
রোমাঞ্চিত ভুজলতা কো পকড় লেতে হ্যাঁঈঁ তথা
কিসী (গোপী) কো সংকেত দ্বারা মিলে নে কী
জগহ বতাতে হ্যাঁঈঁ (কিন্তু) শ্রীরাধা কে চরণোঁ মে
কেবল লোটতে হী রহতে হ্যাঁঈঁ । ইস মহা লম্পঠ কো
ম্যাঁঁ অচ্ছী তরহ পহিচানতী হুঁ ।
ব্যাখ্যা:
কোনো এক (গোপীর) সাথে লুকিয়ে প্রেমালাপ করেন,
আর এক জনের বক্ষস্থলে হস্ত স্থাপন করেন,
কোনো সুনয়নীর কেশপাশে বাঁধা মল্লিকা মালা বাঁশি দিয়ে টেনে ধরেন,
আরো কোনো এক জনের রোমাঞ্চিত ভুজলতা ধরে ফেলেন,
অন্য কারো সঙ্গে মিলনের স্থান ইঙ্গিতে নির্দেশ করেন,
(কিন্তু) শ্রীরাধার পদপদ্মেই শুধু গড়িয়ে থাকেন।
এই মহালম্পটকে আমি খুব ভালো করেই চিনি।
প্রিযাংশে নিক্ষিপ্তোত্পুলক ভুজ – দণ্ডঃ ক্বচিদপি , ভ্রমন্বৃন্দারণ্যে মদ – কল করীন্দ্রাদ্ভুত – গতিঃ ।
নিজা ব্যঞ্জন্নত্যদ্ভুত সুরত – শিক্ষাং ক্বচিদহো , রহঃ কুঞ্জে গুজা ধ্বনিত মধ্যুপে কোডতি হরিঃ ।।২৩৪।।
ব্যাখ্যা:
কভি তো শ্রীপ্রিয়া জূ কে কন্ঠে পর রোমাঞ্চিত
ভুজদণ্ড কো ডালে মদোন্মত্ত গজরাজ কী ভাঁতি
অদ্ভুত গতি সে বৃন্দাবন মে ঘূমতে ফিরতে হ্যাঁঈঁ ঔর
কভি, অহো! ভ্রমরোঁ কে গুজ্জার সে যুক্ত একান্ত
কুঞ্জ মে, অপনী বিলক্ষণ প্রেম -পরিপাঠী কো
প্রকট করতে হ্যাঁঈঁ শ্রীহরি ক্রীড়া করতে হ্যাঁঈঁ ।
ব্যাখ্যা:
কখনো তো শ্রীপ্রিয়াজীর কণ্ঠে রোমাঞ্চিত ভুজদণ্ড রেখে,
মদোন্মত্ত গজরাজের ন্যায় এক অভূতপূর্ব গমনভঙ্গে বৃন্দাবনে ঘুরে বেড়ান।
আর কখনো, আহা! গুঞ্জরমান ভ্রমরযুক্ত একান্ত কুঞ্জে,
নিজের আশ্চর্য প্রেম-পদ্ধতিকে প্রকাশ করে শ্রীহরি ক্রীড়ায় লিপ্ত হন।
দূরে সৃষ্টচাদি বার্তা ন কলয়তি মনাঞ্ নারদাদীন্স্বভক্তা ঞ্ছীদামাদ্যৈঃ সুহৃদ্ভির্ন মিলতি হরতি স্নেহ বৃদ্ধিং স্বপিত্রোঃ ।
কিন্তু প্রেমৈক সীমাং পরম রাস – সুধা – সিন্ধু – সারৈরগাধাং , শ্রীরাধামেব জানন্মধুপতিরনিশং কুঞ্জ – বীথীমুপাস্তে ।।২৩৫।।
ব্যাখ্যা:
সৃষ্টি-রচনা আদি কী বাত তো দূর রহী, অপনে
নারদ আদি ভক্তোঁ কো ভী নহীঁ পহিচানেতে,
শ্রীদামা আদি মিত্রোঁ সে নহীঁ মিলতে তথা অপনে
মাতা-পিতা কে স্নেহ কো ভী বঢ়াবা নহীঁ দেতে,
কিন্তু প্রেম কী পরমাবধি স্বরূপা তথা মধুর
রস রূপী অমৃত-সিন্ধু কে সার কী আগাধ
আশ্রয় একমাত্র শ্রীরাধা কো হী জানতে হুয়ে
মধুপতি (শ্রীশ্যামসুন্দর) নিরন্তর কুঞ্জ
গলিওঁ কী উপাসনা করতে রহতে হ্যাঁঈঁ ।
ব্যাখ্যা:
সৃষ্টি-রচনা প্রভৃতি কথা তো দূরের কথা,
নিজের নারদ প্রভৃতি ভক্তদেরও তিনি চিনে ওঠেন না,
শ্রীদাম প্রভৃতি বন্ধুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন না,
এমনকি নিজের পিতা-মাতার স্নেহকেও তিনি পুষ্ট করেন না।
কিন্তু প্রেমের পরম সীমা রূপিণী এবং মধুর রসরূপী অমৃত-সিন্ধুর সারতত্ত্বরূপ,
যে একমাত্র অনন্ত আশ্রয়—শ্রীরাধাকেই তিনি জানেন।
সেইজন্য মধুপতি (শ্রীশ্যামসুন্দর) অনবরত কুঞ্জগলির উপাসনায় নিয়োজিত থাকেন।
সুস্বাদু সুরস তুন্দিলমিন্দীবর বৃন্দ সুন্দরং কিমপি ।
অধিবৃন্দাটবি নন্দতি রাধা – বক্ষোজ ভূষণ – জ্যোতিঃ ।।২৩৬।।
ব্যাখ্যা:
অত্যন্ত আস্বাদনীয় মধুর রস সে পরিপুষ্ট,
নীল কমল কে সমূহ কে সমান সুন্দর,
শ্রীরাধা কে বক্ষস্থল কী আভূষণ রূপা কোঈ
অনির্বচনীয়া জ্যোতি (শ্রীশ্যামসুন্দর)
শ্রীবৃন্দাবন মে আনন্দিত হো রহী হ্যৈ ।
ব্যাখ্যা:
অত্যন্ত আস্বাদনীয় মধুর রসে পরিপূর্ণ,
নীলপদ্মসমূহের ন্যায় সুন্দরেরূপে,
শ্রীরাধার বক্ষস্থলের ভূষণরূপিণী এক
অনির্বচনীয় জ্যোতির্ময় সত্তা (শ্রীশ্যামসুন্দর)
শ্রীবৃন্দাবনে আনন্দিত হচ্ছেন।
কান্তিঃ কাপি পরোজ্জ্বলা নব মিলঞ্ছ্রীচন্দ্রিকোদ্ভাসিনী , রামাদ্যদ্ভুত বর্ণ কাঞ্চিত্ রুচির্নিত্যাধিকাঙ্গচ্ছভিঃ ।
লজ্জা – নম্রতনুঃ স্ময়েন – মধ্যুরা প্রীণাতি কেলিছ্ছটা , সন্মুক্তা ফল চারু হার সুরুচিঃ স্বাত্মার্পণেনাচ্যুতম্ ।।২৩৭।।
ব্যাখ্যা:
(যো) ক্ষণ-ক্ষণ মে নবীন বননে ওয়ালী শোভা
সে সম্পন্ন চাঁদনী কো জগমগা দেনে ওয়ালী হ্যঁ,
অত্যন্ত অধ্ভুত রূপ-রং ওয়ালী লক্ষ্মী আদি
রমণিয়া জিসকি কান্তি কা পূজন করতি হ্যঁ,
(যো) নিত্য অধিক বিকসিত হোনে ওয়ালী অঙ্গোঁ
কি ছবি সে যুক্ত হ্যঁ, (যো) লজ্জা সে ঝুঁকি
হুঈ, মুস্কান সে মধুর বনী হুঈ অউর বিবিধ
লীলা-বিলাসোঁ কি ছঠা সে যুক্ত হ্যঁ, (জী)
শুভ্র মোতীয়োঁ সে রচিত মনোহার হার কি সুন্দর
কান্তি সে সুশোভিত হ্যঁ (বহ) কোঈ
অনির্বচনীয় পরম উজ্জ্বল কান্তি (শ্রীরাধা)
অপনা সর্বস্ব অর্পণ করে কে অপনে প্রাণনাথ
কো প্রসন্ন কর রহী হ্যঁ ।
ব্যাখ্যা:
(যিনি) প্রতি মুহূর্তে নূতন হয়ে ওঠা শোভায় পরিপূর্ণ,
চাঁদের আলোকে পর্যন্ত জ্যোতির্ময় করে তোলেন,
অত্যন্ত আশ্চর্য রূপ ও বর্ণসম্পন্ন যাঁর দীপ্তিতে লক্ষ্মী প্রভৃতি রমণীগণ পূজা করেন,
(যিনি) সদা বৃদ্ধি প্রাপ্ত অঙ্গের সৌন্দর্যে বিভূষিতা,
(যিনি) লজ্জায় নত, মৃদু হাসিতে মধুময়ী, এবং নানাবিধ লীলা-বিলাসের জ্যোতিতে উজ্জ্বল,
(যাঁর) শুভ্র মুক্তো দিয়ে গঠিত মনোহর হারের দীপ্তিতে ভূষিতা,
(সেই) এক অনির্বচনীয়, পরম উজ্জ্বল কান্তিসম্পন্ন (শ্রীরাধা),
নিজের সর্বস্ব উৎসর্গ করে, তাঁর প্রাণনাথ (শ্রীকৃষ্ণ) কে তুষ্ট করছেন।
যন্নারদাজেশ শুকৈরগম্যং বৃন্দাবনে বঞ্জুল মঞ্জুকুঞ্জে ।
তত্কৃষ্ণ – চেতো হরণৈক বিজ্ঞমত্রাস্তি কিঞ্চিত্পরমং রহস্যম্ ।।২৩৮।।
ব্যাখ্যা:
যো নারদ, ব্রহ্মা, শংকর অউর শুক কি পৌঁছ সে
পরে হ্যঁ, বহ শ্রীকৃষ্ণ কে হৃদয় কো চুরানে মে
একমাত্র কুশল কোঈ অনির্বচনীয় পরম রহস্য
(শ্রীরাধা) ইস বৃন্দাবন মে অশোক (বৃক্ষ) কি
সুন্দর কুঞ্জ মে বিরাজমান হ্যঁ ।
ব্যাখ্যা:
যিনি নারদ, ব্রহ্মা, শংকর ও শুকদেবের বোধগম্যতারও অতীত,
শ্রীকৃষ্ণের হৃদয়কে চুরি করে নেওয়ার একমাত্র পারদর্শিনী,
সেই অনির্বচনীয় পরম রহস্যময়ী (শ্রীরাধা),
বিরাজমান রয়েছেন বৃন্দাবনের এক সুন্দর অশোক-কুঞ্জে।
লক্ষ্ম্যা যশ্চ ন গোচরো ভবতি যন্নাপুঃ সখায়ঃ প্রভোঃ , সম্ভাব্যোপি বিরঞ্চি নারদ শিব স্বায়ম্ভুবাদ্যৈর্নয়ঃ ।
যো বৃন্দাবননাগরী পশুপতি স্ত্রীভাব কথং , রাধামাধবয়োর্মমাস্তু স রহো দাস্থাধিকাৰোৎসবঃ ।।২৩৯।।
ব্যাখ্যা:
লক্ষ্মী কো ভি যার সাক্ষাত্কার নেহী হোতা,
যিসে শ্রীদামা আদি সখাগণ ভি প্রাপ্ত নেহী
কর সকে, জো ব্রহ্মা, নারদ, শিব, সনকাদি কে
দ্বারা কল্পনীয় নেহী হ্য, জো শ্রীবৃন্দাবন কি
নাগরী ললিতাদিকোঁ কে সখী ভাব দ্বারা (হী)
প্রাপ্ত হ্য, শ্রীরাধামাধব কে উস একান্ত দাস্য
কা অধিকার মুঝে কৈসে মিলে ?
ব্যাখ্যা:
যাঁকে লক্ষ্মীদেবীও প্রত্যক্ষ করতে পারেন না,
যাঁকে শ্রীদামা প্রভৃতি সখাগণও লাভ করতে সক্ষম হননি,
যিনি ব্রহ্মা, নারদ, শিব ও সনক প্রভৃতি মহর্ষিদের কল্পনারও অতীত,
যিনি কেবলমাত্র বৃন্দাবনের নাগরী ললিতা প্রভৃতি সখীদের সখীভাবের দ্বারা লাভযোগ্য,
শ্রীরাধামাধবের সেই একান্ত দাস্যভাবের অধিকার কি করে আমি প্রাপ্ত হব?
উচ্ছিষ্টামৃত ভুক্তভৈব চরিতং শৃণ্বংস্তভৈব স্মরণ , পাদাম্ভোজ রজস্তভৈব বিচরঙ্কুঞ্জাস্তভৈবালয়ান্ ।
গায়ন্দিব্য গুণাঁস্তভৈব রাসদে পশ্যংস্তভৈবাকৃতিং , শ্রীরাধে তনুভাঙ্গমনোভিরমলাই সোহং তভৈবাস্রিতঃ ।।২৪০।।
ব্যাখ্যা:
রস (দাস্য রস) কো প্রদান করনে বালী হ্য
শ্রীরাধে! আপনার হী অমৃত তুল্য উচ্ছিষ্ট
(জুঁঠন) কো গ্ৰহণ করতা হুয়া, আপনার হী
চরিত্র কো শুনতা হুয়া, আপনার হী চরণ-
কমল কী রজ কা ধ্যান করতা হুয়া, আপনার
হী নিবাস স্থল কুঞ্জোঁ মে বিচরণ করতা হুয়া,
আপনার হী দিব্য গুণোঁ কা গান করতা হুয়া
ঔর আপনার হী আকৰতি (রূপ) কা দর্শন
করতা হুয়া ম্যাঁ আপনে নির্মল শরীর, বাণী ঔর
মন সে আপনার হী আশ্রিত হুঁ।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে!
আপনিই সেই পরম স্নিগ্ধ দাস্যরস প্রদানকারিণী।
আমি সেই রস লাভের জন্য—
আপনার অমৃততুল্য উচ্ছিষ্ট (জূঁঠন) গ্রহণ করে,
আপনারই চরিত্র শ্রবণ করে,
আপনার চরণকমলের ধূলি ধ্যান করে,
আপনারই বাসস্থল কুঞ্জে বিহার করে,
আপনারই দিব্যগুণের গান করে,
এবং আপনার মাধুর্যময় রূপ দর্শন করে
নিজের পবিত্র শরীর, বাক্ ও মন দ্বারা কেবল আপনারই আশ্রিত হয়েছি।
ক্রীডন্মীনদ্বয়াক্ষ্যাঃ স্ফুরদধরমণী – বিদ্রুম শ্রোণি – ভার , দ্বীপায়ামোন্তরাল স্মর – কলভ – কাটাটোপ বক্ষোরুহাযাঃ ।
গম্ভীরাবর্তনাভের্বহুলহরি – মহা প্রেম – পীয়ূষ সিন্ধোঃ , শ্রীরাধাযাঃ পদাম্ভোরুহপরিচরণে যোগ্যতামেব চিন্বে ।।২৪১।।
ব্যাখ্যা:
খেলতে হুয়ে দো মীনোঁ কে সমান জিঙ্কে নেত্র হ্যঁ,
দেদীপ্যমান শ্রেষ্ঠ মূঙারমাণি কি তরহ অঋর হ্যঁ,
দ্বীপ কে বিস্তার কি ভাঁতি নিতম্ব ভার হ্য, মধ্য
ভাগ মে অনঙ্গ (কামদেব) রূপী গজ-শাবক
(হাথী কে বচ্চে) কে গণ্ডস্থল কে আটোপ
(উভার) কি ভাঁতি বক্ষস্থল হ্যঁ, ভবর কি ভাঁতি
নাভি হ্য, (তথা জো) শ্রীহরि কে লিয়ে মহা
প্রেমামৃত সিন্ধু কে সমান হ্যঁ উন শ্রীরাধা কে
চরণ কমল কি পরিচর্যা কি যোগ্যতা কো হী
ম্যাঁ খোঁজ রহা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
যাঁর চোখ দুটি যেন খেলতে থাকা দুটি মীন (মাছ),
যাঁর অধরজোড়া দীপ্তিময় উৎকৃষ্ট মুঙ্গা-মাণিক্যের মতো,
যাঁর নিতম্ব-ভার দীপের প্রসার যেমন, তেমনি বিশাল,
যাঁর উরুদেশে অনঙ্গরূপী গজশাবকের গণ্ডস্থলের মতো উদ্ভাসিত উন্নত উত্থান,
যাঁর নাভি যেন এক গভীর ভবরের (ঘূর্ণির) ন্যায়,
এবং যিনি শ্রীহরির জন্য এক অসীম প্রেমামৃত-সিন্ধুরূপা—
তাঁরই চরণকমলের সেবাধিকার—আমি সেই অধিকারই খুঁজে ফিরছি।
মালাগ্রন্থন – শিক্ষয়া মৃদু – মৃদু শ্রীখণ্ড – নির্ঘর্ষণাদেশেনাদ্ভুত মোদকাদি বিধিভিঃ কুঞ্জান্ত সম্মার্জনৈঃ ।
বৃন্দারণ্য রহঃ স্থলীষু বিবশা প্রেমার্ত্তি ভারোদ্গমাত প্রাণেশং পরিচারিকৈঃ খলু কদা দাস্যা ময়াধীশ্বরী ।।২৪২।।
ব্যাখ্যা:
প্রেম কি পীড়া কে ভার সে বিবশ বনী হুঈ
স্বামিনী শ্রীরাধা মালা গুঁঠনে কি শীক্ষা
দেকর, ধীরে-ধীরে চন্দন ঘিসনে কা আদেশ
প্রদান করে, অধ্ভুত মোদক বনানে কি বিধি
বতাকর তথা কুঞ্জ প্রদেশ কে সম্মার্জন দ্বারা
(বুহারনে কি আজ্ঞা দেকর) শ্রীবৃন্দাবন কি
একান্ত স্থলিয়োঁ মে বিবিধ সেবাওঁ সে মুঝ
দাসী দ্বারা প্রিয়তম কি কব সেবা করায়েঁগী?
ব্যাখ্যা:
প্রেমজনিত ব্যথার ভারে কাতর হয়ে যাওয়া স্বামিনী শ্রীরাধা
আমাকে মালা গাঁথার শিক্ষা দিয়ে,
ধীরে ধীরে চন্দন ঘষে প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়ে,
অদ্ভুত মোদক (মিষ্টান্ন) তৈরির পদ্ধতি শেখিয়ে এবং
কুঞ্জের প্রদেশ ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করার আদেশ দিয়ে—
এইভাবে বৃন্দাবনের নিভৃত স্থলীতে নানা সেবার মাধ্যমে
আমার মতো দাসীকে দিয়ে কবে তাঁর প্রিয়তম শ্রীকৃষ্ণের সেবা করাবেন?
প্রেমাম্ভোধিরসোল্লসত্তরুণিমারম্ভেণ গম্ভীর দ্দগ্ভেদাভঙ্গি মুদুস্মিতামৃত নব জ্যোত্স্নাচিত শ্রীমুখী ।
শ্রীরাধা সুখধামনি প্রবিলসদ্বৃন্দাটভী – সীমনি , প্রেয়োঙ্কে রতি – কৌতুকানি কুরুতে কন্দর্প – লীলা – নিধিঃ ।।২৪৩।।
ব্যাখ্যা:
প্রেম-সমুদ্র কে রস সে উল্লসিত তরুণাই কে
আরম্ভ কে কারণ গম্ভীর কাটাক্ষ পাত সে
সম্পন্ন, বিলাস-ভঙ্গিমাওঁ সে যুক্ত মন্দ
মুসকান রূপী অমৃতময়ী নবীন চাঁদনী সে
ব্যাপ্ত শ্রীমুখ ওয়ালী তথা মহাপ্রেম (কাম)
কলাওঁ কি নিধি শ্রীরাধা শোভাশালী সুখ
ধাম শ্রীবৃন্দাবন কি সীমা মে প্রিয়তম কে অংক
ম্যঁ কৌতুকপুণ্য বিহার কর রহী হ্যঁ।
ব্যাখ্যা:
প্রেম-সমুদ্রের রসের উল্লাসে ভরা যৌবনের সূচনার ফলে
গম্ভীর চাহনির কোণার্ক্ষে পরিপূর্ণ,
বিলাস-ভঙ্গিমায় অলংকৃত,
মৃদু হাসির রূপে অমৃতময় নব চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত মুখমণ্ডল যাঁর,
এবং যিনি মহাপ্রেম (কাম) কলার আধার—
সেই শোভাশালী, সুখময় ধাম বৃন্দাবনের সীমায়
তাঁর প্রিয়তম শ্রীকৃষ্ণের বক্ষে কৌতুকপূর্ণ বিহারে রত রয়েছেন।
শুদ্ধ প্রেম – বিলাস – বৈভব – নিধিঃ কৈশোর শোভানিধির্বৈদগ্ধী মধুরাঙ্গ ভঙ্গিম – নিধিলবিণ্য – সম্পন্নিধিঃ ।
শ্রীরাধা জয়তান্মহারসনিধিঃ কন্দর্প – লীলা – নিধিঃ , সৌন্দর্য্যৈক সুধা নিধির্মধুপতেঃ সর্বস্বভূতো নিধিঃ ।।২৪৪।।
ব্যাখ্যা:
উজ্জ্বল প্রেম বিলাস কে বৈভব কি নিধি,
কিশোরাবস্থা কি শোভা নিধি, (বাণী আদি
সে প্রকাশিত হওয়ালী) চাতুরী কে মধুর অঙ্গোঁ কি
ভঙ্গিমাওঁ কি নিধি, রূপ লাবণ্য রূপী
সম্পত্তি কি নিধি, সর্বশ্রেষ্ঠ শৃঙ্গার রস কি
নিধি, সৌন্দর্যামৃত কি একমাত্র নিধি অউর
মধুপতি শ্রীশ্যামসুন্দর কি সর্বস্বরূপা নিধি
শ্রীরাধা কি জয় হো।
ব্যাখ্যা:
উজ্জ্বল প্রেম-বিলাসের ঐশ্বর্যের আধার,
কৈশোরের শোভা-ভাণ্ডার,
বাক্চাতুর্যের মধুর অঙ্গভঙ্গির ভান্ডার,
রূপ ও লাবণ্যের সম্পদের আধার,
সর্বোত্তম শৃঙ্গার রসের আধার,
সৌন্দর্য-অমৃতের একমাত্র আধার,
এবং মধুপতি শ্রীশ্যামসুন্দরের সর্বস্বরূপা—
সেই শ্রীরাধার জয় হোক
নীলেন্দীবরবৃন্দকান্তি লহরী – চৌরং কিশোর – দ্বয়ং ত্বয়্যৈ তৎকুচযোশ্চকাস্তি কিমিদং রুপেণ সম্মোহনম্ ।
তন্মামাত্ম সখीं কুরু দ্বিতরুণীয়ং নৌ দৃঢ়ং শ্লিষ্যতি , স্বচ্ছায়ামভিবীক্ষ্য মুহ্যতি হরৌ রাধা – স্মিতং পাতু নঃ ।।২৪৫।।
ব্যাখ্যা:
আপকে ইন শ্রীঅঙ্গ যুগল মেঁ নীল-কমলোঁ কে
সমূহ কি কান্তি-তরঙ্গ কো চুরানে বালা তথা
আপনে রূপ সে মোহিত করনে বালা ইহ কৌন
কিশোর যুগল চমক রহা হৈ? ইসলিয়ে আপ
মুঝে আপনি সখী বনালিজিয়ে, জিসসে এয়ে
দোনো কিশোর হম দোনো কা গাঢ় আলিংগন
করেঁ। ইস প্রকার আপনি ছায়া কো (শ্রীরাধা
হোনে পর) শ্রীরাধা কি মন্দ মুসকান হমারি রক্ষা করে।
ব্যাখ্যা:
আপনার এই শ্রীঅঙ্গ-যুগলের মাঝে
নীল কমল-গুচ্ছের কান্তি-তরঙ্গকে চুরি করে নেওয়া,
নিজ রূপ দ্বারা মোহিত করে তোলার ক্ষমতা সম্পন্ন—
এই কোন কিশোর-যুগল দীপ্তি ছড়াচ্ছে?
এইজন্য আপনি আমাকে আপনার সখী করে নিন,
যাতে এই দুই কিশোর আমাদের উভয়কে গভীর আলিঙ্গনে বাঁধে।
এইভাবে, আপনি যদি শ্রীরাধা হন, তবে—
আপনার মন্দ মৃদু হাসি যেন আমাদের রক্ষা করে।
সঙ্গত্যাপি মহোৎসবেন মধুরাকারাং হৃদি প্রেয়সঃ , স্বচ্ছায়ামভিবীক্ষ্য কৌস্তুভ মণৌ সম্ভবূত শোকা – ক্রুধা ।
উত্ক্ষিব্য প্রিয় পাণিমেব বিনয়েত্যুষত্বা গতায়া বহিঃ , সখ্যৈ সাস্ত্র নিবেদতানি কিমহং শ্ৰোষ্যামি তে রাধিকে ।।২৪৬।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে ! (প্রিয়তম কে সাথ) মহা
উত্সাহপূর্ণ সমাগম প্রাপ্ত করে ভী, উন
(প্রিয়তম) কে বক্ষস্থল পরস্থিত কৌস্তুভ
মণি মেঁ মধুরাকৃতি বালী আপনী হী ছায়া কো
দেখকর, ক্রোধাৱেশ সে শোক কো প্রাপ্ত হোকর
প্রিয়তম কে হাত কো ঝটকর ‘অরে অবিনীত’!
এসা কহকর (কুঞ্জ সে) বহার আঈ হুঈ
আপকে দ্বারা সখী কে প্রতি (ইস ঘটনা কে)
অশ্রুপূর্ণ কথন কো ক্যা ম্যাঁ সুনুঙী ?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকা! প্রিয়তমের সঙ্গে
মহাউৎসাহপূর্ণ মিলন লাভ করার পরেও,
তাঁর বক্ষস্থিত কৌস্তুভ মণিতে
নিজেরই মধুরাকৃতির ছায়া প্রত্যক্ষ করে,
ক্রোধে উদ্দীপ্ত হয়ে বিষণ্ণতায় পতিত হন আপনি।
প্রিয়তমের হাত ঝটকিয়ে দিয়ে— "অরে অবিনীত!"
এই বলে কুঞ্জ থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর সেই ঘটনাটি,
অশ্রুপূর্ণ নয়নে সখীর কাছে বর্ণনা করেন আপনি।
আমি কি সেই কাহিনি শ্রবণ করব?
মহামণি বরস্ত্রজং কুসুম সঞ্চয়ৈরঞ্চিতং, মহা মরকত প্রভা গ্রথিত মোহিত শ্যামলম্ ।
মহারস মহীপতেরিব বিচিত্র সিদ্ধাসনং , কদা নু তব রাধিকে কবর – ভারমালোকয়ে ।।২৪৭।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকে ! আমূল্য ঔর শ্রেষ্ঠ মণিয়োঁ কী
মালাওঁ সে যুক্ত কুসুম-সমূহ সে ব্যাপ্ত, শ্রেষ্ঠ
মরকত মণি কে সমান কান্তি বালে
শ্রীশ্যামসুন্দর দ্বারা গুঁঁথে হুয়ে ঔর উনকো
মোহিত করনে বালে ঔর রসরাজ শৃঙ্গার রূপী
মহীপতি (রাজা) কে বিচিত্র সিদ্ধাসন জৈসে
আপকে কেশপাশ কো ক্যা কভি ম্যাঁ দেখুঁগী ?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধিকা!
অমূল্য ও শ্রেষ্ঠ মণির মালায় গাঁথা,
পুষ্পসমূহে পরিপূর্ণ, শ্রেষ্ঠ মর্কতমণির মতো দীপ্তিময়,
শ্রীশ্যামসুন্দর দ্বারা গাঁথা, তাঁকে মোহিতকারী,
এবং রসরাজ শৃঙ্গাররূপী রাজাধিরাজের এক আশ্চর্য সিদ্ধাসনের মতো
আপনার কেশপাশকে—
আমি কি কখনো দর্শন করতে পারব?
মধ্যে – মধ্যে কুসুম – খচিতং রত্ন – দাম্না নিবদ্ধং , মল্লীমাল্যৈর্ঘন পরিমলর্ঘূষিতং লম্বমানৈঃ ।
পশ্চাদ্রাজন্মণিবর কৃতোদার মাণিক্য – গুচ্ছং , ধম্মিল্লং তে হরি – কর – ধৃতং কহিং পশ্যামি রাধে ।।২৪৮।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে ! বীচ-বীচ মে ফুলোঁ সে ব্যাপ্ত রত্ন
কী মালাওঁ সে বঁধে হুয়ে, অত্যন্ত সুগন্ধিত
লটকতী হুয়ী মল্লী-মালাওঁ সে সুশোভিত,
পীছে কী ঔর শোভামান সুন্দর মণি রচিত
সুখপ্রদ মাণিক্য কে গুছ্ছে সে যুক্ত ঔর শ্রীহরি
কে করকমল মে स्थित আপকী বেণী কো ম্যাঁ
কব দেখুঁগী ?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে!
মাঝে মাঝে পুষ্পে পূর্ণ রত্নমালায় গাঁথা,
অতিশয় সুগন্ধময়, ঝুলন্ত মল্লিকামালায় ভূষিত,
পেছনের দিকে শোভিত, সুন্দর মণিনির্মিত মনোরম মাণিক্যগুচ্ছযুক্ত,
এবং শ্রীহরির করকমলে অবস্থিত—
আপনার সেই চুলের বেণী আমি কবে দর্শন করব?
বিচিত্রাভির্ভঙ্গী বিততিভিরহো চেতসি পরং , চমৎকারং যচ্ছংল্ললিত মণি – মুক্তাদি ললিতঃ ।
রসাবেশাদ্বিত্তঃ স্মর মধুর বৃত্তাখিলমহোদ্ভুতস্তে সীমন্তে নব – কনক – পট্টো বিজয়তে ।।২৪৯।।
ব্যাখ্যা:
অহো, বিচিত্র লহরিয়োঁ কে বিস্তার সে চিত্ত কো
পরম আনন্দ প্রদান করতা হুয়া, সুন্দর মণি-
মুক্তাদিকোঁ সে মনোহর (বনা হুয়া), রস কে
আবেশ সে প্রসিদ্ধ (শ্যামসুন্দর কে হৃদয়ে মে
রসাবেশ উৎপন্ন করনে কে লিয়ে প্রসিদ্ধ) মনোজ
কে সম্পূর্ণ মধুর চরিত্রোঁ সে যুক্ত, অধ্ভুত ঔর
নবীন कनক পট্ট (সোনে কা পট্টা) আপকী
মাং মে সুশোভিত হো রহা হ্যায়।
ব্যাখ্যা:
অহো! বিচিত্র তরঙ্গের বিস্তারে চিত্তকে পরম আনন্দ দানকারী,
সুন্দর রত্ন ও মুক্তাদির দ্বারা মনোহরভাবে অলঙ্কৃত,
রসের আবেশে প্রসিদ্ধ (অর্থাৎ শ্যামসুন্দরকে রস-মগ্ন করে তোলার জন্য প্রসিদ্ধ),
মনোজ (কামদেব)-এর সকল মধুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে পূর্ণ—
সেই আশ্চর্য ও নবীন সোনালী পাতার রেখা (কনক পট্ট)
আপনার মাধুর্যময় সিঁথিতে শোভিত হয়ে আছে।
অহোদ্বৈধীকর্তুং কৃতিভিরনুরাগামৃত – রস প্রবাহৈঃ সুস্নিগ্ধৈঃ কুটিল রুচির শ্যাম যথিতঃ ।
ইতীয়ং সীমন্তে নব রুচির সিন্ধুর – রচিতাঃ , সুরেখা নঃ প্রখ্যাপয়িতুমিব রাধে বিজয়তে ।।২৫০।।
ব্যাখ্যা:
অহো শ্রীরাধে ! চতুর পুরুষোঁ কো অতি খ্রিগ্ধ
অনুরাগামৃত রস কে প্রবাহ দ্বারা কুটিল ঔর
সুন্দর শ্যাম কো (শ্যাম বর্ণ কে কেশ তথা
শ্যামসুন্দর কো) দো ভাগোঁ মে বিভাগ্ত করনা হী
উচিত হ্যায়। মানোঁ হমকো ইহী বাত সমঝানে কে
লিয়ে মাং মে নূতন মনোহর সিন্দূর সে বনাই গই
ইহ সুন্দর রেখা সুশোভিত হো রহী হ্যায়। ('দো
ভাগোঁ মে বিভাগ্ত কর দেনে' কা অর্থ
শ্রীশ্যামসুন্দর কে পক্ষ কো দ্বিবিধা মে ডাল
দেনা। শ্রীরাধা কী সিন্দূর-মণ্ডিত মাং কো
দেখকর শ্রীশ্যামসুন্দর কা মন দ্বিবিধা মে পড়
জাতা হ্যায় অর্থাৎ চক্র মে পড় জাতা হ্যায়) ।
ব্যাখ্যা:
অহো শ্রীরাধে! চতুর পুরুষেরা এই গভীর প্রেমমাধুর্যের রসে বিগলিত হয়ে
কুটিল ও সুন্দর শ্যাম (অর্থাৎ শ্যামবর্ণ কেশ ও শ্যামসুন্দরকে)
দুই ভাগে বিভক্ত করাকে (মন ও আকর্ষণকে দ্বিধা বিভক্ত করাকে) যথাযথ বলে মনে করেন।
এ যেন এই কথাটিই আমাদের বোঝাতে চায়—
আপনার সিঁথিতে সদ্য অঙ্কিত মনোহর সিঁদুররেখা,
যা অপূর্বভাবে শোভা পাচ্ছে।
(“দুই ভাগে বিভক্ত করা” মানে এখানে শ্রীশ্যামসুন্দরের মনোযোগকে দ্বন্দ্বে ফেলে দেওয়া, যাতে তিনি রাধার সিঁথির শোভা দেখে মোহিত ও বিভ্রান্ত হন।)
চকোরস্তে বক্ত্রামৃত কিরণ বিম্বে মধুকরস্তব শ্রীপাদাব্জে জঘন পুলিনে খজনবরঃ ।
স্ফুরন্মীানো জাতস্ত্বয়ি রস – সরস্যাং মধ্যপতেঃ , সুখাটব্যাং রাধে ত্বয়ি চ হরিণস্তস্য নয়নম্ ।।২৫১।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে ! উন মধুপতি (শ্রীশ্যামসুন্দর) কে
নেত্র আপকে মুখ রূপী চন্দ্র মণ্ডল কে চকোর,
আপকে চরণ কমল কে ভ্রমর, আপকি জঙ্ঘা
রূপী পুলিন কে শ্রেষ্ঠ খঞ্জন হ্যাঁয়। রস কী সরসী
(ছোটে সরোবর) রূপ আপ মে (উনকে নেত্র)
চঞ্চল মীন কে সমান হ্যাঁয়, তথা সুখ কী
বনস্থলী রূপ আপ মে উনকে নেত্র হরিণ কে
সমান হ্যাঁয়।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! সেই মধুপতি (শ্রীশ্যামসুন্দর) এর নয়নযুগল
আপনার মুখচন্দ্র মণ্ডলের চাতকপক্ষীর ন্যায় চকোর,
আপনার চরণকমলের ভ্রমর,
আপনার জঙ্ঘারূপী বালুচরের শোভাময় খঞ্জন পাখি।
রসরূপী সরসিতে (ছোট পুকুর) আপনি যেরূপ,
সেখানে তাঁর নয়ন চঞ্চল মাছের ন্যায়।
আর আপনি যখন সুখময় বনের শোভা,
তখন তাঁর নয়ন হরিণের মতো আকুল ও মোহিত।
স্পৃষ্ট্বা স্পৃষ্ট্বা মৃদু – করতলেনাঙ্গমঙ্গ সুশীতং , সান্দ্রানন্দামৃত রস – হৃদে মজ্জতো মধ্যাবস্য।
অঙ্কে পঙ্কেহ সুনয়না প্রেম – মূর্ত্তিঃ স্ফুরন্তী , গাঢ়াশ্লেষোন্নমিত চিবুকা চুম্বিতা পাতু রাধা ।।২৫২।।
ব্যাখ্যা:
(অপনে) কোমল করকমল সে (শ্রীরাধা কে)
অত্যন্ত শীতল অঙ্গ-অঙ্গ কা বার-বার স্পর্শ
করকে সঘন আনন্দামৃত-রস কে সরোবর মে
নিমগ্র হোতে হুয়ে মাধব শ্রীকৃষ্ণ কে অঙ্ক মে
কমল জৈসে সুন্দর নেত্র ওয়ালী, প্রেম কী
দেদীপ্যমান মূর্তি তথা গাঢ় আলিঙ্গন সে উঠী
হুয়ী চিবুক ওয়ালী (প্রিয়তম দ্বারা) চুম্বিত
শ্রীরাধা হামারি রক্ষা করেঁ।
ব্যাখ্যা:
(নিজের) কোমল করকমল দ্বারা (শ্রীরাধার) অত্যন্ত শীতল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বারংবার স্পর্শ করে,
ঘন আনন্দামৃত রসের সরোবরের মধ্যে নিমগ্ন হচ্ছেন মাধব শ্রীকৃষ্ণ।
তাঁর কোলের মধ্যে অবস্থান করছেন,
কমলের ন্যায় সুন্দর নয়নযুক্ত, প্রেমের দীপ্তিময় মূর্তি,
গাঢ় আলিঙ্গনের ফলে উত্তোলিত চিবুকবিশিষ্টা,
প্রিয়তমের দ্বারা চুম্বিত সেই শ্রীরাধা—তিনি আমাদের রক্ষা করুন।
সদা গায়ং – গায়ং মধুরতর রাধা – প্রিয় – যশঃ , সদা সান্দ্রানন্দা নব রসদ রাধাপতি – কথাঃ ।
সদা স্থায়ং – স্থায়ং নব নিবৃত রাধা – রতি – বনে , সদা ধ্যায়ং – ধ্যায়ং বিবশ হৃদি রাধা – পদ – সুদাঃ ।।২৫৩।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধা কে অত্যন্ত মধুর প্রিয় যশ কো তথা
সদৈব ঘনিভূত আনন্দ রূপা নূতন রস দায়িনী
শ্রীরাধাপতি কী কথাওঁ কো গা-গাকর,
শ্রীরাধা কে নূতন একান্ত বিহার-বন মে নিত্য
নিবাস করে তথা প্রেমাবিষ্ট হৃদয় মে শ্রীরাধা
কী পদসুধা কা বার-বার চিন্তন করতা হুয়া
ম্যাঁ কব কৃতার্থ হোঊঁগা?
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধার অতিমধুর প্রিয় যশকে,
এবং সদা ঘনীভূত আনন্দরূপ নবীন রস প্রদানকারিণী
শ্রীরাধাপতির (শ্রীকৃষ্ণের) লীলাকথাগুলিকে গেয়ে গেয়ে,
শ্রীরাধার নবীন একান্ত বিহার-বনে নিত্য নিবাস করে,
প্রেমাভিষ্ট হৃদয়ে শ্রীরাধার পদসুধার বারংবার চিন্তন করতে করতে,
আমি কবে কৃতার্থ হব?
শ্যাম – শ্যামেত্যমৃত – রস সংস্ত্রাবি বর্ণাঞ্জপন্তী , প্রেমৌত্কণ্ঠয়াত্ক্ষণমপি রোমাঞ্চমুচৈর্লপন্তী ।
সর্বত্রোচ্চাটনমিব গতা দুঃখ – দুঃখেন পারং কাঙ্ক্ষত্যাহ্নো দিনকরমলং ক্রুধয়তী পাতু রাধা ।।২৫৪।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্যাম! হে শ্যাম! ইন অমৃত রস কো
প্রবাহিত করনে ওয়ালে বর্ণোঁ (অক্ষরোঁ) কা জপ
করতী হুয়ী, (দুসরে) ক্ষণ মে হী প্রেম কী
উত্কণ্ঠা সে পুলকিত হোকর (উসী নাম কা)
উচ্চারণ করতী হুয়ী তথা অত্যন্ত দুঃখ কে
কারণ সর্বত্র সে উচ্ছাঠন কো প্রাপ্ত (অর্থাৎ
সব জগহ সে জিঙ্কা মন উচট গয়া হ্যায় অ্যায়সী)
ঔর দিন ছিপনে কী আকাশা করতী হুয়ী, সূর্য
কে প্রতি অত্যন্ত তেজরূপা (ক্রোধবতী) শ্রীরাধা
(হামারী) রক্ষা করেঁ।
ব্যাখ্যা:
হে শ্যাম! হে শ্যাম! এই অমৃত-রস প্রবাহিতকারী বর্ণসমূহের জপ করতে করতে,
পরক্ষণেই প্রেম-উৎকণ্ঠায় পুলকিত হয়ে সেই নামই উচ্চারণ করতে করতে,
এবং অতিশয় দুঃখে সর্বত্র থেকে বিমুখতা লাভ করে (অর্থাৎ যাঁর চিত্ত সর্বত্র থেকে বিগলিত),
দিনটি কখন শেষ হবে এই প্রত্যাশা করতে করতে,
সূর্যের প্রতি অতিশয় তেজরূপিণী (রুষ্টা) হয়ে ওঠা
শ্রীরাধা যেন আমাদের রক্ষা করেন।
কদাচিদ্গায়ন্তী প্রিয়রতিকলা বৈভবগতিং , কদাচিদ্ধচায়ন্তীপ্রিয় সহ ভবিষ্যদ্বিলসিতম্ ।
অলং মুঞ্চামুঞ্চেত্যতি মধুর মুগ্ধ প্রলপিতৈর্নয়ন্তী শ্রীরাধা দিনমিহ কদা নন্দয়তু নঃ ।।২৫৫।।
ব্যাখ্যা:
কভি প্রিয়তম কে প্রেম -কলা সম্পর্কী বৈভব কী
রীতি কা গান করতী হুয়ী, তত্কাল হী প্রিয়তম
কে সাথ ঘটিত হোনে ওয়ালে ভবী বিলাস কা
ধ্যান করতী হুয়ী (কভি) 'বস-বস, ছোড়িয়ে-
ছোড়িয়ে' ইস প্রকার কে অত্যন্ত মধুর एवं
মোহপূর্ণ প্রলাপোঁ দ্বারা দিন কো ব্যতীত করতী
হুয়ী শ্রীরাধা হমেঁ ইয়াঁ কভ আনন্দিত করেঙ্গী?
ব্যাখ্যা:
কখনও প্রিয়তমের প্রেম-কলাসংক্রান্ত ঐশ্বর্যের রীতির গान করতে করতে,
পরক্ষণেই প্রিয়তমের সঙ্গে ঘটিতব্য ভবিষ্যৎ ক্রীড়ার চিন্তনে নিমগ্ন হয়ে,
কখনও "বাস-বাস, ছাড়ুন-ছাড়ুন"—এইরূপ অতি মধুর ও মোহনপূর্ণ প্রলাপের মাধ্যমে দিন অতিবাহিত করতে করতে
শ্রীরাধা আমাদের এখানে কবে আনন্দে বিভোর করবেন?
শ্রীগোবিন্দ ব্রজ – বর – বৃদ্ধূ – বৃন্দ – চূডামণিস্তে , কোটী প্রাণাভ্যধিক পরম প্রেষ্ঠ পাদাজলক্ষ্মীঃ ।
কৈঙ্কর্য্যৈণাদ্ভুত নব রসেনৈব মাং স্বীকরোতু , ভূয়োভূয়ঃ প্রতি মুধুরধিস্বামি সম্প্রার্থযেহম্ ।।২৫৬।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীগোবিন্দ! ব্রজ কী শ্রেষ্ঠ রমণীয়োঁ কে সমূহ
কি জো শিরোমণি হ্যাঁয় (অউর) জিনকে চরণ
কমল কি শোভা আপকো কোটিকোটি প্রাণোঁ
সে ভী অধিক প্যারী হ্যাঁয়, ওয়ে শ্রীরাধা আপনে
অদ্ভুত নবীন রসপূর্ণ কৈংকর্য দ্বারাই হী মুঝকো
স্বীকার করেঁ। ইয়হী ম্যায় আপসে বার-বার
অধিকাধিক প্রার্থনা করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীগোবিন্দ! ব্রজের শ্রেষ্ঠ রমণীগণের মধ্যে যিনি শিরোমণি,
এবং যাঁর চরণকমলের শোভা আপনার কোটি কোটি প্রাণ থেকেও অধিক প্রিয়,
সেই শ্রীরাধা যেন নিজ বিস্ময়কর নবীন রসপূর্ণ সেবার দ্বারা আমাকে গ্রহণ করেন—
এই প্রার্থনাই আমি আপনার নিকট বারংবার, পুনঃপুনঃ করি।
অবেন প্রীতা মে দিশতু নিজ কৈঙ্কর্য্য – পদবী , দবীয়ো দৃষ্টীনাং পদমহহ রাধা সুখময়ী ।
নিধায়ৈবং চিত্তে কুবলয় – রুচি বর্হ – মুকুটং , কিশোরং ধ্যায়ামি দ্রুত কনকপীতচ্ছবি পটম্ ।।২৫৭।।
ব্যাখ্যা:
অহহা! সাধারণ জনোঁ কী হৃষ্টি সে জিনকা
স্থানে (ধাম) অত্যন্ত দূর হ্যায়, বে সুখময়ী
শ্রীরাধা (মেরে) ইস কৃত্য সে প্রসন্ন হোকর মুঝে
আপনী দাস্য পদবী প্রদান করেঁ। ' ইস প্রকার
(কী আকাঙ্খা আপনে) চিত্ত মেঁ রখকর
নীলকমল কে সমানে কান্তি ওয়ালে, মোর মুকুট
ধারী অউর দ্রবীভূত স্বর্ণ কী ছবি কে সমানে
পীতাম্বর কো ধারন করনে ওয়ালে কিশোর
(শ্রীশ্যামসুন্দর) কা ম্যায় ধ্যান করতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
আহা! যাঁদের ধাম সাধারণ লোকের দৃষ্টির অতীত,
সেই সুখময়ী শ্রীরাধা যেন আমার এই কর্মে সন্তুষ্ট হয়ে আমাকে তাঁর দাস্য পদে অভিষিক্ত করেন।
এই রকম আকাঙ্ক্ষা চিত্তে ধারণ করে,
নীলকমলের ন্যায় কান্তিময়, ময়ূরমুকুটধারী,
এবং গলিত স্বর্ণসম শোভাযুক্ত পীতাম্বর পরিহিত
যে কিশোর (শ্রীশ্যামসুন্দর), আমি তাঁরই ধ্যান করি।
ধ্যায়ংস্তংশিখিপিচ্ছমৌলিমানিশং তন্নাম – সংকীর্তয় ন্নিত্যং তচ্চরণাম্বুজং পরিচরন্তন্মন্ত্রবর্য্য জপন্।
শ্রীরাধা – পদ – দাস্যমেব পরমাভীষ্টং হৃদা ধারয়ান , কর্হি স্যাং তদনুগ্রহেণ পরমোদ্ভূতানুরাগোৎসবঃ ।।২৫৮।।
ব্যাখ্যা:
দিন রাত উন মোর মুকুট ধারী কা ধ্যান করতা
হুয়া, উনকা নাম সংকীর্তন করতা হুয়া, নিত্য
উনকে চরণ কমল কী সেবা করতা হুয়া,
উনকে শ্রেষ্ঠ মন্ত্র কা জপ করতা হুয়া তথা পরম
অভীষ্ট শ্রীরাধা-পদ-দাস্য কো হী হৃদয় মেঁ
ধারণ করতা হুয়া (ম্যাঁ) উনকে অনুগ্রহ সে প্রকাশ
হুয়ে পরম অনুরাগ কে উৎসাহ সে সম্পন্ন কব বনূংগা?
ব্যাখ্যা:
দিন-রাত সেই ময়ূরপুচ্ছ-মুকুটধারী শ্রীশ্যামসুন্দরের ধ্যান করতে করতে,
তাঁর নামসংকীর্তন করতে করতে, প্রতিদিন তাঁর চরণকমলের সেবা করতে করতে,
তাঁর শ্রেষ্ঠ মন্ত্রের জপে নিয়ত নিয়োজিত হয়ে এবং
পরম অভীষ্ট শ্রীরাধার চরণদাস্যকেই হৃদয়ে ধারণ করে,
তাঁর কৃপা-প্রসাদে উদ্ভূত পরম অনুরাগ-উৎসাহে পরিপূর্ণ আমি কবে হব?
শ্রীরাধা – রসিকেন্দ্র রূপ গুণবদ্গীতানি সংশ্রাবয়ান , গুজা মঞ্জুল হার – বর্হ – মুকুটাদ্যাবেদয়ংশ্চাগ্রতঃ।
শ্যাম – প্রেষিত পুগ – মাল্য নব গন্ধাদ্যৈশ্চ সম্প্রীণয়ংস্ত্বত্পাদাব্জ নখচ্ছটা রস হৃদে মগ্নঃ কদা স্যামহম্ ।।২৫৯।।
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! রাসিক শেখর (শ্রীশ্যামসুন্দর) কে
রূপ তথা গুণোঁ সে পরিপূর্ণ গানোঁ কো ভলি
ভাবতি সুনাতা হুয়া অউর গুউজা কে বনে সুন্দর
হার এবঁ মোর মুকুঠ আদি কো ভেঁট করতা হুয়া
তথা শ্রীশ্যামসুন্দর দ্বারা প্রেষিত সুপাড়ী,
মালা, নবীন সুগন্ধিত পদার্থ আদি সে
আপকো ভলি প্রকার প্রসন্ন করতা হুয়া (ম্যাঁ)
আপকে চরণ কমল কী নখ-কান্তি কে রাস-
সরোবর মেঁ কব নিমগ্র রহুঁগা?
ব্যাখ্যা:
হে শ্রীরাধে! রসিক-শেখর শ্রীশ্যামসুন্দরের রূপ ও গুণে পরিপূর্ণ গীতগুলি সুন্দরভাবে গেয়ে শোনাতে শোনাতে,
গুঞ্জা-মণি দ্বারা নির্মিত মনোহর হার ও ময়ূরপুচ্ছ-মুকুট প্রভৃতি নিবেদন করতে করতে,
এবং শ্রীশ্যামসুন্দরের প্রেরিত সুপারি, মালা, নূতন সুবাসিত বস্তু প্রভৃতি দ্বারা আপনাকে পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট করতে করতে,
আপনার চরণকমলের নখ-প্রভা-নির্মিত রসস্বরূপ সরোবরে আমি কবে নিমজ্জিত থাকব?
ক্বাসৌ রাধা নিগমপদবী দূরগা কুত্র চাসৌ , কৃষ্ণস্তস্যাঃ কুচ – কমলয়োরন্তরৈকান্ত বাসঃ ।
ক্বাহং তুচ্ছঃ পরমমধমঃ প্রাণ্যহো গর্হ্য কর্মা , যত্তন্নাম স্ফুরতি মহিমা এষ বৃন্দাবনস্য ।।২৬০।।
ব্যাখ্যা:
কহাঁ তো বৈদিক মার্গ সে দূর ওয়ে শ্রীরাধা, কহাঁ
উনকে শ্রীঅঙ্গ-কমলোঁ কে মধ্য মেঁ একান্ত
নিবাস করনে বালে ওয়ে শ্রীকৃষ্ণ অউর কহাঁ ম্যাঁ
তুচ্ছ, পরম অধম অউর নিন্দনীয় কর্ম করনে
বালা সাধারণ জীব! আশ্চর্য হ্যৈ কি ফির ভি
উনকা (শ্রীরাধা কা) নাম মেরে হৃদয় মেঁ
প্রকাশিত হোতা হ্যৈ, ইহ শ্রীবৃন্দাবন কী হী
মহিমা হ্যৈ।
ব্যাখ্যা:
একদিকে যাঁরা বৈদিক পথ থেকে বহু দূরে অবস্থান করছেন সেই শ্রীরাধা,
আর একদিকে যাঁর শরীরের পদপদ্মের মধ্যে একান্তভাবে অবস্থান করছেন স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ,
এবং অন্যদিকে আমি—একজন তুচ্ছ, অতিশয় অধম, নিন্দনীয় কর্মসম্পন্ন সাধারণ জীবমাত্র!
তবুও আশ্চর্যের বিষয় এই যে, তাঁদের—বিশেষ করে শ্রীরাধার—নাম আমার হৃদয়ে উদ্ভাসিত হয়,
এ তো কেবলমাত্র শ্রীবৃন্দাবনেরই অপার মাহাত্ম্য!
বৃন্দারন্যে নব রস – কলা – কোমল প্রেম – মূর্তৈ , শ্রীরাধায়াশ্চরণ – কমলামোদ – মাধুর্য্য– সীমা ।
রাধা ধ্যায়ন রসিক – তিলকেনাত্ত কেলি – বিলাসাং , তামেভাহং কথমিহ তনুং ন্যস্য দাসী ভবেয়ম্ ।।২৬১।।
ব্যাখ্যা:
বৃন্দাবন মেঁ রসিক শিরোমণি কে সাথ বিলাস
করনে বালি (তথা) নবীন রস কী কলাঔঁ সে
কোমল (বনী হুঈ) প্রেম মূর্তি শ্রীরাধা কা ধ্যান
করতী হুঈ ম্যাঁ ইস শরীর কো ধারোহর কে রূপ মেঁ
রখকর শ্রীরাধা কী চরণ কমল সম্মন্ধী
আমোদ-মাধুরী কী সীমা স্বরূপা দাসী কৈসে
বন সাকুঁঙ্গী?
ব্যাখ্যা:
শ্রীবৃন্দাবনে রসিক শিরোমণি শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে অনবদ্য রতিলীলায় লিপ্ত,
নবীন রসকলার দ্বারা কোমলরূপে গঠিত প্রেম-মূর্তি শ্রীরাধার ধ্যান করতে করতে,
এই দেহটিকে যেন এক নিঃশর্ত আমানতরূপে রেখে,
আমি কেমন করে শ্রীরাধার চরণকমলের সৌরভ-মাধুর্যের চরম সীমারূপ দাসী হতে পারি?
হা কালিন্দি ত্বয়ি মম নিধিঃ প্রেয়সা ক্ষালিতোদ্ভূত , ভো ভো দিব্যাদ্ভুত তরুলতাস্ত্বত্কর – স্পর্শ ভাজঃ ।
হে রাধায়াঃ রতি – গৃহ – শুকাঃ হে মৃগাঃ হে ময়ূরাঃ , ভূয়ো ভূযঃ প্রণতিভিরহং প্রার্থয়ে বোনুকম্পাম্ ।।২৬২।।
ব্যাখ্যা:
হে যমুনে! তুমহারে জল মোঁ মেরী নিধি স্বরূপা
স্বামিনী কো প্রিয়তম নে স্নান করায়া হ্য়। উন
(শ্রীরাধা) কে কর স্পর্শ কো প্রাপ্ত করনে বালে,
হে অলৌকিক ঔর আশ্চর্যজনক তরুলতাঔঁ
(তথা) শ্রীরাধা কে রতি গৃহ মোঁ রহনে বালে হ্য়
মৃগোঁ! হে ময়ূরোঁ! হে শুকোঁ! ম্যাঁ বার-বার প্রণাম
করকে আপ সবকি অনুকম্পা চাহতা হুঁ।
ব্যাখ্যা:
হে যমুনে! তোমার জলেই আমার রত্নতুল্য স্বামিনীকে তাঁর প্রিয়তম স্নান করিয়েছেন।
যাঁর (শ্রীরাধার) করস্পর্শ লাভ করেছে সেই অলৌকিক ও আশ্চর্য বৃক্ষলতা,
শ্রীরাধার রতিকুঞ্জে বসবাসকারী হরিণগণ,
হে ময়ূরবৃন্দ! হে শুকপক্ষীগণ!
আমি আপনাদের প্রতি বারংবার প্রণাম জানিয়ে, অনুগ্রহ কামনা করছি।
বহন্তী রাধায়াঃ কুচ – কলশ –কাশ্মীরজমহো , জলক্রীডা বেশাদ্গলিতমতুল প্রেম – রসদম্ ।
ইয়ং সা কালিন্দী বিকসিত নবেন্দীবর রুচি স্সদা মন্দীভূতং হৃদয়মিহ সন্দীপয়তু মে ।।২৬৩।।
ব্যাখ্যা:
অহহ ! জল-কেরি কে আবেেশ মোঁ (ধুলকর)
ছুঁটি হুঈ তথা অনুপম প্রেম রাস প্রদান করনে
বালী, শ্রীরাধা কে শ্রীঅঙ্গ কলশোঁ পর লগী
হুঈ, কেসর কো ধারন কিয়ে হুয়ে, প্রফুল্লিত
নীল কমল কে সমান কান্তি বালী যহ
শ্রীযমুনা, সদা মন্দ (কুণ্ঠিত) রহনে বালে মেরে
হৃদয় কো ইস শ্রীবৃন্দাবন ধাম মোঁ চৈতন্য প্রদান করেঁ।
ব্যাখ্যা:
অহা! জলকেলির উন্মাদনায় (ধুয়ে)
যা বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং অপরূপ প্রেম-রস দানকারী,
শ্রীরাধার অঙ্গে লেগে থাকা কেশরধারিণী,
প্রস্ফুটিত নীল কমলের মতো কান্তিযুক্ত এই শ্রীযমুনা,
সদা মন্দ (নিস্তেজ) থাকা আমার হৃদয়কে
এই শ্রীবৃন্দাবনধামে চৈতন্য দান করুক।
সদ্যোগীন্দ্র সুদৃশ্য সান্দ্র রসদানন্দৈক সন্মূর্তয়ঃ , সর্বেপ্যদ্ভুত সন্মহিম্নি মধুরে বৃন্দাবনে সঙ্গতাঃ ।
য়ে ক্রূরা অপি পাপিনো ন চ সতাং সম্ভাষ্য দৃণ্যাশ্চয়ে , সর্বান্বস্তুতয়া নিরীক্ষ্য পরম স্বারাধ্য বুদ্ধির্মম ।।২৬৪।।
ব্যাখ্যা:
(বে) ক্রূর এবং পাপী লোক ভী, যাে সজ্জনদের
দ্বারা বাচীত করার এবং দর্শন কে যোগ্য ভী
শ্রীবৃন্দাবন কে সমাগম কো প্রাপ্ত করে শ্রেষ্ঠ
যোগীন্দ্রদের দ্বারা দর্শন কে যোগ্য এবং মধুর
রসদাতা আনন্দ কি একমাত্র শ্রেষ্ঠ মূর্তি বন
যাতে হ্যাঁঁ। উন সবকো তাত্বিক দৃষ্টি সে দেখে
উনমে মেরি পরম আরাধ্য বুদ্ধি রেহতি হ্যাঁ।
ব্যাখ্যা:
যে সব নিষ্ঠুর ও পাপী ব্যক্তি, যারা সাধুজনদের সঙ্গে কথা বলার কিংবা দর্শনের যোগ্যও নয়,
তারা যখন শ্রীবৃন্দাবনের সান্নিধ্য লাভ করে,
তখন তারা শ্রেষ্ঠ যোগীদের দর্শনযোগ্য হয়ে ওঠে এবং
মধুর রস প্রদানকারী পরম আনন্দময় একমাত্র শ্রেষ্ঠ মূর্তিতে পরিণত হয়।
তাদের সকলকে আমি তত্ত্বগত দৃষ্টিতে দেখি এবং
তাদের মধ্যেই আমার পরম আরাধ্য বুদ্ধি অধিষ্ঠান করে।
যদ্রাধা – পদ – কিংকরী – কৃত সম্যম্ভবেদ্গোচরং , ধ্যেয়ং নৈব কদাপি যদ্ধ্দি বিনা তস্যাঃ কৃপা – স্পর্শতঃ ।
যত্প্রেমামৃত – সিন্ধু – সার রসদং পাপৈকভাজামপি , তদ্বৃন্দাবন দুষ্প্রবেশ মহিমাশ্চর্য্য হৃদিস্ফূর্জতু ।।২৬৫।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধা চরণোঁ কে দাস্য কো হৃদয় মে ধারণ
করনে বালোঁ কো হী যাে ভলী প্রকার সে প্রত্যক্ষ
হোতা হ্যৈ, যাে উন (শ্রীরাধা) কী কৃপা প্রাপ্তি কে
বিনা কব্হী ভী ধ্যান কা বিষয় নাহीं হোতা এবং
যাে ঘোর পাপিওঁ কো ভী প্রেমামৃত-সিন্ধু কে
সার রূপ রস কা দান করনে বালা হ্যৈ, উস
শ্রীবৃন্দাবন কী দুর্গম মহিমা কা আশ্চর্য মেরে
হৃদয় মে প্রকাশিত হো।
ব্যাখ্যা:
যারা শ্রীরাধার চরণদাস্যকে হৃদয়ে ধারণ করেন,
তাঁদের কাছেই যিনি সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হন,
যিনি শ্রীরাধার কৃপা ব্যতীত কখনোই ধ্যানের বিষয় হতে পারেন না,
এবং যিনি ঘোরতর পাপীদেরও প্রেমামৃত-সিন্ধুর সাররূপ রস দান করেন,
সে শ্রীবৃন্দাবনের দুর্লঙ্ঘ মহিমার এই আশ্চর্য অভিজ্ঞতা আমার হৃদয়ে উদিত হোক।
রাধাকেলি কলাসু সাক্ষিণি কদা বৃন্দাবনে পাবনে, বস্যামি স্ফুটমুজ্বলাদ্ভুত রসে প্রেমক – মত্তাকৃতিঃ ।
তেজো – রূপ নিকুঞ্জ এভ কলবন্নেত্রাদি পিণ্ডস্বিতং , তাদৃক्ंস্বোচিত দিব্য কোমল বপুঃ স্বীয়ং সমালোকেয়ে ।।২৬৬।।
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধা কে কলাপূর্ণ কেলি-বিহার কে সাক্ষী,
প্রকট রূপ সে অদ্ভুত শৃঙ্গার রস সে পরিপূর্ণ
পাবন শ্রীবৃন্দাবন মে একমাত্র প্রেম মে উন্মত্ত
হোকর ম্যাঁ কব রহূঙ্গা? (ইস প্রকার রহতে হুয়ে)
শরীর স্থিত নেত্রাদি ইন্দ্রিয়োঁ কো তেজ পূর্ণ
নিকুঞ্জ মে হী লগাতা হুয়া নিজেদের তদ্বত
(তেজময়) ভাব কে অনুরূপ দিব্য, কোমল
শরীর সহচরী স্বরূপ (কিঙ্করী রূপ) কো কব
ভলী প্রকার দেখূঙ্গা ?
ব্যাখ্যা:
শ্রীরাধার কলাপূর্ণ কেলি-বিহারের সাক্ষী,
প্রকাশ্যরূপে অতুলনীয় শৃঙ্গার রসে পূর্ণ,
পবিত্র শ্রীবৃন্দাবনে প্রেমে উন্মত্ত হয়ে আমি কবে একমাত্র থাকব?
(এইভাবে থাকতে থাকতে)
শরীরে অবস্থিত নেত্রাদি ইন্দ্রিয়সমূহকে উজ্জ্বল নিকুঞ্জেই নিয়োজিত করে,
নিজের তদ্রূপ (উজ্জ্বল) ভাবের উপযুক্ত,
দিব্য ও কোমল শরীরবিশিষ্ট সহচরী রূপ (কিঙ্করী স্বরূপা)কে আমি কবে সুন্দরভাবে দর্শন করব?
যত্র – যত্র মম জন্ম কর্মভিন্নারকেऽথ পরমে পদেঽথবা ।
রাধিকা – রতি – নিকুঞ্জ – মণ্ডলী তত্র – তত্র হৃদি মে বিরাজতাম্ ।।২৬৭।।
ব্যাখ্যা:
মেরে কমোঁ কে অনুসার নরক মে অথবা পরম পদ
বৈকুণ্ঠ মে বহাঁঁ-বহাঁঁ মেরা জন্ম হো বহাঁঁ-বহাঁঁ,
জিন নিকুঞ্জোঁ কে সমূহোঁ মে শ্রীরাধিকা প্রেম
বিহার করতি হ্যৈ, বে মেরে হৃদয় মে বিরাজমান
রহেঁ।
ব্যাখ্যা:
আমার কৃতকর্ম অনুসারে নরকে অথবা পরমপদ বৈকুণ্ঠে,
যেখানে-যেখানে আমার জন্মই হোক না কেন,
যেসব নিকুঞ্জসমূহে শ্রীরাধিকা প্রেমবিহার করেন,
সেই সমস্ত নিকুঞ্জ আমার হৃদয়ে চিরস্থায়ী হয়ে বিরাজ করুন।
ক্বাহং মূঢ়মতিঃ ক্ব নাম পরমানন্দৈক সারং রসঃ , শ্রীরাধা – চরণানুভাবকথয়া নিষ্যন্দমানা গিরঃ ।
লগ্নাঃ কোমল কুঞ্জ পুঞ্জ বিলসদ্বন্দাটবী – মণ্ডলে , ক্রীডচ্ছীবৃষভানুজা – পদ – নখ – জ্যোতিচ্ছটা প্রাযশঃ ।।২৬৮।।
ব্যাখ্যা:
কহাঁঁ মন্দ বুদ্ধি ম্যাঁ এবং কহাঁঁ শ্রীরাধা চরণোঁ কে
প্রভাব কী কথা দ্বারা নিশ্চিত রূপ সে (নাম)
পরমানন্দ কে একমাত্র সার রস কো প্রবাহিত
করনে বালি (মেরি) বাণী! (যো বাণী)
কোমল কুঞ্জ সমূহ সে শোভাবান
শ্রীবৃন্দাবন-মণ্ডল মে সংলগ্ন হ্যৈ (ঔর জিসমে)
বিহার-পরায়ণ শ্রীবৃষভানুনন্দিনী কে চরণ
নখ কী জ্যোতি কী ছঠা প্রায়ঃ বিদ্যমান রহতি হ্যৈ।
ব্যাখ্যা:
কোথায় আমি মন্দবুদ্ধি, আর কোথায় সেই শ্রীরাধার চরণসমূহের প্রভাবের কাহিনি দ্বারা নিঃসন্দেহে পরমানন্দের একমাত্র সাররসকে প্রবাহিতকারী (আমার) বাণী!
(যে বাণী) কোমল কুঞ্জসমূহ দ্বারা শোভিত,
শ্রীরাধার কেলিপরায়ণতা যেখানে সর্বদা বিস্তার লাভ করেছে সেই শ্রীরবৃন্দাবন-মণ্ডলে নিমগ্ন,
এবং যেখানে শ্রীবৃষভানুনন্দিনীর চরণনখের দীপ্তির প্রভা প্রায়ই পরিলক্ষিত হয়।
শ্রীরাধে শ্রুতিভির্বুধৈর্ভগবতাপ্যামৃগ্যসদ্বৈভবে , স্বস্তোত্র স্বকৃপাত্র এব সহজো যোগ্যোপ্যহং কারিতঃ ।
পদ্যেনৈব সদাপরাধিনি মহান্মার্গ বিরুদ্ধযত্বদেকাশেস্নেহ জলাকুলাক্ষি কিমপি প্রীতিং প্রসাদী কুরু ।।২৬৯।।
ব্যাখ্যা:
বেদ, পণ্ডিতগণ তথা ভগবান কে দ্বারা ভী
অন্বেষণীয় (ঢুঁঁঢে যাওনে যোগ্য) শ্রেষ্ঠ বৈভব বালি
হে শ্রীরাধে! আপনে আপনী কৃপা কে হী দ্বারা পদ্য
রূপ মে আপনে স্তোত্র (স্তুতি গ্রন্থ) কী রচনা মে
মুঝে সহজ (বিনা প্রচাস কে) যোগ্য বনা়
দিয়া। হে খরেহ জল সে ভীগে নেত্র বালি,
মহাপুরুষোঁ দ্বারা প্রতিপাদিত মার্গোঁ কা বিরোধ
করনে বালে, সদা অপরাধ যুক্ত ঔর একমাত্র
আপনী আশা রহনে বালে মুঝে আপনী
অনির্বচনীয় প্রীতি কা প্রসাদ ডিজিয়ে ।
ব্যাখ্যা:
ও বৈদ, পণ্ডিতগণ এবং স্বয়ং ভগবান দ্বারা অনুসন্ধেয় যাঁহার শ্রেষ্ঠ বৈভব, হে শ্রীরাধে!
আপনার কৃপা দ্বারাই আপনি আমাকে পদ্যেরূপে আপনার স্তোত্র রচনায় সহজে (সাধনাহীনভাবে) যোগ্য করে তুলেছেন।
হে খরহ (অশ্রু) জল দ্বারা ভিজিত নয়নসম্ভালা,
যে আমি মহাপুরুষদের দ্বারা নিরূপিত পথের বিরোধী, সর্বদা অপরাধমগ্ন, তবুও একমাত্র আপনারই আশ্রয়প্রার্থী,
তুমি আমাকে তোমার সেই অনির্বচনীয় প্রেমের প্রসাদ দান করো।
অদ্ভুতানন্দ লোভশ্চেন্নাম্না ‘রস-সুধা-নিধি’ ।
স্তবীয়ং কর্ণ – কলশৈর্গৃহীত্বা পীয়তাং বুধাঃ ।।২৭০।।
ব্যাখ্যা:
হে বিদ্বানোঁ! যদি আপনার চিত্ত মে অদ্ভুত আনন্দ কা লোভ হ্যৈ তো
(রাধা) রস সুধানিধি নামক ইস স্তোত্র কো কান রূপী কলশোঁ দ্বারা
গ্রহণ করে পান কীজিয়ে।
ব্যাখ্যা:
হে পণ্ডিতগণ! যদি আপনাদের চিত্তে সেই আশ্চর্য পরমানন্দের লোভ থাকে,
তবে (এই) ‘রসসুধানিধি’ নামক (শ্রীরাধার) এই স্তোত্রটিকে কাণরূপী কলস দ্বারা
গ্রহণ করে পান করুন।
জৈ জৈ শ্রী বৃন্দাবনেশ্বরী চরণ-কমল কৃপাবলম্বজুঁভিত - শ্রীহিত
হরিবংশ গোস্বামিনা বিরচিতং শ্রীরাধা সুধানিধি স্তোত্রং কী জৈ জৈ শ্রী
ইস প্রকার, শ্রীহিত হরিবংশ গোস্বামী রচিত শ্রীবৃন্দাবনেশ্বরী চরণ-
কমল কৃপা সে প্রাদুর্ভূত শ্রীরাধাসুধানিধি স্তোত্র কা বিশ্রাম হুয়া।
॥ শ্রী ললিতা জুঁ কী জয় ॥
॥ শ্রী বিশাখা জুঁ কী জয় ॥
॥ শ্রী চম্পকলতা জুঁ কী জয় ॥
॥ শ্রী চিত্রা জুঁ কী জয় ॥
॥ শ্রী তুংগবিদ্যা জুঁ কী জয় ॥
॥ শ্রী ইন্দুলেখা জুঁ কী জয় ॥
॥ শ্রী রংগদেবী জুঁ কী জয় ॥
॥ শ্রী সুদেবী জুঁ কী জয় ॥
॥ সমস্ত সহচরী বৃন্দ কী জয় ॥
Work is in progress. More verses will be available soon. If you find any error or discrepancy, feel free to contact via email info@shriradha.net.